somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রামীণফোনের অন্দরমহল-২

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রামীণফোনের অন্দরমহল-১ Click This Link
প্রথমদফা প্রত্যাখানের পর দিন মাস গড়িয়ে যায়। কোম্পানীর অসংখ্য ও বিচিত্র পদ পদবীর 'নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি'ও তাদের ওয়েবসাইটে হরদম আসতে থাকে। অফিসার থেকে ডিজিএম এমনকি হেড অব অমুক, তমুক। BBA/MBA preferably from reputed business school, ০-5 years exp ইত্যাদি। আমার জানামতে, আইবিএ মোটামুটি নামকরা একটি স্কুল। কিন্তু এসব অসংখ্য খালিপদের বিপরীতে ১টিতেও যে কেন ডাক পাইনা ব্যাপারটা বোধগম্য হয়না। রাস্তাঘাটে মাঝেমধ্যেই এর ওর সাথে দেখা হয়। জিগাই- ভাই কৈ আছেন? কয়- জিপিতে। কি কন? কবে থেকে? এইতো গত সপ্তাহে/ মাসে। এর বেশী জিগানো অভদ্রতা। মনে মনে ভাবি ওরা ক্যামনে ঢুকল, ভাই বেরাদরদের জিগাই। ঈর্ষান্বিত হই 'কি সুন্দর সুন্দর বাসে, সুন্দর সুন্দর মাইয়া, আহারে কত মজার চাকরি! ইতোমধ্যে একই সময়ে স্নাতক হওয়া ডজনখানেক বিবিএ দল বেধেঁ ঢুকল। কর্পোরেট সেলস আর মার্কেটিং-এ। বেশ ঘনিস্ট বন্ধু ঢুকল ১ জন। আর সে কি তার আস্ফালন! ৬০ হাজার টাকার কম কোনো মাসেই পড়ছেনা। সামনে নাকি অফিসারের বেসিক হবে ৩৫ হাজার। সেলসে পার্সোনাল গাড়ি থাকবে, ল্যাপটপতো বটেই! আর কাজ বলতে টুকটাক ডাটা এন্ট্রি ও দিনভর ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ানো, ক্যান্টিন, মিটিং, লান্চ, নানাবিদ দিবস উদযাপন, ওয়ার্কসফ ইত্যাদি!!
পরিস্থিতির 'ভয়াবহতা' দেখে ভাবলুম আরোখানিকটা এফোর্ট দিতে হৈবেক। ট্র্যাক নম্বর টা জানিয়ে একে ওকে 'ভাই- একটু দেইখেন।' বিদ্যমান ভিন্ন নতুন 'চাকুরি'র ব্যস্ততার মাঝে দীর্ঘদিন পর আবার ১ দিন "মি.....বলছেন....। আপনার একটা...স্ক্র্রিনিং...।' কৈলাম- আমি তো ভাই এটাতে এপ্লাই করিনাই।' 'ডাটাবেজ থেকে আমরা আপনাকে সর্টলিস্ট করেছি...।' যাব যাবনা করতে করতে ইন্টারভিউ, রিটেন, ইন্টারভিউ, মেডিক্যাল এসবের ঘাট পেরিয়ে মাস দুয়েক পরে একটা এপয়েন্টমেন্ট লেটার হাতে এল। তবে ততদিনে আরো ১টা ভালো এপয়েন্টমেন্ট লেটার এবং বিদ্যমান চাকুরিটি ছাড়ার অপশনও যোগ হল।
নানান মত, অমত পেরিয়ে 'দেখি না কি আছে ভেতরে' ধাঁচের একটা মানসিকতা থেকে ২০০৬ সালের কোনো এক সকালে গিয়ে হাজির হলাম গুলশান ১ ও ২ এর মাঝামাঝি বিখ্যাত এ কোম্পানীর হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের রিসেপশনে। অতি সুন্দরী রিসেপশনিস্টের কাছে গিয়ে কাঁচু মাঁচু ভংগিতে বললাম- আমি এইচআর বিভাগে যাব। বিরক্ত মুখে জিজ্ঞেস করলেন- কার কাছে যাবেন? পড়লাম গ্যাড়াঁকলে 'কার কাছে যাব?' কৈলাম- আমি আসলে জয়েন করতে এসেছি। এই..দেখুন..অফিসার, লতাপাতা বন্টন পদে। 