somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেষযাত্রা

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“চিত্রলেখা আকাশের নীল রংটা পছন্দ হয়?” - অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম ওকে এই কথাটা জিজ্ঞাসা করবো।ওর সাথে এই সেই কত কথা হয়, কিন্তু একথাটা জিজ্ঞাসা করা হয়নি।
চিত্রলেখা অনেকক্ষণ কিছু বলেনা।আমি গালে হাত দিয়ে তার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করি।অবশেষে অনেকটা সময় পার হলে চিত্রলেখা বললো, “নাহ ভালো লাগেনা।আমার ভালো লাগে গাঢ় নীল রংটা। আকাশের নীলটাকে ভালোবাসতে পারিনা কেন জানেন?”
আমি বলি, “নাহ জানিনা।আমাকে বলুন, শুনতে চাই”।
চিত্রলেখা সময়ে নিয়ে বলে, “আকাশের নীলটা না শুধু হারিয়ে যায়।মেঘ তাকে আড়াল করে, সূর্য তার স্পর্শে কত রঙ্গে তাকে সাজায়।যার স্থায়ীত্ব নাই তাকে ভালোবাসতে ইচ্ছা করেনা।তাকে কাছে টানতে ইচ্ছা করেনা”।
আমি মুখে হাসি নিয়ে জিজ্ঞাসা করি, “বুঝলাম কথা।তাহলে এই গাঢ় নীলটা ভালো লাগে কেন বলো তো?”

আমি কল্পনা করি চিত্রলেখা এখন হয়তো মাথা নাড়ছে আর মনে মনে বলছে, বেশি প্রশ্ন করে।আর কোন কথার জবাব দিবোনা।মেয়ে পাইলেই কথা বলতে হবে নাকি এত।
আমি ফেসবুক বন্ধ করে দিয়ে ল্যাপটপটাকে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম।এই বেলা কারো সাথে আর হবেনা কথা, এখন হবে শুধু কবিতা।প্রিয় কবি রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে নিয়ে আজ শুরু করবো।আর অন্তরে বাজবে তার অমর গানটা, ভালো আছি ভালো থেকো।আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো।

প্রিয় পাঠক, হয়তো আন্দাজ করতে পারেননি আমার আর চিত্রলেখার সম্পর্কটা।তবুও আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাই তিনি আমার বিবাহিত স্ত্রী।আজ থেকে প্রায় সাত মাস আগে তার সাথে আমার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিলো দূরালাপনী যন্ত্রের সহযোগিতায়।বিয়েটা প্রেমের ছিলোনা, কেউ আগে থেকে কাউকে চিনতাম না।মার পছন্দে বিয়েটা হয়েছিলো।আমি বিয়ের আগে তার ছবিটাও সেভাবে দেখিনি।বিয়ের দুদিন পরে তাকে একদিন ফোনে বললাম, “আপনাকে তো আজও দেখলাম না ঠিকমত।দেখাতে মানা আছে?”

চিত্রলেখা হাসতে হাসতে বললো, “আমাকে দেখে কি হবে? হ্যা তবে যদি কথা দেন আমার ছবি দেখে রাত জেগে আমার একটা পোট্রেট করে দেবেন তবে ছবি পাঠিয়ে দিতে পারি।অথবা ফেসবুকে আপনাকে বন্ধু হিসেবে সাজিয়ে নিলাম না হয়।যত ইচ্ছা ছবি দেখাবো”।

