somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘কাম অন বেবি লাইট মাই ফায়ার...’পুরোনো কবিতা'রা

১২ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



‘কাম অন বেবি লাইট মাই ফায়ার...’


কল্পনার পরাগরেণু গুলো শ্রুতিগোচর বিভ্রমগুলোর স্বপ্নমাখা লম্ব-অভিক্ষেপ হয়ে দালানের চাদোয়ায় বদ্ধভ্রান্তি সমাবেশে মিলিত হয় । সবুজ দেবীর হাতছানি অবিচলিত চোখের পাতায় । ইন্ট্রোভার্ট বক্রনাসিকের কুঠিরে ছাইরঙা মেঘগুলো ঘনীভুত হয় যেভাবে অনিষিক্ত ডিম্বাণুর ক্লিভেজ গুলো ফুরিয়ার রুপান্তরে ইন্ট্রিগ্রেটেড শুঁয়োপোকার জন্ম দেয়, শস্যাগারে আধারের রংয়ে আলোকিত পতঙ্গ গুলো উৎসবে মেতে উঠলে প্রভাতের রাগের সাথে বিদ্রোহ করে আলম্বিত চোখে, জেগে উঠে ক্যাফেইন গ্রস্থ জীয়ন্ত লাশ....

শুধুমাত্র দ্বিপ্রহর রজনীতে,
জলধনিয়া আর বড়নখার ফুল গুলো পুষ্পকোমল আঁধারে নিশীথ সূর্যের কাছে রুপোর সওদায় ব্যস্ত হলে ঝিঁঝি পোকা গুলো আর্তনাদে চিৎকার করে বলে

‘কাম অন বেবি লাইট মাই ফায়ার...
গিভ মি সাম সুগার, বেইবি...
গিভ মি সাম সুগার’


----------------------------





চাঁদ ও মেঘ

আকাশে মেঘের ব্যারিকেড
চাঁদ ও মেঘের আলোছায়ার পৃথিবী এক অধিবাস্তব ফ্রেম
বিরহিক ছন্দে ভেসে বেড়ায় ভবঘুরে সে মেঘ
যেন বিভুতিভুষনের কাশবনে স্মৃতির আনাগোনা
হাতে দুই পেগ, এক পেগ জ্যোৎস্না, আর এক পেগ আধাঁর ।

মেঘের ঝাঁপি ফেরি করে বাতাস
সাদা ডানার চিল যেন সুতা কাঁটা ঘুড়ি
চক্রাকারে ঘুরে খুঁজে ফিরে আবাস;
মেঘ যেন খামে বন্দি বিবাগী স্বপ্ন বা সাদা মোম
সে স্বপ্নের শীর্ন দেহে হৃদয় নিংরানো আবেগ ।

মাঝে মাঝে ছড়ায় মেঘ হেমলক বিষ
চাঁদের শুভ্র শরীরে
মেঘ যেন ঘাতক, আর চাঁদ মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী
যে হেমলক মিশেছিল সক্রেটিস রক্তে
তবে কি কালোর মাঝেই আলোর সৌন্দর্য?

দুঃখের জলকনা শ্লথ মেঘ গুলো কালো
যেন বাধা পড়েছে তার মাঝে অনৈশ্বরিক কোন আলো
গুমোট বাধা মেঘের আকাশে ধুসর অনুভূমিক কুয়াশা
জল জমে মেঘ হয়েছে স্ফটিক,
বৃষ্টি নেই, আছে শুধুই হতাসা ।

চন্দ্রগ্রস্থ ঐশ্বরিক মহাজনের ইচ্ছার মনোপলি
অপাংক্তেয় আমি চলেছি নির্ঘুম
সারাটা পথ নিজ্জঝুম,
সাদা মেঘের জল শুষে নিয়েছে আমার চোখ
হাতে জ্বলন্ত সিগারেট আর এক পেগ স্মৃতি ।




======








========





চাঁদ পুড়ে যায় মেঘপাখির সুরে

মেঘপাখির ডানায় আনন্দ সুর
উদার আকাশ গুমোট বুকের
রাত্রি-দেয়াল বেয়ে আসে আঁধার
জোনাকির কফিনে, বেশ নিয়ে আঙুরলতার

নিঃসীম নীল দুঃখ সাগরে
ঢেঊ আছড়ে পড়ে চোখের পাতায়
বেদনার ভেলা ভেষে যায়
আঁকা-বাঁকা তিক্ত রুধির স্রোতে

সাগরদেহে বেগ আসে
আশ্বিন-ঝড় রোদনে
শিরায় শিরায় রক্তের হাঁক
নীরদের গর্জণে

অচিনপুরের বাঁকা চাঁদ পুড়ে যায়
রক্তে কাঁপন লাগে নীল বেদনার বিষবাষ্পে
ক্লান্ত নীল ঝুমকো লতা
নিশ্চুপ নিশুতি রাতে

ভিজে চোখ সাগর জলে
মেঘপাখির মাতাল সুরে
নির্ঘুম কোনো ভোর প্রহরে
চার দেয়ালের বদ্ধ ঘরে


=========





পিয়াজ


পাতায় পাতায় গড়ে উঠা সৌন্দর্য়াধার
স্নিগ্ধোজ্জ্বল পেয়ালা যেন চোরাকুঠুরি নেশার,
পান করে আঁধার দুনিয়ার খনিজ প্রস্রবণ
বিশ্ব-বাতায়নে তোমার সদর্প আরোহন,

খ্যাপাটে বারুদের ঝাঁঝালো রসায়ন
মোটা ফাঁদের চালুনিতে ষড়যন্ত্রের রুপায়ন,
প্রতিটি পাপড়ির পরতে পরতে
গলদশ্রুলোচনে বিলাপ করে উঠে নয়ন,
চোরাগোপ্তা হামলায় ঝরে পড়ে
আঁধা কিউবিক সেমি অশ্রুজল

রন্ধন একটি অতীব বেদনাদায়ক শিল্প ।




=====



মেলাঙ্কোলিয়া

ক্রমক্ষীয়মান সুর্য দিবাবসান ক্ষনে
সান্ধ্য পোশাকে কমলা রঙের বিস্ফোরন ঘটিয়ে
মুখ লুকায় আঁধারের কানাগলিতে !
গগণ সে তো মৌটুসির পার্পলে অরুণ রাঙা কায়া
গোধুলীতে প্রলম্বিত হয় কৃষ্ণধূসর ছায়া!!

আঁধারের সুঘ্রানে মধুকরের মতো আকৃষ্ট হয়-
রুপালী আভার ইঙ্কপটে ডুব দিয়ে
মাসকাবারি মেলাঙ্কোলিয়া পানে ব্যস্ত চাঁদ,
বাগেশ্রী রাগের বিষাদী স্বর লহরী
কালো পাহাড় হয়ে গেথে যায় চাঁদের হৃদয়ে!!



====



রসুন জীবন

ভবঘুরে পাংশু বিরস বদন
নীরস রসুনের যাপিত জীবন ।
নূতনের কেতন ওড়ায় পাষান সমীরণ
চৈত্রের শেষ বিকেলে অস্তগামী আজ সূর্য কিরণ,
উষর ভুচরে বৃষ্টির জন্য
ব্যাঙের কীর্তন ।

ইদানিং সন্ধ্যাকালীন জোনাকিরাও জ্বালেনা
মাসকাবারী জোছনা নিশান ।

=====

পঙ্কিত অহোরাত্রি

দৃষ্টি সম্মুখে প্রসারিত করে দেখি মিথ্যের বেসাতী
লাল বাতির শহরে কপট ছলনায় কাজলকাল সমাধী ।

দ্বিধার বসতে আলেয়ার বর্ণচ্ছটায় টলমল শুঁয়োপোকা
কালস্রোতের সময়-রেখায় নুয়ে পড়ে চন্দ্র তিথির বিজয় গাথা
পাপের পঙ্কে ডুবসাতাঁরে অস্তিত্বের ক্ষয়,
যেখানে,
শেওলায় ঢাকা কলমি লতার সলিল সমাধি রয় ।

অনুভুতি শুন্য রুদ্ধ জোয়ার ত্রিমাত্রিক অহোরাত্রি
ফ্যাকাশে চাঁদের ক্যালোরিহীন আলোতে ছড়িয়ে পড়ে
অভিশাপ অভিব্যক্তি ।


=========


একদিন


একদিন অচীন কষ্টের ঝিঁঝি পোকার নিস্বাদে
সৃষ্টি হয় জীবনানন্দ!!
একদিন সবুজ পাতার ভরকেন্দ্রে
পড়ে থেকে গুটিপোকার লাস!!

একদিন পতঙ্গভুক ভীমরাজ
গিলে ফেলে নীল প্রজাপতি!!
একদিন ঘুমভাঙ্গানিয়া ঊর্ধ্বচারীর কলতানে
উদিত হয় নতুন সকাল!!

একদিন কেঁদে উঠে সিয়েরা মায়েস্ত্র পর্বত
স্বপ্নের তীরধানে
একদিন বেঁচে উঠে ভালবাসা,
ঝরে আকাঙ্খিত বৃষ্টি উর্ধ্বপাতিত স্বপ্নে!

একদিন ভাঙনপিয়াসী নদীর তান্ডবে চলে
ছলনার পাশা খেলা অর্হনিশ!
একদিন ডাহুকের রক্তউত্তাপে
জীবনের আলোড়ন!

একদিন শ্রমিক টিয়া গুলো
নিউমার্কেটের সামনে বসে বলে নক্ষত্রের কথা !!
একদিন বেওয়ারিশ ভাবনায় জুড়ে বসে ওফেলিয়া,
নৈরাশ্যের ব্যাথা!!

একদিন 'আমি ক্লান্ত প্রাণ এক'
খুজে ফিরি নিশুথির বনলতা সেন!!
একদিন একবিন্ধু আলোক জোনাকি
রাত্রির পেয়ালায় চেয়ে আছে নিদ্রাহীন!!

