somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতিপ্রাকৃত গল্পঃ ভুতুড়ে চাকরি (বর্ষপূর্তি পোস্ট)

১৬ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




তন্বী চাকরিটা বলতে গেলে একদম হঠাৎ করেই হয়ে গেল । চাকরির এই বাজারে এই ভাবে যে ও চাকরিটা পেয়ে যাবে সেটা ও ভাবতেও পারে নি । সবে মাত্র অনার্স শেষ করেছে । মাস্টার্সে তখনও ভর্তি হয় নি । মাস্টার্স করবে কি না, সেটা নিয়েও ভাবছে । নাকি এখন থেকেই সরকারি চাকরীর জন্য চেষ্টা শুরু করবে সেটাও ও ভাবছিলো । বিডি জবসে এমনিই কয়েকটা জবের জন্য এ্প্লাই করে রেখেছিলো । কিন্তু কোন দিন যে ডাক পাবে সেটা ও ভাবতেও পারে নি । ভাইভা কল পেয়ে খানিকটা অবাক হয়েছিলো ।

ভাইভা দেওয়ারও মাস দুয়েক পরে যখন চাকরির জন্য কলটা পেল, প্রথমে ভেবেছিলো হয়তো কেউ ওর সাথে কেউ মশকরা করছে । মাস দুয়েক আগে সেই সুসজ্জিত কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়েছিলো সেটা ওর মনে আছে । চাকরি হলে সাধারনত সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই কল চলে আসে । ভেবেছিলো আর বুঝি কল আসবে না । কিন্তু যখন সত্যিই সত্যিই এপয়েন্টমেন্ট লেটার চলে এল ও কিছুতেই নিজের ভাগ্যকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলো না । তাও আবার এমন একটা চমৎকার অফিসে । তন্বীকে আলাদা একটা ডেস্ক দেওয়া হল । বিশাল বড় রুমে সবার আলাদা ডেস্ক, কার্ডবোর্ডের পার্টিশন দেওয়া । আনন্দে তন্বীর চোখে পানি চলে এল ।

প্রথম সপ্তাহ তন্বীর চাকরি খুব ভালই চললো । সবার সাথে পরিচিত হওয়া কাজ বুঝে নেওয়া এই সবে কেটে গেল প্রথম সপ্তাহটা । সবাই বেশ হাসি খুশি এবং সবাই ওকে হাসি মুখেই গ্রহন করলো । ওর উপরে থাকা শাহেদ আর জনি সাহেবকে ওর খুবই বন্ধুবাস্যল মনে হল । অফিসের ম্যানেজারও বেশ চমৎকার মানুষ তবে কাজ-কর্মের বেলাতে তিনি বেশ কড়া । ফাঁকি দিলে বেশ বকা দেন । ওর কাজটা বেশ গুরুত্বপূর্ন আর একটু রিস্কিও বটে । কারন ওর হাত দিয়েও কোম্পানির সব টাকা পয়সার হিসাব যাবে ম্যানেজার সাহেবের কাছে । একটু গড়বড় হওয়ার উপায় নেই ।

তন্বী শুনেছে এর আগে যে জন ওর জায়গাতে কাজ করতো সে নাকি বড় রকমের টাকা পয়সার গোলমাল করেছিলো । তার নামে মামলাও হতে যাচ্ছিলো, ঠিক তখনই সে নাকি এই অফিসেই সুইসাইড করে । অফিস আর বেশি উচ্চবাচ্চ করে নি । চেপে গিয়েছে ।

কথাটা জানার পরে তন্বীর একটু অস্বস্তি লেগেছিলো বটে । ওর পোস্টের আগের জন আত্মহত্যা করেছে সেটা শুনে একটু অস্বস্তি হওয়ারই কথা । তবে আরও একটা অদ্ভুদ ব্যাপার হচ্ছে এতো চমৎকার অফিস কিন্তু অফিস শুরু হলেই তন্বী একটা অস্বস্তিকর অনুভুতি হওয়া হল । কি কারনে এমনটা হচ্ছিলো সেটা অবশ্য তন্বী কিছুতেই বুঝতে পারছিল না তবে ওর মনের এক দিকে এমন একটা অদ্ভুদ অনুভুতি হতে শুরু করলো । ও সেটা আমলে নিল না । বারবার মনে হল যে নতুন অফিস বিধায় এমন মনে হচ্ছে । দিন যাওয়ার সাথে সাথে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। সব কিছু ঠিকই চলছিলো কিন্তু প্রথম সপ্তাহ পর প্রথম সমস্যাটা শুরু হল ।

প্রতিদিনকার হিসাব ওকে প্রতিদিন মিলিয়ে তারপর বের হতে হয় অফিস থেকে বের হতে ওর একটু দেরিই হয়ে যায় । বলতে গেলে সবার শেষে ওর অফিস থেকে বের হয় । সেদিনও অফিস থেকে একটু দেরি করেই বের হয়েছিলো । একটু যেন বেশিই দেরি হয়ে গিয়েছিলো । কারন ততক্ষনে পুরো অফিস একেবারে ফাঁকা হয়ে গেছে । কেবল এডমিনের শায়েম সাহেব আছেন । তন্বীর হিসাব মিলাতে একটু সময় লাগছিলো । কাজটা যখন শেষ করবে তখনই ওর মনে কেউ যেন ওর পাশে এসে দাড়ালো । তন্বীর মনে হল হয়তো শায়েম সাহেবই এসে দাড়িয়েছে । একটা মিষ্টি পারফিউমের গন্ধ এসে লাগলো নাকে । অনেকটা মেয়েলী পারফিউম । মাথা ঘুরে তাকাতেই দেখলো কেউ নেই । একটু যেন অবাক হল । তবে সেই সাথে একটা তীব্র অস্বস্তিও শুরু হল ওর মনে । কারন ওর তখনও মনে হচ্ছে যে কেউ না কেউ এই কাভার্স ঘেরা ডেস্কে ঠিকই আছে আর ওর দিকে তাকিয়ে আছে । এখনও সেই পারফিউমের গন্ধটা নাকে লাগছে ।

তন্বীর মনের সেই অস্বস্তিটা ধীরে ধীরে ভয়ে পরিনত হল । বুকের ভেতরে একটা ধুকধুক করতে শুরু করলো । মনে হল এখনই কারো নিঃশ্বাস ওর গায়ের উপর পড়বে ।

হিসাব না শেষ করেই তন্বী ব্যাগ নিয়ে জলদি বের হয়ে গেল নিজের ডেস্ক থেকে । এক প্রকার দৌড়েই এডমিন শায়েম সাহেবের অফিসে গিয়ে হাজির । তন্বীকে দেখে শায়েম খানিকটা অবাক হয়ে বলল

-কি হয়েছে ? এমন দেখাচ্ছে কেন ?