চিত্রলেখা খুব অদ্ভুত ছিলো।কেমন যেন ছোয়া যায়না, ধরা যায়না, অনুভব করতেও শতেক বাধা।আমার মনে হয় মাঝে মাঝে ও হয়তো আমার সাথে দুষ্টুমি করে, মাঝে মাঝে মনে হয় ও হয়তো অনেক দুখী।আমাদের বিয়ের পর ওর সাথে ফোনে খুব কম কথা হয়েছে।হাতে গুণে চার পাচবারের বেশি হবেনা।তবে প্রতিদিন রাতে ফেসবুকে অনেক কথোপকথন হয়।আমি তাকে আমার কথা বলতে পারিনা, সেও যেন কিছুই বলতে চায়না।মাঝে মাঝে মনে হয় ও সমস্ত জীবনটায় হয়তো অচেনা রয়ে যাবে।
আমি মাঝে মাঝে তার ফেসবুকে দেয়া একমাত্র ছবিটা খুব মন দিয়ে দেখি।সেই ছবিটায় শুধু তার মায়াময় চোখগুলোকে বোঝা যায়।আমি সেই চোখের দিকে তাকিয়ে তাকে বুঝতে চেষ্টা করি, কিন্তু আফসোস সে অজানাই থাকে।আমি একদিন তাকে বলেছিলাম, “তোমাকে জানার দরকার, চেনার দরকার”।
চিত্রলেখা বললো, “ডিসেম্বরে দেশে আসবো।আপনার সাথে তখন রাতদিন শুধু আমাকে নিয়ে গল্প করবো।এমন দূর থেকে নিজের কথা বলতে ভালো লাগেনা।আপাতত আমাকে শুধু কবিতা শোনান।উত্তর আমেরিকার কঠিনপ্রাণ মানুষগুলোর সাথে থাকতে থাকতে আমি কেমন যেন যন্ত্র হয়ে যাছি।তাও সস্তা যন্ত্র।আমার ভেতরের নরম বাঙ্গালী মানুষটাকে একটু দেখুনতো জাগিয়ে রাখতে পারেন কিনা”।
আমি কবিতা লিখতে পারিনা।এর ওর থেকে ধার করে বাছাই করা সুন্দর কবিতাগুলো তাকে শোনাই অথবা লিখে পাঠাই।চিত্রলেখা এতে কতটা রাগ করে তা জানিনা।ও হয়তো রাগ করতেও জানেনা।

আমার বিয়েটা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে বলা যায়।এখনো গ্র্যাজুয়েশন শেষ হতে দু মাস বাকি।সামনে থিসিস সাবমিশন, প্রেজেন্টেশন এবং আরো বহু প্রজাতির ঝামেলা রয়েছে।আমি আপাতত টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা নিয়ে খুব ব্যস্ত।পি.এল চলছে। আমাকে প্রতিদিন তিথি ফোন দিয়ে বলে, “পড়াশোনা আর ভালো লাগেনা।তুই কি একটু কষ্ট করে আমার পরীক্ষাগুলো দিয়ে দিবি?”
আমি ফোন কান থেকে নামিয়ে মেশিন ল্যাংগুয়েজ পার্ট টু নিয়ে ভাবতে থাকি।তিথীর কথা শোনার সময় নেই।মাঝে মাঝে বন্ধু রাসেল ফোন করে বলে, “দোস্ত কি অবস্থা? কয়বার রিভিশন দিছোস?”
গভীর রাতে মা ঘরে ঢুকে ধীর পায়ে।হাতে একটা দুধের গ্লাস।পাশে বসে বলে, “হাসান দুধটা খায়া নে।এরপর ঘুমাতে যা”।
মাঝে মাঝে মার একটা কথাও শোনা হয়না।এত আদর আহলাদে খুব বিরক্ত হই, কিন্তু কিছু করার নেই।এই রকম সবাইকে নিয়েই আমার জীবন।আমাদের জীবন।একজনও যদি হারিয়ে যায় আপনার বেচে থাকার স্পৃহাটা অনেকটা নষ্ট হয়ে যাবে।আমি তাই বেশ সুখী ছিলাম।অনেক অনেক সুখী।

আজ খুব ভোরে উঠে আমার ঘরের সাথে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম।মা কোরান শরীফ পড়ছেন।দাদী পাশের ঘরে শুয়ে আছেন।এখনো ঘুম থেকে উঠেননি।আজকে আমার জীবনের শেষ টার্মের প্রথম পরীক্ষা।কিভাবে কিভাবে যে চার বছর পার হয়ে গেলো জানিনা।কাল রাতে চিত্রলেখা সাথে বেশি কথা বলা হয়নি।তাকে কেন যেন হঠাৎ কালকেই ফেসবুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, “আপনার চোখের রঙ কি?”
চিত্রলেখা আমাকে সাথে সাথে ফোন দিয়ে বললো, “প্রকৌশলী সাহেব এতদিন পর মনে হলো এই কথাটা।আমার কত শখ ছিলো কেউ আগ্রহ করে আমার চোখের কথা জিজ্ঞাসা করবে।যে ছবিটা ফেসবুকে দিয়েছি ওটা দেখে বোঝা যায়না”।
আমি হাসি চেপে বলি, “নাহ।এখন বলো”।
চিত্রলেখা চুপ করে থাকলো কিছুক্ষণ।তারপর ঢং করে বললো, “আজকে প্রথম আমাকে তুমি বললেন।খুব মিষ্টি লাগলো”।
ঠিক এটুকু বলে ফোনটা রেখে দিলো।এরপর একটা মেসেজও পাঠালো।মেসেজে একটা কবিতা লিখাঃ

