somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহরে নতুন স্লোগান ‘ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষিত এলাকা’ কতটুকু কার্যকর হচ্ছে?

১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(গুলশান লেকের সামনেই আছে এই সাইন বোর্ড )

ভিক্ষুক মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের বেশ কিছু কার্যক্রম শুরু হয়েছে । তাই সমাজ কল্যান মন্ত্রনালয়ের সমাজ সেবা অধিদপ্তরের একটা সাইন বোর্ড দেশের অনেক এলাকায় দেখা যায়। আমি প্রথম দেখেছি বাগেরহাট। চলন্ত গাড়ি থেকে এই সাইন বোর্ড আমাকে অবাক করেছিল । অনেক টা ভাল লাগছিল ভেবে যে মন্ত্রনালয় এই বিষয়টা নিয়ে ভাবছে । কি পরিমান ছদ্মবেশী ভিক্ষুক আছে তার যথাযথ তালিকা হয়তো নেই। কারণ আমার ব্যক্তিগত অভিমত এই দেশে ভিক্ষার চেয়ে সহজ পেশা হয়তো নেই । কারও কাছে বিনা পরিশ্রমে চাইলেই পাওয়া যায় । কাজ করার কি প্রয়োজন? মাঝে মাঝে পত্রিকায় দেখা যায় অমুক ভিক্ষুক ভিক্ষাবৃত্তি করে কোটি টাকার বাড়ি গাড়ি করেছেন ।আবার কোন কোন শিল্পপতি আছেন তাদের পূর্বের পেশা ছিল ভিক্ষাবৃত্তি। আবার ভিক্ষাবৃত্তি পরিচালনার পিছনে আছে ভয়াবহ সব সন্ত্রাসীদের যোগসাজশ। তাই সমাজে দিনের পর দিন নানা রকম অপরাধ কার্যক্রম বেড়েই চলেছে । যতদিন এই মানবেতর জীবন যাপনকারী বস্তিবাসি কিংবা ভিক্ষুক শ্রেণীদের পুনর্বাসন না করা যাবে ততোদিন দেশে অপরাধ চক্র ভাঙ্গবে না । যাই হোক সাইন বোর্ড গুলো কি শুধু লোক দেখানো প্রচারনা নাকি বাস্তব কোন পদক্ষেপে তা নিয়ে আছে অনেক প্রশ্ন।
কয়েকদিন আগে পরিবারের এক সদস্যের সাথে আমেরিকান দূতাবাসে গিয়েছিলাম। তার ইন্টারভিউ ছিল সকাল আটটায়। তাই একটু আগেই রওয়ানা করতে হয়েছিল। রাস্তা ফাঁকা থাকায় ২০ মিনিটেই গুলশান পৌঁছে গিয়েছিলাম ধানমণ্ডি থেকে। আমার পরিবারের সদস্য নির্ধারিত সময়ে ইন্টারভিউ দিতে গেল। আমি একটু আশেপাশে ঘুরে দেখা শুরু করলাম। লেকের কাছের পার্কে একটা নার্সারি করা। ভোরে পার্কের মধ্যে অনেকেই হাটাহাটি করছে। কেউ কেউ আবার সেলফি ও তুলছে। এতো ভোরে সেলফি তুলতে দেখে অবাক হলেও পরে বুঝলাম তারা দূর থেকে এসেছে আমেরিকান দূতাবাসে ইন্টারভিউ দিতে। পার্কের ভেতর নার্সারি সরকারি না বেসরকারি আমার জানা নেই। তবে গাছগুলো খুঁটিয়ে দেখছিলাম। এমন সময় দুজন ভিক্ষুক এলো। প্রথমে ছিনতাইকারী ভেবেছিলাম। পরে দেখি ভিক্ষুক। তখন ভোর সাড়ে সাতটা। ঘুম ঘুম মনে একটু মেজাজ গরম হল। মানবিকতা কাজ করছিল না। কারণ আমার চোখের সামনেই লেখা ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষিত এলাকা। নবীর শিক্ষা, করোনা ভিক্ষা।
রাস্তার বিপরীতেই পুলিশ চেকপোস্ট। পুলিশ এবং পুলিশের গাড়ি সবই আছে। তাদের সামনেই এতো ভোরে ভিক্ষা শুরু হয়েছে। এটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত। শুধু তা নয় সেখানে তিন-চারটা দূতাবাস খুব কাছাকাছি। আমেরিকা, কানাডা, জার্মান দূতাবাসের কাছের রাস্তায় এমন সব ভিক্ষুকরা বসে আছে। তারা কি আসলে ভিক্ষুক নাকি অন্য কিছু। যে স্লোগান আর সাইন বোর্ডে পুরো বাংলাদেশ ছেয়ে যাচ্ছে তার বাস্তবতা কতোটুকু?



(পুলিশ চেক পোষ্টের কাছ থেকে সকালে বেলা তোলা ছবি)
রাজধানীর শাহবাগ, বসুন্ধরার কাছেই পান্থকুঞ্জের কাছে যেমন ডাস্টবিন তেমনি বস্তিবাসী। অথচ সব জায়গায় একই সাইন বোর্ড দেওয়া আছে। ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষিত এলাকায় ভিক্ষুক কিভাবে থাকে? এটা কি ধরনের ঘোষণা তা আমার বোধগম্য হল না! একটা দেশের টেকসই আর্থসামজিক উন্নয়ের লক্ষ্যে এই ধরনের সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণ এবং পুনর্বাসন বা সমাধানে প্রকৃতই কাজ করতে হবে। তাদের উন্নয়ন কাজে সুযোগ এবং উৎসাহিত করতে হবে। রাজধানীর মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ ছদ্মবেশি ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িত। তাদের নিয়ে গবেষণা করতে হবে। ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করতে মিডিয়া বা গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি সাধারণ জনগণকে সচেতন হতে হবে।

আমাদের দেশটা সব দিক থেকে পরিচ্ছন্ন হোক। আমরা কাজকে সম্মান করতে শিখি। কাজের প্রতি উৎসাহিত করতে সরকার এবং জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে ।


ছবিগুলো আমার মোবাইলে তোলা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৯
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×