========


ভোগ দাবানল


প্রবৃত্তির অনূরোধে সপিছে কায়মন
জল পিপাসায় মত্ত মীনের তনূমন
কেলিয়া অতনূ প্রেমের প্রবাহে
বাসন্তি চন্দ্রিমা মিশিছে অভয়ারন্যে
আরক্ত প্রভাতের শিশিরের সলিলে
হৃদয় স্পন্দন অস্তমিত বশীভূত তিমিরে
শ্বাপদের দংশনে সায়াহ্নে ইন্দ্র
ভোগ দাবানলে মর্মবন লাঞ্চিত ।



কবির স্বপ্ন

সাদা-কাল-লাল-নীল কত স্বপ্ন দেখি দিন-রাত
কবিতার স্বপ্ন, কবিতার অমরত্বের স্বপ্ন ।

শব্দ ও নৈঃশব্দের আলো-আধাঁরিতে স্বপ্ন দেখি,
আধো-আলোছায়ার পডন্ত বিকালে স্বপ্ন দেখি
স্বপ্ন দেখি সঙ্গীহীন গাঙচিলের একাকিত্বে ।

গভির কালো রাতে
এক আকাশ তারার মেলার নিঃসীমতায় স্বপ্ন দেখি ।
চাঁদের আলোর কার্নিশে
কবিতার ছন্দ আর অন্তমিলের স্বপ্ন দেখি ।
ধুলো পড়া রাজপথে শব্দহীন অনুচ্চারে স্বপ্ন দেখি ।
স্বপ্ন দেখি কালোয় কালোয় মিলে যাওয়া কবিতার অনন্ত স্বর্গের চারনভুমিতে।

চাঁদের বৈধব্য বাড়ে
ইতিহাসের চিহ্ন মুছে যায়
বনলতাসেন-বিষাদ বা সুনীলের নীরার অশ্রুজলে ।

“ক্লান্ত প্রান এক” কবি আজ বিমুর্ত
কবিতার স্বপ্ন, শ্রাবস্তীর কারুকার্জময় মুখের স্বপ্ন
প্রিয়তমার একটি কবিতা আকার স্বপ্ন
নীলঞ্জনার নীল চোখে স্বপ্ন দেখি
আর দ্বান্দিক ভাবনায় থাকি বিচলিত ।

কবিদের স্বপ্নই কি শুধু অলৌকিক হয়, নাকি স্বপ্ন সবসময়ই অলৌকিক?
বনলতার ঠোটের স্পর্ষ না পেয়ে খুজে বেড়ায় অবাঞ্চিত, অপভ্রংশ বিশেষন ।

কবিতা হয়েও যায় শতশত দুঃখসিক্ত টিশুপেপার
জলন্ত কুপে পডে থকে কবিতার ছাই, বিস্মরনের নদীতে কর্কশ শব্দ ।

কবিদের স্বপ্নই কি শুধু নিঃস্বপ্ন হয়ে যায়?
নিস্তব্দতার ক্যানভাসে উড়ায় কাল প্রজাপতি মন ।
কবিরা কি শুধুই ধুপদানীর ধুপ ?
নাকি শুধু ব্যর্থরাই কবি হয়?



=======







সংকটের ব্যাকরণ

বধীর অস্ত্রাঘাতে বিপর্যস্ত যান্ত্রিক সমাজ
লাশের গন্ধে জমাট পৃথিবীর নিঃশ্বাস
বর্বরের তুলিতে আঁকা জার্মান হলোকাস্ট
বাস্তবতার মরিচিকার নান্দনিক অভিষাপ
জন্মান্ধ সভ্যতার কাঁটাতারের আচ্ছাদনে
সংকটাচ্ছন্ন বস্তুবিশ্বের অবয়ব ।

দোদুল্যমান অনূভুতির নিরব আবহে
বিউগলের করুন সুরের মাতম
ভার্চূয়াল অনুভুতির বিরাণভূমিতে
আত্মিক মুদ্রার বিষন্ন প্রুক্ষেপণ ।
চিন্তার প্রচ্ছদে রংয়ের বাহুল্য
ভিতরটা অন্তসারশূন্য, নির্লপ্ত
শৃঙ্খলের বেড়াজালে অনূভুতির ব্যাকরণ
দিব্যজ্ঞানের ফানুস বর্নহীন, ক্ষীয়মাণ ।



============




হাতপাখার দায়শোধ


স্থিতিশক্তি আয়তনের পরিবর্তন প্রতিরোধে ব্যর্থ,
মোমের অস্থির অগ্নি স্ফুরণ জন্মদেয় উদ্বায়ী বিন্দু-বাষ্প ।
সেই জ্যৈষ্ঠের কাঠফাটা দুপুরে হাতপাখা-বাতাস
যেন বসন্তাকাশে প্রভাতালোর পরশ-আভাস ।

দায়শোধের সোনালী সানসেট আর সুদুরেই নক্ষত্র-বিলাস
প্রভাতী পাখির গানে আবির্ভুত নব অংশুমালী
বকুলের সুবাসের ঘ্রানসুর জাগায় পূর্ণতা, নয় কোন কিংবদন্তী,
জ্যোৎস্না ভাস্বর চন্দ্রানন সে ও তো কলঙ্কিনী

=======



মৃত্যু-৩


পেট্রোলের মেঘ বুনে গন্ধকের সুতো,
সেলাইয়ের ভাঁজে ভাঁজে মৃত্যুর গলিপথ,
প্যারাট্রুপারের বেশে মৃত্যু নামে
বরফের মত স্ফটিক আঁধারের এই জনপদে ।
খরাদাহ দুপুরের বুক চিরে সীসার বুলেট ।
খাদ্যভাবে ভোগা ইদুরের চোখগুলো শিশির ভেজা ঘুমন্তফুল ।
মৃত্যু মেঘ আবর্তন করে মানবিক গ্রিনরুমের হাওয়াকলের পাখায় ।
বাতাসের সাথে বর্জ্রনির্ঘোষের তির্যক সংঘাত শেষে
হাড়ের শহরে আসে ঘোড়সওয়ারী ।
মৃতগোলাপের এই শহরে মাটির পাঁজর ফুঁড়ে
অরফানেজ খুঁজে নেয় একটি মৃত্যু ।

=============


স্ট্রিট ল্যাম্প

রাতের শহরে তারা দাড়িয়ে থাকে সারিবদ্ধভাবে একাকি, সারারাত আলোকিত রাখে রাতের এই মেট্রোপলিস, জ্বলজ্বল করে জেগে থাকে তারাদের পানে চেয়ে থেকে, আধো-আধাঁর ফুঁড়ে দাড়িয়ে থাকে ছায়ামুর্তির মত, তারা আধাঁরের গলিপথে জ্বালে
বিস্মরণের আলো ।

তবে তারা নয় তারাদের মত অবিন্যস্ত,তারা দাড়িয়ে থাকে অজশ্র অব্যক্ততা নিয়ে, না বলা অনেক কথার, গল্পের সাক্ষি হয়ে । তারা শুনতে পারে বৃক্ষশাখাদের কেঁপেকেঁপে ঊঠা কিংবা নুয়ে পড়ার দ্বিধাগ্রস্থতা; ডোরাকাটা মার্জার জোড়ার অসন্তোসের হিসহিস; বুঝতে পারে প্রেমিকার সাথে প্রেমিকের খুনশুটিগুলোকে, দেখে যায় আমাদের ব্যস্ততার রোজনামচা, তাদের ভাবনার হাইওয়েতে রাশ আওয়ার চলে সারারাত ।

আমরা এমন আরো অনেক কথাই জানতাম যদি তারা মুখর হয়ে উঠতো, বলতো সেই সব কথা ।


=======



অজশ্র আলোকবর্শায় বিদ্ধ আমাদের সৌরগ্রাম,
সূর্যসরণীতে সোল্লাসে ছুটে আলোর ক্যারাভান,
ধুমকেতুর তীক্ষ্ণতায় ছুটে নৈশব্দ্যের কার্নিভালে ।
হিমরোদের ভিতর বৈঠা চালিয়ে জলজ অন্ধকারে
ঢুকে পড়ে একটা উজ্জ্বল মাছ, নির্মেঘ দুরবীণে
তার আলোক নৃত্যের সাড়া মেলে ।

হর্ষ এক অরুপ কসমিক পাখি, সে আমার কাছে
ফিরে ফিরে আসে অপরুপ গোধুলীর মায়ায় ।

=====



বাংকারগুলো গ্রেনেড চার্যে ধ্বংসস্তূপে পরিনত হলেও
শুনেছি সেখানে ঈশ্বরের উপনিবেশন চিরস্থায়ী
অথচ
মৃত শিশুটির চোখে দেখেছি বিদ্রুপের দগ্ধাবশেষ
কিংবা
বিপ্লবী বনমোরগের বাজপাখীর শ্যেন দৃষ্টিতে কেঁপে উঠা ।




=================


==============



ছায়া

সুর্যের বিপরীতে বৃষ্টিবিরল শুন্যতায়
দেয়াল বিস্তৃত কৃষ্ণধূসর ছায়াচ্ছন্নতা,
যেন ললাটে বিস্তৃত অসংযমি তিমিরকুন্তল;
যাপিত জীবনের নির্ভুল অনুকরনে
বেয়াড়া ও অবাধ্য অবয়ব ধারন
যেন বন্ধুত্বের বিশ্বস্ততার অনুসরন;

সুর্যবাতি ঢেকে যায় সাঁঝের মায়ায়
লাল গালিচাপথে আঁধারের আগমনে
ছায়াশরীর নুয়ে আসে, ক্রমেই মিলিয়ে যায়
দ্বিধা জড়িত নিথর অবসাদে

হারিয়ে যায় ছড়িয়ে শুন্যতার মৌতাত
আর আমি ঘরমুখী মানুষের ভীড়ে
একাকি দাড়িয়ে থাকি ল্যাম্পপোষ্টের মত
ম্রিয়মান আলো-আধাঁরীর স্তব্ধতায় ।



===================



কামনা রেখা


যখন ছায়াপথের বেদীতে নক্ষত্রের অর্ঘ্য নিবেদন করে
চাঁদের ইজারা নিয়েছে রাত,
তখন রাস্তায় বাতাসের রং ছিল নিরেট হলুদ ।

