somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক শেখ ওয়াজেদ আলির ৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

১০ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, গল্পলেখক ও ভ্রমণকাহিনী রচয়িতা শেখ ওয়াজেদ আলি। যিনি 'এস ওয়াজেদ আলি' নামেই অধিক পরিচিত। লেখক হিসেবে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা ও ভ্রমণকাহিনী রচনায় তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। শেখ ওয়াজেদ আলী ছিলেন একজন উদার ও প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব। মননশীল চেতনা, ইতিহাস ও নীতিজ্ঞান এবং সত্য ও সুন্দরের মহিমায় তাঁর সাহিত্যকর্ম সমৃদ্ধ। বাংলাদেশ জন্মের বহু আগেই বৃটিশ আমলে, বাংলাভাষী মানুষকে নিয়ে জাতি গঠন করার স্বপ্ন দেখেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তার বই ‘ভবিষ্যতের বাঙালি’তে এমন স্বপ্নের প্রতিফলন দেখা যায়। তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫১ সালের আজকের দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। আজ তাঁর ৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক শেখ ওযাজেদ আলির ৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

শেখ ওয়াজেদ আলি ১৮৯০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শণ্ঠীরামপুর মহকুমার বড় তাজপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ বেলায়েত আলী। তিনি শিলং-এ স্থায়িভাবে বসবাস করতেন এবং পেশায় ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। ১৮৯৫ সালে বড় তাজপুর গ্রামের পাঠশালায় ওয়াজেদ আলীর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। পরে তিনি শিলং মোখার হাইস্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯০৬ সালে স্বর্ণপদক লাভ করে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি আলীগড় কলেজ থেকে ১৯০৮ সালে আইএ এবং এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯১০ সালে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯১২ সালে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যান এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুনরায় বিএ ডিগ্রি ও বার-অ্যাট-ল সম্পন্ন করেন। ১৯১৫ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনব্যবসার মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯২৩ সালে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সির ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন এবং ১৯৪৫ সালে ওই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

এস ওয়াজেদ আলী ১৯১৯ সালে Bulletin of the Indian Rationalistic Society নামে একটি ইংরেজি জার্নাল এবং ১৯৩২ সালে গুলিস্তাঁ নামে একটি বাংলা মাসিক সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। ১৯২৫ সালে তাঁর ছোটোগল্প ’রাজা’ ইসলাম দর্শন এ প্রকাশিত হয়। তিনি পরপর দুবার (১৯২৫ ও ১৯২৬) বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯২৭ সালে তিনি উক্ত সমিতির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এবং একই বছর তাঁর ছোটোগল্পগ্রন্থ গুলদস্তা প্রকাশিত হয়। ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি কলকাতা এলবার্ট হলে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সংবর্ধনা প্রদান উপলক্ষে গঠিত সংবর্ধনা কমিটির সভাপতি হিসেবে অভিনন্দন পত্র পাঠ করেন। একই বছর তিনি ‘আসাম মুসলিম ছাত্র সমিতি’-র বার্ষিক সম্মেলনেও সভাপতিত্ব করেন। ১৯৩০ সালের এপ্রিলে তিনি নোয়াখালী মুসলিম ইন্সটিটিউটের সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯৩৫ সালে তিনি সিরাজগঞ্জে অনুষ্ঠিত ‘নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সম্মিলনী’-তে সভাপতি হিসেবে যোগদান করেন।


এস ওয়াজেদ আলী তার নিরলস সাহিত্য সাধনার ভেতর দিয়ে মুসলিম ঐতিহ্য ও গৌরবকে সাবলীল প্রবন্ধ ও গল্পের মধ্য দিয়ে তুলে ধরেছেন। ১৯১৯ সালে এস ওয়াজেদ আলির প্রথম প্রবন্ধ ’অতীতের বোঝা’ প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত সবুজপত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার সাহিত্যে উদার ও প্রগতিশীলতা এই দুই গুণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সত্য ও সুন্দরের সাধনায় নীতিজ্ঞান ও প্রেমের শাশ্বত মহিমায় তার সাহিত্যকর্ম সমৃদ্ধ। তার লেখায় মার্জিত রুচি ও পরিচ্ছন্ন রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে, প্রবন্ধঃ জীবনের শিল্প (১৯৪১), প্রাচ্য ও প্রতীচ্য (১৯৪৩), ভবিষ্যতের বাঙালী (১৯৪৩), আকবরের রাষ্ট্র সাধনা (১৯৪৯), মুসলিম সংস্কৃতির আদর্শ গল্পঃ গুলদাস্তা (১৯২৭), মাশুকের দরবার (১৯৩০), বাদশাহী গল্প (১৯৪৪), গল্পের মজলিশ (১৯৪৪), উপন্যাসঃ গ্রানাডার শেষ বীর (১৯৪০) ভ্রমণকাহিনীঃ পশ্চিম ভারত (১৯৪৮), মোটর যোগে রাঁচী সফর (১৯৪৯) প্রভৃতি। ১৯৫১ সালের ১০ জুন ইন্তেকাল করেন সাহিত্যিক শেখ ওয়াজেদ আলি। আজ তার ৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রাবন্ধিক, গল্পলেখক ও ভ্রমণকাহিনী রচয়িতা শেখ ওয়াজেদ আলির ৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ফেসবুক লিংকঃ
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:২০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×