"তুমি যে চোখে দেখবে আমায়
প্রার্থনা যেন সেই চোখের রঙ্গে আমি মিশে যাই
তুমি যে চোখ দিয়ে ভালোবাসবে আমায়
প্রার্থনা সেই ভালোবাসাটাই শুধু আমার চোখে আজন্ম বেচে থাকুক"

ভার্সিটিতে যেয়ে আমি হতভম্ব হয়ে যাই।ফ্যাকাল্টির গেটের সামনে বিশাল একটা ভীড়।ভীড়টা সরকারী দল করে এমন ছাত্রদের।সামনে যেয়ে বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে জানতে পারলাম উনারা পরীক্ষা দিতে দেবেন না কাউকে।কারণ বিরোধী দলের কোন এক ছেলে তাদের দলের এক ছেলেকে মেরে ফেলেছে।এই ঘটনার বিচার ভিসিকে করতে হবে।যতক্ষণ বিচার হবেনা, ততক্ষণ কোন পরীক্ষাও হবেনা।আমি হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম বেশ অনেকক্ষণ।যখন হাটাহাটি করছি হঠাৎ করে সেই রাজনীতি করা ছাত্ররা আমাদের মত সাধারণ ছাত্রদেরকে ধাওয়া দিলো।আমি ভয়ে দৌড় দিলাম, আমার সাথে অন্যরাও যে যেভাবে পারলো দৌড়ালো।আমি কোন রকমে ক্যান্টিনে আশ্রয় নিলাম। কতক্ষণ সেখান নিরাপদ থাকবো সেটা অবশ্য বুঝতে পারছিলাম না।

সেদিন খুব খারাপ একটা দিন ছিল।১১ই ডিসেম্বরের এক শীতের সকালে বিশিষ্ট ছাত্র নেতারা ক্যান্টিনে তাদের বিরোধী দলের ছেলেপেলে আছে সন্দেহে যাকে যেখানে পেয়েছে সেখানেই লোহার রড, ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে। আমার মত সাধারণ ছাত্ররা কেউ বাদ যায়নি। আমি জানিনা সেখানে সত্যি তাদের বিরোধী ছাত্ররা ছিলো কিনা।যখন তারা তান্ডব চালাচ্ছিলো আমি দৌড়িয়ে ক্যান্টিনের বাথরুমে ঢুকে গিয়েছিলাম।দুর্ভাগ্যবশত সেখানে যেয়ে আমি বাচতে পারিনি।আমার মনে আছে আমার মাথায় যখন রড দিয়ে তারা আঘাত করে আমি তাদের পায়ে ধরে মাফ চেয়ে বলেছিলাম, “ভাই আমার বাবা নাই।আমার মা কে আমি ছাড়া দেখার কেউ নাই।আমাকে প্লীজ ছেড়ে দেন।আমি কোন ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত না”।

সেখানে আমাদের জুনিয়র ব্যাচের একটা ছেলে ছিলো।সে আমার চুল ধরে বললো, “শালা মামদোবাজী করোস।বেটিদের মত কাদলে মনে করছোস মাফ পায়া যাবি।আমাদের দলের ছেলেরে যখন তোরা মারছিলি মনে ছিলোনা”।
আমি আমার সামনে যখন মৃত্যুকে নিশ্চিত দেখতে পাচ্ছিলাম তখন হঠাৎ করে আমার কান্না বন্ধ হয়ে গেলো।আমি বুঝতে পারছিলাম এরা আমাকে ছাড়বেনা, এদের চোখে এখন খুনের নেশা।যখন ওরা আমাকে এলোপাথারী মারছিলো আমি চোখ বন্ধ করে মনে মনে বললাম, “আল্লাহ আমার মাকে তুমি শুধু দেখো”।

