ঘটনা - ১
সেদিন অফিস এ যাচ্ছি । বাসে উঠলাম । সিটে বসেছি তখন দেখলাম একটা মেয়ে বোরকা পরে উঠেছে বাসে । উঠেই ছোট ছোট চিরকুট ধরিয়ে দিচ্ছে আর সাহায্য চাইছে । আমি চিরকুট নেইনি । আর তাকে সাহায্য ও করিনি ।
ঘটনা - ২
এক অন্ধ লোক বাসে উঠে বাশি বাজানো শুরু করে । দুই তিনটা গানের শুরু বাজায় শেষ । তারপর সাহায্য চায় । আমি তাকে দিলাম নিজের সাধ্যমত ।
অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল কেউ আমাকে চিরকুট দিবে । আমি সেটা পড়ব আর মুচকি মুচকি হাসব । কারণ চিরকুট এ ছোট করে লেখা থাকবে ভালবাসার কথা । হয়ত না বলা কথা গুলো সেখানে ভেসে উঠবে । আর আমি অনেক আগ্রহ নিয়ে বার বার পড়ব । কিন্তু হায় সেতো আমার কপালে নাই ।
যাই হোক চিরকুট তো আমি পেয়ে থাকি এবং আপনি ও পেয়ে থাকেন । প্রায় প্রতিদিন ই পেয়ে থাকেন । কিভাবে? যারা ঢাকার রাস্তায় চলাচল করনে তারা এই চিরকুট এর সাথে পরিচিত । প্রায় দিন ই বাসে বিভিন্ন ভাবে কেউ না কেউ চিরকুট এর মাধ্যমে সাহায্য চেয়ে থাকে । কিন্তু কথা হচ্ছে এদের মধ্যে কত জন আসল ভাবেই সাহায্য পাওয়ার মত তা কি কেউ বলতে পারে ।
সেটা যাই হোক । কিছু কিছু লোক সাহায্য চায় দেখে ভাবি এই লোক সাহায্য চাচ্ছে চাইলেই সে কিছু করে খেতে পারে । আবার এক লোক এর ইন্টার্ভিউ দেখলাম যে নিজেকে কত কৌশল এ বাকা করে সাহায্য চায় । হাত পা শরীর মুখ সব কিছু যেভাবে চায় সেভাবেই করতে পারে । আশ্চর্য হই এদের ট্যালেন্ট দেখে । সত্যি বলতে এরা চাইলে আরো ভালো কিছু করতে পারে কিন্তু করে না । এই ভিক্ষা করে বা সাহায্য চেয়ে তারা বাড়ি বানিয়ে ফেলেছে তাও পাচ তলা ফ্ল্যাট বাড়ি ।
আমি ভাবি তারা এত কলা কৌশল ব্যবহার করে তারচেয়ে এটা যদি ভাল কাজে লাগাত তবে কত উন্নতি করতে পারত । কিন্তু তা না করে লোকের কাছে হাত পাতছে । সবচেয়ে অবাক লাগে যখন এমন লোক সাহায্য চায় যে দেখতে শুনতে হাট্টাগাট্টা । কোন পত্রিকায় পড়েছিলাম যে একটা কম্পিউটার ও তার অপারেটর কে আটক করা হয়েছে এই চিরকুট টাইপ করে প্রিন্ট করার জন্য । কারণ সেটা দিয়ে সে এই ব্যবসা করত ।
আবার একদল আছে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিম খানা এদের জন্য রশিদ বানিয়ে সাহায্য চায় । আমরা অনেকেই দিয়ে থাকি । কিন্তু এটা যে সত্যি সেই জায়গায় পৌছচ্ছে কিনা কতজন জানি । আসলে ধর্ম কে পুজি করে অনেক ই ব্যবসা করছে । তাও যেন তেনো ব্যবসা না । বাড়ি গাড়ি অনেক কিছুই করে ফেলেছে ।
আসলে আমি এত কিছু ভাবিনি কখন ও কিন্তু কেন জানি ভাবনাটা চলে এসেছে । সত্যি বলতে অনেকেই দেখি এটা কে পেশা হিসেবে নিয়ে নিয়েছে । নেবেই না কেন । বিনা পুজিতে ব্যবসা হচ্ছে । তাহলে সমস্যাটা কোথায় । একজন না দিলে অন্যজন দিবে । দিনে ৫০০/- গড়ে কামানো কষ্ট নয় । তাহলে মাসে ১৫০০০/- টাকা । এটা আমি গড় হিসেব করলাম । কিন্তু কম বেশি হতে পারে । তবে এর চেয়ে বেশি হবার সম্ভবনা ই বেশি ।
দান বা সাহায্য করুন কিন্তু দেখে, শুনে বুঝে করুন ।
ভাল থাকুন, সুস্থু থাকুন আর আপনার চারপাশ পরিস্কার রাখুন ।