তন্বী কোন কথা না বলে কেবল টেবিলে রাখা পানির গ্লাস হাতে নিয়ে এক ঢোকে পুরো টুকু খেয়ে ফেলল । তারপর চেয়ারে বসতে বসতে বলল

-স্যার ভয় পেয়েছি ।

-মানে ?

-আমি কাজ করছিলাম । আমার কেন জানি মনে হল কেউ আমার পাশে এসে দাড়িয়েছে । ভাবলাম আপনি হয়তো যাওয়ার আগে একবার আমার সাথে দেখা করতে এসেছেন কিন্তু যখনই মাথা ঘুরিয়েছি তখনই দেখি ওখানে কেউ নেই কিন্তু সেই অস্বস্তিটা ঠিকই টের পাচ্ছিলাম । মনে হচ্ছিলো কেউ তখনও আছে । আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।

তন্বী ভেবেছিলো ওর কথা শুনে শায়েম সাহেব হেসে উঠবেন কিংবা কিছু শান্তনা দিবেন । কিন্তু তিনি কিছুই বললেন না । বরং গম্ভীর হয়ে গেলেন । কিছু সময় চুপ থেকে বললেন চলুন বাসায় যাওয়া যাক ! তখনই তন্বীর মনে হল কিছু একটা সমস্যা আছে । যেটা এই অফিসের কেউ ওকে বলছে না । অফিস থেকে বের হওয়ার সময় আরেকবার নিজের ডেস্কের দিকে তাকালো । কেমন একটা অস্বস্ত মিশ্রিত ভয় কাজ করতে লাগলো ওর নিজের ভেতরেই ।

পরদিন অফিসে এসে নিজের ডেস্কে হাজির হতেই সব আবার আগের মত স্বাভাবিক । কিছুটা সময় নিজের চেয়ারে বসে মনে মনেই হাসলো । তারপর খানিকটা লজ্জাও পেল গতকাল ওভাবে ভয় পাওয়ার জন্য । শায়েম স্যার নিশ্চয়ই ওকে নিয়ে হাসাহাসি করবে । অফিস শুরু হতে না হতেই যদি ওকে নিয়ে বসাই হাসাহাসি শুরু করে দেয় তাহলে তার পরের সময় গুলো তার জন্য সুখকর হবে না কোন ভাবেই । কিন্তু তারপরেই গতকালের সায়েম স্যারের মুখের ভাবটার কথা মনে পড়লো । তিনি ওর ভয় পাওয়া নিয়ে মোটেই হাসাহাসি করেন নি । গতকালই তন্বীর মনে হয়েছে কিছু একটা আছে যেটা কেউ ওকে বলছে না । ওর কাছ থেকে লুকিয়ে রাখছে ।

গতকাল যা হয়েছে সেটা ও ভুলে যাবে বলে ঠিক করলো । তারপর নিজের কাজে মন দিল । মনে পড়লো যে গতকালকে হিসাব এখনও মিলানো হয় নি । সেটা মিলিয়েই আজকের কাজ শুরু করতে যাবে । খাতা বের করতেই একটা বড় রকমের ধাক্কা খেল । কারন গতকালকের হিসাবটা একেবারে মিলানো । কিন্তু ওর স্পষ্ট মনে আছে কাজটা ও করে নি । কিছুটা তখনও বাকি ছিল যখন সে ভয় পেয়ে চলে গিয়েছিলো ।

মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে । সেই ফ্যানের ঠান্ডা বাতাস আর দিনের আলোর ভেতরেও তন্বী ঘামতে লাগলো । কিছু একটা সমস্যা হয়ে আছে এই অফিসে সেটা ও বুঝতে পারছে কিন্তু সেটা কি সেটা ঠিক বুঝতে পারছে না । বারবার কেবল সেই একটা কথাই মনে হচ্ছে ওর আগে এই পোস্টে যে ছিল সে কি চাচ্ছে না কোন ভাবে যে ও এখানে চাকরি করুক । কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব !

একজন মানুষ মরার পরে কিভাবে এসব করতে পারে । তন্বী কিছুতেই এসব বিশ্বাস করতে পারলো না । বিশ্বাস করতে ওর মন চাইলো না কিন্তু ওর সাথে যা ঘটে গেল সেটাও ঠিক অবিশ্বাস করতে পারছে না । এটা এমন কেন ?

তারপর থেকেই তন্বীর সাথে একের পর এক ঘটনা ঘটতেই থাকলো । প্রথম প্রথম কেবল যখন মানুষজন আশে পাশে থাকতো না, অফিস শেষের দিকে যখন সবাই চলে যাওয়া শুরু করতো তখনই এরকম ঘটনা ঘটতো, তন্বী একটা চমৎকার পারফিউমের গন্ধ পেত । ওর মনে হত কেউ ওর পাশে দাড়িয়ে আছে । মাঝে মাঝে কারো নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পেত ও ।

কিন্তু তারপর অবস্থা এমন হয়ে গেল যে দিনে দুপুরে সে সে সেই মানুষটার উপস্থিতি টের পাওয়া শুরু করলো । দিনে দুপুরে কাজ করছে এমন সময় কেউ এসে তার পাশে দাড়িয়েছে । পাশ ফিরে দেখলো কেউ নেই ।

শেষে আর না থাকতে পেরে ম্যানেজার সাহেবকে সব খুলে বলল । তারপর বলল এমন চলতে থাকলে তার পক্ষে আর কাজ করা সম্ভব হবে না । ম্যানেজার সাহেব তন্বীর মুখে এই কথা শুনে অবাক হলেন না । বরং উনি যেন আশাই করে ছিলেন এমন কিছু একটা হবে ! তন্বী তারপর প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করেই ফেলল ।

-স্যার এমন কিছু আছে যেটা আমি জানি না কিন্তু আপনি জানেন ?

ম্যানেজার বেশ খানিকটা সময় চুপ করে থেকে বলল

-আছে ! আসলে ভেবেছিলাম আপনার কাছে এসব জানাবো না কিন্তু কি করবো বুঝতে পারছি না ।

-আমাকে দয়া করে বলেন স্যার !