'রেগুলার পজিশন?' বললাম- 'তাইতো মনে হচ্ছে।' পরিবর্তিত মুখাবয়ব নিয়ে 'আপনি বসুন।' কার সাথে যেন ফোনে কথা বললেন। আর নিকটবর্তী গাঢ় নীল সোফায় বসে আমি ইতি উতি দেখছি। কটিদেশে ঝুলানো আইডি কার্ড দরজায় ছোঁয়ালেই 'কিঁ' করে আওয়াজ ও খুলে যাওয়া আরো কত কি! (পরবর্তীকালে বুঝতে পেরেছিলাম ঐ সুন্দরীর তাচ্ছিল্য, ঈর্ষা ও পরিবর্তনের কার্যকারন। যথাসম্ভব উর্ধ-অধ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ সুন্দরী ছিলেন পার্ট-টাইমার। তখনকার ব্যবস্থাপনায় পার্ট টাইমার, কন্ট্রাকচুয়াল, রেগুলার অফিসার, ডেপুটি ম্যানেজার.... এই ছিল অবস্থা। রেগুলার অফিসারের সংখ্যা ছিল খুব কম। আবার জিপির পার্ট টাইমার হৈল এক আজব বস্তু। যারা দিনে ১০ ঘন্টারও অধিক কাজ করে। বিশ্বের এটাই অন্যতম আজব কোম্পানী যেখানে পার্ট টাইমাররা ওডি ক্লেইম করে ও পায়! মাস শেষে যার পরিমান ২০ হাজার টাকাও হত (২০০৬)। তাই মাস্টার্স পাশ করেও পোলাপাইন 'কান্ড জ্ঞান হীন ভাবে' এসব চাকরিতে জয়েন করে। কিছু দিন যেতে না যেতে ঘ্যানর ঘ্যানর করে কন্ট্রাকচুয়াল করার জন্য তার পর পুরা রেগুলার। কারো শিকেয় তা জোটে, কারো জোটে না। না জোটারা ৩০ বছর পার হলে বুঝে আম ছালা ২ ই গেছে! এর চেয়ে ঢের ভালো ছিল ৮ হাজার টাকা বেতনে রেগুলার-ফুলটাইম অন্যকোনো চাকুরি শুরু করা। কটা টাকার লোভে..!)
ঐদিন আনুমানিক ১১-০০ টায় আমি জয়েনিং লেটার ও দলিল সমুহে সাইন করি। অর্থাৎ ঢুকে পড়ি অন্দরমহলে। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:৩৫
৪১টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রোএক্টিভিটি এবং কম্পাউন্ড ইফেক্ট: আমার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি শিক্ষা

লিখেছেন মাহদী হাসান শিহাব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১১



আমার গুরুত্বপূর্ন দুইটা লার্নিং শেয়ার করি। এই দুইটা টুল মাথায় রাখলে দৈনন্দিন কাজ করা অনেক সহজ হয়। টুল দুইটা কাজ করতে ও কাজ শেষ করতে ম্যাজিক হিসাবে কাজ করে।

এক.

স্টিফেন কোভের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

লিখেছেন সায়েমার ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৩

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ
ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

১।
যৌন প্রাকৃতিক, জেন্ডার নয়।জেন্ডার মানুষের সৃষ্টি (social, cultural construction)। যৌনকে বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন সময়ে যেভাবে ডিল করে, তাঁকে ঘিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতির ঝলক: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতি এবং মনের শান্তির খোঁজে

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০১



সরল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে একটি ঘূর্ণায়মান পথ জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর অবস্থানে আমি খুব শান্তি অনুভব করি। নদীর জল ছুঁয়ে পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক আন্তরিক সংযোগ অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×