somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইনফেরিয়র স্পিসিস এবং কিছু করনিয়

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৪:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
বিষয়টা আমাদের জন্য কি লজ্জাজনক! মানে যেগুলো(!) এমন করেছে ওরাতো আমাদের সাথেই বড় হয়েছে। আমাদের সাথেই খেলাধুলো করেছে। হয়তো বিকেল জুড়ে বসে জম্পেশ আড্ডাও দেয়া হয়েছে কয়েকটার সাথে। আমি বলছি না টিএসসি-তে যেগুলো (!) এমনটা করেছে তাদের কেও কিন্তু তাদেরই কোন জাতি ভাই। ভাদ্র মাাস আসলে এরা সবগুলো একসাথে ঘেউ ঘেউ করে। তখন এদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হয়। তবে সবচেয়ে উত্তম হল এদের গুলি করে মেরে ফেলা। আমাদের এলাকায় এদের অনেকগুলো স্বজাতি ঘুরাঘুরি করে। আমরা কমপ্লেন করায় সিটি কর্পোরেশন থেকে একটা দল এসে এদের গলায় দড়ি বেঁধে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তিতে শহর থেকে দূরে কোথাও বিষ দিয়ে অথবা গুলি করে অথবা লাঠি দিয়ে বাড়ি মারতে মারাতে মেরে ফেলে। এদের সাথেও এমনটা করার কথা অনেক আগেই। কিন্তু এদের এই অংশটা আমাদের নজর এড়িয়ে আমাদের আশেপাশে থেকে কিভাবে যেনো বেড়ে উঠছে। আর আমরাও নিজেদের একটা বিশেষ অনুভুতিকে(!) সামলাতে সামলাতে এত ব্যাস্ত যে ওদের যখন ভাদ্র মাস চলে আমরা তখন ছি ছি করে সটকে পড়ি। সিটি কর্পোরেশন এর মত সরকারি একটি বিশেষ বাহিনী রয়েছে এদের নির্মূল করার জন্য। কিন্তু অবাক করা বিষয় সেই বাহিনীই এদের ভয়ে জবুথবু হয়ে থাকে। পহেলা বৈশাখে টিএসসি-তে যখন বল্গা হারা হয়ে এরা মাংসের লোভে মানুষের (!!) উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলো সেই বিশেষ বাহিনী কিন্তু এগুলোকে খুব সাবধানে বাঁচিয়ে নিয়ে বাইরে ছেড়ে দিয়েছিলো। এদেরকে যেনো খুব আদর করে কেউ পেলে পুষে রাখছে। সময়ে সময়ে এরা মালিকদের পক্ষে একটু কামড়াকামড়ি করে মালিকদের কিছু সুবিধা আদায় করে দেয় মানি কিন্তু মালিকদেরকে বুঝতে হবে মানব সমাজে এদের এমন অবাধ চলাচল একদিন তাদের জন্যেও বিপত্তি ডেকে আনবে। খেটে খাওয়া মানুষের পোড়া শরীরের মাংস যদি তাদের এতোটা উন্মত্ত করে তবে মালিকের আদরিনীর বিদেশি সুগন্ধী মাখা নরম কোমল তুলতুলে মোলায়েম শরীরের লোভ তারা কয়দিন সংবরন করে রাখে সেটা মালিকের ভেবে দেখা উচিৎ।

