কাহিনী সুত্র
২৪৪ খ্রিস্টপূর্ব প্রাচীন আর ভয়ংকর এক রহস্য আবিষ্কার করেছেন মহান সম্রাট আশোক-মহাভারতের গভীরে লুকিয়ে থাকা এ গোপন রহস্য দুনিয়াকে ধ্বংস করে দিতে পারে; তাই পরবর্তী ২৩০০ বছরের জন্য লোক চক্ষুর আড়াল করে ফেলা হয় এই গোপনীয়তা ।
তিনি ও তার মন্ত্রী সুর সেন মিলে লুকিয়ে ফেলেন সেই আবিস্কার । যা ধ্বংস করে সাইট পারে পুরো পৃথিবীকে । যদি কোন ভুল মানুষের হাতে পরে যায় সেই সব জিনিশ তবে পৃথিবীতে অন্ধকার নামতে বা ধ্বংস যজ্ঞ শুরু হতে কিছু মাত্র সময় নেবে না ।
তারপর ও সেই সত্য হঠাত করেই যেন সামনে চলে এল । খুন হলে অবসরপ্রাপ্ত একজন নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানী । যার হত্যার কোন সুত্র নেই । কেন ই খুন হলে তারও কোন ক্লু নেই । তবে তিনি তারা ভাইয়ের ছেলে কে কিছু মেইল করলেন আর রেখে গেলেন প্রায় ২০০০ বছর পুরোন কিছু লেখা । চাচার রেখে যাওয়া সেই সুত্র ধরে ছেলেটা এগিয়ে চলল । তার সাথে ছিল একজন ভাষাবিদ ও তার মেয়ে । ছেলেটির বন্ধু । তবে বিপদ তাদের পিছু ছাড়েনি । এ দিকে আল কায়েদা ও এক অশুভ শক্তি তাদের পদে পদে বাধার সৃষ্টি করছে । তারা কি তাদের লক্ষ্য পৌছুতে পারবে? বাচাতে পারবে কি এই পৃথিবীকে ?
আলোচনা
মহাভারত নাম শুনলে কিন্তু অনেক পিছনে ফিরে যেতে হয় । এর অনেক গুলো অধ্যায় রয়েছে । যারা মহাভারত পড়েছেন বা এর সম্পর্কে জানা রয়েছে তারা তো জানেন যে এর অনেক অধ্যায় শুধু মিথ হিসেবেই রেখে দেয়া হয়েছে । আসলে এর অন্যতম কারন হচ্ছে যাতে করে কেউ এর সিক্রেট জানতে না পারে । “ বিমান পর্ব ” হচ্ছে তেমন একটা পর্ব । আর এই পর্বে উপর ভিত্তি করেই পুরো গল্পটি এগিয়েছে ।
মহান সম্রাট অশোক জানলেন এই কথা । তিনি সাথে সাথে মন্ত্রী সুরসেন কে আদেশ দিলেন যেভাবেই হোক সবার কাছ থেকে এই আবিস্কার লুকিয়ে রাখতে হবে । শত্রুর হাতে পরলে পৃথিবীতে নেমে আসবে ধ্বংস যজ্ঞ । তাই সম্রাট তৈরি করলেন নয় জনের ব্রাদারহুড যারা একে অন্যরে সাথে কোন পরিচিতি ছিল না । সবাই মিলে লুকিয়ে ফেলেন সেই মহাভারত রহস্য ।
বর্তমান সময়ে এসে খুন হলেন বিক্রম সিং তবে ইমেল এ তার ভাতিজা বিজয় এর জন্য রেখে গেলেন কিছু সুত্র । বিজয়ের সাথে যোগ দিল তার বন্ধু কলিন ও ডা. শুক্লা ও তার মেয়ে রাধা । সবাই মিলে চলল পৃথিবীর অন্যতম আবিস্কারের খোজে । হয়ত পৃথিবীর ভবিষ্যত নির্ভর করছে এর উপর ।
অপর দিকে আল কায়েদা সদস্য ফারুক ও বিশ্বের অন্যতম ধীন ব্যক্তি লেগেছে এর পিছনে । পদে পদে বাধা আর বিপত্তির সৃষ্টি করছে । হয়ত পৃথিবীর শেষ এখানেই হবে । কে জানে?
পাঠ প্রতিক্রিয়া
বইয়ের শুরুটা ভাল । রহস্যময় । যদিও খুনটা একেবারে হঠাত করেই হয়েছে । কাহিনী বা তেমন সেভাবে কোন ক্লু নেই । আমার মনে হয় এই টুইষ্টটা ভাল ছিল । রহস্য জটিল এই দিকটাও লেখক ভাল ভাবেই তুলে ধরেছেন । তবে মাঝে কাহিনী কিছু থেমে গিয়েছে । মনে হয়েছে লেখকে মিল করার জন্য অনেক কিছু বাড়ানোর প্রচেষ্টা করা হয়েছে ।
অনেক জায়গায় বর্ননা এমন ভাবে করা হয়েছে যেটা একটু জটিল অতটা স্বাভাবিক নয় । তবে যে প্রযুক্তি দেখানো হয়েছে সেটাও একটু জটিল । পৌরানিক মিথ হিসেবে তো মেনে নেয়া একটু কষ্টকর । অনেক ধাধার স্বমনয় ঘটানো হয়েছে । পৌরানিক প্রযুক্তি গুলো আধুনিক করা হয়েছে, যা একটু বাড়াবাড়ি ।
অনুবাদ পড়েছি তাই অনুবাদ সম্পর্কে বলব । হ্যা অনেক দারুন ও স্বাভাবিক অনুবাদ । পড়তে বিরক্ত লাগেনি । কোন কাঠখোট্টা টাইপ নয় । সাহিত্যের রসবোধ ভাল ই ভাবেই অনুভব করতে পারেছি । যদিও কিছু জায়গাতে অনুবাদ একটু অগোছালো মনে হয়েছে । হয়ত মুল বইয়ের কারনে এমন হতে পারে ।
সব শেষ বল । বইটি দারুন একটি বই । থ্রিলার এডভেঞ্চার প্রিয় সবাই পড়তে পারেন । না শেষ করে উঠতে পারবেন না ।
বইঃ দ্য মহাভারত সিক্রেট
লেখকঃ স্ক্রিস্টোফার সি ডয়েল
অনুবাদঃ মাসুম আহমেদ আদি ও জেসি মেরি কুইয়া
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৫১