অন্ননালী বেয়ে উঠে এসে মুখের গহবরে
বিবমিষার সঞ্চারপথে বিস্তৃত কামনা রেখা,
মগজের জ্বালানী পুড়িয়ে
বেয়ারা চোখে জ্বলে ধুমকেতুর শিখা,
পিউকাহার দু-চোখের হলুদ সুর্যস্তে বেয়ে
নেমে এসেছে দু-ফোঁটা কালো রাত,
নিশুতির চাদরে মোড়া নভোলোকের সীমানায়
তারকারাজীর বর্নীল মৌতাত ।

একটি মোমবাতি তখনি, আপত্তিকরভাবে
আলো ছড়ানোর বাসনায়
নিঃশ্বাসে জোর শব্দে টেনে নেয় বিশুদ্ধ অক্সিজেন ।

সচ্ছ পিয়াজের খোসা আবৃত সভ্য শামুক
আস্তানা গড়ে শিকারির দখলহীন স্বত্বে,
কয়েক আউন্স অহং পুর্নো ভ্যানিটি ব্যাগের মখমল পকেটে ।
অবশ্য, এসব পাপের আবরনে চাঁদের পুর্ন গ্রহনে
কাঁচা হলুদ টিকটিকির সুশীল লেজ খসে পড়ে না ।


=======================

======

সিঁদুরে মেঘ, অলীক প্রজাপতি ও আমাদের প্রেমিকারা

সিঁদুরে মেঘ ভাষে আকাশে, লঘুগ্রামে ঝরছে
ম্যান্ডোলিন বৃষ্টি, বেড়ালের মত নিমীলিত নীল চোখে

নিঃসঙ্গ চোখে অলীক প্রজাপতিরা ভেষে থাকে
বারীবাহে শুধুই জল থইথই ভ্রম অশ্রুতে
চোখের আলোআধাঁরির রঙে ধরাতল সাজে
ব্যাগপাইপের অবসন্ন গুনগুন কুহকের অস্পষ্ট স্বরে

পলকা নিশ্বাসে ফুলমুখো ড্যান্ডিলায়নের জানালায়
হিম ঝড়ে উড়ে যায় সব পুষ্পিকা, অতপর
কুহক প্রেমিকারা আমাদের বাহুতলে লুটিয়ে পড়ে
রৌদ্ররঙিন নীল রুপকথার মত

কবিতার পৃষ্ঠা থেকে উড়ে যায় ডানাহারা মৌটুসি

===============

ঘুনপোকাদের বসতবাড়ি হয়ে উঠেছে
ধুলোমাখা সময়ের হোঁচটপ্রবণ চৌকাঠের ফ্রেম ।
অবিশ্বাসী ঘুনপোকাদের আনাগোনার পদধ্বনি
সময়ের দেয়ালে স্পন্দিত হয়,
চৌকাঠের জ্যামিতিতে সৃষ্টি হয় বিধ্বংসী অনুনাদ ।
ঘুনপোকাদের উৎসবঘরে চৌকাঠের অস্থীমজ্জ্বা
ক্রমশ হয়ে উঠছে সেলুলোজবিহীন ।

=============




সিগারেট

জ্বলছে সিগারেট
দূর থেকে কাছে আসে ভিতরটা পুড়িয়ে
আরও কাছে নিবিড় হয় নিজের অস্তিত্ব বিলিয়ে ।
মোহাচ্ছন্ন ধোয়ার স্বপ্নীল সম্মোহনে
ছড়িয়ে যায় প্রশ্বাসে বুকের মাঝে ।

জাগিয়ে তোলে নিরব নিথর মগজ
ধুম্রজাল দৃষ্টিকে করে ঝাপসা, শ্বাসনালী দেয় ধাক্কা,
ফুসফুসীয় ধমনীর বাষ্পস্নান, শোষন ও শোধন
বাকিটা ছড়িয়ে যায় স্বপ্নের বেলকুনী বা নিয়ন আলোর রাজপথে ।

কিছুটা কায়দায় ছড়িয়ে পড়ে গোল রিং হয়ে,
আর বাকিটা, অজানায় যায় চলে
ফেরিওয়ালা বাতাসের সাথে ।

কিছুটা নিঃসঙ্গতায় ছড়ায় নৈশাব্দিক রোমান্টিসিজম
স্বপ্নের নীহারিকা পথে তারাদের হাতছানিতে
কিছুটা বাড়িয়ে দেয় বিক্ষত স্মৃতির দুঃসহ অতীত
চন্দ্রাহত মনের মহাশূন্যের ছায়াপথে ।

লাস্টটান দিয়ে ফেলা বেনসন
এস্ট্রেতে নিয়ে আনে নতুন দর্শন
এরপর গুনতে থাকে ঘড়ির সেকেন্ডের কাঁটার নিশ্বাষ
এপিটাফের দ্বান্দ্বিকতায় ।


বিস্বাদ সরোবর

চিরহরিৎ অরন্যে ক্রন্দসী আকাশ
বর্ষন করে অভিশাপ
তপ্ত বালুর বুকে লুকায় মেঘ
কেঁদে উঠে ক্যাকটাস ।

অনামিশার অভিশাপে
ডুবে গেছে চাঁদ
হতাসা গুলোতে মিশে আছে
লবনাক্ত বিস্বাদ ।

ক্রমশ বাড়ছে নিসঙ্গ তুষারধবল চাদের উদাসীনতা
উষ্ণ লালের মাঝে বাধছে বাসা ছদ্মবেশী শ্বেতকনা ।
শান্তির পায়রা গুলো নিমিশেই মিলিয়ে ইথারের দিগন্তে
কর্পুরের মত ।

সমাজ শরীরে লেপ্টে গেছে
কালপুরুশের উত্তপ্ত ট্যাটু
শরীরের প্রতিটি লোমকুপে
অনুভুত হয় ইবলিসের অস্তিত্ব ।

পাপে পুর্ন মানষ সরবর
হাড়ের দেয়ালে গড়ে উঠে উইঢিবি
সপ্তষীর নির্বাক প্রশ্নের অসূয়া প্রতিযোগ
পৌনপুনিক পাপে ভারি স্খলনের উচ্চতা ।

কেটে ফেলা গাছের বিষন্নতায় চারদিক চুপচাপ
দীর্ঘ হাসি তামাশা শেষে এক গনিকাপল্লীতে নেমে আসে আত্মিক বিপর্যয়
নারী শরীরের সৌন্দর্যের নামই কবিতা
আর পাঠশালার মাঠে আবাদ হয় সবুজ অর্থময়তার ঘাস ।

সবুজ মাকাল ফলের মাঝে পূর্ণবিকশিত রক্তিম ক্ষত
নিজের জালে আটকা পড়ে আঠাল পোকা
লোভী পিপডা পাহারা-কুঠুরির আড়ালে করে আমিষের চোরাচালান
বিরান ভুমিতে শুধুই বিউগলের করুন সুরের মাতম ।

মৃত পিপেড়ার মত চায়ের কাপে
ভেষে উঠে মেইনষ্টিম
ভাষমান নিস্পৃহ পিপড়ার অতন্দ্র অনুভুতি
পড়ে থাকে ইতিহাসের পরাধীন পুতুল হয়ে ।


============



নীলিমাকে


ধুঁয়াধারে মিশে থাকা চোখের পাতায় ঘনঘোর অবসাদ,
করোটিতে আসন পেতে বসে আছে দুধসরে বোনা উদার বনেট,
যেন ভ্যানিলা ফ্লেভারের হিমসরে গাঁথা; বায়ুকোষে এক চিলতে রোদের ঘ্রান ।
দৃশ্যদিগন্তের বুকের মাঝে মখমল পয়োধর, ভেজা ভেজা পেঁজাতুলা,
যুবতী নীলিমার কপালে রংধনুর টিপ, সিথিতে সিঁদুর-সন্ধা ।


==============




একটি প্রবাহ চিত্রকল্প দর্শন

তুষারসফেদ গোরস্থানের সুনসান নিরবতায়
সদর্প পদক্ষেপে সরীসৃপের বেগে
বিষন্নতায় ভোগা কচুরিপানার বিচ্ছিন্নতাবোধে
আলোকলতার আকর্ষির মত বুকে হেঁটে আসে;
কিংবা,
দুপায়ের শীর্ষে নৈঃশব্দ্যের পাঠশালায়
দুরন্ত ব্যালেরিনার মত নির্বিঘ্ন পৃথিবী শাষন ।
অতপর,
বিষাদগ্রস্থ মেঘের কাফনে ঢাকা পড়ে
সাড়ে তিনহাত সুর্যাস্তের জমীন ।

=============








মৃত ঘাসের আর্তচিৎকার


লালকাঁকড়ার ঝোপে সূর্য ডুবে গেলে লোনা মেদের ভাবলেশহীন মাংশ মরে যাওয়া অন্ধকারেই জেগে ওঠে ।

গোলাপ-কাঁটার সুদর্শন ক্যাটারপিলার গোলাপি রডোডেনড্রনের বিভা স্নান করে কোন লুসিফারের সুদৃষ্টিতে কালো প্রজাপতিতে পরিনত হয় । কালো প্রজাপতি পাখা মেলে পোহায় সাইকিক রোদ । সেই হ্যালোজেন রোদের ষাট্‌ ওয়াটের হলুদাভ জোছ্‌নার ব্যপ্ত বলয়ে প্যারাফিন বোধের লড়াই অস্তিত্বের সাথে । আলোর নিচে অন্ধকারের সাজে ইজিচেয়ারে বসে শোনে সে শিয়ালের ডাক । ক্ষরণের কালে গীটারের টোন গুলো দালানের চাঁদোয়ায় প্রতিচ্ছায়া হয়ে প্রতিধ্বনিত হয় । চিলেকোঠার ঘরে জমিয়ে রাখা ক্লোরোফর্মড অচেতনতা গুলো আজও প্রচন্ড শীতার্ত ।

এভাবে কয়েকশত ল্যাম্পপোস্ট পেরিয়ে সোনালী আভার ফাক গলে বৃদ্ধ যাযাবর শোনায় মৃত ঘাসের আর্তচিৎকারের উপাক্ষান ।


================


নীল পঙক্তিমালা


পারদ বাষ্প ফ্লোরোসেন্টের ফসফরাসে আলোতে
বিশ্বস্ত ক্যামেলিয়া যোগান দেয় তেইশ ওয়াট উষ্ণতা ।