আমার শরীরটা একসময় মৃত্যুবরণ করে।মারা যাওয়ার ঠিক একটা পলক আগে আমার চোখে ছিলো আরো কয়েকটা সেকেন্ড বাচার আকুতি,আর একবার মায়ের হাতটা ছোয়ার,আর একটাবার বাবার ফ্রেমে বাধানো ছবিটা দেখার প্রবল আকাংক্ষা। কেউ আমাকে বাচাতে আসেনি, কেউ একটাবার বলেনি, “এই ছেলেতা কোন দোষ করেনাই। একে বাচতে দিন”।আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম, এই ভয়টা সবাই মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তে পায় হয়তো।সেই সময়ের অসহায়ত্বটা কেউ কোন ভাষায়, কথায়, শব্দমালায় প্রকাশ করতে পারবেনা। আমি মারা যাওয়ার পরও আমাকে তারা এলোপাতাড়ী মেরেই চলছিলো।আমার আত্নাটা তখন পাশে বসে কাদছিলো।যে শরীরে তার বসবাস ছিলো এতগুলো বছর তার আঘাতে কেনইবা আত্নাটা কাদবেনা বলুন?

মারা যাওয়ার পর অদ্ভুত অদ্ভুত ঘটনা ঘটছিল।আমার একবার মনে হচ্ছিলো আমি আকাশে ভাসছি, একবার মনে হচ্ছিলো কেউ একজন শক্ত করে আমার পা চেপে ধরে রেখেছে মাটির সাথে।আমি আস্তে আস্তে আমার শরীরটাকে ফেলে ক্যান্টিন থেকে ভয়ে ভয়ে বের হয়ে এলাম।আমার খুব ব্যাথা হচ্ছিলো , কিন্তু কোথায় তা বুঝতে পারছিলাম না।আমি একদিকে আশেপাশের সব দেখতে পাচ্ছিলাম, সামনে পেছনে সবকিছু।এমন অনুভূতি এর আগে হয়নি।মনে হচ্ছিলো আমার চারপাশটা আমার জন্য উন্মুক্ত।আমি যেমন করে ইচ্ছা তাকে দেখতে পারি।একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম আমার বন্ধুরা বসে আছে।আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু তিথি আর রাসেল খুব কাদছিলো।তিথি বলছিলো, “হাসানকে আমি নিজ চোখে ওদের হাতে মার খেতে দেখছি।চল না যাই।এখন ক্যান্টিনে ওরা কেউ নাই।চল যাই”।

আমি ওদের পিছে পিছে গেলাম আবার আমার রক্তে ভেসে যাওয়া শরীরের কাছে।ওরা আমার শরীরের এমন কোন যায়গা বাদ ছিলোনা যেখানে আঘাত করেনি।আমার বন্ধুরা আমার লাশের পাশে দাঁড়িয়ে একসাথে হাউমাউ করে কাদা শুরু করলো।কেউ কেউ অবশ্য আমার পাশে যাওয়ার সাহসটাও পেলোনা। রাসেল আর সজল আমার মুখ রুমাল দিয়ে মুছিয়ে দিতে দিতে কাদছিলো।কেউ একজন চিৎকার করে বলছিলো, “হাসান আমাদের মাফ করে দে। আমরা কিচ্ছু করতে পারিনাই। কখনও কিচ্ছু করতে পারিনাই।তোর আম্মারে এখন কি বলবো, উনি জিজ্ঞেস করলে কি বলবো?”

আমার ভালো লাগছিলো না ওদেরকে এভাবে কাদতে দেখে।মাকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছিলো।ঠিক যেই মুহূর্তে ইচ্ছাটা হলো ঠিক তখনই আমি আমাদের বাসায় পৌছে গেলাম।অদ্ভুত ব্যাপার তখন রাত হয়ে গেছে।তাহলে কি মৃত্যুর পরে সময়গুলো যেমন ইচ্ছা তেমন করে পালটে যায়?
মা দাদীর ঘরে তখন স্তব্ধ হয়ে বসে আছে।ড্রইংরুমে আমার লাশটা সাদা চাদরে ঢাকা।দাদী খন খন আওয়াজ তুলে কাদছে।মা কিছু বলেনা।উনি শুধু তখন দৌড়ে ছুটে এলেন যখন আমার লাশটা আমার চাচাতো ভাইরা, ছোট চাচা এবং বড় মামা কাধে তুলে নিচ্ছিলেন।মা চিৎকার করে বললেন, “আমার সোনারে নিয়া যাওনা।ও বাইচা আছে।ওরে নিয়া যাওনা”।

