ছবিঃ আমি আমার মোবাইলে তুলেছিলাম
পৃথিবীতে সবাই মনে করে সে পরিপূর্ণ অথবা পারফেক্ট। অথচ তার মনের অজান্তেই রক্তের সর্ম্পক বা কাছের জনের সাথে সে যে কি পরিমান ভুল করে হয়তো সে নিজেও জানে না। বেশি আত্মনির্ভরতা ও হয়তো কখনও স্বাভাবিক সম্পর্ক গুলোকে তুচ্ছ করে। কখনও বঞ্চিত করে। আজকাল অনেক শিক্ষিতরাই জানে না বাবা মায়ের সাথে কিভাবে আচরন করতে হবে। কিভাবে সন্তানের সাথে আচরন করতে হবে। আপনি মা বাবা এখন চারপাশের পরিবেশ বা বাস্তবতার কারনে সন্তান চলছে না আপনার মন মতো। এখন আপনি কি সন্তানের সাথে মা বাবা হওয়ার ক্ষমতা দেখাবেন? তাকে খাওয়ানো পড়ানোর খোটা দিবেন। নাকি তার গায়ে হাত তুলবেন।আজকাল জীবনটা অনেক বেশী বায়বীয় হয়ে যাচ্ছে।সেদিন শুনলাম এক ঘটনা।
২২ বছর বয়সী প্রবাসী সন্তান তার মা বাবা কে পাত্তা দেয় না। বাবা শাসন করতে চাইলে তার বাবাকে পুলিশের হুমকি দেয়। হায়রে প্রবাসী স্বাধিনতা! আত্মনির্ভরতা!আত্মনির্ভরশীলতা এখন সর্ম্পক নষ্টের অন্য নাম। ২০১৪ সালে কানাডায় যাওয়ার সূযোগ হয়েছিল। এক বাসায় দাওয়াত খেতে গিয়ে হয়েছিল এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা।কানাডায় ভদ্র মহিলা অনেক বছর আছে।এক ছেলে এক মেয়ে। কোন কিছুর কমতি নেই জীবনে। কিন্তু অল্প পরিচয়ে মহিলার বাচলতা প্রমান করলো বুকে অনেক কথা জমেছিল। আমাকে দেখে হয়তো বাধহীন কথার বন্যা। এক পর্যায়ে জানাল ছেলে মেয়েরা কথা শুনে না। তাদের কথা বুঝতেই তিনি ফরাসী শিখছেন। কারন ছেলে মেয়েরা বাঙালি মায়ের চোখ ফাকি দিতে বন্ধুদের সাথে ফরাসিতে কথা বলতো। আবার সেদিন শুনলাম এক পরিচিত আপু ইউরোপে তার টিনএজ মেয়ে নাকি তাকে অবমূল্যায়ন করতো। পাত্তা দিতে চাইত না। কারন আপু অল্প বয়সে অল্প শিক্ষা নিয়েই ইউরোপ গিয়েছিল।
খুব ভালো ইংরেজি পারতো না। তার মেয়ে নাকি মা কে ফাকি দিতে বন্ধু বান্ধবীদের সাথে ইংরেজিতেই কথা বলতো। আপু তাই সন্তান লালন পালনের জন্যই পুনরায় ইংরেজি চর্চা শুরু করেছেন। জাপানিদের আমরা ভাল বলেই জানি। কিন্তু ওদের পরিবার গুলোতে ঢুকলে জানা যায় কতো রকমের যে মনোবিকার করা গল্প। ৫/৬ টা বয় ফ্রেন্ড বা গার্ল ফ্রেন্ড থাকা তো স্বাভাবিক ঘটনা। ওরা ফলো করে আমেরিকান সংস্কৃতি।কোন দেশকে গুরুত্ব না দিলেও আমেরিকার সব কিছুতে জাপানি ছেলে মেয়েরা প্রভাবিত হয়। এক হাফ বাঙালি হাফ জাপানি পরিবারের গল্প। মা বাবা ডিভোর্স হয়ে গেছে। সন্তানের সাথে আলাদা করে মা এবং বাবার সাথে যোগাযোগ আছে। কিন্তু মায়ের যেমন বয়ফ্রেন্ড আছে অপর দিকে বাবারও বউ আছে। মেয়ে বছর বছর নতুন নতুন বয় ফ্রেন্ড থাকে। কারও সাথেই জীবন ভাবতে পারে না।
কোন কারনে বাবা শাসন করতে চাইলে বাবাকেই তার জীবনের ভুল গুলোকে হাতিয়ার হিসেবে নেয়।পুলিশের ভয় দেখায়। প্রাচ্য আর প্রাশ্চাত্য দেশে মানুষ যায় স্বপ্নের জীবন রচনা করতে কিন্তু কি পায় জীবন থেকে। সব দেশেই পারিবারিক মূল্যবোধটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সন্তান যেমন বাবা মায়ের সাথে সঠিক আচরন করছে না। তেমনি মা বাবা ও। আবার উল্টা কাহিনী ও শুনেছি এই বাংলাদেশেই কয়েক বছর আগে পঞ্চাশ বছর উপরের বয়সী মায়ের পরকিয়ার লজ্জায় কলেজ পড়ুয়া ছেলে আত্মহত্যা করেছে। আজকাল কিছু মা বাবা ও অতি লোভী। নিজের সুখ এতো বেশি খুজে যে সন্তানের আবেগটা তাদের স্পর্শ করেনা। আর বাড়ে দূরত্ব।
যাইহোক বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ এখনও ভাল আছে।কারন হাজার অভাব অভিযোগেও পারিবারিক মূল্যবোধটুকু টিকে আছে। এখনও ভাল মন্দে মা বাবা সন্তানকে বুকে জড়িয়ে কাঁদে হাসে। আবার সন্তানরা ও ভুল করার আগে কিংবা সফলতায় বাবা মায়ের মুখটাই মনে করে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫৯