somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মন্দা: কাগুজে অর্থনীতির ফুলানো বেলুনের প্রাকৃতিক চুপসানো

১২ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বলা হচ্ছে তামাম বিশ্ব অর্থনৈতিক 'মন্দা'র কবলে। ভূতটা প্রথম আছর হয়েছে যুক্তরাস্ট্রে। তারপর আটলান্টিক পেরিয়ে গোটা ইউরোপ ও প্রশান্ত পেরিয়ে জাপান অবধি। ছোয়াঁ লাগছে এখন চীন, পাক-ভারত, বাংলাদেশ বা মালয় উপকূলে। এভাবে ছেয়ে যাবে গোটা বিশ্ব। আসুন এই ভূতের আকার -প্রকার, ফলাফল ও দাওয়াই নিয়ে খানিকটা ভাবি।

ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাস্ট্র বা গোটা দুনিয়ার অর্থনৈতিক কারবারকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। আসল অর্থনীতি ও কাগুজে অর্থনীতি। গাভী, হাস-মুরগী পালন, কামলা খাটা, চিনিকল, গার্মেন্টস, মোবাইল ফোন বানানো, বিমান বা টেম্পুতে করে যাত্রী বা মালামাল পরিবহন ইত্যাদি হৈল আসল অর্থনীতি।
ব্যাংক, বীমা, লিজিং কোম্পানি, ফ্যাক্টরিং, শেয়ার বাজার, মিউচুয়াল ফান্ড, হেজ ফান্ড, মার্চেন্ট ব্যাংক, এসেট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম, মানি চেন্জার, বিশ্বব্যাংক গং, মহাজন, কোঅপারেটিভ, ক্ষুদ্র ঋন ইত্যাদি হৈল কাগুজে অর্থনীতি। ভূতের আছর হয় কাগুজে অর্থনীতির উপর। তবে খেসারত দেয় আসল অর্থনীতি। কারনটাও সোজা, কাগুজে ওয়ালাদের কাজকারবার পুরোটাই কিছু কাগজ চালাচালি করা- দলিল, ডকুমেন্ট, চেকবই, শেয়ার সার্টিফিকেট, টাকা (অথবা এগুলোর ডিজিটাল রূপ)। আরো জানতে নিকটস্থ যেকোন একটি ব্যাংক ভালোভাবে ভ্রমন করুন। সেটা গলাচিপার জনতা ব্যাংক কিংবা ব্রুকলিন স্ট্রিটের মেরিল লিন্চ যাই হোক। এদের কারবারের ধরন হৈল নানাবিধ জটিল কাগজ ও শব্দমালা ব্যবহার করে অন্যের টাকার উপর ভর করে 'ফাও' টাকা কামানো। রহিমের টাকা ০ থেকে ১৩টাকা সুদে জমা রেখে করিমকে ১৫ থেকে ২০টাকা সুদে ধার দেয়া। প্লাস, আরো ১/২ টাকা আগডুম বাগডুম সার্ভিস বৈলা কর্তন। সুসজ্জিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে বসেই এটা করা যায়। এত আরামদায়ক ব্যবসা ২য় টি আছে বৈলা অধমের জানা নেই। সেজন্য দেশে মশা মাছির মত কোপারেটিভ, মাইক্রোক্রেডিট, ব্যাংক বেড়ে গেছে। ঝামেলা বাধে তখন, যখন অনেক রহিম একসাথে টাকা ফেরৎ চায় বা বেশ কিছু করিম লা পাত্তা হয়া যায়! বলে রাখা ভাল ২০% জামানতও যদি একসাথে ফেরৎ চাওয়া হয় দেশের কোন ব্যাংক দিতে পারবেনা। আর ২০% লোন যদি ডিফল্ট করে তাহলেও খবর আছে। মাসে এনে মাসে খাওয়া নিম্ন মধ্যবিত্ত মার্কিনিদের খামাকা লোন দিয়ে বাড়ি গাড়ির 'তথাকথিত মালিক' বানিয়েছে কাগজআলারা। তাদের আমদানীর তীব্র টানে ভরাকাটাল বয়ে গেছে চীন, জাপান, ভারত, বাংলাদেশের গার্মেন্টস, তৈজসপত্র, গাড়ি, আইটি রপ্তানিতে। ভিত্তিহীন বড়লোকী ধসে পড়ার সাথে সাথে তাদের জিএম এবং জাপানের টয়োটা উভয়েই ধরা। কাগজের এ ক্লাসিকেল বাণিজ্যের সাথে যোগ হয় ভূয়া ব্যালেন্সশীট দেখিয়ে মোটা অংকের বন্ড বেচা। উত্তরকালে এহেন বন্ডদিয়ে নাকমোছা ছাড়া কিছুই করার থাকেনা। অনেকের মনে থাকতে পারে ঝিনাইদহের কোটচাদঁপুরের কাজল বা হালের যুবকের কথা। এপারেন্টলি জায়েজ হলেও শেয়ারবাজারের বিদ্যমান হালে জুয়াক্লাব বলাই সমীচিন। দুখ:জনক ভাবে এটাকে পুজিঁবাজার বলাহয়। বিরাটঅংকের পুজিঁ সংগ্রহের জন্য 'আসল অর্থনীতির' এখানে দেনদরবার করার কথা থাকলেও তা হয়না। বরং বড় বড় কোম্পানীকে ঘাড় ধরে আনার কথা বলছে সরকার। আবার 'মোনাফুডস' মার্কা লোকজন 'পুজিঁ' উঠিয়ে ভেগে যাচ্চে। পরে মরা কোম্পানীর দাফন কাফন নিয়ে মিটিং করছে এস ই সি বা নাসডাক। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৩৬
১৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×