সবাই যখন চলে গেলো মা তখন দরজার কাছে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন।আশেপাশে আমার আত্নীয় স্বজনরা সবাই বিলাপ করছে।মা জ্ঞান ফিরলে সবার মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকলো, “আমার একমাত্র সন্তান কি পাপ করছিলো! এমন করে কেন মারলো আমার সোনাটারে?ও তো পড়াশোনা ছাড়া আর কিছুই কখনো শিখেনাই।আমি এখন কার জন্য রান্না করবো, কারে আদর করে খাওয়াবো।আমার ছেলেটারে কেউ ফিরায় দেন?আপনাদের পায়ে ধরি, আমার ছেলেটারে কেউ নিয়ে আসেন।ও বাইচা আছে, আমি জানি।ও বাইচা আছে”।

মা আবার অজ্ঞান হয়ে যান।আমি পাশে বসে আছি মার, এটা উনি কি টের পাচ্ছেন না?আমি মার গায়ে ছোয়ার চেষ্টা করি।কিন্তু কি দিয়ে ছোব, আমার শুধু অস্তিত্বটাই আমি অনুভব করতে পারছি।আমার হাত নেই, পা নেই, মানব শরীরে কোন অঙ্গ নেই। কিন্তু আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো।খুব বেশি।আমি জানিনা আল্লাহ কেন আমাকে এই অনুভব করার শক্তিটা দিয়েছিলেন।আমি তবুও মার পাশে বসে থাকি।একসময় মায়ের আরো কাছে যেয়ে তার গায়ের গন্ধটা নেয়ার চেষ্টা করি।আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন রাতে ভয় পেলে খুব লজ্জা করতাম।মাকে কিছু বলতাম না।শুধু তার গায়ের একটা জামা নিয়ে এসে ওটা জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করতাম।মার গায়ের গন্ধটা আমার সবচেয়ে প্রিয় গন্ধ ছিলো। ওই গন্ধটা পেলে মনে হতো কেউ আমাকে ছুতে পারবেনা।

ঠিক সেইক্ষণে আমার চিত্রলেখার কথা মনে হলো।আমি তাকে মনে মনে ডাকতাম চিত্রা বলে।চিত্রাকে আমার আজকে একটা কবিতা শোনানোর কথা ছিলো, প্রেমের কবিতা।এই কবিতায় সর্বমোট ২৬টি পংক্তি আছে।প্রত্যেকটা আমার নিজ হাতে লেখা।আমি কখনও ভাবিনি আমি তাকে কবিতা লিখে দিতে পারবো।চিত্রলেখা প্রতিদিন ফোন রাখার আগে আমাকে বলতো, “একটা কবিতা দেবেন যে কবিতায় আমাদের দেশের প্রত্যেকটা ঋতুর কথা থাকবে। শীতের পিঠার গন্ধ অথবা বর্ষার রংধনু আকা আকাশটা।বসন্তের কোকিলের গান বাজবে কবিতার প্রতিটা শব্দে, হেমন্তের আদর মাখানো হাওয়াটা যেন গালটা ছুয়ে দেয়।গ্রীষ্মের পাকা আমের দিকে দুষ্টু শিশুদের লোভ জাগানীয়া দৃশ্যটা অথবা শরতের উদাস বিকালের স্নিগ্ধতা কিছুই বাদ যেতে পারবেনা।এমন একটা কবিতা আমাকে লিখে দেবেন”?
আমি তাকে বলতাম, “আমি কবিতা লিখলে আপনাকে নিয়ে লিখতে চাই।শুধুই আপনাকে নিয়ে”।
চিত্রলেখা হাসতে হাসতে বলতো, “কেন? আমাকে নিয়ে কেন?”
আমি আস্তে আস্তে বলতাম, “বিয়ের পর ছেলেদের শুধু বউকে ভালোবেসেই লিখতে হয়”।
চিত্রলেখা গলায় একটা নাটকীয়তা টেনে বলতো, “হুমম। আমাকে ঠিকমত দেখলেন না। সামনেও কখনো আসিনি।এমন করে কাউকে ভালোবাসা যায় না তো। কবিতা কিভাবে লিখা যায় শুনি?
আমি নিঃশব্দে কল্পনা করতাম তখন চিত্রলেখাকে।তাকে বোঝাতে চাইতাম - তোমার মত কাউকে ভালোবাসার জন্য দেখতে হয়না, ছুয়ে দিতে হয়না, পাশে দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাসের গন্ধটাও নিতে হয়না বিশ্বাস করো।তোমাকে ভালোবাসা যায় তোমার অস্তিত্বটাকে অনুভব করে।তুমি এমনই কেউ যাকে আমি কখনো চাইনি, কখনো কল্পনাও করিনি। শুধু যেদিন থেকে তোমাকে জানলাম, চিনলাম সেদিন থেকে আমি জানি আমি হয়তো তোমাকেই সবসময় চেয়েছি।

আমি যখন চিত্রলেখাকে দেখতে চাইলাম তখন আমার ঘরটায় কেমন করে যেন পৌছিয়ে গেলাম।আকাশটা তখন খুব যত্ন করে কেউ কমলা রঙ্গে একে দিয়েছে।আমার ঘরের এক কোণায় ছোট্ট করে চুলে ঝুটি বাধা একটা মেয়েকে বসে থাকতে দেখলাম।আমি খুব অনুভব করতে পারছিলাম যে এটাই চিত্রলেখা।অদ্ভুত ব্যাপার আমি অনেক চেষ্টা করেও তাকে দেখতে পাচ্ছিলাম না।শুধু তার চোখ মাঝে মাঝে যেন দেখা যায়।গাঢ় বাদামী চোখে মেয়েটা আমার ডায়েরী হাতে নিয়ে পড়ছে যেখানে তাকে নিয়ে আমার লিখা কবিতাটা ছিলো।আমার জীবনের প্রথম এবং শেষ কবিতা।

চিত্রা খুব মন দিয়ে আমার কবিতা পড়ছিলো।তার সমস্ত চোখ জুড়ে পানি, আমি জানি এই জল চোখে আটকে থাকবে।কখনো বাহিরে আসবেনা।আমি তার পাশে যেয়ে বসার চেষ্টা করি। একটা সময় মেয়েটা আমার ছোট্ট ঘরের জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো রেলিং ধরে।সে চুপি চুপি বলছিলো, “অর্ক তোমার কবিতাটা আমার অনেক ভালো লেগেছে।প্রথম কবিতা কেউ এত সুন্দর করে লিখেনি।জানো আমি আমার সব ফেলে তোমার কাছে চলে এসেছি।আমি ঠিক করেছি এখন থেকে এই ঘরে আমি থাকবো। সারাজীবনের জন্য।আমাকে তুমি পারলে ক্ষমা করো।
আমি আগে আসতে পারলাম না কেন? আর কয়েকটা দিন আগে যদি আমি দেশে আসতে পারতাম তাহলে তোমাকে কাছ থেকে দেখতাম।জানো প্রতিদিন যখন আমি তোমার সাথে কথা বলতাম আমার হাতে তোমার ছবিটা থাকতো।আমি তোমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে তোমাকে মেসেজ লিখতাম।
তোমার সাথে কথা বলতাম না কেন জানো? আমার খুব ভয় হতো।আমার মনে হতো আমি তোমার প্রেমে পড়ে যাবো।পরে হয়তো তোমাকে এত বেশি ভালোবেসে ফেলতাম যে তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারতাম না।ঠিক যে মুহূর্তে জানলাম তুমি আর নাই, ঠিক সেই সময়টা আমি বুঝতে পারলাম তোমার থেকে বেশি আমি কাউকে চাইনি।আমাকে একটু বলো, একবার বলো তোমাকে যে আমি আর দেখতে পাবোনা এটা কোন হৃদয় দিয়ে মানবো? আমার বুকটা ফেটে যায় যখন মনে হয় তোমাকে কতটা কষ্ট দিয়ে ওরা মেরেছে। আমি শুধু দুঃস্বপ্ন দেখি অর্ক, বলো তো আমার মুক্তি কোথায়?”

আমার খুব ইচ্ছা করছিলো মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে।তাকে বলতে, “মেয়ে আমি কোথাও হারিয়ে যাইনি।এই যে তোমার পাশেই বসে আছি।আমি জানি এই কথাটা সত্যি না, আমার সৃষ্টিকর্তাও জানেন।তবুও আমাকে এমন করেই বলতে হতো।আমি চিত্রলেখাকে দেয়া কবিতার শেষ দুটো পংক্তিতে বলেছিলাম,

"তোমাকে বারবার হাতটা ধরে নয়ন ছুয়ে বলতে ইচ্ছে হয়
তোমার জন্য ঠিক এখানে কেমন করে এতো ভালোবাসা রয়"

চিত্রলেখাকে, ভালোবাসার চিত্রাকে আমি এই কথাগুলো বলতে পারলাম না বলে খুব আফসোস হচ্ছে।পরম করুণাময় আমাকে মৃত্যুর পরও কেন এত ভালোবাসার কষ্ট দিচ্ছেন আমি জানিনা।আমি সব কিছু থেকে দূরে চলে যেতে চাইলাম, এই জগত আমার জন্য না।আমার প্রিয় ঘরটা আর আমার জন্য না।এখানে বাস করবে এখন শুধুই আমার শূণ্যতা।

একটু পরই আমি আমার অতি পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে গেলাম আবার।সেখানে আমার বন্ধুরা সবাই কালো ব্যাজ ধারণ করে ক্যান্টিনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।মুখগুলো থমথমে, চোখে লজ্জা দুঃখ রাগ আরো কত জানা অজানা অনুভূতি।কিছুক্ষণ পর সেখানে যারা আমাকে মেরে ফেলেছিলো তারা আসলো।আমার বন্ধুদের ব্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে চুকচুক করে বললো, “ছেলেটা ভালো ছিলো।এই ছেলেটাকে হত্যা করছে রগকাটা দলের ছেলেরা যাদের আমরা অনেক চেষ্টা করেও এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র প্রাঙ্গন থেকে বের করতে পারছিনা।আপনারা আমাদের দলে যোগ দেন, দেখবেন এদেরকে আমরা নির্মুল করবোই করবো।আহারে আমার ঠিক এইরকম দেখতে একটা মামাতো ভাই আছে”।

কিছুক্ষণ পর আমি নিজেকে আবিষ্কার করলাম একটা সংবাদ সম্মেলনে যেখান একজন বিশিষ্ট নেতা মুখ থমথম করে বলছেন, “যে ছেলেটা মারা গেছে তার জন্য আমাদের দলের ছেলেরা দায়ী নন।এই ছেলেটা ও তার পরিবার বিরোধী দলের রাজনীতি করতো।ছেলের বাবা নিজের দলের লোকের হাতে হত্যা হয়েছিলো।তবুও বলছি, এমন হত্যা কাম্য নয়।আমি আমাদের দলের ছেলেদেরকে স্পষ্ট বলে দিয়েছি তারা যেন এহেন মানবতা বিরোধী হত্যাকান্ড কোনভাবেই সমর্থন না করে।খুনাখুনির রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করিনা”।

বাবার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছিলো।বাবা মারা গিয়েছিলেন স্ট্রোক করে। আমার খুব মনে আছে সেই রাতের কথা।আমাদের আর্থিক অবস্থা তখন খুব একটা ভালো ছিলোনা।বাবা অফিস থেকে এসে হঠাৎ করে বলতে থাকলেন যে তার বুকের ভেতরে খুব ব্যথা।আমি বাবার পাশে গিয়ে বসলে বাবা বলেন, “আমি মরে গেলে কি করবি বিলাই ছানা”।
আমি বলেছিলাম, “তোমার পাশে শুয়ে মরে যাবার ভান করবো।তাহলে তোমার সাথে আমাকেও সবাই কবর দিয়ে দিবে।আমি তোমাকে ছাড়া থাকবোনা আব্বু”।

বাবা সে রাতে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে চোখের সামনে মারা গেলেন।মা আর ছোট চাচা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন।সরকারী হাসপাতাল।কেউ ছুয়েই দেখেনি, শুধু এক নার্স এসে বলেছিলো, “উনি তো মইর‍্যা গেছে।মরা লাশ নিয়ে বইস্যা না থাইক্যা দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেন”।
সেরাতেই আমি একটা হলুদ রঙের বাসে করে চাচার সাথে বাসায় ফিরছিলাম।সারারাস্তা আমি চাচার বুকে লুকিয়ে কাদতে থাকলাম।বারবার জিজ্ঞেস করছিলাম, “আব্বুকে কি কবর দিয়ে দিবা আজকেই?”
আমার এই বাবাকে আজকে এমন করে অপমান করা হলো?এর জন্য তো আমি দায়ী তাই না?আমার মনে হচ্ছিলো আমার আরো আগে বাস চাপায় বা অন্য কোন ভাবে হয়তো মরে যাওয়া উচিত ছিলো।তাহলে কেউ আব্বুকে এভাবে অপমান করতোনা।

