রিক্সাড্রাইভার টকটক করে দরজায় শব্দ করছে। ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ আসছে না। একটু পর নিশাত দরজাটা খুলে দিল। সামনে দাঁড়ানো লোকটাকে দেখে খেয়াল হলো এইমাত্র সে তার রিক্সা থেকে নেমে ভাড়াটা মিটিয়ে আসছে।
রুগ্ন শরীর আর জীর্ণশীর্ণ কাপড়ের রিক্সাড্রাইভার তার রুক্ষসুক্ষ ডান হাতটি নিশাতের দিকে বাড়িয়ে বললো- স্যার, আপনার মানিব্যাগ।
নিশাত সচকিত হয়ে তার প্যান্টের ব্যাকপকেটে হাতটা চালিয়ে দিয়ে দেখে নিল তার মানিব্যাগটা ঠিক জায়গায় আছে কিনা।
আছে। তার রুগ্ন মানিব্যাগটা প্যান্টের ব্যাকপকেটে ঠিকই লেপ্টে আছে।
নিশাত মানিব্যাগটা নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। কার মানিব্যাগ এটা ! হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল তার। তপু'র ফোন।
- নিশাত, আমার মানিব্যাগটা পাচ্ছিনা বন্ধু।
- তাই নাকি ! কোথায় হারালি ?
- এই যে তুই আমাকে আমাদের বাসার সামনে রিক্সা থেকে নামিয়ে দিলে তখনই দেখি মানিব্যাগটা নেই।
-আহারে.... তাই নাকি বন্ধু ! নারে বন্ধু আমি তোর মানিব্যাগটা পাইনি।
- দেখতো বন্ধু, মানিব্যাগটায় হাজার কয়েক টাকা ছিল। স্বর্ণার একটা ছবি ছিল। তার একটা চিঠিও ছিল। টাকার জন্য কোনো কষ্ট হচ্ছেনা বন্ধু। তার ছবিটা,তার চিঠিটা। এটাই তার শেষ চিঠি। আহারে.. কতো স্মৃতি, কতো আবেগ। চিঠিটায়....ছবিটায়...
কথা শেষ না করেই কল কেটে দিল তপু ।
ঠোঁট বাঁকা করে নিশাত হাসছে। হাজার কয়েক টাকা ! পুরো মাসটা চালিয়ে যাওয়া তার জন্য দুঃসাধ্যই ছিল, এখন অবশ্য অনেকটাই সুগম হয়েছে ! এমনকি এখন সে ইভার সাথে ডেটিং করতে গিয়ে বুক উঁচিয়ে রেস্টুরেন্ট বিলটাও পরিশোধ করতে পারবে।
ছবি- গুগল
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৫