somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগ কথন

১০ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ কোন বিশেষ দিন নয় এমন কি নয় আমার ব্লগিয় কোন আলাদা দিন। আজ হয়নি আমার শততম পোস্ট, বর্ষপূর্তি বা লক্ষ হিট। তবুও আজ ব্লগ ইতিহাস নিয়ে লিখতে মন চাইছে। বছর দেড়েক হতে চলল এই ব্লগ আমার দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্দ অংশ। কত ব্লগার এল কত ব্লগার গেল, কত জন আজও থিতু হয়ে রইল এই সাইটে। এক কি দেড় বছর পুরোনো ব্লগাররাই আগের ব্লগ বলতে নস্টালজিয়ায় ফিরে যায়। ক্যালেন্ডারের পাতার সাথেই ব্লগে এক একটি জেনারেশন ইতি নেয়, নিজের অজান্তে স্থান দিয়ে যায় নতুন দের।


সব কিছুর মাঝেই অনেকের প্রতি জেগে উঠে মায়া, বন্ধুত্ব আবার ঘৃণা। ব্লগিয় প্রেম জেগে উঠবার অবশ্য সুযোগ আমার হয় নাই। এক সময় ব্লগে খুব আড্ডা চলত। বিশেষ করে শামিম, মুনিয়া, আউলা এদের ব্লগে। শামীমের রাত বিরাতের আড্ডা এখন আর তেমন হয় না। মুনিয়া, আউলা আমার মতই গায়েব। সাজি আপু, নিবেদিতা, চিটি আপুদের একটার পর একটা কবিতা আসত আর হজমও করতাম। নিবেদিতা আপুর অবশ্য অনেক দিন পর পর কবিতা ছাড়তেন। তাগাদা দিলেই একটা কবিতা বের হত। অন্য দিকে সাজি আপুর কবিতার সাজি আমার কাছে বরাবরই আশ্চর্যময়। এত এত কবিতা একজন মাত্র কবি কিভাবে লেখে!! চিটি আপুর প্রতিবাদ মুখর কবিতা গুলো অন্যদের থেকে পৃথক। তাদের সবার সহজবোধ্য কবিতা গুলো মিস করি প্রায়ই।


একটা সময় চিকন মিয়ার ক্রেজ সব সীমা অতিক্রম করে গেল। তারপর শুরু হল চিকন মিয়া ঘেরা পোস্ট এখন অবশ্য খোদ চিকনমিয়া এবং তাকে কেন্দ্র করে দেওয়া পোস্টের হার অনেক কমে গেছে। হয়ত চিকন মিয়ার প্রতিনিয়ত মোটা হওয়াই এর পেছনের কারন। একবার শত পোস্টে প্রায় সাত আটশত ব্লগারেরে নাম দিয়েছিলাম। এত ব্লগারের ভিড়ে ব্লগার রোবটের নামটা হারিয়ে যায়। রেগে রোবট ভাই/বোন আলাদা পোস্ট দিয়েছিল। সেই থেকে তার নামটা আমি কখনই ভুলি না।

এখন বলি নিজের কথা। একটা সময় এই ব্লগ খুব উত্তেজনায় পরিপূর্ণ রইত। বিষয়ের অভাব হত না কখনই। অনেক পোস্টে কতই না যুক্তি পালটা যুক্তির খেলা খেলেছি। আমি অবশ্য আস্তিক-নাস্তিক, বিবর্তনবাদ এই বিষয় গুলো নিয়ে মাতামাতি বেশি করতাম। কোথাও আমার চিন্তার বিপরীত কিছু দেখলেই যুক্তি খন্ডনের জন্য নেমে পড়তাম। মাঝে মাঝে আসতাম রাজনীতির আলোচনায়। সবক্ষেত্রেই একই প্রতিযোগিতা, একই উত্তেজনা। দিনের বেলা বাইরে গেলেও মাথায় ঘুরত ব্লগ। যুক্তি পালটা যুক্তি, প্রশ্ন পালটা প্রশ্নের খেলার মজার এক জগত।