হঠাৎ করে কেউ মনে হলো আমাকে বলছিলো, “আর সময় নেই, এখন নিয়ে যাবো”।আমি বুঝতে পারলাম এই নোংরা পৃথিবীতে আমার আর থাকতে হবে না।আমি এটাও বুঝতে পারলাম কেন সৃষ্টিকর্তা আমাকে এসব কিছু দেখালেন। উনি চাননি আমি আফসোস করি এই কদর্য পৃথিবীতে আরো খানিকটা বাস করার জন্য।কিন্তু আমার যে অনেক আপনজন আছে, তাদেরকে ছেড়ে কেমন করে থাকবো? একটু পর মনে হলো, তারাও একদিন তো আমার কাছে আসবেন।যে জগতে তাদের সাথে দেখা হবে সেই জগতে এই নরকের প্রাণীগুলো থাকবেনা বলে খোদার কাছে হাত তুলে ফরিয়াদ জানাবো।শেষবারের মত মাকে, আমার সব আপনজনদেরকে আর চিত্রলেখা খুব দেখতে ইচ্ছা করলো।

আমার ঘরে তখন মা চুপ করে শুয়ে আছেন।উনার সারাটা চোখে তখন না ঘুমিয়ে থাকার যন্ত্রণা।চিত্রলেখা আম্মুর পাশে বসে বলছিলেন, আম্মা আপনি ঘুমান।আপনার ছেলে ইনশাল্লাহ বেহেশতে আছে।ও তো কোন অন্যায় করেনাই।
আম্মা কোন কথা বলেনা, শুধু একটু পর পর কাদেন।কিছুক্ষণ পর চিত্রলেখাকে বললেন, “মা আমার ছেলেটা যখন এই এট্টুকু ছিলো তখন থেকে ওরে কোন যন্ত্রণা পাইতে দেইনাই।যখন মনে হয় ওকে কত আঘাত করে মারছে তখন আর চোখে ঘুম আসেনা।আমার বাচ্চাটাকে আমি খালি চোখের সামনে দেখি।মনে হয় সামনে দিয়ে হেটে যাইতাছে।চোখ বুজবো কেমনে?”
চিত্রলেখা মুখ লুকিয়ে কাদে।মা ওকে জিজ্ঞাসা করে, “আমার ছেলেটা আমার গায়ের গন্ধ না পাইলে ঘুমাইতে পারতোনা ছোটকালে।আমি যে বলছিলাম আমার একটা কাপড় নিয়ে ওর গোরে রাখতে কেউ কি তা শুনছিলো?অন্ধকার কবরে ও অনেক ভয় পাইবে”।

আমি মার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম।তাকে মনে মনে বললাম, “আম্মু আমার ভয় লাগে অনেক। যদি বেহেশতে যাই তাহলেও অনেক ভয় লাগবে তুমি পাশে না থাকলে। আমার অনেক ইচ্ছা করে তোমার পাশে থাকতে, কোথাও যাইতে চাইনা।যারা তোমার পাশে আর থাকতে দিলোনা দেখো আল্লাহ কোনদিন তাদের মাফ করবেনা।কোনদিন না”।

আমার চারপাশটা হঠাৎ করে বদলে যায়।আমি আর কাউকে দেখতে পাই না।কাউকে না।আমার মনে হলো এতোক্ষণ আমি সময় গাড়িতে আটকে ছিলাম।গাড়ি আমাকে নিয়ে এখানে সেখানে ছুটে বেড়িয়েছে।এখন গাড়ি থেকে আমাকে নামতে হবে অন্য কোন অজানা অদেখা পথের উদ্দেশ্যে। এই পথের ঠিকানা একদিন হয়তো সবাই বুঝে পাবেন।

************************************************************

এই গল্পটা হয়তো সনির, হয়তো বিশ্বজিতের অথবা সেই নাম না জানা মানুষগুলোর যাদের এই অদ্ভুত কুৎসিত সময়ে বিনা কারণে মেরে ফেলা হয়েছে।আমার মত সামান্য একজন এই গল্পটা লেখা ব্যতীত তাদের জন্য কিছুই করতে পারবেনা।যদি কখনো আবার একটা ৭১ আসে, আমি অনুরোধ করবো এই অসহায় মৃত্যুগুলোর কথা মনে রাখুন।ওই যুদ্ধে এদের প্রত্যেকের হত্যার বিচার হবে বলে আমি খুব আশা করি।
১৮টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×