লেখক লেখিকাদের কেচ্ছা কাহিনি দেখেও কিছু গল্প তৈরি হয়ে যায় । সেদিন রাতে এক ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম । রাজধানীর বিখ্যাত মহিলা ডাক্তার তাই রোগীর ভিড় ও বেশি । প্রায় মধ্য রাত । আমি আমার উনার পাশে বসে সেই হাসপাতালে আগত মানুষ জন , রোগী এবং অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ফুলেল সুরভিত হাসপাতালের দেয়াল জুড়ে রাখা নানা শিল্পকর্ম অবলোকন করছিলাম ।ডাক্তারের চ্যাম্বারের আশে পাশের সব গুলো রুমই মহিলা ডাক্তার । মনে মনে হাসছিলাম ।আমার উনি আই মিন আমার বর হেসে বলছিলেন ” হাসপাতালে ও নারীর অধিকার আর রাজত্ব ” । বাহ ভাল । হঠাৎ একটা রুমের দরজায় চোখ থমকে গেল । পাওয়া গেছে একজন পুরুষ ডাক্তার ! তবে ডাক্তারে সাহেব আবার কবি ও । দরজায় তাঁর নাম এবং কোন কোন দেশ থেকে ডাক্তারি বিদ্যায় উচ্চ ডিগ্রি নিয়েছেন তা লেখা । সেই সাথে কোন কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে কখন বসেন । কতো ভিজিট ফি নেন তা লেখা আছে । এসব দেখে কিন্তু চোখ থামেনি । অন্য একটা কারন ।তা হল দরজায় লেখা আছে এখানে লেখকের সাহেবের স্বাক্ষর পাওয়া যায় । না কোন ডাক্তারি বইয়ের লেখক নয় তিনি কবিতার বইয়ের লেখক । কোন কবিতার বই । এখন মনে পরছে না । মনেহয় ” সবুজ জমিনে লাল দু ফোঁটা রক্ত ” এমন টাইপ হবে । আহা! একটা হাসপাতালের দরজার কতো দায়িত্ব ! কতো কতো তাৎপর্য এই দরজার ! শিশু থেকে বৃদ্ধ বনিতা ইদানিং অনেকেই লেখক হতে চায় । অর্থ আকর্ষণ , নাম যশ হতে পারে অনেক কারন । এই অধিকার সবার । আবার সেদিন ফেসবুকের আমার হোম পেজে সদ্য কোন একটা পুরুস্কার প্রাপ্ত একজন লেখকের একটা দুঃখী দুঃখী পোষ্ট পরলাম আর হাসলাম । ভদ্রলোক কয়েকটা গল্প লিখে সেই বইয়ে লক্ষ টাকা পুরষ্কার জিতেছেন । সেই পোষ্ট এ তিনি লিখেছেন তাঁর পুরুস্কার জেতা বইটি নাকি ৩০০/৪০০ কপি ও বিক্রি হয়নি । এমন কি এর মধ্যে তিনিই নাকি অধিকাংশ কিনে নিয়েছেন । বড় কোন বইয়ের দোকানে ও নাকি তাঁর বইটি পাওয়া যায়না । এমন কি ফুটপাতের ফেরিওয়ালার কাছে ও না । নীল ক্ষেতে ও না । যদি ও কথাটা তিনি ঠিক লিখেছেন ।বেঙ্গল বই , দীপন পুরে আমি তার বইটি খুঁজে ছিলাম । কিন্তু একটি সদ্য লক্ষ টাকা পুরুস্কার জেতা বইটি সেখানে পাইনি । কৌতূহল মেটাতে রকমারি অনলাইন শপ থেকে কিনলাম । লেখক কিংবা তাঁর লেখা গল্প গুলো নিয়ে পরে একদিন বলব । কেমন বই পুরষ্কার জিতল কেউ জানল না । নরমাল বিক্রি ও হলনা । অথচ সাহিত্য বোদ্ধারা পুরষ্কার দিয়ে দিল । আজকাল বাংলাদেশে পুরষ্কার জেতা সহজ বরং পাঠকের কাছে যাওয়া অনেক কঠিন ।কোন পত্রিকা বা অনলাইনের সাহিত্য সম্পাদক হয়ে বিভিন্ন সাহিত্য বোদ্ধাদের চাটুকারিতা করলে এমনি কোন মতে একটা পুরস্কার জেতান যায় । তবে আপামর মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে না । আবার কেউ কেউ আছে কতো লক্ষ টাকা খরচ করে নিজের অখাদ্য কুখাদ্য বই প্রকাশ করেছে তা নিয়ে গর্ব ও করে । টাকা তো ! টাকার গরমে একটু গর্ব থাকেই তবে শিল্পী সত্তা টাকা দিয়ে পাওয়া আদৌ সম্ভব কি ? লেখকরা ও জীবন শিল্পী । এই জীবনের তাবৎ অসুন্দর লেখকের কাছে সুন্দর হয়ে ধরা দেয় ।লেখকের জীবন বা দর্শন সবার মত হয়না । তাঁরা পৃথিবীকে অন্য দৃষ্টিতে দেখে । অথচ আজকের বাংলাদেশের অধিকাংশ লেখক মন নন্দিত না হয়ে নোংরামিতে ভরপুর । আসলে কি লেখক হওয়া এতো সহজ ! প্রকৃত লেখকদের হৃদয় আল্লাহ্ প্রদত্ত ঐশ্বরিক ঐশ্বর্যে আভিজাত্যময় থাকে । যার দুত্যি এই ভুবন কে আলোকিত করে । অনলাইনে বাংলা লেখার সুযোগ কোটি কোটি লেখকের জন্ম দিচ্ছে । অনলাইনে ভেসে যাওয়া কিছু কিছু দৃষ্টি গোচর হলে বুঝা যায় কতো ব্যাকরণগত সমস্যা । অতি প্রাঞ্জল নয়ত ভাষার বাহুল্য দোষে দুষ্ট । লেখক হওয়ার চেয়ে পাঠক হওয়া অনেক জরুরি । পাঠক হওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি । লেখকেরা পুরুস্কারের আশায় লিখে না । অনলাইনে লাইক কমেন্ট পাওয়ার আশায় লিখে না । প্রকৃত লেখকেরা তাদের দার্শনিক চিন্তা ধারা কে কলমে শিল্পিত রূপ দেয় । পৃথিবীতে অনেক অনেক কবি সাহিত্যিক কিংবা শিল্পী আছেন যারা সমাজ বিবর্জিত ছিলেন । কেউ কি বলতে পারবেন তবু ও কেন তাদের শিল্প কর্ম গুলো অন্দর থেকে সারা দুনিয়ার হৃদয় হরন করেছে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪৭