এক
আধুনিক নগর জীবনে অধিকাংশ মধ্যবৃত্ত ছাপোষা মানুষ মুরগীর খোপের মত এক/ দুই কামরার ফ্লাটে কোন রকম রাত কাটান। এটা আমাদের প্রিয় শহর ঢাকার মত পৃথিবীর অনেক মহানগরের জন্য চরম সত্য। বোম্বের মত ব্যয় বহুল মেগাসিটিতে স্বল্প আয়ের মানুষ নিজ নিজ অফিস সময়ের সাথে সামাঞ্জস্য রেখে ঘন্টা হিসাবে বাসা ভাড়া নেন বা অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করেন।
এমনি ক্ষুদ্র পরিসর বাসগৃহে যদি কোন নিকট আত্মীয় গ্রাম কিংবা মফস্বল থেকে এসে হাজির হন কিছু দিন অবস্থানের জন্য ,তখন আর বিড়ম্বণার শেষ থাকে না। যা হোক নিচের কার্টুনের ভদ্র লোকটি আবাসনের সংকট মোকাবেলায় একটি লাগসই সমাধান খুজে নিযেছেন ।
দুই
আমেরিকার একটা বহুল কথিত কৌতুক শুনন।
নিউইয়কের একটি ব্যাংকে একদিন এক চাইনিজ ভদ্রলোক এসে এক সপ্তাহের জন্য ১০০০ ডলার ধার চাইলেন। ব্যাংকের লোন কর্মকর্তা জানালেন , 'লোন পেতে হলে তাঁকে তাঁর কোন সম্পদ ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখতে হবে। তার কি সাথে তেমন কোন কিছু আছে যা তিনি ব্যাংকে বন্ধক রাখতে চান?' চীনা ভদ্রলোক ততক্ষণাৎ ব্যাংকের বাহিরে পার্ক করে রাখা তাঁর লেস্ট মডেলের গাড়ি টি দেখিয়ে বললেন যে, তিনি ১০০০ ডলার এক সপ্তাহের জন্য লোন পেতে গাড়ি টি জামানত রাখতে চান। শেষ পর্যন্ত তিনি লোন কর্মকর্তার নিকট গাড়ির চাবি দিয়ে ১০০০ ডলার লোন নিয়ে চলে গেলেন।
সামান্য ১০০০ ডলারের জন্য এত দামি গাড়ি বন্ধক রাখার মত নির্বুদ্ধিতা কেবল যে চাইনীজরাই করতে পারে, এ কথা নিয়ে সারা ব্যাংকে একচোট হাসাহাসি হয়ে গেল। যা হোক চীন ভদ্র লোকের গাড়ি টা শেষ পর্যন্ত ব্যাংকের আন্ডার গ্রাউন্ড পার্কিং এ স্থান পেলো।
লোন কর্মকর্তা আগ্রহী হয়ে ইন্টার নেটে চীনা ভদ্র লোকের প্রোফাইল সার্চ দিয়ে তাজ্জব বনে গেলেন। কারণ , চীনা ভদ্র লোকটি একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তাঁর কেন গাড়ি বন্ধক দিয়ে সামান্য ১০০০ ডলার ধার নেওয়া প্রয়োজন হল কিছুতেই ব্যাংক কর্মকর্তাটির মাথায় ঢুকলো না।
প্রতিশ্রুতি মোতাবেক চীনা ভদ্র লোক এক সপ্তাহ পর ব্যাংকে হাজির হলেন লোন পরিশোধে। ব্যাংকের লোণ কর্মকর্তা সম্ভ্রমে তাঁর এক সপ্তাহের সুদ হিসাব করে দিয়ে বললেন,' কিছু মনে না করলে একটা প্রশ্ন করি। আপনার মত একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর গাড়ি বন্ধক রেখে কেন সামান্য ১০০০ ডলার লোন নেওয়া প্রয়োজন হল?!'
চীনা ভদ্র লোক স্মিত হেসে উত্তর দিলেন ,' আমি হঠাৎ করে এক সপ্তাহের জন্য নিজ দেশে গিয়েছিলাম। মাত্র এই ক'সেন্ট খরচ করে আমি নিউইয়ক শহরে পুরো সপ্তাহের জন্য আর কোথাই বা আমার প্রিয় গাড়ি টি রাখতে পারতাম বলুন?''
তিন
ইউরোপের শিল্প উন্নত দেশগুলোর সবচেয়ে বিড়ম্বণাকর বিষয় হচ্ছে প্রতিদিন গৃহস্থল থেকে শুরু করে শিল্প কারখান জাত আবর্জণা নিরাপদে ফেলা।যার একটা গরভরা নামও আছে 'ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট'। আর এই আবর্জনা কেন্দ্র করে ইতালীতে ' মাফিয়া'দের এক বিরাট চক্র গড়ে উঠেছে।মাফিয়াদের ভাষায় ' আবর্জানা হচ্ছে তাদের কাছে সোনা'।কিছু দিন ( জুন ২০০৮) আগে ইতালীর নেপলসে এই আবর্জণা নিয়ে মাফিয়াদের সাথে রীতিমত যুদ্ধ হয়ে গেছে।আধুনিক কালে আমরা যে দুর্ধষ সোমালিয়ান জলদস্যুদের উপখ্যান শুনছি, তার পশ্চাতেও রয়েছে উন্নত বিশ্বের আবর্জনা আফ্রিকার দরিদ্র মানুষের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার নির্মম কাহিনী।
Click This Link
চার
এমনি এক আবর্জনা কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে চট্টগ্রামেও গড়ে উঠেছে এক মাফিয়া চক্রের ' শিপ ব্রেকিং ' ব্যবসা।এক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে ভারতের ' আলাঙ্গ ' ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ব অর্ধেকের বেশি পরিত্যক্ত জাহাজের শেষ গন্তব্য স্হল।পরিবেশ আর মানবতার প্রতিবৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শণ করে অতি মুনাফা এ ব্যবসা চলছে মূলতঃ আমাদের দেশে পরিবেশ আইনের দূর্বলতা এবং সস্তা মধ্যযুগীয় শ্রম শোষণ প্রক্রিয়া কে পুজি করে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:২১