somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ বহ্নিকথন

০৩ রা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিঃ গুগল

আমার মনে একটা ক্ষীণ সন্দেহ দেখা দিলো যে বহ্নি হয়তো আমার সাথেই দেখা করার জন্য আজকে এই বইমেলাতে এসেছে । অন্তত ওকে দেখে আমার তাই মনে হল । আমার পছন্দের ব্যাপারে বহ্নির খুব পরিস্কার ধারনা থাকার কথা । আমি কোন ধরনের পোশাক পছন্দ করি কিংবা কি সাজে আমার মেয়েদেরকে ভাল লাগে সেটা খুব ভাল করেই জানে । আজকে ওকে দেখে আমার কেবল মনে হল ও যেন কেবল আমার জন্যই এসেছে ।
এতো দিন পরে আবার আমার কথা মনে পড়লো ওর !
আমি আরেকবার তাকালম বহ্নির দিকে । বহ্নি আজকে ধবধবে সাদা লেগিংসের সাথে সাদা কামিজ পরেছে । সেই সাথে সাদা ওড়না । এটা যে আমার পছন্দের পোশাক এটা ওর খুব ভাল করে জানা । তাই আমার মনে হল ও আসলে আমার জন্যই আজকে মেলাতে এসেছে !

আমি স্টলের মাঝে চুপচাপ বসে আছি । মাঝে মাঝে একজন দুজন আসছে । বইয়ের খোজ করছে । কেউ নেড়ে চেড়ে দেখছে । কেউ বা কিনছে আবার কেউ রেখে চলে যাচ্ছে । এমন সময় আমি বহ্নিকে দেখতে পেলাম । মৃদ্যু ভাবে হাটছে আর স্টল নাম্বার খোজার চেষ্টা করছে । আমার কেন জানি মনে হল আমার স্টল নাম্বারটাই ও খুজে বেড়াচ্ছে । একবার মনে হল ওর নাম ধরে ডাক দেই । আমার খোজে না আসলেও আমাকে দেখলে নিশ্চয়ই এগিয়ে আসবে । কিন্তু কেন জানি দিলাম না । কোথায় যেন একটা দ্বিধা হল । খানিকটা সংকোচ থেকে বহ্নিকে আর ডাক দিতে পারলাম না ।

বহ্নির সাথে আমার পরিচয়টা বেশ অদ্ভুদ ভাবে হয়েছিলো । অন্তত আমি কোন দিন ভাবি নি যে এমন করে কোন মেয়ের সাথে আমার পরিচয় হতে পারে । একটা মেয়ে হঠাৎ করে আমার সামনে এসে হাজির হয়ে বলল যে, আমাকে একটু লিফট দেনতো ! আমি তাকে লিফট দেবো তারপর আমাদের প্রেম হয়ে যাবে । এরকম টা কেবল আমার গল্পে হয় । আর কোথায় না । তবুও তেমন ভাবেই হঠাৎ করে ব হ্নি আমার সামনে এসে হাজির হয়েছিলো ।

আমার অনেক আগে থেকেই হুটহাট করে একা একা এদিক ওদিক ঘুরতে যাওয়ার অভ্যাস । সেবার গিয়ে হাজির হয়েছি কক্স বাজারে । অটো ভাড়া করে বিকাল বেলা গিয়েছি ইনানী বিচে । সি চেয়ারে যখন অলস সময় কাটাচ্ছিলাম তখনই মেয়েদের দলটা দেখতে পেলাম । সব মিলিয়ে ৫ জন মেয়ে । দৌড়াদৌড়ি করছে এদিক ওদিক । ব্যাপারটা আমার বেশ মজা লাগলো । মেয়ে গুলো সবই দেখে মনে হল যেন টারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । আর সেখানে তারা দৌড়ে বেড়াচ্ছে যেন তার প্রাইমারিতে পড়ে । বিশেষ করে একটা মেয়েকে খুব বেশি করে চোখে পড়লো । কালো একটা জিন্সের সাথে একটা নীল রংয়ের টিশার্ট পরে আছে । সেই সব থেকে বেশি লাফালাফি করছে ।


ফেরার সময় সব ঘটনাটা ঘটলো । আমার অটো আগে থেকে রিজার্ভ করা ছিল । আমি অটোতে উঠে রওয়ানা দিতেই সেই কালো জিন্স আর নীল টিশার্ট পরা মেয়েটাকে রাস্তার ধারে দাড়িয়ে থাকতে দেখলাম । এবং অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম মেয়েটা আমার অঅ বাইকটাই হাতের ইশারাতে থামতে বলছে । আমি অটোমামাকে থামতে বললাম !