আবারও কিছুটা সময় চুপ করে থেকে বলল

-আপনার আগে ঐ পোস্টে কে ছিল সেটা কি আপনি জানেন ?

-ঠিক জানি না । কেবল শুনেছিলাম তিনি নাকি আত্মহত্যা করেছিলো ।

-হ্যা ! মেয়েটার নাম ছিল সোমা আহমেদ । বেশ চমৎকার আর হাসিখুশি মেয়ে ছিল । মেয়েটা তোমার কাজই করতো । বেশ দক্ষতার সাথেই করতো । কিন্তু আজ থেকে বছর খানেক আগে দেখা গেল মেয়েটার হিসাবে প্রায় কোটি খানেক টাকার গড়মিল । এমনটা হওয়ার কথা ছিল না ।

-তারপর ?

-আমরা তদন্ত চালালাম । দেখা গেল মেয়েটার বেশ কিছু ঝামেলা করে ফেলেছিলো । হয়তো টাকা সরিয়ে ফেলেছিলো । পরে আর হিসাব মিলাতে পারে নি । আমরা যখন বললাম যে আমরা পুলিশ খবর দেব তখন মেয়েটা পাগলের মত একটা কাজ করে বসলো । কিছু দিন বিরতির পর সে অফিসে এসেছিল । কি যেন খুজছিল । আমি হয়তো ভাবলাম আবার হয়তো শেষ চেষ্টা করছে । সবাই সেদিন অফিস থেকে বের হয়ে গেছে । মেয়েটা একা একাই বসে ছিল । সকাল বেলা দারোয়ানের কাছ থেকে দুঃসংবাদটা পাই । সোমা নাকি নিজের ডেস্কে গলায় ফাঁস নিয়েছে । হয়তো শেষ হিসাবটা মেলাতে পারে নি । তাই এই কাজ করেছে !

এই টুকু বলে ম্যানেজার সাহেব থামলেন । টেবিলের উপরে রাখা পানি এক ঢোকে খেয়ে ফেলল । তারপর বলল

-তারপরই আসল সমস্যা শুরু হল ।

-কি রকম ?

-কেউ ঐ পোস্টে কাজ করতে পারছিলো না । যেই ঐ পোস্টে আসছিলো সেই কোন না কোন ঝামেলার সম্মুখিন হচ্ছিলো । নতুন লোক নিয়োগ দিয়েও টিকাতে পারছিলাম না । তুমি কি জানো তুমি হচ্ছো ঐ পোস্টে আসা ছয় নম্বর ক্যান্ডিডেট ! এর আগে ৫ জন এসে জয়েন করেছিল । ৫ জনই ছেলে ছিল । কেউ পনের দিনের বেশি টিকে । পোস্ট টা এমন যে ফাঁকাও রাখার উপায় নেই । তুমি যে দুই মাস টিকে গেছো । হয়তো মেয়ে বলেই । তোমাকে নিয়োগ দেওয়ার পরে ভেবেছিলাম যে যাক এবার সমস্যাটা গেছে কিন্তু তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে যায় নি ! তবে একটা ব্যাপার যে আগের যে পাঁচ জনের কথা বললাম ওরা দিন পরেও টিকতে পারে নি । একজন তো প্রায় মরতে বসেছিলো । সেই তুলনায় তুমি কিন্তু .....

-আপনি কি বলতে চাচ্ছেন ?

-দেখো .... কিভাবে বলবো বুঝতেছি না । এই সবে আমি কোন দিনই বিশ্বাস করি নি । কিন্তু চোখের সামনে যা হয়ে যাচ্ছে সেটা না বিশ্বাস করেও উপায় নেই । আমার কেন জানি মনে হচ্ছে ওটা যেই হোক কিংবা যাই হোক সেটা তোমার কোন ক্ষতি করবে না । তুমি কেবল ভয় পেয় না । তাহলেই হবে ! আর এর জন্য তোমাকে ...

-আমাকে ....?

-আমি তোমার চাকরিটা আজ থেকেই পার্মানেন্ট করে দিচ্ছি সেই সাথে বেতন যা বলা হয়েছিলো তার থেকে বেশি দেওয়া হবে ! চাকরির এই বাজারে এতো ভাল অফার কিন্তু আর পাবে না । বাকিটা তোমার সিদ্ধান্ত !

তন্বী কি করবে ঠিক বুঝতে পারছে না । ওর এই বর্তমান চাকরিটা অন্য যে কোন চাকরি থেকে অনেক বেশি আকর্ষনীয় । একটু কাজের চাপ তবে সুযোগ সুবিধাও বেশ । আর বেতন যদি আরও বেশি হয় তাহলে এমন একটা চাকরি ছাড়া ওর জন্য বোকামীই হবে । কিন্তু এই অস্বাভাবিক ব্যাপারটা কিছুতেই মন থেকে বের করতে পারছে না । তবে হ্যা অস্বাভাবিক সেই জিনিসটা ওর এখনও কোন ক্ষতি করে নি । চাকরি করবে কি করবে না এই দ্বিধা নিয়েই তন্বী নিজের ডেস্কে ফিরে গেল ।

একটা অস্বস্তি ঠিকই কাজ করছে কিন্তু ম্যানেজার সাহেবের কথা ফেলে দেওয়ার মত না । যদিও সত্যি যে চাকরিটা ওর কাছে একদম হঠাৎ করেই চলে এসেছে তবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই যে এই চাকরিটা ছেড়ে দিলেই ও আরেকটা ভাল চাকরি পেয়ে যাবে । ওদের ক্যাম্পাসের এমন অনেক সিনিয়ারদের কে ও চেনে যারা এখনও একটা ভাল চাকরি জোগার করতে পারে নি ।

অফিস ছুটির পরে আমনেই হাটছিলো । ওর হাতে তখন ম্যানেজার সাহেবের দেওয়া চাকরি স্থায়ী হওয়ার কাগজটা । সেখানে বেতনের পরিমানটা আসলেই লোভনীয় ! তন্বী মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েই নিলো যে চাকরিটা সে চালিয়ে যাবে । এখনও কেবল অল্প বিস্তার ভয় পেয়েছে সে । আর কিছুই হয় নি । তন্বীর মনে হয়েছে আগের এপ্লোয়ীদের সাথে যাই হোক না কেন তার সাথে তেমন কিছুই হবে না । আর যদি হয়েও যায় কখনও তখন না হয় চাকরিটা ছেড়ে দেওয়া যাবে !

-আপু একটু শুনবেন !

প্রথম ডাকটা তন্বী ঠিক মত শুনতে পায় নি । তবে আরেকবার ডাকটা কানে যেতেই মনে হল ওকেই যেন কেউ ডাকছে । দাড়িয়ে পড়লো । পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো একটা ১৮/১৯ বছরের ছেলে ওর দিকে এগিয়ে আসছে । তন্বী তবুও নিশ্চিত হওয়ার জন্য বলল

-আমি ?

-হ্যা !

তন্বী ছেলেটির মুখটা মনে করার চেষ্টা করলো । এমন কাউকে চেনে কি না ঠিক মনে পড়লো না । বলল

-তোমাকে কি আমি চিনি ?

-না ! চিনেন না ।

-তুমি আমাকে চিনো ?

-ঠিক চিনি ঐভাবে তবে আপনার সাথে আমার কয়েকটা কথা ছিল । যদি শুনতেন !

তন্বী ছেলেটার চেহারা ভাল করে দেখে বোঝার চেষ্টা করলো । মনে হল না যে ছেলেটার কোন খারাপ উদ্দেশ্য আছে । বরং চেহারাতে একটা করুন ভাব ফুটে আছে । তবে আজকাল অবশ্য কেবল চেহারা দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই । রাস্তার পাশে একটা বসার বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে সেটাকে বসার ইঙ্গিত করলো ।

ছেলেটা মাথা নিচু করে কিছুটা সময় বসে রইলো । তারপর বলল

-আমার নাম সজিব । আপনাদের অফিসে যে প্রাক্তন কর্মী ছিল, সোমা আহমেদ আমি তার ছোট ভাই !

-ও !

তন্বী কি বলবে খুজে পেল না । সামনে দিয়ে এক ভাবে গাড়ি ছুটে যাচ্ছে । একের পর এক গাড়ি ছুটে যাচ্ছে গন্তব্যের দিকে । সবার বাসায় ফেরার তাড়া ! সজিব বলল

-আমি জানতে পেরেছি আপু পোস্টে যে এসেই জয়েন করে তার উপরেই নাকি নানান সমস্যা এসে পড়ে । সে নাকি ভয় পায় কাজ করতে ! আপনিও নাকি পেয়েছেন ! প্লিজ আপু আমাকে সত্যি কথাটা বলেন ! প্লিজ !

তন্বীর মনে পড়লো ম্যানেজার সাহেব তাকে সাবধান করেছিল যেন এসব কথা বাইরের কারো কাছে প্রকাশ না করতে । একবার মনে হল সব কিছু অস্বীকার করে এখান থেকে চলে যায় কিন্তু তারপরেই মনে হল কি দরকার ! সত্যি কথাটা ছেলেটা বলি ! তন্বী বলল

-দেখি আমি বলবো না তুমি যা শুনেছো মিথ্যা । আসলেই কিছু একটা হচ্ছে ওখানে । আমার সাথেও হয়েছে তবে আমি আর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি না । কারন আমার কোন ক্ষতি হচ্ছে না ।

সজিব বলল

-আপু আপনার কি মনে হচ্ছে না যে সোমাপু আপনার সাথে কিংবা এর আগে যারা এসেছে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাচ্ছে ? কিছু বলতে চাচ্ছে ?

-কেন এমন কেন মনে হবে ?

-আমি জানি না । হয়তো তার কিছু বলার ছিল । ঐকদিন আপু খুবই ডিপ্রেস ছিল । কারো সাথে ঠিক মত কথা বলতো না । আমার সাথে আপুর খুব ভাব ছিল সেই আমাকেও কোন কথা বলে নি । কিন্তু নিজের আপু তো । আমি তাকে চিনি খুব ভাল ভাবে । সে কিছু লুকাচ্ছিলো।

তন্বী চুপ করে রইলো । খানিকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সজিবের দিকে । সজিব বলল

-আমি জানি আপু আপনাকে কিছু বলার চেষ্টা করছে । প্লিজ একটু বোঝার চেষ্টা করেন । আপনার পায়ে পড়ি !

বলতে বলতেই সজিব কেমন যেন কেঁদে উঠলো । তন্বী জলদি জলদি বলল

-আচ্ছা আচ্ছা আমি দেখবো । তোমার নাম্বারটা আমাকে দিয়ে রাখো কিছু যদি জানতে পারি তোমাকে ফোন দিবো !

তারপর থেকে তন্বী নিজেও খানিকটা চেষ্টা করে চলল ভয় না পাওয়ার জন্য । আসলেই যদি সোমা নামের কেউ মৃত্যুর পরেও এখানে থেকে না যেতে চায় কিংবা কিছু বলতে চায় তাহলে সেটা শুনতে নিশ্চয়ই কোন সমস্যা নেই । কিন্তু তেমন কিছুই বুঝতে পারলো না । মাঝে মাঝেই সজিবকে দেখা যেত অফিসের বাইরে । ছেলেটাকে প্রতিবার মানা করতে তন্বীর খারাপই লাগতো । তবে দিন দিন তন্বীর ভয়টা কেটে যেতে লাগলো । তবে সেই অস্বাভাবিকত্ব কমলো না কিছুতেই । তন্বী ঠিকই টের পেত কেউ যেন ওর আশে পাশেই আছে । কখন কোন সুমিষ্টি পারফিউমের গন্ধ এসে লাগতো নাকে আবার কখনও বা একটা নিঃশ্বাস এসে পড়তো ওর কাধে ।

এভাবেই যখন চলছিলো তখন একদিন বড় রকমের ভয় পেল তন্বী । সেদিনও কাজ শেষ করতে করতে একটু দেরিই হয়ে গিয়েছিলো । ততদিনে ওর ভয় কেটে গেছে । কাজের ফাঁকে ওয়াশরুমে যাওয়ার দরকার পড়লো । ফিরে এসে যখনই নিজের ডেস্কে ঢুকতে যাবে তখনই দেখলো ওর চেয়ারে কেউ বসে আছে । কালো রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ পরে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে ।

খুবই স্বাভাবিক একটা দৃশ্য ! একটা মেয়ে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে কাজ করছে । কিন্তু ও জানে এই সময় কেউ অফিসে নেই, শায়েম সাহেব থাকতে পারে কিন্তু কোন মেয়ে যে নেই সেটা ও ভাল করেই জানে । দৃশ্যটা দেখে ওর বুকটা কেঁপে উঠলো । তীব্র একটা ভয় জেকে বসলো । ইচ্ছে হল তখনই দোড় দেয় কিন্তু পা যেন আটকে গেছে ফ্লোরের সাথে !

তন্বী দেখলো সেই মেয়েটার মাথাটা আস্তে আস্তে ঘুরে যাচ্ছে ওর দিকে । কিন্তু শরীরটা আগের মতই আছে । অর্থাৎ কেবল মাথাটা ঘুরছে । একেবারে মাথাটা পিঠে দিকে ঘুরে গেল । ওর দিকে তাকালো । সেই চোখের দিকে চোখ পড়তেই তন্বী পুরো শরীর কেঁপে উঠলো । নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না । তবে জ্ঞান হারিয়ে মেঝেতে পড়ার আগেই একটা কথা ওর কানে এসে পৌছালো ।

"তন্বী হেল্প মি, প্লিজ !"



দ্বিতীয় পর্ব



-সজিব, এটাই কি সেই বাসা ?

তন্বী আর সজিব পুরান ঢাকার একটা এক তলা বাসার সামনে দাড়িয়ে । ঐ ঘটনার পড়ে তন্বীর একবার ভেবেছিলো চাকরিটা ছেড়েই দিবে । কিন্তু সজিব ওকে অনেক অনুরোধ করে বলেছে চাকরি ছাড়ার আগে অন্তত একটা বার চেষ্টা করার জন্য ।

তন্বী আরেকবার ভেবে দরজার কড়া নাড়লো । তারপর কয়েক বার !

কিন্তু কোন সাড়া পাওয়া গেল না । সজিবের দিকে তাকিয়ে বলল

-কেউ কি নেই নাকি ?

সজিবকেও খানিকটা চিন্তিত মনে হল । সেও সম্ভবত এইখানে প্রথম এসেছে । তার বারবারই কেবল মনে হচ্ছিলো যে তার বোন এই সব মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করছে । কিন্তু কোন ভাবেই কোন পথ দেখছিলো না । তখনও ওর মোবাইলে একটা মেসেজ এসে হাজির । সেখানে বলা হয়েছিলো আজকে যেন এই সময়ে হাজির থাকে ! বিশ্বাস করার কোন মানে নেই তবুও সজিব আর কোন পথ দেখে নি । কিন্তু যখন তন্বীর কাছেও একই ধরনের একটা মেসেজ এসে তখন মনে হল মেসেজটা যেই পাঠিয়েছে সে ওদের দুজনকেই চিনে । আর দুজনকেই যখন চিনে তখন দুজনের এই সমস্যার কথাটাও নিশ্চয়ই জানে । তাই এখানে চলে আসা । যদিও এখন ওদের কাছে মনে হচ্ছে এখানে আসাটা ভুলই হয়েছে । বাসায় হয়তো কেউ নেই ।

সজিব বলল

-চলেন আপু বাসায় সম্ভবত কেউ নেই । আমার পরিচিত এক দরবেশ বাবা আছে এখানে একটু দুরে । উনি নাকি অনেক জ্বীন পুষেন । ওখানে যাই ! উনি হয়তো কিছু করতে পারবেন ।

তন্বীর চেহারাতে খানিকটা দ্বিধা দেখা দিল ! কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলো না । অফিস থেকে সরাসরিই এখানে চলে এসেছে । এখন আর অন্য কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না । চাকরিটা আর করার ইচ্ছে নেই ওর । ঐদিন যেভাবে ভয়টা পেয়েছিলো সেটা দেখে আর ঐ অফিসে যেতে ইচ্ছে করছে না । এদিকে সজিবের মুখের দিকে তাকিয়ে মায়াও লাগছে ওর ।

যখনও ওরা ঠিক করলো যে ওরা এখান থেকে চলে যাবে তখনই দরজাটা খুলে । কিন্তু বের হয়ে এল না । কিছু সময় তন্বী আর সজিব দুজনেই বিমূঢ় হয়ে দাড়িয়ে রইলো । এভাবে ভেতরে প্রবেশ করা ঠিক হবে কি না সে দুজনেই ভাবতে তখনই তন্বীর মনের ভেতরেই কেউ যেন বলে উঠলো ভেতরে প্রবেশ করতে । তন্বী তবুও খানিকটা দ্বিধা নিয়ে দাড়িয়ে রইলো । সজিব বলল

-চলে আপু ভেতরে যাওয়া যাক । দরজা যখন খুলেছে !

ভেতরে প্রবেশের পড়েও ঘরটা কেমন অন্ধকারই মনে হল ওদের কাছে । তবে সামনে একটা আলোকিত দরজা দেখা যাচ্ছে । দুজন সেদিকেই হাটতে লাগলো । সেই দরজা দিয়ে ঢুকতেই একটা বড় রকমের ধাক্কা খেল ওরা । একেবারে আধুনিক একটা বসার ঘরে চলে এসেছে ওরা ।

-আরে চলে এসেছো তোমরা ?

ওরা দাড়িয়েই ছিল ঘরে প্রবেশ করে তখনই অন্য আরেকটা দরজা দিয়ে একজন যুবক প্রবেশ করলো । বয়স তন্বীর থেকে কিছুটা বড় হবে । কালো রংয়ের একটা শার্ট আর কালো জিন্স পরে আছে । ঘন কালো চুল আর মুখে খোচাখোচা দাড়ি । ওদের দিকে খুব স্বাভাবিক ভাবে তাকিয়ে আছে । তবে ছেলেটার চেহারার মাঝে একটা অস্বাভাবিকত্ব আছে । তন্বী ঠিক ধরতে পারছে না ।

যুবক আবার বলল

-বস তোমরা !

-আপনি ?

-আমি তোমাদের মেসেজ পাঠিয়েছিলাম । আসলে সজিব অনেকের কাছে সাহায্যের জন্য খোজ করছিলো । আমার কানে আসে কথাটা ।

সজিব বলল

-আপনি সত্যি সাহায্য করতে পারবেন ?

-আই গেস, পারবো !