ভাবতে অবাক লাগে, এখন এসব বিষয়ে প্রথম পাতা ভরা অথচ এগুলোর নিয়ে মাতামাতি করার কোন আগ্রহ আমার নাই। অনেকে আজও এসব নিয়ে ঝগড়া বিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ধৈর্য দেখে আমি হতবাক হই বারে বারে। আমি বরাবরই সিরিয়াস মুডে ব্লগিং করে এসেছি। ব্লগের নানা বিষয় আমি সিরিয়াসলি নিতাম। চানাচুর একদিন বলেছিল, ব্লগিংকে সিরিয়াসলি নেবার কি আছে। আমরা নানা প্রান্ত হতে এই ব্লগে মিলিত হয়েছি, একদিন বিদায় নেব। একটা ওয়েবসাইটকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নাই। তখন বলেছিলাম আমি ভিন্ন মত প্রকাশ করি। এখন আমার মন অবশ্য পরিবর্তন হয়েছে।

মন্তব্যে ঝগড়া ঝাটি আর ভাল লাগে না। লিখতে বড্ড ইচ্ছা করে, অথচ লিখতে বসতে ক্লান্ত লাগে। ব্লগ পড়ি নিয়মিত। প্রতিদিনের এমন কোন পোস্টই হয়ত থাকে না যা আমি দেখি নি। কিন্তু মন্তব্য করতে বড় আলসে লাগে। লিখতে খুবই ইচ্ছা করে, সেই পিপাসা মিটাই গানের পোস্ট দিয়ে। আমি গানের কলি গ্রুপ খুলেছিলাম। এর সদস্য সংখ্যা ১০০ হবার পরে পোস্ট দেবার ইচ্ছা ছিল। আলসেমীতে আর দেওয়া হল না। এইতো কয়েক মাস আগে চারিদিকে আইডিয়া খুজতাম ব্লগে লিখবার জন্য। অথচ, এখন আর তা করা হয় না।


ব্লগের শুরু থেকেই দেখছি ব্লগাররা আড্ডা দেয়, যোগাযোগ করে। এই ব্যাপারটায় আমি কখনই আগ্রহ পাই নি। এইবার বইমেলায় প্রথম কোন ব্লগার মিলন মেলায় যোগ দেই। কারন একটাই, সেটা ছিল সাজি আপুর ব্লগিয় বইয়ের মোড়ক উম্মোচন। ব্লগার সাজিতে সেই দিন নিজেকে অন্যরকম লাগছিল।

যারা আমার ব্লগিংএর প্রথম দিকের সাথি তারা হয়ত মনে করতে পারবেন আমার প্রথম পোস্ট গুলোর কথা। সব মন মরা পোস্ট থাকত। কানা বাবা মন্তব্য করত আমার পোস্টে ঢুকবার আগেই জানে মন খারাপ হয়ে যাবে। তবে মন খারাপের সেই দিনগুলোতে ব্লগ আমাকে ভাল সময় কাটাতে দিয়েছে। প্রতিটি মানুষের গঠনের ক্রিয়াকালাপ যেমন এক তাদের মন খারাপের ধরণ গুলোও বোধ হয় এক। দেখা যেত, আমি যা নিয়ে মন খারাপ করে কিছু লিখতে চেষ্টা করছি, অন্য কেউ তাই লিখে ফেলেছেন ইতিমধ্যে। তখনকার দিনগুলোতে ব্লগই ছিল আমার ডায়রী। নিজের সব কিছুই লিখতাম। মন খারাপের গান লিখতে লিখতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। এখন ব্লগে আর মন খারাপের কথা লিখে মানুষকে বিরক্ত করি না।


আর কি বলব………………… স্টক শেষ। আল্লাহ হাফেজ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ৩:১৭
৪৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×