শিরায় শিরায় অন্তিম প্রজ্জলনের সম্মোহীত স্পন্দন
নেশাতুর চোখে বাড়তে থাকে অমিয় নীল গরল অবরোধ,
পেরেকে বিদ্ধ কবিতায় সদ্ভোগের ঘামগন্ধে সিনথেটিক জীবনবোধ
ব্যথা উপসমের মরফিন নেশায় জাগে হ্যারিকেন সমন ।

ইঁদুরের ছেদন দাঁত ব্যস্ত অন্তহীন রাতের ভোজে
বেবুন শরীরের চিলেকোঠায় উত্তেজনার পারদ বাড়ে
বাতাসের ভাঁজে অভিসারী সর্মপণ শীৎকারে
বিষন্ন মেদে রচিত হয় নীল পান্ডুলিপি, নাভির ভরকেন্দ্র আঁধারে ।

চন্দ্রশেখর সীমায় শীতল শ্বেত বামন
ভর বাড়িয়ে জন্ম দেয় অপজাত কৃষ্ণবিবর,
শুষে নেয় অধরে আলোক নির্যাস, অবক্ষয়িত রুপান্তর
গূঢ়মার্গে অনুরণিত হয় শতরুপা পৃথিবীর রুপাবরণ ।

আলো-ঝলমল রৌদ্র সকালে দাবানলের অনলপ্রভ,
আর ক্রয় জাবেদায় ইতিহাস হয় আহ্নিক গতির কিলোওয়াট-ঘণ্টা ।


আঁধারে-বিষন্ন স্বপ্নের ছন্দ পতনের শব্দমালা

আমি আঁধার দেখেছি
হয়ত কালস্রোত রচনা করেছিল মুদ্রাকর-প্রমাদ
অথবা বাষ্পে ঘনীভূত ঝাপসা বিষাদবাতিক;
নির্জল গদ্যে হারিয়ে যাওয়া ছন্দ,
শরীরের প্রতিটি লোমকুপে আজ ইবলিসের অস্তিত্ব
আঁধার দেখেছি পুজীবাদি ইন্দ্রজালের অনাসৃষ্টিতে
‘দেশ লিমিটেড কোম্পানি’র বিষাক্ত মাকাল মানচিত্রে
দোপেয়ে দৈত্যের ধর্মীয় রণক্ষেতে;
প্রাচুর্যের দৈনতায় ডাষ্টবিনে জমাট টিস্যু পেপারে
বাস্তুহারা কাঁকের সকন্ঠ প্রতিবাদে
আঁধারে ।

আমি আঁধার চিনেছি
মৌনতার সুতায় বন্দী বিমুর্ত রাতে ।
আলো-ছায়ায় অর্ন্তদন্ধ শম্বুক-সদৃশ কবি
ভাবনাহীন সময়ের নিসঙ্গ একাকী জীবনে
শিয়ালের মত খোঁজে মাটি চাপা কৃষ্ণপক্ষীয় লাস
ক্ষুদার্থ অন্ধতমসে কান্নার কোরাস
অথবা রাহুগ্রস্ত নক্ষত্রকে আড়ালকারী
উৎকেন্দ্রিক ও বিষন্ন স্বপ্নের আর্তনাদ
বেঘোর ঘূর্ণিতে ছন্দ পতনের শব্দমালা
নক্ষত্রপিন্ড কক্ষপথ থেকে যেন আছড়ে পড়ে .
তারাগুলো যেন সমুদ্রের নোনা জলে
কোটি আলোক বছরের পোড়া ঘাঁ ধুয়ে পবিত্র হয়,
আঁধারে ।

আমি আঁধার শুনেছি
দুর শহরের আলোতে নৈশ্যপ্রহরীর হুইসালে
বস্তির শিশুর অবিরত কান্নায়
অন্ধকবির নোনাজলের সংলাপে,
বিপ্রতীপ আধারে গত জন্মের পাপে
জীবনের আলো ছায়ায় পুরোনো কাসুন্দি ছক-কাগজে
গণিত বিশারদ উন্মোচন করে ভাগশেষ,
ভুল ব্যাকরণে চেতনার নামক পদার্থের বাষ্পে অবস্থান্তর,
ক্ষূর্দাথকীট ঠাসা দুষিত হৃৎপিন্ড খোজে
অবশ মস্তিষ্কের গাঁজার মহাজন,
আধারে ।




সভ্যতার অনুরণন


বৃক্ষবাকল অথবা পশুচামড়ায় বর্শাধারীর মানবীয় লজ্জা নিবারন
প্রাগৈতিহাসিক রক্তনীল দেহে বাস্তুতন্ত্রের বিচরন ।
ভুলে ভরা পাণ্ডুলিপিতে নিপুন বংশ বৃদ্ধি সভ্যতার,
শেয়ার মার্কেটে, ইউরিনিয়াম বিভাজনে আর মিউনিসিপ্যালটির ট্রাকে ।

কালক্রমে বৃত্তের বাহিরে টানে কেন্দ্রবিমূখী শক্তি
সভ্যতার অনুরণনে কুকুরের আর শুয়োরের নন-ফ্রয়ডিয় ক্লোন,
কালোকাচ আবৃত জাগুয়ারের গতি উড়িয়ে যায় রঙিন ধুলো ।

পাঁচতারা শীতাতপ সভ্যতার ইট-চুন-সুরকির দেহে
আফ্রোদিতির জ্যামিতিতে উল্লাস করে
পুজিবাদী জিয়াসের হায়না ।

প্যান্ডোরাই জন্ম দিয়েছে দোপেয়ে দৈত্য;

আবার জেগে উঠুক আগামেন তনয়া ইলেক্ট্রার ক্রোধ,
ধ্বংস হোক নগর বিশ্বাসঘাতক ।



স্মৃতি-অনুভুতির অনুরণন



দিগন্তে নিমজ্জমান রক্তিম আভায় হাতুড়ে কবি
হাতে জলন্ত সিগারেট, ফুসফুস রঙিন
নিশ্বাসে নেই অম্লজান,
আর পুরনো চাঁদ জাগায় ইচ্ছার কাঁপন ।

মানব সরোবরে অনুভুতির বুদবুদ
তরাঙ্গাকারে ছড়িয়ে পড়ে,
কবিতায় অনুভুতির অনুরণন
আলো ছায়ার অধিবাস্তব ফ্রেমে ।

দৃষ্টিসীমার দিগন্তে নীলাভ্র অলক মেঘ
জোয়ারভাটা লাগাম টেনে ধরে জীবনের
ভুলগুলো সব উপলে খোদিত বিলাসবহুল বৈশিষ্ট্যরেখা
তোমাদের কাছে হয়ত তা রাতের প্রমোদাললয়ে
লবনের মত পানিতেই গলে যাওয়া ।

সাইনবোর্ড দেয়ালে ভেজা পোষ্টার
ঘুমহীন চোখে জেগে থাকে ল্যাম্পোষ্ট,
নাস্তিকের সমালোচনায় অথবা আস্তিকের ভাবলেসহীনতায় ।

রাজপথ চোরাস্তায় মুঠোফোনে প্রেটোনিক ভালবাসা
তারার আলোর সেতুতে কবি খোঁজে
অদ্ভুত আলোর সবুজ মেঘ অরোরা ।

পৌরাণিক স্মৃতি-উদ্রেককারী পবন অস্পর্ষী ভ্রমর
মিসকলে মোর্স কোডের ছন্দিত রুপান্তর
রঙিণ বাতাবরণে কবিতা আকে দুষ্টুমিভরা প্রয়াস
হাতড়ে খুজছে পথ, হয়ত তারে পুতুল নাচছে
উপরিতলের নিচের পৃথিবী ঘুরছে, কেঊ কি পাচ্ছ শুনতে?


ঘাতক কাঁটা

মায়াবী পর্দায় দুলে ওঠে কালের কলস, লোক
লোকান্তরের আরব্য রজণী শঙ্কিলতায় আচ্ছন্ন;
উত্তরীয় সমীরনের অট্টহাস্যের নাট্যলীলায় প্রলয়ের হুঙ্কার,
অনাসৃষ্টির বৃত্তে আবৃত মেঘছায়া তলের সর্প্তষী
সময়ের নিয়ত সংকোচনে বিমূঢ, সায়াহ্নের আধাঁরে
কালের অদৃষ্ট চক্র; বিস্বাদ যামীনিতে শুধুই মর্সিয়ার হাহাকার ।

জয়নূলের ক্যানভাসে পচাঁ লাশের পাশে উন্মক্ত শকুন,
জ্যামিতিতে আঘাত হেনেছে ধ্বংস কাব্যের মরুপশু;
বখতিয়ারের ঘোড়ার প্রতণূ প্রতাশার ভাগাড়ে
ছোবল মারছে নগর শকুন, আরধ্য স্বাধীনতার
সশস্ত্র সৌন্দর্যের বেদীতে তিমিরের উৎসব,
শব্দ গেরিলাদের স্মৃতি বাতাসে উন্মুক্ত সোডিয়াম;
বন্দী শিবিরে পানকৌড়ির রক্তের পাশে কোকিলের
কাল ছদ্মবেশ, রক্তাত্ত প্রান্তরে গলা টিপে মেরেফেলা
কথার শ্মশানে শিয়াল খোজেঁ লাশ, সোনার তরীর
সিন্ধুহিন্দোলের বিষের বাঁশিতে প্রলয় শিখা, ঠাকুমার
ঝুলির রৌদ্র করোটিতে বিধ্বস্ত নীলিমা, সাঁঝের
মায়ার আশার বসতিতে বিস্রস্ত পান্ডুলিপি;
চুপটি করে খামছে ধরেছে ঘাতক কাঁটা ।




ভালবাসা ও বন্ধূত্ব

বন্ধুত্বের সোনালী আভায় গ্রহন লাগে
সৃষ্টি হয় অনাসৃষ্টি্র বৃত্ত
মিশিয়ে দিলে তাহার সাথে
ভালবাসা নামক ধূমায়িত হ্লুদ রাজঅম্ল ।

নোনাজল হয়ে নেমে আসে
সেই অসমসত্ব মিশ্রন
হৃদপিন্ডের বাস্তুভিতায়
নাগরিক সন্নাসীর নীল রক্তক্ষরন ।