২.
আমি আবার আমাদের কথায় ফিরে আসি। মালিকের না হয় সুবিধা আছে। এদের পূষে তাদের লাভ আছে। আবার এদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য হাতে চাবুকও আছে। কিন্তু আমাদের না কোন সুবিধা আছে না চাবুক। তাই আমরা কেনো নিজেদের বিশেষ অনুভিতিকে (!) সামলাতে পারাটাকেই আমাদের দায়িত্বের শেষ মনে করি? ১৪-১৫ বছর বয়সতো পেরিয়েছে ১৪-১৫ বছর আগে! আমাদের সামনে এসে এরা এমন করার সাহস পায় কি করে? আমার বাসার সামনে তাদের স্বজাতির(!) কিছু আছে প্রায় একসাথে হয়ে ঘেউ ঘেউ করে। কিন্তু আমি বা আমার মত কেউ যখন যায় তখন চুপ মেরে যায়। মানুষ দেখলে ভয় পায়। মাঝে মাঝে দু' একটা অবশ্য পাগল হয়ে পড়ে তখন আমরা এলাকার মানুষগুলো সেগুলোকে ধরে মেরে ফেলি। That is the merciful thing to do. টিএসসি-এর এগুলোর মতগুলোকেও আমাদেরই কিছু করতে হবে। আমার ধারনা দু'একটাকে ধরে নির্মূল করা গেলে বাকিগুলো লাইনে চলে আসবে। মনে রাখতে হবে এদের ওয়েল এডুকেটেড করা না গেলে ওয়েল ট্রেইনড হলেও করতে হবে নতুবা এরাডিকেট করতে হবে। এবং ঠেকাটা আপনার আর আমারই।

৩.
শিশু থেকে হাঁটিহাঁটি পা পা করে এগুতে এগুতে একদিন টের পেলাম আমি একটা ছেলে। আহা কি আনন্দ! আমার সবল পেশি, আমার চিকন গোঁফ, বৃষ্টিতে ফুটবল, স্টেডিয়ামে কনসার্ট, টঙ্গের দোকানে চায়ের কাপে অস্হির আড্ডা, রাত করে বাড়ি ফেরা, রিক্সা করে দুলে দুলে তার চলে যাওয়ার দিকে নির্লজ্জের মত তাকিয়ে থাকার অধিকার ইত্যাদি ইত্যাদি। বিশ্বজগৎ আমার এবং এখানে শুধু আমিই আছি। তারপর একসময় আমি খেয়াল করলাম আমার দু'টা ছোট বোন আছে যারা আমার এই ছেলেমানুষিকে(!) প্রবল ঈর্ষার চোখে দেখে। আমি তাদের এই ঈর্ষার যৌক্তিকতা খুঁজে পাইনি বহুদিন। ভার্সিটিতে আমার মেয়ে বন্ধুদের (!) দেখতাম সন্ধ্যার মধ্যে হলে ফিরে যাবার নিয়মের জালে আটকা পড়ে প্রবল অনিচ্ছা স্বত্তেও জমজমাট আড্ডা ছেড়ে চলে যেতে। আমরা এটাকে বলতাম সূর্যাস্ত আইন। ধীরে ধীরে বৈষম্যটা চোখে পড়তে লাগলো এবং একসময় ক্যাটক্যাটে হলুদ রঙের মত সেটা অগ্রাহ্য করার অতীত হয়ে পড়ল। কিন্তু তাও চুপ করে ছিলাম। যুক্তিটা ছিলো নিরাপত্তার এবং সমস্যাটা জটিল ও স্পর্শকাতর বলে মনে হচ্ছিল। জানতাম না এসব না মানলে কি হবে। কিন্তু সবশেষে টিএসসি-তে যা হল এটা যদি এই মেয়েদের বৃষ্টিতে ভিজা, আড্ডা ছাড়া হওয়া, স্টেডিয়ামে কনসার্ট মিস করা বা মাঝ সড়কে প্রিয়ের হাতে হাত রেখে হাঁটার অন্তরায় হয় তাহলে বলব সমস্যাটা সমাধানযোগ্য এবং তা মানসিকতার বা আরো ভালোভাবে বললে মানুষ হতে না পারার। তাই আমাদের খুব সাবধানে ইনফেরিয়র স্পিসিস যা আছে, ইত:পূর্বে আলোচ্য প্রাণী বিশেষ সমূহকে, আইডেন্টিফাই করতে হবে এবং এক্সটিংক্ট করতে হবে। সার্ভাইভ্যাল অব দ্যা ফিটেস্ট। যুদ্ধটা নারী বনাম পূরুষের না বরং মানুষ বনাম অমানুষের এবং এই যুদ্ধে মানুষ সার্ভাইভ করবেই।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×