ভাসানীর রান্না করা খাবার নিয়ে যার মজার কাহিনী গত ছয় তারিখে এই ব্লগে পোষ্ট করেছিলাম সেই মাঈদুল ইসলাম এমপি (কুড়িগ্রাম) আর নেই। ১০ তারিখ বৃহষ্পতিবার রাতে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি ১৯৪০সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার বয়স হয়েছিল ৭৮বছর। তিনি চলমান সংসদের এমপি এবং বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী ছিলেন।
**** আপনাদের জ্ঞাতার্থে কাহিনীটি আবার দেয়া হলো। ****
ষাটের দশকে মুসলিম লীগ নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী আবুল কাশেম সাহেবের পুত্র মাঈদুল ইসলাম একজনকে সাথে নিয়ে গেলেন মওলানা ভাসানীর সাথে দেখা করতে। তখন ছিল রোজার সময়। ভাসানী তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন তাঁরা রোজা রেখেছে কিনা। মওলানা সাহেবের এমন কথায় তাঁরা মাথা চুলকাতে চুলকাতে জবাব দিল, রোজা রাখে নাই।
তারা রোজা রাখে নাই শুনে মওলানা সাহেব বলল, রোজার দিন তোমাগো এহন কি খাইবার দেই, বাবুর মাও নাই (মওলানার স্ত্রী আলেমা ভাসানী)। বাবুর মাও আমারে ফালায়া পাঁচবিবি গ্যাছে বাপের বাড়ি। একটু চিন্তা করেই বলল, আচ্ছা বসো। ভাত না খাইয়া কিন্তু যাইয়ো না, দেহি কি করবার পারি।
তাদের বসতে বলে মওলানা সাহেব নিজেই রান্নার কাজে লেগে গেলেন। রান্না করার মত মাছ মাংস কিছুই ছিল না। গতকাল একজনে একটি রুই মাছ দিয়েছিল সেটিও খাওয়া শেষ হয়েছে, শুধু রুই মাছের তেলগুলো আছে। মওলানা এই তেল দিয়েই লাকরির চুলায় বেগুন রান্না করলেন।
খাওয়ার সময় তারা যেন হুশহারা হলেন। মাঈদুল ইসলামের ভাষ্য মতে, রুই মাছের তেল দিয়ে রান্না করা বেগুনের তরকারী এত স্বাদ হয়েছিল যে খেতে খেতে পরিমাণের তুলনায় অনেক বেশি খেয়েছিলেন।
আসলে মওলানা ভাসানীর রান্নার হাত খুবই ভালো ছিল। তরকারীতে একটু ঝাল বেশি দিত ঠিকই কিন্তু খেতে খুব স্বাদ হতো।
এখানে লক্ষ্যনীয় যে, নিজে রোজা রেখেও বে রোজদার অন্যকে নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াতে দ্বিধা করতেন না। নিজে ধর্মনিষ্ঠ ছিলেন কিন্তু ধর্মের আচার অনুষ্ঠান অন্যের ঘাড়ে চাপানো পছন্দ করতেন না।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:২৫