somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনুবাদ রম্য গল্পঃ সম্পর্কের প্যাঁচ

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডা. এডওয়ার্ড স্টুয়ার্ট ডারবান মানষিক হাসপাতালের নতুন ডিন হয়ে এসেছেন । তিনি ঠিক করলেন চাকরিতে জয়েন করার প্রথম দিনেই তিনি পুরো হাসপাতালটা ঘুরে দেখবেন । কোথায় কি আছে সেসব নিজের চোখে দেখে নিবেন, তারপর তার কাজ শুরু করবেন । যেমন ভাবা তেমন কাজ ! তিনি পরিদর্শন শুরু করলেন । সব কিছু দেখার পরে গেলেন রোগীদের দেখতে । বিভিন্ন রকমের রোগীকে দেখতে পেলেন । ঘুরতে ঘুরতে একটা রোগীর সামনে এসে খানিকটা থমকে গেলেন । প্রত্যেক রোগীর মাঝেই কিছু না কিছু মানষিক অসুস্থতার লক্ষ্যন তিনি দেখতে পেয়েছেন তার অভিজ্ঞ চোখ দিয়ে । কিন্তু যে বেড টির সামনে এসে দাড়ালেন সেটার রোগীকে তার একদম সুস্থ স্বাভাবিক মনে হল । অন্যান্য রোগীর মত নন বরং সে একটা বই পড়ছে মনযোগ দিয়ে !
ডা. এডওয়ার্ড তার কাছে এগিয়ে গেলেন কৌতুহল বসত !
-আপনি কেমন আছেন ?
রোগী মুখ তুলে চাইলো । তারপর খুব স্বাভাবিক কন্ঠে বলল
-জি ভাল আছি !
তারপর আরও কিছুটা সময় তিনি কথা বললেন । জানতে পারলেন তার নাম জোসেফ এমিল ! তিনি এখানে মাস খানেক ধরে আছেন । কথা বার্তার এক পর্যায়ে ডা. এডওয়ার্ড বললেন
-আপনার কথা বার্তা তো একদম পরিস্কার ! এবং আমার মনে হচ্ছে আপনার কোন সমস্যা নেই । তবুও আপনি এখানে কেন আছেন ?
এই কথা শুনে রোগী এক করুণ হাসি দিল । তারপর বলল
-আমার গল্প শুনলে আপনার এই কথা মনে হবে না !
-তাই বুঝি ! তা শোনান দেখি !
-আচ্ছা বসুন । তবে আপনার মাথা যদি ঘুরে যায় তাহলে সেটার দায়িত্ব কিন্তু আমি নিতে পারবো না ।
-আচ্ছা শুরু করুন । আপনার কোন ভয় নেই !
কিছু সময় চুপ করে থেকে জিসেফ এমিল তার গল্প শুরু করলো !
আমার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর আমি বেশ কিছুদিন একাই ছিলাম । তারপর একদিন মনে হল আর কত এবার একটা বিয়ে করা দরকার । আমি যেহেতু বিপত্নিক তাই একজন বিধবাকে খুজছিলাম । পেয়েও গেলাম । তার একজন পূর্ন বয়স্ক মেয়েও ছিল । যাই হোক তাকে সহই আমি বিয়ে করে ফেললাম । কিছুদিন বেশ ভালই যাচ্ছিলো । কিন্তু তারপরেই ঝামেলা শুরু হল । আমার বাবা আমাদের বাসায় বেড়াতে এল ! এবং আমার স্ত্রীর ঐ আগের ঘরের মেয়েকে তার খুব পছন্দ হয়ে গেল । এতোই পছন্দ যে আমার বাবা তাকে বিয়ে করে ফেলল !
তাহলে কি দাড়ালো ?
যে মেয়েটি, যে কি না আমার মেয়ে ছিল সে হয়ে গেল আমার নতুন মা ! একই সাথে আমি আমার মেয়ের সৎ ছেলে হয়ে গেলাম যেহেতু সে আমার বাবার স্ত্রী !
ডা. এডওয়ার্ড বললেন
-বেশ জটিল অবস্থা দেখছি !
রোগী বলল
-কিছু তো শুরুই হয় নি । এবার বলি আসল ঘটনা ! তার পরেও সব কিছু ঠিকই চলছিলো কিছুটা সময় কিন্তু ঝামেলা বাধলো যখন আমার এবং আমার স্ত্রীর কোল জুড়ে এক ছেলে সন্তান এল ! এবার একটু হিসাব করে দেখুন আমার ছেলে ঐ কন্যার ভাইও হল কারন আমার ছেলের মা এবং আমার স্ত্রীর আগের পক্ষের মেয়ে একই মেয়ের সন্তান ! কিন্তু আমার সেই মেয়ে যেহেতু আমার বাবার স্ত্রী তাই তার ভাই মানে আমার মায়ের ভাই, হিসাব আমার মামা হয় ! তাহলে কি দাড়ালো ? আমার নিজের ছেলে আমার মামা হয়ে গেল ! আর মামা মা হল আমার নানী ! কিন্তু এই নানীর সাথে আমার আবার কি সম্পর্ক বলুন তো ? সে আবার আমারই নিজেরই স্ত্রী ! আমার নিজের স্ত্রীই আমার নানী যেহেতু যে আমার মামা মা !
ডা. এডওয়ার্ড বললেন
-এতো দেখছি ভয়াবহ অবস্থা !
-আরও আছে । কাহিনী এখানেই শেষ না ।
-আরও আছে ?
-এরও কিছু দিন পরে আবার বাবা এবং তার নতুন স্ত্রী যে কিনা আমার মেয়ে ছিল, তাদের এক ছেলে সন্তান হল ! এবার বলুন দেখি সে আমার কি হল ?
ডা. এডওয়ার্ড বুঝতে পারছিলেন তার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে !
রোগী বলল
-পারছেন না তো ? আমি বলছি ! সে যেহেতু আমার বাবার সন্তান হিসাব মত সে আমার ভাই হল । কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না সে কিন্তু আমার মেয়েরও সন্তান । সেই হিসাব মত সে আমার নাতনিও হল ! আমি নিজেই আবার এখানে নিজের নানা হয়ে গেলাম । আমার বাবা যে কি না আমার মেয়ের স্বামী সে আমার জামাই হল হিসাব মত । এবার বলেন দেখি আমার ছেলে এবং আমার বাবার ছেলের ভেতরে কি কি সম্পর্ক হল ? কিংবা আমার ছেলের সাথে
......।
ডা. এডওয়ার্ড উঠে পড়তে পড়তে বললাম
-আমি বুঝতে পারছি, আর বলতে হবে না । আপনি এখনও শান্ত আছেন কিভাবে সেটাই তো বুঝতে পারছি না ।
-সব সময় ঠিকই থাকি কিন্তু যখনই সম্পর্কের গুলো মেলাতে যাই তখনই ঝামেলা বেঁধে যায় !
ডা. এডওয়ার্ড নিজের রুমের দিকে হাটা দিলেন । তার মাথাটা ঝিমঝিম শুরু করতে শুরু করেছে ! কে কার কি হয় সেটা বের করতে গিয়ে সব গিট পাকিয়ে যাচ্ছে ! মাথায় পানি দিয়ে সব শান্ত করতে হবে আগে !





(একটি বিদেশী গল্পের বাংলা সংস্করন । হুবাহু একই রকম না অবশ্য । অনেক দিন আগে অলাইনে পড়েছিলাম । লেখকের নামও মনে নেই)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৭
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×