অনুকাব্য

কন্সপিরেসি

ইদুর মিলেছে শকুণের সাথে,
করেছে শষ্য ক্ষয়;
লাল পিপঁড়া উৎসব করে,
উইপোকাও উদ্ধত হয় ।

রং

বৃক্ষের ফুলে থাকে গন্ধ, পাতায় তিক্ততা
প্রাচুর্যে আছে চিত্তের দৈনতা;
বিভিন্নতায় আছে বৈচিত্র, আর
বহুত্বের মাঝে আছে একত্বের দর্ষন ।

ভপঞ্জর

খোলা হাতের তালু, উরবর জমিন
পূর্নচাঁদের জ্যোৎস্নামন্ডিত অমলিন
ধরতে গেলে সেই উরবর জ্যোৎস্নার কূহেলিকা
নেমে আসে কৃষ্ণপক্ষের শেষ তিথির অনামিশা ।




একটি জলজ কবিতা


জল্ করের প্রসাদপুষ্ট পারাবার
তেজ কটালের বাণে আনে পুর্ণ জোয়ার
ঘূর্নী জলস্তম্ভের, জলাবর্ত তরঙ্গের
নিষ্ঠুর আনন্দবিহার লবনাক্ত বরুনার
জল মগ্ন বিভৎস আলপনা জলছবির
জল আনে চোখে জলপিপির ।

গহীন জলজ আধাঁর
সে আধাঁর বড়ই সামুদ্রিক
নিঃশ্বাস নেয় অভিষাপের লোনাগন্ধ
জলকল্লোল জন্ম দেয় জলবিম্ব
জল বিম্ব সৃষ্টি করে জলভ্রম
জল ভ্রমে নাবিক করে জ্যামিতিক ভুল ।


পারভার্টের মোহময় স্বেচ্ছাচারিতা

অসুরক্ষিত আত্মার অবশিষ্ট্যাংশ শরীর এলিয়ে দেয় পান্থনিবাসে
জ্যোৎস্নালোকিত প্রণয়ের প্রগাঢ়ত্বে আমি বন্দী হই দাসত্বে
আরো বেশি করে অনুধাবন করি বুকে হেঁটে চলে
মৃদু স্বরে বলে যাই প্রেমঘন শ্লোক, পাতার মত মর্মরিত হয়ে
মুখর বসন্তের শ্রাবনী আবেগ বাস্পের ফিনকি প্ররোচিত করে ইন্দ্রিয়চেতনাকে
বিদ্যুত-চমকের জ্বলনাংক অভব্য প্রতিরূপকে সঞ্জীবিত করে তোলে উচ্চরবে
মেনকার স্বর্গ আর বিশ্বামিত্রের তপস্যায় লোমকুপের রন্ধ্রে শকুন্তলার অনুভব ।

তীব্র যন্ত্রণা দায়ক নিষিদ্ধ অঙ্গাবরণ ক্রমে হয় উন্মোচন
শৃঙ্গে ভোরের অরূপরতন শিশির ফোঁটার সর্পিল দীর্ঘসূত্রতা
বরফের খাড়া ঢাল বেয়ে পিছলে নেমে আসে মহাকালের অতল গহ্বরে
মনের মধ্যে আসুরিক বীজ বপন করি বিস্ফোরিত ভুলে
কর্পূরের আরকে মাতাল হয় অন্তরত্মা বিছুটি পাতার উন্মক্ততায়
আমিষভুক পারভার্টের স্বেচ্ছাচারিতায় ।


বাংলাদেশ


দরজার দিকে প্রবাহিত নির্ঝরীনি শাখা ধারাবাহী
দৈত্যের বুটের ছাপ আর মাঝে মাঝে করোটি;
সিক্স সুটারে দুমড়ানো বুদ্ধিগুলো হয়ে গেছে প্রেটনিক
তীরে স্ফুলিঙ্গের শীতলীকৃত কালো ফোঁটা
ডান ঝাপটানো লাল মুনিয়ার পদ সঞ্চালনে স্খলিত পান্নার রং;
মাটির পিঁঞ্জর ভেদ করে চলে চলে গিয়েছিল ধাতব ক্যাপসুল
স্রোতে নিমজ্জিত গাল আর তরল আগুনে ভিজে যাওয়া চুল;
হয়ত শেষবারের মত উচ্চারন করেছিল
“রাত পোহাবার কত দেরী পাঞ্জেরী” ।

অতপর
......
.....

অতপর

নৃতাত্বিক বিবর্তনের গনতান্ত্রিক দেশ
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ ।


------------

মাস্কিঊরেড-একটি অনৈতিহাসিক উৎসব







দ্যুতিময় মুখমণ্ডলের অভিব্যক্তিতে রশ্মি বিকিরণ,
ছদ্মরূপ পরিধানে সূর্যের উল্টোদিকে গ্রহের শঙ্কুরমত ছায়াচ্ছন্নতার আলোছায়া ।
ইন্দ্রনীলমনির বুদ্ধিদীপ্ত শ্যামল চোখ
ঊর্বস্থিতে ময়ূরকন্ঠী নীলের মলাট
অভিশাপরূপী আশীর্বাদ, অন্বয়শ্রিত নির্বাক অভিনয়;
বিলাসী চঞ্চল চপলার তীক্ষ্ণ চোখের চাবুক
মৌটুসির মত মুক্তোদানার অরুণলোচন
রক্তচন্দন অধর যেন লাল মুনিয়া, লোহিতকণায় সৃষ্টি করে আন্দোলন
গভীরভাবে অনুধাবনে কবি মুক অভিনয়ে মুগ্ধ ।

ডাকিনীর বাঁকা চাউনি যেন কাচ কাটা হীরা
যেন প্রভাতের প্রথম আলোকচ্ছটার শুভ্রবর্ণ সুগন্ধি গোলাপ
কামোদ্দীপনায় লুকোচুরি খেলে রক্তচোষার লালসা ।

নাগরদোলা নিষ্ঠুর কুমোরের চাকার মত গড়িয়ে যায়
গির্জার আসনশ্রেণীর মাঝপথ ধরে আবর্তন করে কাহিনীবৃত্তে
কোন যতিপ্রান্তহীন কালচক্রে অনুভূতিশূন্য প্রাগৈতিহাসিক প্রতিযোগিতায় ।

নিরেট কাচে আলোর অবপতনের অবিরত উত্তেজনা
আকুতির অনুরণনে মিথ্যে সমীকরন
নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধে লুকোচুরি খেলা,
গ্রানাইট পাথরে খদিত থাকে শত্রুর সম্মুখ
হাসিতে ঝরে চন্দ্রকান্ত মণি, বিশ্বাসঘাতকের নির্ভেজাল চিত্তে ।
জাহাজ তুলেছে পাল বাতাসের গতির বিপরীতে
সন্দেহের বৃত্তায়ন, স্বার্থযুক্ত পক্ষে
যদিও জীবাশ্রয়ে এখনো রয়ে গেছে জীবন সুধা ।

ঠোটের বক্রতার এককেন্দ্রিক অপবর্তনীয় প্রকাশে,
আবছা আভাসে স্বতোদহনের উপনিবেশ গড়তে হাতে রাখা তুরুপের তাস ।
সমবেত বিহঙ্গকূজনের শিষ্টাচারহীন শিল্প
জন্মের পাপে আবরনের উন্মোচন চাদের পুর্ন গ্রহনে ।
দীপশক্তির উত্তেজনায়, ল্যাভেণ্ডারের নির্যাসের সুগন্ধি
আলোকিত অন্তরত্মায় দিব্য আলোকবলয় ।
ভাগ্য গড়ে বন্ধুত্ব, সুরমূর্ছনায় একাঙ্ক নাটকের সমাপ্তি ,
আচ্ছন্ন বোধের রাত্রি গাঢ হয়
লিপস্টিকের ফিকে লাল রংয়ে লাজরঞ্জিত গালে পরমোল্লসিত পুণ্যলোক
আর গোরস্থানেই হয় মরা লাসের লুটতরাজ ।

পরিচ্ছদের আবর্তনে পুরোহিতের পরম শ্রদ্ধার অভিবাদন গ্রহন
মোটা সুতার টানে নাচছে পারিপাট্য পুতুল বিবর্ন ক্যানভাসে
ঠিক যেন নিস্তরঙ্গ নির্মলতায় দিব্যলোকে অর্ঘ্যাদি অর্পন
এক মুহূর্তও চোখ ফিরিয়ে দেখেনা সময়
ঊষাদেবী কবিতার উপাখ্যানে আনে সৃষ্টির অবসান
ঘোরতর সম্মোহোনের শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিতে
হয়ত অনুরননের প্রতিধ্বনিতে ক্ষয়ে যায় পুরোনো অশ্রুবিন্দু
মূল সুরের সাথে থেমে আসে বেসুরো কিন্তু সুরেলা ধ্বনিও,
অনৈতিহাসিক উৎসবের পরিসমপ্তিতে ।


---------------------


[ বিঃ দ্রঃ মুখোশ পরিধান করে বা ছদ্মবেশ ধারন করে একদল বা শ্রেনীর মানুষের কোন অনুষ্ঠানে সামাজিক, আধ্যাতিক, রাজনৈতিক বা গোপন সমাবেশ কে Masquerade বলা হয়। সামাজিক উচ্চ মর্যাদাবান মানুষদের জলসা-আমোদ-প্রমোদ-নাচ-গান, সামাজিক পারস্পরিকতা রক্ষা, বিজয়ের আনন্দপ্রকাশের উৎসবও বলা যায় । অংশগ্রহনকারীদের সনাক্ত করা বা চিনতে পারা যায় না । এর আধ্যতিক সাইডটিও বিশেষভাবে উল্লেখ্য । ভ্যাটিকান কার্নিভালের গুরুত্বপুর্ন অংশ ছিল এই মুখোশ পরিধান উৎসব । সুইডেনের রাজা গুস্তাভ III কে এমননি এক Masquerade এ বিশ্বাসঘাতকতা করে হত্যা করা হয় যিনি ছিলেন ললিতকলা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক

কাল্ট জেনারের মুভি আইজ ওয়াইড শাট আমার খুব পছন্দের । আমার সবচেয়ে প্রিয় পরিচালক দ্যা লিজেন্ড স্টানলি কুবরিকের মৃত্যুর পুর্বে এটা তার লাষ্ট মুভি । আমার এই লেখাটির অনুপ্রেরনা আইস ওয়াইড শাট এর Masquerade পার্টি থেকেই এসেছে ।]