মেয়েটা আমার দিকে এসে একটা হাসি দিল । তারপর বলল
-আপনি কি কলাতলীর দিকে যাচ্ছেন ?
-হ্যা !
-আমাকে কি একটু লিফট দেওয়া যায় !

আমি জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলাম আপনার বন্ধুরা কোথায় কিন্তু মেয়েটা সেই সুযোগ না দিয়ে বলেই চলল
-আসলে আমার ফ্রেন্ডরা গেছে আরও একটু সামনে কিন্তু আমার অফিস থেকে ফোন এসেছে । এখনই ফিরে যেতে হবে । কিন্তু জানেনই তো রিজার্ভ না করে আনলে এখান থেকে গাড়ি পাওয়া খানিকটা মুস্কিল !

আমি কেবল একটু হাসলাম । এমন সময় কোন ভাবেই বলার উপায় নেই যে, নাহ আপনাকে নেওয়া যাবে না । তার উপর সামনের জন যদি সুন্দরী মেয়ে হয় !
মেয়েটি উঠে বসলো । আমার মুখো মুখিই বসলো । তারপর বলল
-হ্যালো আমি বহ্নি ! এখানে ইউএনের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের কাজ করি ।

আমি ভেবেছিলাম মেয়েটি মেয়েটি হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । পরে অফিসের কথা শুনে একটু অবাক হয়েছিলাম । এখন ইউএনে চাকরি করে শুনে সত্যিই অবাক হলাম । মেয়েটির বয়স কত হবে খানিকটা আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম । দেখে মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্টইয়ার পার করে সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে !
আমি বললাম
-এখানে কোথায় থাকেন ?
-শহরেই । একটা হোস্টেল আছে ! তা আপনি টুরিস্ট ?
-হ্যা । আমি ঢাকাতে থাকি !
-একাই এসেছেন ? আর কেউ আসে নি ? বন্ধু কিংবা বউ !

আমি হেসে ফেললাম ! তারপর বললাম
-মানুষের সঙ্গ আমার ঠিক পছন্দ না । তাই বন্ধু বান্ধবের সংখ্যা কম । যারা বন্ধু তারা এখন সবাই ব্যস্ত আর এখনও বিয়ে করি নি কিংবা হয় নি তাই একাই আপাতত !
বহ্নি বলল
-কতদিন থাকবেন ?
-ঠিক নেই । কোন হিসাব করে আসি নি । পকেটে যতক্ষন টাকা আছে থাকবো আশা করি !

বহ্নি কিছু সময় আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । ওর তাকিয়ে থাকার ভেতরেই যেন কেমন একটা ভাব ছিল । কিছু সময়ের জন্য আমি কি বলবো খুজে পেলাম না । নিজের ভাবেই কেমন যেন অস্বস্থি লাগা শুরু করলো । অবশ্য বহ্নি একটু পরেই চোখ সরিয়ে নিল ।

তারপর পুরোটা পথ আমাদের টুকটাক কথা হতে থাকলো যদিও বেশির ভাগই বহ্নিই বলল । আমি হু হা করলাম আর মাঝে মাঝে কিছু বলছিলাম । কেন জানি হঠাৎ করে আমার বহ্নির সাথে কথা বলতে ভাল লাগছিলো । এমন সাধারনত আমার সাথে খুব একটা হয় না । আমার মানুষের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না, তাদের কথাও শুনতে ভাল লাগে না আমার কিন্তু বহ্নির কথা শুনতে ভাল লাগছিলো । কি কারনে আমার ভাল লাগছিলো সেটা বলতে পারবো না তবে লাগছিলো ।

তবে সব থেকে বড় রকমের ধাক্কাটা আমি খেলাম যখন কলাতলীতে এলাম । আমার হোটেলের সামনেই অটো থামলো । অটোওয়ালাকে বললাম বহ্নিকে যেন ওর অফিসের সামনে নামিয়ে দেয় । যখন আবার অটো চলতে শুরু করলো তখন বহ্নি হঠাৎ করে আমাকে বলল
-তো লেখক সাহেব আসি ! আবার দেখা হবে আশা করি !

