ষাটের দশকের অন্যতম প্রধান কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ। ২০০১ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। এ উপলক্ষে বরিশালের বাবুগঞ্জে কবির নিজ গ্রাম বাহেরচরে কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ঢাকায় কবির আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ১৯৩৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালের বাবুগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। কবির শৈশব-কৈশোর কেটেছে পিতার কর্মস্থল বিভিন্ন মহকুমা ও জেলা শহরে। তবে ছুটিতে, বিশেষ করে গরমের ছুটিতে প্রায়ই যেতেন গ্রামের বাড়ি বাহেরচরে। সেখানে বাড়ির উঠানে ভাইবোন আর গ্রামের ছেলেমেয়েদের নিয়ে মেতে উঠতেন নাটক, গান, কবিতা আবৃত্তিতে। কিশোর বয়স থেকেই তার কবিতা লেখা শুরু।
ইংরেজি সাহিত্যে একজন মেধাবী ছাত্র আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ এম এ পরীক্ষার ফল বেরুনোর আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। কিন্তু তখনকার ধারা অনুসারে এবং বিশেষ করে পরিবারের আগ্রহে তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।
এরপর দক্ষ প্রশাসক হিসেবে মহকুমা ও জেলা পর্যায় অতিক্রম করে সরকারের সচিব, টেকনোক্রেট মন্ত্রী হিসেবে এদেশের কৃষি ব্যবস্থাপনার অবকাঠামো গড়ে তোলেন তিনি। ঢাকার খামার বাড়ী, কৃষি গবেষণার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বরিশালের রহমতপুরের কৃষি ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও প্রতিষ্ঠান তার স্বাক্ষর বহন করছে।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ পঞ্চাশ দশকের অন্যতম কবি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর কবিতায় আবহমান বাংলার অকৃত্রিম ছবি পাওয়া যায়। তাঁর কবিতার সূচনা ভাষা আন্দোলনকে (১৯৫২) কেন্দ্র করে এবং বিকাশ ঘটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের সামগ্রিক জনজীবনের আশা-নিরাশা এবং স্বপ্ন-বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে। কাব্য রচনার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক ও বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭৯) লাভ করেন। তিনি ‘পদাবলি’ নামে কবিদের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটি আশির দশকে দর্শনীর বিনিময়ে কবিতা সন্ধ্যার আয়োজন করত।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