=======


বিবর্তন




ঊর্ধস্থিত দক্ষিণবাসী সুখি এক বিহঙ্গপুঙ্গব আলবাট্রস
প্রবাল-প্রাচীরের উপরিতলের অধরোষ্ঠে খোঁজে প্রহেলিকার মোহঘোর,
নিশ্চল বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয় সমুদ্র-কিংবদন্তি
মরুভুমি পেরিয়ে উইলোর পাতায় আঁচর দিয়ে বলে যায়
সবুজবিপ্লব আর অন্তঃসাগরীয় যুদ্ধের ইতিহাস ।
হতে পারে সমুদ্র তীরবর্তী কিংবদন্তির পৌরাণিক কোন ভূখণ্ড অথবা পৃথিবীপৃষ্ঠে,
সুর্য সুরভিত মেঘের নিচে অ্যালবাট্রস উপনিবেশ,
আর মেরুবলয়ে দলবদ্ধ নৃত্যরত দিবাচারীর ফসিল জমে থাকে
হেরোডোটাসের বিস্মৃতিতে, দর্পণে বিম্বিত মানসপটের মোহ বিলাসী স্মৃতি ।

সালোক সংশ্লেষিত হয়ে আমাদের নিষ্পাদিত কাজ লাভ করে সমবিস্তৃতি,
বিশ বাঁও অতলান্তিক জলানূকুলে সমুদ্রেগামী জাহাজ,
খেলাচ্ছলে নাবিকের হাতে বন্দী হয় ভ্রমণসঙ্গী পর্যটক
শাদা ডানা ছড়িয়ে দেয়া সেই বিভ্রান্ত সুন্দর ।
মেঘ সওয়ারি কবির কবিতার পৃষ্ঠাসজ্জায়
মেঘের আর্শিবাদেই সৃষ্টি হয় অপভ্রংষীয় সুনামী
কিংবা পত্রমুকুলের পতন ঘটে গ্রীষ্মের ঝড়ের বিশৃঙ্খল এনট্রপিতে ।

অধরা রংধনুও হারিয়ে যায় সুদূর নীলমায়, দৃষ্টির সীমানায়
পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসে হাজার বছর ধরে জমা শিলাখন্ড
ল্যান্ডস্লাইড়ে ধ্বসে পড়ে মহাকালীক পাথুরে সৌধ
আলো সরিয়ে বাসা বাধে ঘনান্ধকার, অতলস্পর্শী মহাকালীক আধার
মহাকালের অন্তহীন চক্রে বরফের খাড়া ঢাল বেয়ে
পিছলে নেমে আসে, বিলীন হয় প্রতিদিন অপসৃয়মান তারায় ।

বংশপরম্পরায় জীবনের নীলনকশার বিবর্তন, নিরবচ্ছিন্ন অভিযোজন
নিশীথের লীলাভুমিতে প্রতিধ্বনিত হয় শাশ্বত বিপন্নতার আয়োজন
অপেরার নাটকীয়তার সংশয় মেঘে আচ্ছন্ন পথহারা সমীরনের অশরীরী প্রান
অতলস্পর্শী শূন্যতাবোধে জলতরঙ্গের ছন্দায়িত সিম্ফনি ক্রমেই হয় বিলীন ।

কালের স্রোতে বিপরীত বর্গীয় আকর্ষণে সৃষ্টি হয়ছিল উপবৃত্তাকার আবর্তন
আর রাতের আধারে মিটমিট জ্বলেছে জোনাকীর নীলাভ দ্যুতি লুসিফারিন ।
অন্ধকারে বিচ্ছুরিত হীরকের দ্যুতির মত ক্রমবিকাশের বিবর্তন
সূর্যালোকের মহি্মারশ্মি দিয়েছিল অস্তিত্বের শক্তি, আলো-বাতাস-নিসর্গ
উত্তাপে গলেছে বরফ, মহাসমুদ্র পথে বিবর্তনে রহস্যময় প্রাণের স্পন্দন,
বিস্মৃতির অতলে ক্রমেই হয় ম্রিয়মান সেই হিরন্ময় অস্তিত্ব ।








==============




আমি ভাল নাই

মনের জানাল খুলে তৃষিত নয়নে চেয়ে থাকার কিছু নেই;
মেঘ জমে বরফ হয়ে গেছে, রংধনুর সাত রংয়ের আশা নেই;
জোনাকি হারিয়েছে আবাস নিশুতির আধারে, পথিকের কোন পথ নেই ;
রাত হয়ে গেছে অনন্ত, তাই নৈশপ্রহরীর স্বপ্ন দেখার কিছু নেই ।

ধীর-তাল-লয়ে অদৃশ্য হয় সময়, সন্ধার পর্দা নামে গোধুলির লালে,
নদী হারিয়েছে বিশালতা, শুকিয়ে গেছে গভিরতা;
দহনের বিপর্যয়ে বেড়েছে দুরত্বের ব্যবধান, নেই অবুঝ মৌন মুখরতা
তপ্তমরু হয়েছে অশ্রুসিক্ত, মুছে গেছে সব রঙিন স্মৃতি ।

ছিড়ে গেছে পদ্মপাতা, শিশির জমে না আর, ধরে রাখার কিছু নেই
পাশ্চাত্যের নদী বরফ জমে হয়ে গেছে শীতল, হৃদয় বলে কিছু নেই ।
চারিদিকে স্তব্ধতা, ক্ষনিকেই কত কথা, অতিত ফিরে আসার উপায় নেই
কবিতার খাতা সুধই রুপকথা, বাস্তবতার কিছু নেই ।

জলছে ধুপ পুড়ছে হৃদয়, সাদা ক্যানভাসে কাল কালি
চাওয়া, না-পাওয়ার অসম সমীকরনে তোমায় হারিয়েছি আমি ।
বয়ে গেছে অনেক মুহূর্ত নিশুতির আধারে
মেঘে ঢেকে গেছে আধখানা চাঁদ, অলীক কোন উচ্ছাসে ।

বিবেকের বায়বীয়তায় ফুসফুসে ধরেছে পচন, মন বলে কিছু নেই;
ইচ্ছেরা সব উড়ে গেছে ডানা মেলে , তাই পিছু ডাকবনা, পিছু ডাকার কিছু নেই ।
আমি ভাল নাই, ভাল থাকার কিছু নেই
আমি ভাল নাই, ভাল থাকার কিছু নেই ।


ইন্সপিরেশনঃ কথা বলবো না-সঞ্জীব চৌধুরী

ডাউনলোড লিঙ্ক
■■■




বেকারের রাত


আমি এক রাত জাগা পাখি
সারারাত জেগে থাকি, সাথে নিয়ে
অস্থির আঁধারকাল আর নোনা জল ।

রাতের নিস্তব্ধতায় জ্যোৎস্নার কুহেলিকা
রাত্রি গভির হয়
নৈশপ্রহরীর চোখে ঘুম নেমে আসতে চায় ।

নিশ্চুপ রাতের স্বপ্নিল সম্মোহনে
আমার নির্ঘুম চোখ
অস্থিরতায় আর্তনাদ করে সময়ের সংকোচনে ।

অসীম শূন্যতার মরিচীকা রাত জাগা অস্থিরতা
একাকিত্বের যন্ত্রনাতে কেঁপে উঠে অন্তরাত্মা
সম্মোহিত নিশাচর নিশ্বাষের শব্দগুলো বর্নহীন ।

সিগারেটের ধোয়ার আবছা আলো
রাতের নিশাচর নিঃশ্বাস
সুরের মুর্ছনায় আবাস গড়ে অবিশ্বাস ।

রাতজাগা অনীশ্বর তারার দূরবোধ্য উল্লাস
ছায়াপথের ছায়াবাজিতে লুকাচুরি খেলে
শত শতাব্দির চাঁদের আভাষ ।

প্রতিফলিত আলোয় অস্তিত্বের বিস্মরণ
মধ্যরাতের গাজার মহাজন আর
অভিশপ্ত ফাসিকাষ্ঠের পতিতা ইশ্বরহীন ।

প্রচ্ছন্ন আলোর মিথ্যে ছায়ায়
ছুটছি রাতের নিস্তব্ধাতায়
স্বপ্নহারা আমি রাবিশ আটপিয়ায় ।

আমি জেগে থাকি সাথে নিয়ে
বেওয়ারিশ স্বপ্নের জলন্ত পোড়াকাঠ,
সিগারেটের শুন্য প্যাকেট আর
গিটারের ছিন্ন তার ।

স্বপ্নের বেলকূনী নিয়ন আলোর রাজপথে
হেটে চলে যায় বারটেন্ডার
পাশে পড়ে থাকে
ছিন্ন বস্ত্রের ছিন্নমুল আর আমি বেকার ।

■■■



বিবর্ণ ক্যানভাস

চারিদিক অসম্ভব ঝাপসা
হৃদয়ে কষ্টের মাদকতার হতাসা
স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে চিরতরে হারিয়ে বহুদূরে
নীলঞ্জনা তবু বারেবারে পিছু টানে ।

সুখ পাখির হৃদয় পুড়েছে
চেয়ে আছি লাল গোধুলী পানে
ডূবে আছি বিষের কাল জলে
মিশে গেছি অতলের গ্রহনে ।

কিছু আর্তনাদ, ছোট ছোট কিছু দীর্ঘশ্বাস,
দখিনের তপ্ত বায়ুর মত কষ্টের প্রতিটি নিঃশ্বাস
ঝড় এসেছে হৃদয় পুড়েছে
তারাদের মাঝে হারিয়ে গেছে চুপিসারে ।

অন্ধকারে শুন্যতা, অস্পষ্ট নিস্তব্ধতা
মনে বিষন্নতা, কষ্টের ভয়ার্ততা
ভাঙা ডানার অবসন্নতা, ভেজাচোখের নিরবতা ।

ভেসে চলেছি আমি আনমনে
অতীত দিনের স্রোতে,
অন্ধকার হাতছানিতে
উদার নিস্তব্ধতার অজানা শুন্যে ।