আমি কথা শুনে হাসতে গিয়ে থেমে গেলাম ! আমি যে লেখালেখি করি এই কথা আমি মোটেই বহ্নিকে বলি নি মোটেও । ও তাহলে কিভাবে জানলো ?
আমি ওর দিকে দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু ভাবে হাসছে । আর হাত নাড়ছে । আমি বোকার মত কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম । চোখের সামনে অটো বাইকটা হারিয়ে গেল ।

ঐদিন রাতে বেশ কিছুটা সময় ভেবেও কিছু খুজে পেলাম না । তবে এই টুকু বুঝতে কষ্ট হল না যে বহ্নি আমাকে আগে থেকেই চেনে । ইনানীতে আমাকে দেখতে পেয়েছে তারপর ইচ্ছে করে আমার সাথে এসেছে ।


বহ্নির সাথে দেখা হল পরদিনই । আজকে আর কোথাও যাই নি । হাতে সেন্ডেল নিয়ে আমি হাটছিলাম সমুদ্রের পানিতে পা ডুবিয়ে । ছুটির দিন না, টাই বিচে ভীড় কম ছিল । আমার শান্ত বিচে হাটতে বেশ ভাল লাগছিলো । এমন সময় পেছন থেকে ঘারে কারো স্পর্শ পেলাম । তারপর হাসির আওয়াজ ! আমি পেছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলাম বহ্নিকে । আজকেও গতদিনের মত জিন্স আর টিশার্ট পরে আছে তবে আজকের টিশার্ট ওদের অফিসের লোগো লাগানো । সম্ভত অফিস থেকে এসেছে !

আমার দিকে তাকিয়ে ব হ্নি বলল
-কি লেখক সাহেব, রাতে ঘুম ভাল হয়েছে ?
-হ্যা ! কেন ?
-আমার তো মনে হচ্ছে না ।
-এমনটা মনে না হওয়ার কারন টা কি ?
-আমার মনে হচ্ছে আপনি কারো কথা খুব করে ভেবেছেন সারা রাত ভর ?

আমি বললাম
-নাহ ! আমার ঘুমে সমস্যা হয় না !
-সত্যিই কি ?
-সত্যি ।
-যাক ভাল । না হলেও ভাল ।
-তবে কৌতুহল অবশ্যই হয়েছে । অবাকও হয়েছি । আমাকে আপনি চিনেন কিভাবে ?
-চিনি কোন ভাবে ! তবে আমি আপনাকে দেখে অবাক হয়েছি বেশি । আপনাকে কোন ভাবেই গতকাল ওখানে আশা করি নি ।
-তার মানে আপনার অফিস থেকে ডাক আসে নি । আমার সাথে যাওয়ার জন্য মিথ্যা বলেছেন !
-একেবারে যে মিথ্যা বলেছি সেটা না । অফিস থেকে সত্যিই ডাক এসেছিলো তবে এতো জরুরী ছিল না যে তখনই যেতে হবে । এই আর কি !
-তা বলা যায় আমাকে কিভাবে চিনেন বলা যায় ?
-আপনাকে আর কিভাবে চিনবো বলুন ! যেভাবে চেনার কথা ! অনলাইন ! তারপর লেখা পড়াপড়ি ! সেখান থেকে ব্লগ ফেসবুক !

আমি অনলাইনে টুকটাক গল্প লিখি অনেক দিন । তবে সেটার জন্য কোন ভাবেই নিজেকে লেখক হিসাবে পরিচয় দেওয়া যায় না । টাইম পাস করা লেখা । সময় কাটানোর জন্য আর কি ! আর সেই লেখা পড়ে কেউ যে আমার কথা মনে রাখবে আবার বাস্তবে আমার সাথে দেখাও করবে এটা ভাবতে একটু অবাকই লাগে আর কি !

