somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রউফ ভাইয়ের নীল ভেস্পা

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার আব্বার নাম আবদুর রউফ সরকার। তিনি ছিলেন বাংলাদেশে অন্যতম শ্রেষ্ঠতম ও শক্তিশালী প্রচ্ছদশিল্পী। সাহিত্য অঙ্গনে তাঁকে রউফ ভাই বলে সবাই ডাকত । ২৪সে এপ্রিল তাঁর ৩য় মৃত্যু বার্ষিকী । আমি তাঁর ছেলে সালাম আলী আহসান, তাঁর মেয়ে ফারহানা শারমিন আর তাঁর স্ত্রী হাজেরা খাতুন ছাড়া কেউ কি তাঁকে মনে রেখেছে কি না কে জানে!


আজ আমি তাঁকে নিয়ে কিছু বলবো না। আজ তাঁর একটি ভেস্পা নিয়ে কথা বলবো। এই ভেস্পাটি আব্বা আর আম্মাকে আমার সেজবাবু ডাঃ ওসমান আলী সরকার বিয়ের উপহার দিয়েছিলেন। ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আব্বা বিছানা পরার আগ পর্যন্ত ব্যবহার করেছেন। আপনারা একে এখন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র গুলিস্থান অফিসে হয়তো দেখতে পারবেন।


এই ভেস্পাটি আমার অনেক ভালবাসার আবার ঘৃণার বস্তু। ঘৃণার কেন তা আজ বলবো না তবে ভালবাসার কেন তা বলবো । এই ভেস্পা আমরা চারজন ঘুরে বেড়াতাম। আমি সামনে দাড়িয়ে থাকতাম, আমার বোন আম্মা পিছনে বসতো আব্বা ভেস্পা চালাত । ছোটবেলায় আমি এই ভেস্পা নিয়ে অনেক খেলাধুলা করতাম। আমার মামাতো ও দুধ ভাই রনি অনেক দুষ্ট ছিল। একবার এই ভেস্পার তেলের মধ্যে বালু ঢুকিয়ে দিয়েছিল।


আম্মার কখন অসুখ হলে আব্বা বলত “চল বুড়ি, ঘুরে আসি।”তারপর ভেস্পা করে ঢাকা শহর ঘুরে আম্মার অসুখ যে কই পালাত আল্লাহই জানেন।


এই ভেস্পা একবার চুরি হয়েছিল । প্রায় দুবছর দেখা যায় পুলিশ এটা ব্যবহার করছে। আব্বার সাংবাদিক মহলে এবং পুলিশ মহলে পরিচয় ছিল বলে এটি সঠিক মালিকের কাছে ফিরে আসে।
আমি এটা চালাতে শিখতে চেয়েছিলাম। আব্বা আমাকে কয়েকদিন বাংলা একাডেমীতে নিয়ে গিয়েছিল এটা চালানো শিখানোর জন্য। আমি পারিনি। আমি ভাল সাইকেল চালাতে পারি। কিন্তু গিয়ার চেঞ্জ করা আমার জন্য কষ্টকর। তাছাড়া আম্মা আমাকে কছম দিয়েছে এই অভিশপ্ত ভেস্পা আমি যেন না চালাই।


আব্বা তিনবার এই ভেস্পায় মারাক্তক দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। একবার পা, একবার মাথা আর একবার ঘাড় ভেঙ্গেছে।
শেষের আব্বা রাতে চোখে ভাল করে দেখতে পেত না। আমি পিছনে বসে থাকলে বলতাম এখানে উচু এখানে নিচু বলে দিতাম। আমি ছাড়া আব্বা কিভাবে চালাত আল্লাহুই জানেন।


আব্বা ছিল রাজপুত্র আর এই নীল ভেস্পা ছিল তাঁর পক্ষীরাজ । সারা ঢাকা শহর ছিল তাঁর রাজত্ব। আজ আমার রাজপুত্র নাই। পক্ষীরাজ কেমন আছে কে জানে? আর রাজত্ব......।


১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×