অস্তিত্বে মিশে গেছে আঁধার
রাতের আঁধার মনের আধার মিশে একাকার
আবছা কাচেঁর অস্ফুট আলোর ছায়া
বিষন্ন ক্যানভাসে স্মৃতির মায়া
অশ্রু নয়নে তাকিয়ে আকাশে
ফ্যাকাশে চাঁদ হারিয়ে ছিন্ন মেঘের ফাঁকে ।

চাদেঁর আলো নিভে গেছে
ধুসর রাত্রি ক্লান্ত কাল
কষ্টের মহাসাগর হোক আমার
তুমি আজীবন থেকো ভাল ।

=====================


আঠারোর ট্রাজেডি





রকি
পাষাণ হৃদয়ের বয়সে তরুন
মিথ্যার বেসাতীতে তার বসবাস
শহর প্রান্তের সে তরূন সবেমাত্র ছেড়েছে ইস্কুল ।

জীবনযূদ্ধে তাকে জয়ী হতে হবে, তাই
সে যুঝছে তার হাতের ড্যাগারটির মতো;
চাদাঁবাজীই পরিবারে অযাচিত সে যুবকের জীবিকা ।

আঠার বছরের তরূন জীবনের উল্লাসে লড়ছে একা
উল্কার মত অমিত বেগে,
সময় ও সমাজের ঘূনপোকার বিপরীতে ।

মনের জানালায় কাঠগোলাপের হলুদাভায় খেলা করে রোদ
শিরার ভিতর প্রবল উৎসাহে ছুটাছুটি করে
উষ্ণ লাল রংয়ের অব্যক্ত আবেগ , আর
দূষিত হৃদপিন্ডের প্রতিটি স্পন্দনে টাকিলার সম্মোহিত আতোর্নাদ ।

দৈনিক ইচ্ছার মধ্যবিত্ত পাপের মধ্যহ্ন প্রদাহ
শিরার ভিতর কালচে লালের অসূয়া প্রবাহ
অমোচনীয় ক্ষোভের আকাশে উতকেন্দ্রীক স্বপ্নের সমারোহ ।

ছাইরঙা আনূভুমিক কুয়াশার দেশের পায়রার অপেক্ষায়
তৃষ্ণার্ত লাল ডাকবাক্স, রকি;
উষর বারামখানায় আশ্রিতা জ্যোৎস্না-ধোয়া ক্যাকটাসের মত
ব্যস্ত সময় কাটে তার আহরনে সালোকসংশ্লেনী খনিজ ।

বৃস্টিবিরল শূন্যতায় অসীমতটীয় স্বাধীনতা আর
হিলিয়াম শৈত্যের আসমুদ্রহীমাচল বিষাদ যাতনা
বিষাদানল বুকটা পোড়ায় উনুনের আগুনসম ।

মেঘলা পাংশূ আকাশে বেওয়ারিশ ঘূড়ির শূন্যতা
ঘূমহীন ঘরে আটকা পড়ে জীবনের বার্তা
ঘূমহীন সেই শষ্যের ঘরে লাল পিঁপড়ারা শুরু করে উৎসব ।

লাল পিঁপড়ার সমাজ বলল
বিপুল প্রানশক্তির রকি,
আলাস্কার অদ্ভূততম আলো সে
মেঘলূপ্ত অংশূমালীর প্রদীপ্ত যৌবন;
দ্বিগুন উৎসাহের জীবন-আবেগে উদ্ধত তার শির
তারপর,
তারপর,
অদৃশ্য হাতের ঈশারায় স্বপ্নগুলো হয় পরাজিত, বর্নহীন ।

আসলে রকি,
অসহনীয় হতাশায় দীর্ণ বিবর্ন আবেগের ধূলিঝড়
রহস্যের বেড়াজালে আটকে পড়া আঠাল পোকা,
স্বপ্নপুরীর স্বপ্নে মরে যাওয়া স্বপ্নীল স্বপ্নের ফসিল কিংবা,
অদৃষ্টের কাটাতাঁরে বন্দী জীবন্ত নরকে
বোধ ও ব্যধির বোঝাপড়ায় বোধের নিঃশব্দ তিরধান ।

হঠাৎ,
নিকশকাল অন্ধকারে গর্জে উঠে বন্ধুর বেয়নেট;
জেগে উঠে কালো দানবেরা
তারপর রকি...
সূররিয়েল কোন জমাট বাঁধা রক্তের কালো ফোঁটা,
চূনীর রংয়ে রঞ্জিত গোধূলির পশ্চিম ।

রঙ্গিন ডানার ইচ্ছে ঘুড়ির কেটে গেলে সুতা
জ্বলন্ত ক্রুশকাঠে ঝুলে পড়ে যিশু,
সন্ধ্যার আলো-আধারীর প্রপঞ্চে লজ্জাবতী নুয়ে আসে স্পর্শবোধে ।

▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

স্কিড রো আমার অন্যতম ফেভারিট হার্ড রক ব্যান্ড! তাদের অন্যতম জনপ্রিয় 18 And Life আমার প্রচন্ড পছন্দের একটা গান! এই গানটার লিরিক্সই আমার এই লেখাটার ইন্সপিরেশন!

MP3 ডাউনলোড লিংক !!

ইউটিউব লিংক



============================


চে


....
...
..
.

মৃত্যু উপত্যকায় পুজিবাদী মার্সিডিজের নীল ধোঁয়া
উড়িয়েছিল বারিয়েন্তিয়াস, পুতুল শাষকেরা,
কমোডে হলুদ প্রক্ষালক হায়নার গলায় রক্ত গ্রহণের স্বাদ,
আততায়ী রাত্রীর কালোর কলংকে
আট পায়ের অর্বাচীন মাকড়শার মত ঝুলে থাকে রক্ত রঞ্জিত মানবতা,
নির্মানরত বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ফোটায় ফোটায়
নেমে আসে শ্রমিকের ঘাম,
ইট-সুড়কির প্রতিটি স্তর কেদেছে
স্টিম রোলারে পিস্ট, গলিত মাংসল অনুভূতির বিষাদের এলিজিতে ।

সাম্রাজ্যবাদের উইপোকা হজম করে ফেলেছিল মানবিক সেলুলোজের অনেকটাই,
আততায়ী মাঝির জিহ্‌বা হাপাচ্ছিল যুবতী ইলিশের ধ্রুপদি রুপালী রূপচ্ছটায়,
ছারপোকার ধূর্ত দাঁতে ভক্ষন করেছিল মৃত সাদা পায়রার হৃদপিন্ড
শেয়াল-কুকুরগনের পড়ন্ত বেলার ধোঁয়া আচ্ছন্ন বিকৃত বিলাপে
হৃদপিণ্ডের দুঃখবিলাস অনুরণন হয়ে আসে;
লতাগুল্মে ছেয়ে থাকা মধ্যযুগীয় স্থাপত্যগুলোর মত
আততায়ী সময়ের ভাঙাচোরা বাঁকে বাকে আত্মরচিত কবরের অস্তিত্ব ।

হাজার বছরের জমাট বাধা ইতিহাসের নৈশব্দ্যে
কন্ঠস্বর গর্জে উঠে সুতীব্র তর্জনী উচিয়ে,
নিপীড়িত-নিঃস্ব মানুষের লাল পোস্টার হয়ে বিপ্লবী প্রত্যয়ে,
হৃত্-পিণ্ডের অনুরণনে আকণ্ঠ সমুদ্র ডাকে
অশ্লীল রাতের মৃত্যুর আর্তনাদে বিসর্জনের প্রতিমা হয়ে
দিয়েছিল রুটি, সুবিচার আর সাম্যের ডাক।

অবিচল পুরুষ, উদ্দীপ্ত গেরিলা আর্নেস্তো!
বেরেটায় ঢাকা বাবরি দোলানো অবিন্যস্ত চুল,
ঠোঁটের ওপর গোঁফ গজানো তারুণ্য, হাতে জ্বলন্ত চুরুট
জ্যোতির্ময় চাহনীতে বিপ্লবের আগুন,
আর প্রিয় এম-২ রাইফেল শত্রুকে নিশানা করে লিখেছিলে স্বাধীনতার কবিতা ।

ধমনীর প্রস্রবণে বিদ্রোহের সর্পিল স্রোতস্বীনি নিয়ে
মুক্তির ইসতিহার হয়ে সময়ের ঘড়িটাকে মুহূর্তেই ভেঙে ফেলে,
বৈষম্যের প্রতিবাদে দেবরাজ ইন্দ্রের বজ্রের দৃঢ়তায়
ইস্পাত-বুলেট বাধা পেরিয়ে সুর্যোদয়ের আভাসে
মায়েস্ত্রো রচনা করলেন সাম্যের সিম্ফোনি বিদ্রোহী কন্ঠস্বরে
ঈশান-দুয়ার খুলে পশ্চিমা আকাশে আনলে বিদ্যুৎবহ্নির ঝলক ।

সদ্য শিহরিত শস্যদানার সৃস্টিশীলতার ভ্রুনানুগুলোর হারিয়ে ফেলেছিল আর্দ্রতা,
সামাজিকতার ছদ্মবেশী কীট পিঁপড়া
শস্যদানার ভিতরের শাঁস কুড়ে কুড়ে খেয়ে গুঁড়ো করে ফেলছিল,
নদী শাষনের তীব্র নেষায় উষরের বুক চিরে
স্বপ্ন ফলিয়েছ তুমি, উদ্ভাসিত প্রাণের উচ্ছ্বাসে
প্রস্তরপ্রত্যয়ে ঘুঁনে ধরা সমাজের মূলে কুঠারাঘাত করে ।

মুক্তির নেশায় ছুটেছে মালভুমির পাথরের চুড়ায়
জলপাই আভার উর্দি সাজে চিরতরুণ বিপ্লবী,
সুষম বন্টনের লাল পতাকা নিয়ে বিভাজনের প্রাচীর ছিন্ন করে
কিংবদন্তি প্রতিমূর্তি,
বিজয় নতুবা মৃত্যুর নিয়তিকে মেনে নিয়ে
অপার অন্ধকারের কৃষ্ণগহবরে ফুটিয়েছ পূর্ণিমার ফুল ।

তুমি বলেছিলে,
তোমাদের গুলিতে মরবে শুধু মানুষটি, নয় বিপ্লব!

