somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউঃ ধুম থ্রি

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমাদের দেশের মানুষ বাংলা সিনেমা দেখতে চায় না ! অন্যকে বলতেছি কেন আমি নিজেও ভাল ভাল গুলো ছাড়া খুব একটা দেখি না ! সবার একটাই অভিযোগ হল বাংলা সিনেমায় কোন কাহিনী নাই । প্রথমটা দেখলে শেষটা বলে দেওয়া যায় !
আসলে দুনিয়ার মোটামুটি সব সিনেমার কাহিনীই একই রকম ! প্রথম ভিলেন নায়কের বাবা কে মেরে ফেলে তারপর নায়ক বড় হয়ে সেই ভিলেন কে মেরে ফেলে ! সব সিনেমাই এই ভিত্তি করে তৈরি হয় !
আর দুষ খালি বাংলা সিনেমার, তাই না ?

তো সবার কাঙ্খিত সেই বিখ্যাত ছবি ধুম থ্রিও মোটামুটি একই কাহিনী !
ছবির শুরুতে নায়ক মানে আমির খানের বাপ মারা যায় ! বড় হয়ে আমির খান সেইটার প্রতিশোধ নেয় !

আরেকটু ভাল করে বললে বলতে হয় আমিরের বাবা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে একটা সার্কাস চালাইতো কিন্তু সার্কাস খুব ভাল চলতে ছিল না ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে পারে নাই ! তাই ব্যাংক সার্কাসের সব কিছু নিয়ে নিছে ! এই দুঃখে আমির বাবা বন্দুকের গুলি করছে নিজের মাথায় !
দুষ কার ?
ব্যাংকের !
এখন আমির বড় হইয়া এর প্রতিশোধ নিবে !
কি করবে ?
ওয়েস্টার্ন ব্যাংক অব সিকাগো ধ্বংশ করিবে !
এই হল কাহিনীর সারমর্ম ! আর কিছু নাই !


যাক এবার আরো কিছু কথা বলা যাক ! ছবির শুরুর দিকে দেখা যায় এক লোক রাস্তার পাশে বইসা ভিক্ষা করতাছে ! কেউ তারে ভিক্ষা দেয় না ! হঠাৎই দেখা যায় তার পাত্রে একটা ১০০ ডলারের নোট !
কে দিলো ?
ফকির অবাক সাথে আমিও !
হায় হায় এ যুগে ১০০ ডলার আবার কে দিল ফকির কে ?
আরেকটু পরে দেখা গেল আসলে একটা নোট না আরও অনেক নোট বাতাসে উড়তাছে ! কোন এমুন চোর আছে যে টাকা চুরি করে কিন্তু সেই টাকা না নিয়া উড়ায়া দেয় ?
আছে ! ইন্ডিয়ান পার্ফেকশনিষ্ট মিষ্টার আমির খান !
টেকাটুকা বাতাসে উড়তাছে ! মানুষজন টেকা কুড়াইতে ! আর তখনই আমির খান কে দেখা গেল বিল্ডিং বাইয়া দৌড়ায়ে নামতেছে !
না না ! ভুল বুঝবেন না ! সিড়ি দিয়ে না ! তিনি নামতেছেন দেয়াল দিয়ে দৌড়ায়ে !
রাস্তায় নাইমায় সে দৌড় দিল একটা ভ্যানের ভিতর ! আমি ভাবলাম বেটা বেকুব নাকি ? দৌড়ায় কেউ ভ্যানের ভিতর যায় নাকি ?
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে ভ্যান ভাইঙ্গা মোটরসাইকেল নিয়ে বের হইল ! আরে মোটরসাইকেই যদি চড়বি তা সেইটা ভ্যানের ভিতর রাখার কি দরকার ? রাস্তার উপর রাখলেই তো ভাল হইতো ! তাড়াতাড়ি পালাইতে পারতি !
যাই হোক নায়ক পালায়া গেল !


লেডি অফিসার ভিক্টরিয়া হাজির ! চোর ব্যাংকের ভল্টের গায়ে হিন্দিতে কিছু লিখেছে তাই আর কারো কাছে না যাইয়া ডাক পড়লো মুম্বাইয়ের পুলিশ জ্যায়ের !
আচ্ছা বুঝলাম চোর হিন্দিতে কিছু লিখছে তাই বলে দুনিয়ার তামাম অফিসার থাকতে হিন্দি জানাওয়ালা পুলিশ কেন লাগবে ? আম্রিকার পুলিশ কি হিন্দি চোর ধরতে পারে না ?