তন্বী বলল

-আপনি সত্যিই সাহায্য করতে পারবেন ? নাকি অন্য কোন ....।

সামনের বসা মানুষটা আবার হাসলো । তারপর তন্বীর দিকে চোখ তুলে তাকালো । তখনই তন্বীর বুকের ভেতরটা ধক করে কেঁপে উঠলো । তন্বী জীবনে অনেক মানুষের চোখ দেখেছে কিন্তু এমন তীক্ষ চোখ আর কারো দেখেছি । মানুষের এতো তীক্ষ আর অন্তর্ভেদী চোখ হতে পারে সেটা তন্বীর ধারনা ছিল না । ওর কেবল মনে হল এই মানুষটা ওদের ঠিকই সাহায্য করতে পারবে !

এই অফিসে কাজ শুরু পর থেকই নিজের অফিস নিজের এই ডেস্কে বসার পর থেকেই তন্বীর মনে একটা অজানা অস্বস্তি শুরু হত । কেবলই মনে হত কিছু যেন ঠিক নেই এখানে । তবে রাফায়েল নামের ঐ মানুষটার সাথে পরিচয় হওয়ার পর থেকে সেই ভয়টা কেটে গিয়েছিলো একেবারে । ঐদিন ওখানে যাওয়ার পরদিনই রাফায়েল ওর অফিসে এসে হাজির । চারিপাশে কেবল তাকিয়ে রইলো কিছুটা সময় তারপর পকেট থেকে একটা হলুদ রংয়ের লেবুর মত জিনিস বের করে ওর হাতে দিল । তারপর বলল

-আমার আসলে কয়েকটা দিন সময় লাগবে সব প্রস্তুতি নিতে । এই কটা দিন এই ফলটা সব সময় আপনার কাছে রাখবেন । ঠিক আছে ?

তন্বী কোন কথা বলে নি । কেবল মাথা ঝাকিয়েছিলো ।

তবে তন্বীর এই কথাটা অফিসে চাপা থাকলো না । অনেকে ওকে নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগলো । ও নাকি ভুত তাড়ানোর জন্য ওঝার কাছে গিয়েছিলো এই সব নিয়ে । যদিও ব্যাপারটার কথা সবাই জানে । কেউ একা এই অফিসে থাকতে সাহস পায় না তবুও অন্য নিয়ে উপ হার করার সুযোগ পেলে কেউ কি ছাড়ে । তবে ম্যানেজার সাহেব ব্যাপারটাতে সমর্থন জানালেন । কারন তিনি নিজেই ব্যাপারটা নিজে চোখে দেখেছেন । তিনি চান তার অফিস থেকে যেন এই ঝামেলা দুর হোক । তিনি তন্বীকে বললেন যে যদি সমাধান হয় তাহলে সেটা করতে যা দরকার সেটাই যেন তন্বী করে । অবশ্য তন্বী তাকে বলে নি যে সোমা আহমেদের ছোট ভাইয়ের সাথে তার পরিচয় হয়েছে।

রাফায়েল ঐদিন অফিস থেকে চলে যাওয়ার পরে তন্বী একটা অদ্ভুদ ব্যাপার লক্ষ্য করলো । এই এতোদিন অফিসে ঢুকার সাথে সাথে ওর সেই গুমট একটা ভাব অনুভব হত কিন্তু রাফায়েল চলে যাওয়ার পরে সেটা আর মনে হচ্ছে না । অফিসটাকে খুবই স্বাভাবিক মনে হচ্ছে । তন্বী অনেকটা সময় স্থির থেকে পরীক্ষা করে দেখলো । সেই কারো চেয়ে থাকা কিংবা নিঃশ্বাসের অনুভুতি কিছুই তার মনে হচ্ছে না । মনটা আপনা আপনিই ভাল হয়ে গেল ।

তারপরের সপ্তাহটা তন্বীর কাটলো খুব ফুরফুরে মেজাজেই । চাকরিটা ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সেটা পুরোপুরি বাতিল করে দিল । ওর কেবল মনে হল যে অফিসে যে সমস্যা ছিল সেটা চলে গেছে । কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই টের পেল যে সেই অনুভুতিটা আবার ফিরে এসেছে । আবারও মনে হচ্ছে কেউ ওর দিকে তাকিয়ে আছে । মাঝে মাঝেই মনে হচ্ছে কেউ ওর পেছনে দাড়িয়ে রয়েছে । ব্যাগ থেকে জলদি সেই লেবুর মত ফলটা বের করতেই অবাক হয়ে দেখলো সেই হলুদ ফলটা কালো হয়ে গেছে । তার মানে এর কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেছে !

এখন ?

অবশ্য ওকে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হল না । ঐদিন বিকেলেই রাফায়েল এসে হাজির হল ওর অফিসে । ম্যানেজারকে জানিয়েই রাখলো যে আজকে আশা করা যাচ্ছে যে সমস্যার সমাধান হবে । ম্যানেজার সাহেব বললেন তিনিও থাকবেন । তবে তন্বী আর কাউকে কিছু বলল না ।

ছুটির কিছু সময় পরেই পুরো অফিস ফাঁকা হয়ে গেল । তার কিছু সময় পরেই সজিব এসে হাজির হল । তবে সজিবকে দেখে ম্যানেজার সাহেব এবং শায়েম সাহেবের মুখ গম্ভীর হয়ে গেল । সজিবকে ওরা দুজনেই বেশ ভাল করে চেনে । তার বোনের মৃত্যুর পরে সজিব বেশ কয়েকবার এই অফিসে এসেছে ।

সজিব এক ভাবে তন্বীর দিকে তাকিয়ে আছে । তন্বীর মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম । একটু একটু যেন দুলছে সে । ওরা সবাই গোলপ হয়ে বসেছে । ওদের মাঝে মোমবাতো জলছে অনেক গুলো । সবাই এক মনে সোমাকে মনে করার চেষ্টা করে যাচ্ছে । সজিব এসব কিছু আগেই বইতে পড়েছে । প্লানচেট করে আত্মা নামিয়ে আসা । ওর এসব গাজাখুরি মনে হলেও এমন তেমন কিছুই মনে হচ্ছে না । কেমন একটা সুক্ষ ভয় কাজ করছে ।

ম্যানেজার সাহেবও খানিকটা ভীত চেহারা নিয়ে বসে আছেন । তিনি তেমন কিছুই করছে না, তবে ঠিকই ভয় পাচ্ছে । কয়েক মাস আগেও তার এসবে কোন বিশ্বাস ছিল না কিন্তু এই একে একে যখন সবাই চাকরিটা ছেড়ে চলে লাগলো তখন আর বিশ্বাস না করে কোন উপায় ছিল না । কিছু একটা ব্যাপার যে স্বাভাবিক নেই তিনি খুব ভাল করেই বুঝতে পারছিলেন ।

হঠাৎ তন্বীর মুখ দিয়ে কেমন অদ্ভুদ আওয়াজ বের হতে লাগলো । অচেনা এক অদ্ভুদ ভাষাতে এক মনে তন্বী কিছুটা সময় বিড়বিড় করে কিছু বলেই গেল । রাফায়েল তখন বলল

-সোমা ! তুমি কি এসেছে ?

