ধর্ষণ,ভ্রূণ হত্যা,খোলা মাঠে টয়লেট সম্পাদন আর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও ভিন্নাধর্মাবলম্বিদের হত্যার পরিসংখ্যান বিবেচনা করলে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সংখ্যা এবং আনুপাতিক হারে প্রতিবেশী দেশ ভারত শীর্ষস্থান ধরে আছে।
বাতির নিচে অন্ধকারের মত দেশটির বেসিক কাঠামো হলেও প্রায় হাজারের অধিক টেলিভিশন চ্যানেল ভারতকে প্রতিনিয়ত সুপার হিরো হিসেবে উপস্থাপন করার কারণে ভারত অনেকটা খালি কলসি হলেও বিশ্বের বুকে একটা অবস্থান করে আছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের মিডিয়ার প্রথম এবং প্রধান কাজ হল দেশকে একটা নেগেটিভ প্লাটফর্মে তুলে দেয়া।
রংপুরের ঘটনা এক কথায় নিন্দনীয়,কিন্তু এই নিন্দনীয় ব্যাপারটি কি শুধু এক পক্ষীয়?
যারা হিন্দুদের বাড়ির উপর আক্রমণ করেছে এটা মানবতার দৃষ্টিতে জঘন্য অপরাধ এবং তারাই যদি মুসলিম হিসেবে আক্রমণ করে তবে তা তো আরও জঘন্য।
এ কথাটি মেনে নিয়েই বলতে হচ্ছে,প্রথমত যে কুৎসা রটনা করেছে সেই রটনাকারীর ব্যাপারটি যদি হুমায়ুন আজাদ,অমি পিয়াল বা লতিফ সিদ্দিকিদের মত প্রতিনিয়ত আচরণ কড়া হয় তবে বিপরীত ধারার লোকজন ক্রমেই উন্মাদনা বাড়াতে থাকবে এটাও তো অস্বীকার কড়া যায় না।
বিচারহীনতার সংস্কৃতি এর অন্যতম কারণ এবং ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টির জন্য বুদ্ধিজীবীরাও দায়ী যাদেরকে মিডিয়া পেলে পুষে বড় করে।
ইসলামপন্থীরা যেভাবে মিডিয়াতে অচ্ছুত বা অবাঞ্ছিত ইসলাম বিরোধীরা কিন্তু উলটোভাবে খুব সমাদৃত।এটা একটা দেশের জন্য বিভাজন রেখা সৃষ্টি করে।
ইতিহাস আলোচনাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।পলাশীর সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর থেকেই হিন্দুরা মুসলমানদের কে অত্যাচার শুরু করে।মুসলমানরা হিন্দুদের আপন করে নিতে চাইলেও গান্দিজি থেকে শুরু করে চরম কট্টর নেহেরু মূল্যমানদেরকে কখনোই মানুষ হিসেবেই গণ্য করেনি।এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক।সেই সাথে ১৯০০ সাল থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ইতিহাস কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সাম্প্রদায়িক ইস্যু যদি পাশ্ববর্তি দেশকে টানাটানির বিষয় হয়ে দাড়ায় তবে এই বুদ্ধিজীবীরা কিন্তু মোদীর ব্যাপারে নীরব।কিংবা গত পরশুদিন ও একজন মুসলমানকে হত্যার ব্যাপারে কথা বলে না।এটা কিন্তু সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র।
দেশকে ভালবাসতে হলে প্রথমত ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।মানে এই নয় যে ধর্ম নিয়ে গালাগালি হবে কিন্তু হিজাব মানি না,দাড়ি মানি না আবার নবী বা কোরআনকে গালি দিলে "ধরি মাছ না ছুঁই পানি" টাইপ ভুমিক নেই এটা ধর্মীয় স্বাধীনতা না।এমনকি ব্যাক্তিগত সংঘাতের জের কে ধর্মীয় লেবাস পড়ানো একটা জঘন্য মানসিকতা।যা হরহামেশাই হচ্ছে।
এইবার আসি আলেমদের ক্ষেত্রে।তাদের আসলে ভূমিকা কি?শিরিকের বিরুদ্ধে কথা বলা আর সরাসরি হিন্দু বলে গালি দেয়া কিন্তু এক না।তাই তাদের কথাবার্তাও সংযত হওয়া উচিত।তাদের পরিকল্পনা কে সুস্পষ্ট করা উচিত।হঠাত আন্দোলনের নামে আবেগের কারণে বাড়িঘর পুড়ানো কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য তো নাই-ই,ইসলামে এটা বৈধ ও না যদিও তার পিছনে অনেক কারণ থাকে।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি হিন্দু বন্ধুবান্ধবদের সাথে সবসময় সতর্কভাবে আচরণ করার চেষ্টা করেছি বা আমার আশেপাশের অন্যান্য বন্ধুবান্ধবদেরও দেখেছি সতর্কভাবে আচরণ করতে জেন ওই বন্ধুটি কোন কথা বা কাজে কষ্ট না পায়।বেশীরভাগ বাঙ্গালীরাও কিন্তু এরকম।এমনকি হিন্দুদের ব্যাপারে অনেক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে কুৎসা থাকলেও আমি তাদেরকে বেশ বন্ধুভাবাপন্ন হিসেবেই পেয়েছি।কিছু খারাপ থাকবেই এটা সব মানুষের মধ্যেই হয়।কিন্তু তার মাঝে সংঘাত গুলো কারা করছে?
খোঁজ নিলেই জানা যাবে যারা হিন্দুদের উপর দখলদারিত্ব কায়েম করেছে তারাই দিনের আলোতে ওদের পক্ষে সাফাই গাইতে গাইতে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করে।
নবী(সাঃ) কি নিয়ে কটূক্তি করে থাকলে এমন কটূক্তি তো অনেক মুসলমানের সন্তানও করছে তবে কি তাদের বাড়ি পুড়িয়েছেন?
তাহলে রংপুরে এমন হওয়ার পিছনে আসল কারণ কে বা হোতা বা মদদদাতা কারা?
কোন পেপার নয়,কোন মিডিয়া নয়,রংপুরের সত্যবাদী মানুষগুলোই এর উত্তর দিতে পারবে।তাই তারা এ নিয়ে লিখুক।কারণ মিডিয়াকে আমি বিশ্বাস করি না।এরা কতটা মিথ্যা লিখতে পারে তার জলজ্যান্ত সাক্ষী আমি দিতে পারবো।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১