আমি বহ্নিকে বললাম
-আমি খানিকটা অবাকই হলাম সত্যি !
-অবাক হওয়া ভাবলো । দেখি আসেন দেখি একটা কাজ করি !
-কি !
-আপনার সাথে একটা ছবি তুলি !
-ছবি ! একটা কারন অবশ্য আছে । সেটা আমি পরে বলবো !

আমি আর কিছু না ভেবে রাজি হয়ে গেলাম । বেশ কয়েকটা ছবি তুললো ও । একটা সময় বিচের ফটোগ্রাফারেরা এসে হাজির । তারা আমাদের কে কাপল ভেবেছে । তারা ছবি তুলে দিবে । আমি মানা করতে যাবো কিন্তু বহ্নি সেটা করতে দিল না । সত্যিই সত্যিই আরো ছবি তোলা হল । কোন দিকে কিভাবে পোজ দিয়ে দাড়াতে হবে সেটা বলে দিচ্ছিলো ওরা । বহ্নি হাসতে হাসতে তাই করছিলো আর আমাকে দিয়েও তাই করাচ্ছিলো !

একটা সময় আমাদের ছবি তোলা পর্ব শেষ হল । আমরা আরও কিছু সময় হাটাহাটি করলাম । এবং একটা সময় আমি কেবল আবিস্কার কারলাম যে আমি অনলাইনে যা লিখি বহ্নির তার সবই পড়ে । এবং আমার পছন্দ অপছন্দের কথা সব জানে ! ব্যাপারটা আমার কাছে আনন্দময় ছিল ।

তারপর ওর কাছে যেন আরও সময় কাটতে লাগলো বেশি করে । সেবার আরও একটা সপ্তাহ বেশি থেকে গেলাম কক্সবাজারে । প্রতিদিনই ও অফিস শেষে চলে আসতো বিচে । আমরা হাটাহাটি করতাম, ফটোগ্রাফারাররা আমাদের ঝেঁকে ধরতো ছবি তোলার জন্য । তারা ভাবতো আমরা হয়তো কাপল । এভাবে অনেক ছবি জমা হয়ে গেল আমাদের ।

তারপরই আমি একটা গাধার মত কাজ করে ফেললাম । কি মনে হল ওর আর আমার একটা ছবি আমার ফেসবুক প্রোফাইলে দিয়ে দিলাম । আর নিচে লিখে দিলাম যে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসেছি সমুদ্রে !

আমি কেবল ফান থেকেই কাজটা করেছিলাম । যদিও আমার ধারনা ছিল না বহ্নি ব্যাপারটা মোটেই ভাল চোখে দেখবে না । আমার আসলে মনে হয়েছিলো যে ও আমার পছন্দ করে তাই আমি যাই করি না কেন সেটাতে ও আপত্তি করবে না । কিন্তু আমার ধারনাতে খানিকটা ভুল ছিল ।
ঐদিন বিকেলে ও সত্যিই আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করলো বেশ খানিকটা ! আমি কেন এই কাজটা করলাম এটা নিয়ে ! আমি প্রথমে ঠিক বুঝতে পারলামই না কি করবো ! আমার মনে ধারনাই ছিল না এমন কিছু হতে পারে ! যদিও কাজটা গাধার মতই ছিল । এক সাথে ছবি আপলোড দেওয়া পর্যন্ত হয়তো ঠিক ছিল কিন্তু ঐ লাইন গুলো লেখা আমার মোটেি ঠিক হয় নি । সরি বললাম ওকে তবে ওর রাগ কমলো না মোটেই । আমার সাথে আর কথাই বলল না ।

আমি আর একদিন অপেক্ষা করেছিলাম কক্সবাজারে তবে ঐদিন আর আর বহ্নির সাথে আমার দেখা হয় নি । ও দেখা করতে আসে নি । ওটাই বলতে গেলে ওর সাথে আমার শেষ দেখা ছিল ।


-ভাইয়া "বহ্নিকথন" আছে ?
আমি আবার পুরানো ভাবনা থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম । তাকিয়ে দেখি একজন সামনে দাড়িয়ে আছে । স্টলের অন্যেরা বেশ ব্যস্ত তাই আমিই এগিয়ে গেলাম । বইটা এগিয়ে দিলাম । আমার নিজের লেখা বই ! "বহ্নিকথন" । এই নাম দেওয়ার পেছনে কোন কারন নেই তবুও দিয়েছি !