সবাই কেবল বিস্ফোরিত চোখে তন্বীর দিকে তাকিয়ে রয়েছে । সে মাথা ঝাকিয়ে সম্মতি জানালো । রাফায়েল আবার বলল

-তুমি কেন এখানে রয়েছো ? এটা তোমার জায়গা না !

তন্বী যেন সাপের মত হিস হিস করে উঠলো তারপর রাগত স্ব রে বলল

-এটা আমার জায়গা !

সজিব আর ম্যানেজার সাহেব তীব্র বিশ্ময় নিয়ে তন্বীর দিকে তাকিয়ে রইলো । কারন যে স্ব রে তন্বী কথা বলেছে সেটা তন্বীর নিজের না । অনেক দিন ম্যানেজার সোমার কন্ঠস্ব র শুনে নি কিন্তু এটা যে সোমার কন্ঠ স্বর সেটা বুঝতে মোটেই কষ্ট হল না । শায়েম আহমেদও বিশ্ময় নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে তন্বীর দিকে । রাফায়েল বলেছিলো ওর না বলা পর্যন্ত কেউ যেন কোন কথা না বলে তবে সজিবের সেই কথা মনে রইলো না . সজিব বলে উঠলো

-আপু তুই কেমন আছিস !

তন্বীর কেবল সজিবের দিকে ঘুরে গেল । তবে তন্বী কোন কথা বলল না । কেবল চোখ দিয়ে একটু পানি গড়িয়ে পড়লো । রাফায়েল আবার বলল

-তুমি কেমন এমন করছো ?

তন্বী আবারও সেই আর্তনাদ করে উঠলো । ওর যেন বেশ কষ্ট হচ্ছে । তবে হঠাৎ করেই বলে উঠলো

-কারন আমি নিজে নিজে মরি নি । আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে !

এই কথা শুনেই সবাই যেন চমকে উঠলো ! বড় বড় চোখ নিয়ে তাকিয়ে রইলো তন্বীর দিকে ।

রাফায়েল বলল

-তোমাকে কে মেরে ফেলেছে ?

তন্বীর পুরো শরীরটা যেন কেঁপে উঠলো । তারপর সে নিজের হাত তুললো ম্যানেজার সাহেবের দিকে । ম্যানেজার সাহেব চমকে উঠলো । বলার চেষ্টা করলো যে তিনি কিছু করেন নি কিন্তু তার আগেই তন্বীর হাত টা নড়তে শুরু করলো । সেটা সজিবের দিকে ঘুরে এসে থামলো শায়েম আহমেদের দিকে । এবং সেটা সেখানে থেমেই রইলো ।

শায়েম আহমেদ এতো সময় কোন কথা বলে নি । সে কেবল বিশ্ময় নিয়ে তাকিয়ে ছিল । ওর দিকে হাত এসে থামতেই শায়েম আহমেদ নিজে একটু থমমত খেয়ে গেল । তবে সেটা কয়েক মুহুর্তের জন্য । নিজেকে সামলে নিল মুহুর্তেই । তারপর বলল

-এই সব জাগাখুড়ি অনেক হয়েছে । আর না । আমি এর ভেতরে নেই ।

শায়েম আহমেদ যখনই উঠে চলে যাচ্ছিলো তখন তন্বীর কন্ঠে একটা তীব্র হাসি উঠে এল ।

-শায়েম ! ভয় পেয়েছিস ? আমার কাছে কিন্তু প্রমান আছে !

শায়েম আহমেদ ঘুরে গেল চকরির মত । তন্বী তখনও বলে চলেছে

-মেমরি কার্ডটা তো তুই নিয়ে গিয়েছিলি ফোন থেকে খুলে কিন্তু তুই জানিস না যে আমার ফোনে অটোমেটিকলি গুগল ড্রাইভে সব আপলোড হয়ে যেত । সব প্রমান ঐ গুগল ড্রাইভে আছে । সব ছবি আর তোর সাথে বলা কথা গুলো সব ...

সজিব এবার চিৎকার করে শায়েমের দিকে দৌড়ে যেতে লাগলো ।

-তুই আমার আপুকে মেরেছিস

কিন্তু তাকে মাঝ পথেই থেমে যেতে হল । কারন শায়েম আহমেদের হাতে একটা পিস্তল চলে এসেছে ।

-খবরদার আমার কাছে কেউ আসবে না ! কেউ না । তোমরা এই সব দিয়ে কোন দিন প্রমান হবে না যে আমি কিছু করেছি ।

ম্যানেজার সাহেব বললেন

-শায়েম সাহেব আপনি এতো বড় অন্যায় করে পার পেয়ে যাবেন না ।

শায়েম যেন খুব মজা পেয়েছে কথা শুনে এমন ভাবে হাসলো । তারপর বলল

-যাবো স্যার । আমি ঠিকই যাবো । হ্যা গুগল ড্রাইবের ঐ তথ্য যদি থেকে থাকে তাহলে আমার কিছু জরিমানা হতে পারে কিন্তু আমি যে সোমাকে মেরেছি এটা কোন ভাবেই প্রমান হবে না ।

শায়েম আস্তে আস্তে দরজার দিকে পা বাড়াতে লাগলো । তারপর এক সময় দরজা দিয়ে বের হয়েই গেল । শায়েম আহমেদ দরজা দিয়ে বের হয়ে যেতেই তন্বীও জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেল । রাফায়েল সজিবের দিকে তাকিয়ে বলল

-একটু পানি নিয়ে এসো তো !

সজিব পাশের টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে এসে রাফায়েলের হাতে দিল । ম্যানেজার সাহেব তখন বলল

-কিন্তু ঐ বেটা যে পালিয়ে গেল । এখন ? এতো বড় অন্যায় করে পালিয়ে যাবে সে ?

রাফায়েল তন্বীর দিকে তাকিয়ে বলল

-ভয় নেই । সে পালাতে পারবে না ।

-কেন ?