চেতনার আরশিতে সদা জাগ্রত হোক
জলপাই আভার প্রচ্ছদ ডায়েরি আর শৈল্পিক সেই মুখায়বোয়ব
হে অমর প্রাণ!
তোমাকে জানাই লাল সালাম ।

▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬



অসম্ভবের স্বপ্ন দেখা বাস্তববাদী বিপ্লবী চে । আগামী ১৪ ই জুন তার ৮২ তম জন্মদিন । অগ্রিম শুভজন্মদিন ।

ডাক নাম: চে
জন্ম তারিখ: জুন ১৪, ১৯২৮
জন্ম স্থান: রোসারিও, আর্জেন্টিনা
মৃত্যু তারিখ: অক্টোবর ৯, ১৯৬৭ (বয়স ৩৯)
মৃত্যু স্থান: La Higuera, বলিভিয়া
প্রধান সংগঠন: 26th of July Movement
আসল নাম 'এর্নেস্তো গেভারা দে লা সেরনা' (স্পেনীয় ভাষায় Ernesto Guevara de la Serna)
পেশা: ডাক্তার ।

==============================

এখনো বৃষ্টি পড়ে




এখনো বৃষ্টি পড়ে,
মেঘের ছায়ায়
ছেঁড়াপাল নৌকো কেপে উঠে,
ঝড় আসে, তারাদের ইশারায়;
চোখের নদীর জোয়ার-ভাটায়
নিঝুম সন্ধ্যায় বিষাদ মেঘের ভেলায়
শরতের বৃষ্টি ফোঁটা অঝোর ঝরায়,
এখনো বৃষ্টি পড়ে,
একে একে ছাইরঙা মেঘে লুকিয়ে পড়ে তারারা,
কষ্টের মেঘ ঝরে বৃষ্টি শহরে
সবুজ পাতার হলুদ কষ্টে সরিয়ে
ঘনীভূত মেঘ নামে চোখের পাতায় ।

এখনো বৃষ্টি পড়ে
তারে বসে নবধারা জলে ভিজে জড়সড় কাক
শবভুক শেয়াল ডানা ঝপটানো বিবেকের পচা গন্ধ শুঁকে
তারহীন শূন্যে শীতল অস্থির আধাঁরে,
যেখানে জ্বলজ্বল করে খাদ্য সংকটে ভোগা ইঁদুরের প্রখর চোখ;
এখনো বৃষ্টি পড়ে,
শব ব্যবসায়ী ইশ্বরের আলোকিত অপেরায়
প্রস্তরের ভাঙা ধ্বংস স্তূপে,
বিবর্ণ মৃত্যু গন্ধে প্রোজ্বল সকালে;
এখনো বৃষ্টি পড়ে
রক্তমাখা সমাধীত্‌
যেখানে বিলাপ করে সর্বশেষ অনুজীব;
তবুও,
ভাঙ্গেনা চিরকষ্টের ম্যানিকিনের শীতল অবরোধ,
বস্ত্রহীন মাংসের বন্দিত্ব ।


তবুও,
এখনো বৃষ্টি পড়ে,
এপ্রিলের লাল কৃষ্ণচুড়ায় শালিক ছানার হলুদ ঠোঁট
মায়ের ঠোঁটের খোঁজে খাবার,
সূর্যকরোজ্জ্বল দিনের উপর উত্তরের ডিপ-ফ্রিজে
হিমবাহের বরফ হয়ে জমে থাকে
চন্দ্রাহত মধ্যরাতের সূর্যের নীল আলো,
আন্তঃনাক্ষত্রিক বর্ষণহীন মেঘ
শ্বেত ভাল্লুক গুলোর বর্ষণোন্মুখ আঁখিতে;
পূর্বোদিত হয় সিসিফাস চাকতি,
পাহাড় চুড়ায় গোধুলীর লালে বিশ্রাম লাভে ব্যাস্ত হলে
প্রস্তরে বসে অরফিয়াস শোনায় প্রার্থনা সংগীত ।

প্রলেতারিয়েত শব্দ গুলো ঝলসে যায় প্রমিথিউসের আগুনে,
নিরোর বাশীতে আগুনের ফুলকি কিংবা ফুল;
তবুও,
এখনো বৃষ্টি পড়ে,
কবিতার শরীরে ফোটে এপ্রিলের লাল কৃষ্ণচুড়া,
জ্যোৎস্না-ধোয়া ক্যাকটাসের অরণ্যে
শব্দ গুলোর লেলিহান শিখায়
রঞ্জিত হয় অগ্নিমানবীর ঠোঁট ।




==================



আমি ও আমার আধাঁর




নিভুনিভু নিয়ন আলোকে প্লাবিত করে
অস্ফুট গোলাপের সুঘ্রাণে
ঝুলে আছে নিস্তব্ধ অন্ধকার,
নিস্প্রান আঙ্গিনায় থকথকে ক্লেদাচ্ছন্ন আমার প্রতিচ্ছবি,
ক্রমে নিভে আসা জোনাকির ঝাঁক
খুলে ফেলে বিলাসী পাপের অবগুন্ঠন,
কালের অদৃশ্য চক্র বাজে শব্দহীন ।

সূর্য ভয়ে অশ্বত্থের ডালে
এক যুগ ধরে লুকিয়ে থাকা নিঃসঙ্গ প্যাঁচা
শ্যাওলা পড়া আধাঁরের জলসায়
আড়মোড়া ভেঙ্গে সামিল হয়
অনড় অভিমানে,
নক্ষত্রের দিকে ছুড়ে দেয় অখন্ড ঘৃণা,
আমি ও আমার নিশ্চল ছায়ার আজন্ম নিষাদে
জ্বলে না মঙ্গলদীপ ।

প্রলম্বিত হয় রাতের প্রহর আধাঁরের রংয়ে,
অলিখিত সংবিধানের দ্রাঘিমা পেরিয়ে
ইতিহাসের শ্মশান জাগে বিষ পিঁপড়ের ঢিবিতে
নিশ্চল রাতের নীচে আখের চিনির খোজে
ব্যস্ত হয় সারিবদ্ধ পিপড়া,
তিমিরের তটে কালচে রক্তের দাগ অথবা ফরমিক বিষ,
পোড়ে অক্টেন,
গ্লাসের অতলে শেষ আশ্রয়ে জমে ফোঁটা ফোঁটা মদ,
আমার নৈশব্দের শিরায় শিরায় প্রবাহিত হয় তিক্ত রুধির।

স্বপ্ন প্লাবিত আঙ্গিনায় ভিড় করে
নদী সাতরে পাড়ে ভেড়া একদল সফল ইঁদুর,
আর আমি,
অধোগত স্মৃতির গোল্ডফিসের মত ঘুরতে থাকি
একই চক্রাকার পথে,
জেগে উঠে সিন্দুকের সাজিয়ে রাখা
আমার পূর্বপুরুষের প্রেতগুলো,
যুদ্ধের উৎসবে আকাশ ঝরায় কালো রোদ ।

আধারের ব্লাংকেটে মোড়ানো নিরবতায়
প্রিয়তম কালপুরুষকে ছুঁয়ে যায় চাঁদ,
ঘূর্ণায়মান কাঁটার অনুক্রম স্বগতোক্তির প্রকৌশলে
উর্ধ্বপাতিত হয় গনিকার ভালবাসা,
সর্পিলা ছায়াপথের বুক পকেটে আকাশের অতন্দ্র প্রহরী
পরাজিত হয় সুর্যের শঠতায় ,
আমার শরীর ফুঁড়ে জেগে ওঠে ভোরের কংকাল ।






==================



ছায়াপথের ছায়াবাজী






মোহাচ্ছন্ন ধোঁয়ায় অদ্ভূত মহাজাগতিক শূন্যতা
সুরের মুর্চ্ছনায় আবাস গড়ে প্রাচীন জড়তা
কালো ক্যানভাসে অবচেতন সময়ের নিয়ত সংকোচন
অনাসৃষ্টির বৃত্তে আবৃত স্বত্তায় লেগেছে গ্রহন

ছেলেটির বুকে লুকিয়ে ছিল ছয়টি তারের স্বপ্ন
দিগন্তে বিলীন বিষেদী বিকেলেও বুনত প্রাণের শিকড়
ক্রমবিস্তৃত স্বপ্ন ক্ষয় করে পাদুকা
তবুও যাপিত যাতনায় ছিল সুখের ছোঁয়া,
ছেলেটি ছুটছে আলোর পিছে রাতের নিঃস্তব্ধতায়
ধ্রুপদী আঁধারে করছে আলোর যাচাই

হাইড্রার মত হঠাৎ ফণা তোলে অস্থির শ্বাপদ,
ছায়াপথের শ্বেতাভ মেঘের বালিয়ারী তটে
নেমে আসে অধীর আঁধার কালো আর নোনা জল,
অলিখিত বাস্তবতার মস্তিষ্কে জমাট বাঁধে ক্ষরিত রক্ত

স্মৃতির পাতার মেঠোপথ আজ পিচঢালা রাজপথ
পুরনো হিসেবের জঞ্জালে ভরা আগামীর স্বপ্ন
ডাস্টারের সৃষ্টিশীলতায় উড়তে থাকে শুভ্র চকের গুঁড়ো
আদ্রতায় গ্রাস করে সিক্স স্ট্রিং এর ঐকতান

ছায়াপথের ছায়াবাজিতে নিঃশ্বাস ফেলে হিরন্ময়
সাইক্লোন চোখের শুন্যতায় আবাশ গড়ে সমসত্ব অমানিশা
নোনাজলের মাঝে ভেসে ওঠে প্রিয়তমার প্রতিবিম্ব
বাকরুদ্ধ আর্তনাদ অস্তিত্ব আজ যেন জ্বলন্ত পোড়া কাঠ

গ্রহনের লজ্জায় হয়ত নিশাকর লুকায় আনন
তীরবিদ্ধ একিলিসের শোকে থেমে যায় ঝিঁঝি পোকার হৃদস্পন্দন
মনবনে স্মৃতি্র জোনাক জ্বালায় না নীলাভ লুসিফারিন
রাতের আধারে তারারাও যেন মিটমিট করে ছন্দহীন

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৩৭
৬৪টি মন্তব্য ৬২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×