আরও বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেল তবে বহ্নি আর এল না । আমার ধারনাতে ভুল ছিল । ও আসে আমার সাথে দেখা করতে আসে নি হয়তো । মেলাতে আসতেই পারে বই কিনতে । তারপরই খানিকটা ব্যস্ত হয়ে গেলাম । কিছু পরিচিত বড় ভাইয়েরা এসেছিলো । তাদের সাথে কথা বলতেই হল । আমার প্রকাশক মশাইও ছিলেন । আমার এসব ভাল না লাগলেও কাজ গুলো মাঝে মাঝে করতে হয় ।


মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার সময় আরেকবার স্টলের সামনে গিয়ে বহ্নিকে দেখতে পেলাম । বহ্নিকথন নিয়ে দাড়িয়ে আছে । স্টলের একটা ছেলে আমাকে বলল যে বহ্নি অনেকটা সময় আমার জন্য অপেক্ষা করছে ! আমার সাথে দেখা করবে বলে !

কেমন যেন অদ্ভুদ অনুভূতি হল আমার নিজের ভেতরে । এতো গুলো বছর পরে হঠাৎ ওকে এভাবে দেখে সত্য অনুভূব করলাম যে সেদিকেই ঐ কদিনের অনুভূতিটা আমি এখনও ভুলি নি । বহ্নি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো একটু ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-অটোগ্রাম দিবেন না ?




মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও আমরা অনেকটা সময় মেলার মাঠেই বসে ছিলাম । ব হ্নির ঐদিন ও ভাবে রেগে যাওয়াটা আমার কাছে সেদিন বেশি মনে হলেও যখন আজকে ও সেটার কারন ব্যাখ্যা করলো তখন মনে হল সত্যিই আমি গাধামীই করেছিলাম । বয়স তখন কম ছিল বিধায় এতো চিন্তাভাবনা করি নি ।

এক প্রকার বাসার বিরুদ্ধে গিয়েই বহ্নি ওখানে চাকরিটা নিয়েছিলো । মাস্টার্স না করেই সেখানে গিয়েছিলো ও চাকরিটা করার জন্য । আমি যখন ছবিটা আপলোড দিয়েছিলাম সেটার খবর ওর বাসায় পৌছে গিয়েছিলো । ও বাবা খুব রাগারাগি করেছিলো । ওখান থেকে সেদিনও ওকে বাসায় ফিরে যেতে বলে । ওর কোন আপত্তিই তারা আর শোনে নি ।
এই সব কিছুই হয়েছিলো কেবল আমার গাধামীর জন্য । আমার নিজের কাছেই খানিকটা লজ্জা লাগলো ঐ কাজটা করার জন্য । ওকে সরি বললাম !

তারপর ওখান থেকে ও চলে আসে । ঢাকাতে এসে মাস্টার্স শেষ করে তারপর আবার নতুন চাকরিতে ঢুকে । মাঝে কয়েকটা বছর পার হয়ে গেছে । বহ্নির রাগটা শেষ হয়ে গেছে । তাররপই ও জানতে পারে আমার বই বের হচ্ছে । আর বইয়ের নামটা দেখে ও আর থাকতে পারে নি ।


পরিশিষ্টঃ

বহ্নিকে যখন ওর বাসায় পৌছে দিলাম আবার মনে আবারও সেই দিনের মত অনুভূতি এসে জমা হল । মনে হচ্ছিলো আমি সেই ক বছর আগে পৌছে গেছি । আমরা সমুদ্র পাড়ে এক সাথে হেটে বেড়াচ্ছি । যখন রিক্সা চলা কালীন সময়ে ওর চুপ উড়ছিলো আমার মনে হচ্ছিলো যেন সমুদ্রের বাতাসে ওর চুল গুলো উড়ছে ।

গেটের কাছে রিক্সা এসে থামলো । বহ্নি আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আবার দেখা হবে !

আমি হাসলাম ! আবার তো দেখা হবেই । হতেই হবে ! "বহ্নিকথন" দুই বের করতে হবে তো !
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:৪৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×