-সোমা ওকে ছাড়বে না !

-মানে ?

রাফায়েল দেখলো তন্বী একটু একটু ঠোঁট নাড়ছে । তন্বীর মাথার নিচে কয়েকটা ফাইল দিয়ে ওকে মেঝে তেই শুইয়ে দিয়ে ও নিজেও বসে পড়লো । তারপর ম্যানেজার আর সজিবের দিকে তাকিয়ে বলল

-মানে হচ্ছে মানুষ যখন মারা যায় তখন তার আর এই জগতের মাঝে একটা দেওয়া তৈরি হয় । সে আর এখানে থাকতে পারে না । কিন্তু অপঘাতে মারা গেলে অনেকেই এই জগত ছেড়ে যেতে চায় না । বারবার ফিরে আসতে চায় কিন্তু সেই দেওয়া তাকে আসতে দেয় না । হয়তো অতি অল্প সময়ের জন্য সে এই জগতের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে তবে সেই দেওয়াল তাকে আবারও এই পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় । এই জন্য মাঝে মাঝে আমরা এমন কাউকে দেখতে পাই । কিন্তু এখন সোমার সামনে সেই দেওয়ালটা আর নেই ।

ম্যানেজার সাহেব বলল

-ও কি এখনও তন্বীর ভেতরেই আছে ?

-নাহ ! ওকে ছেড়ে গেছে । তবে চিন্তা করবেন না আপনার অফিসে আর কোন ঝামেলা হবে বলে আমার মনে হয় না । তবে ঐ গোলমালটা সঠিক সমাধান করবেন আশা করি ।

ম্যানেজার সাহেব বলল

-অবশ্যই । আসলে সোমা ওভাবে মারা যাওয়া আমিই সব কিছু চেপে গিয়েছিলাম এখন মনে হচ্ছে কাজ টা ঠিক হয় নি । সঠিক ভাবে তদন্ত করলে আজকে হয়তো শায়েম আগেই ধরা পড়লো । আমি কথা দিচ্ছি যে এটার সমাধান হবে । অন্তত সোমার উপর থেকে দাগটা মুছবে !

রাফায়েল হাসলো । তাকিয়ে দেখলো তন্বী চোখ মেলে তাকিয়েছে । ওদের সবার দিকে খানিকটা বোকার মত তাকিয়ে রইলো । তারপর বলল

-কি হল এতোক্ষণ !





পরিশিষ্টঃ

শায়েম আহমেদ তীব্র বেগে গাড়ি চালাচ্ছে । তার হাতের রিভালবারটা এখন সিটের পাশে রাখা । ভাগ্য ভাল বুদ্ধি করে নিয়ে এসেছিলেন নয়তো এভাবে সে পালাতে পারতো না । আসলে ও আর ঐ অফিসে থাকাটাই উচিৎ হয় নি । তবে এমন হঠাৎ করে চাকরিটা ছেড়ে দিলে মানুষ জন সন্দেহ করতে পারে বলেই হয়তো সে চাকরিটা ছেড়ে দেয় নি । আর যখন দেখেছে ওর অন্যায়টা আর কেউ ধরতে পারে নি তখন আর চাকরি ছেড়েই বা কি করবে !

কিন্তু চোখের সামনে যা হতে দেখলো তা এখনও ঠিক বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে । মুল সার্ভারে ডাটা গড়বড় করে সে হিসবে গড়মিল দেখিয়েছিলো, ভেবেছিল সোমা বুঝতে পারবে না । কিন্তু ঠিকই সেটা বুঝে ফেলে । কিন্তু বোকার মত ওকেই শাসাতে চলে আসে । যদি সেটা না করে পরদিন সরাসরি প্রমান গুলো ম্যানেজার সাহেবের হাতে দিত তাহলে হয়তো আজকে সে বেঁচে থাকতো ।

তারপর যখন সব কিছু ঠান্ডা হতে শুরু করলো তখন শায়েম ভেবেছিলো ওর অন্যায়টা আর কেউ বের করতে পারবে না । কিন্তু আজকে সব ঝামেলা হয়ে গেল ।

তবুও খুব একটা সমস্যা এখনও হয় নি । ওর ইন্ডিয়ার ভিসা নেওয়া আছে । আজই দেশ ছেড়ে চলে যাবে সে ।

গাড়ির স্টিয়ারিং ঘুরোতে গিয়েও শায়েম আহমেদ একটা অবাক করা ব্যাপার লক্ষ্য করলো । ও স্টিয়ারিংটা ঠিক ঘোরাতে পারছে না । ওর কাছে মনে হচ্ছে কেউ যেন সেটা শক্ত করে ধরে রেখেছে । শায়েমের চোখে চলে গেল পাশের সিটের দিকে । সিট টা খালি তবুও ওর কাছে শায়েমের কাছে মনে হল সেখানে কেউ বসে আছে ! আর সেই অদৃশ্য কেউটা যে কে সেটা বুঝতে শায়েমের মোটেই কষ্ট হল না ।

শায়েম গাড়ির স্টিয়ারিংটা ঘুরে চেষ্টা করে কিন্তু সে পারে না । তখনই সামনে চোখ যায় তার । দেখতে পায় এই রাতের বেলাতে একটা বৃহদাকার মালবোঝাই ট্রাক তার দিকে ছুটে আসছে । শায়েম আরেকবার চেষ্টা করলো স্টিয়ারিং ঘুরানোর জন্য কিন্তু পারলো না । সে কেবল তাকিয়ে রইলো ট্রাকের সেই হেড লাইটের দিকে !



(সমাপ্ত)

(রাফায়েল সিরিজ ১০)






দেখতে দেখতে ব্লগে কাটিয়ে দিলাম সাত টা বছর । অনেক লম্বা সময় ধরেই আছি এই ব্লগে । সাতটা বছর কম না কিন্তু ।

আমার ব্লগের পরিসংখ্যান



সেই সাথে আমার হিট সংখ্যা । আমি কিন্তু সব থেকে হিট প্রাপ্ত ব্লগার । কইয়া দিলুম :D B-))



এই সাত বছরে কত মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে । কত মানুষ এসেছে আবার চলেও গেছে । আমি রয়ে গেছি । এতো এতো দিন যারা যারা আমার ব্লগ পড়েছেন তাদের সবাইকে জানাই ধন্যবাদ ।
সবাই ভাল থাকবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৫০
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×