তো হিন্দি জানাওয়ালা পুলিশ চলে এল ! সাথে হাজির হল জোকার আলী ! পুলিশ ব্যাংকের মালিককে বলল এবার কেবল একবার চোর চুরি করতে আসুক ! তার খবর আছে !
টিভিতে ইন্টারভিউও দিল যে এবার চোরের খবর আছে !

আবার চোর সেই ইন্টারভিউ দেখে পুলিশের সাথে গিয়ে দেখা করলো ! বলল সে চোর কে চিনে ! সে চোর কে ধরতে স্যাহায্য করতে পারবে !

চোর চুরি করতে এল !
এবং চুরি করে চলেও গেল !
ইন্ডিয়ান পুলিশ কিছুই করতে পারলো না । তবে হ্যা ! একটা গুলি লাগালো চোরের গায়ে !

পুলিশ তো বিরাট বুদ্ধিমান ! সে বুঝে গেল আসলে সাহায্য করতে আসা সেই লোকই চোর ! সোজা চলে গেল তার সার্কাসে !
ও হ্যা বলতে ভুলে গেছি নায়ক তার বাপের মত সার্কাস দেখায় !

পুলিশ তো জানে চোরের গায়ে গুলি লেগেছে ! সুতরাং জামা খুললেই চোর ধরা খাবে !
আমির খান জামা খুলল ! কিন্তু গুলির কোন চিহ্ন নাই ! পুলিশ অবাক সাথে আমিও ! কেবল হাত দিয়ে না স্ক্যানার দিয়েও খুজেও কোন গুলির চিহ্ন পাওয়া গেল না !

রহস্য একটু পরেই ধরা পরলো ! আসলে আমরা যে চোর কে একজন মনে করছিলাম এই চোর একজন না ! দুই জন ! জমজ ভাই ! দুইজন আমীর খান !
একজন সাহেল খান আরেকজন সামার খান !
সাহেল একটু বেশি বুদ্ধিমান আর সামার একটু বোকাসোকা ! কিন্তু এই রহস্য আর কেউ জানে না ! দুনিয়ার চোখে তারা একই জন !

এই হল কাহিনী ! একবারের শেষের দিকে যখন দুই আমীর এক সাথে পুলিশের কাছ থেকে ভাগতেছে তখন আলিয়া এসে হাজির !

ও ! এর ভিতর আবার আলিয়া আইলো কোথা থেকে ?
আসলে এই মুভিতে আলিয়া মানে ক্যাটরিনার কোন দরকার ছিল বলে আমার মনে হয় নাই ! আলিয়া কে দেখা যায় কেবল তিনটা গানের সময় ! আর সামারের সাথে একবার একটু ডেট এ যায় আর একটা চুম খায় !
ব্যাস ! এই হল আলিয়ার ভুমিকা !

তো যাক ! শেষের দিকে ভিনেল যেমন নায়িকা ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে এখানেই সেই রকম একটু চেষ্টা আরকি ! নায়ক পালাইতাছে পুলিশ আলিয়া নিয়ে নিয়ে হাজির !
আলিয়া চিৎকার করে বলল
সামাআআআআরররররর !! সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে !
সামার কনফিউজ ! নায়িকার চোখে পানি ! কেমনে পালায়া যায় !
আসলে এই জন্য নায়ক গুলা ধরা খায় ! যাক শেষ টুকু আর নাই বললাম !

এই হল প্রতীক্ষিত সেই ধুম থ্রি !


তবে পুরা মুভির ভিতরে নতুনত্ব ছিল আমীরের বাইক খানা ! এই বাইক একই সাথে মাটি এবং পানিতে চলতে সক্ষম ! শেষের দিকে আমি তো ভাবছিলাম বাইকটা উড়তেও পারবে ! যদিও একটু উড়ালও দিছিল !
আর নতুন কিছু পেলাম না !
গান গুলো মোটামুটি ভাল ছিল !


আমি ঠিক বুঝলাম না এই ছবি নাকি প্রথম দিনে ৩৬ কুটি রুপি আয় করেছে । এই কাহিনী নিয়ে একদিনে ৩৬ কুটি ?
যেমনি চেন্নাই এক্সপ্রেসের বেলাও ঠিক বুঝতে পারি নাই !


২০১৩ সালে সব মুভি গুলো দেখে এমুন হতাশ কেন হইতাছি !!


প্রিন্ট খুব বেশি ভাল না তবে দেখা যাবে । ডাউনলোড লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৪
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×