somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন মায়াবতী (গল্প)

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছেলেটি বখতিয়ার খিলজির উপর কিছুটা রেগে আছে। কারণ তাকে না জানার অপরাধে একজন মায়াবতীকে হার্ট করে কথা বলেছিল।
মায়াবতীকে জিজ্ঞেস করেছিল, বখতিয়ার খিলজি কে চিনেন?
মায়াবতী মিষ্টি হেসে বলল, "চিনি না তবে নাম শুনেছি। আসলে উনি আমার প্রতিবেশী না আর তখন আমার জন্মও হয়নি।"
ছেলেটি জিজ্ঞেস করল, আপনি কি শিওর?
মায়াবতী বলল, কি মনে হয়?
এতটুকু শুনেই ছেলেটি গাধার মত এমন এক রিএক্ট করে বসল। ছেলেটির রিয়েক্ট দেখে মায়াবতী তো পুরোপুরি হতভম্ব। দুষ্টামি করেছে অথচ বিনিময়ে পেয়েছে......... হার্ট করার পর ছেলেটি বুঝতে পারে সে কি ভুল করেছে। ছেলেটির মুখ থেকে সরি শুনার পর মায়াবতী হয়ত মুখে বলেছে, ইটস ওকে। কিন্তু একটি চিন্তা ছেলেটির অন্তরে পীড়া দিচ্ছে, মনের মধ্যে দুঃখ পুষে রাখেনি তো!!

ঠিক এই জায়গায় উপনীত হয়ে একটি ছেলে প্রার্থনা করে, হে ঈশ্বর আমাকে মানুষের মন বুঝার শক্তি দাও। প্রার্থনার বিনিময়ে ঈশ্বর ছেলেটিকে একটি বই দান করে। যে ব্যক্তি এই বইটি ভাল ভাবে পড়তে পারবে সেই মন বুঝার ক্ষমতা লাভ করবে। ছেলেটি খুশি মনে বাড়ি ফিরে যায়।

ছেলেটি বই পড়তে শুরু করে। শুরুতেই সূচিপত্র। অসংখ্য অধ্যায়ের সমষ্টি। প্রত্যেকটি অধ্যায় একেক জন মানুষকে নিয়ে লেখা। অসংখ্য মানুষের ভীরে মায়াবতী পৃথিবিতে একজনই। ছেলেটি মায়াবতীর অধ্যায়কে খুঁজতে থাকে। এক সময় পেয়েও যায়। পড়তে গিয়ে দেখল যে, সর্বনাশ!! এই অধ্যায় পড়তে পড়তে তো সারাজীবন লেগে যাবে। তবুও ছেলেটি পড়তে থাকে। পড়তে পড়তে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে।

পাড়ি দেয় স্বপ্নের ভুবনে। শহরের পথে পথে হেঁটে হেঁটে একটি ছেলে হতে চেয়েছিল ক্লান্ত পথিক। শহর থেকে দূরে কোথাও, হতে পারে পদ্মার পাড়। হতে পারে শান্তি নীড়, কুঁড়েঘর। পদ্মার পাড়ে বসে ছেলেটি মায়াবতীর প্রিয় কবির গান গাইছিল,
পদ্মার ঢেউ রে
মোর শুণ্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা যারে।।

অপেক্ষা .....................ছেলেটি অপেক্ষা করছে। মনে হয় মায়াবতী এসে পড়েছে। মিষ্টি হাসির শব্দ শুনা যাচ্ছে। ছেলেটি অভিভূত এবং কিছুটা দ্বিধায় পড়ে গেল। মানুষের হাসি কি এত সুন্দর হয় কি করে!! পরী রুপী মানুষ হতে পারে। রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছে একটি ছেলে। মায়াবী হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা তীক্ষ্ণ হৃদয় হরণকারী একটি মুখ দেখার জন্য। যে মুখটি দেখে জাদুকর হতে চাইবে ছেলেটি। মানুষ বশীকরণের যাদু শিখে, তাকে বশ করে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিতে চাইবে সারাটি জীবন। আর মায়াবী এক পৃথিবীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে হাতে নিতে চাইবে একটি লাল গোলাপ।

কোন এক মধ্যরাতে কার্নিশে ঝুলে থাকা টিকটিকির দিকে তাকিয়ে ছেলেটিকে আমাকে তার মায়াবতী সম্পর্কে গল্প করছিল। আমি তন্ময় হয়ে শুনছিলাম। এ পর্যায়ে এসে ছেলেটি থেমে গেলো।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কি হল? আপনার মায়াবতী কি এসেছিল? প্রশ্ন করাটা মনে হয় ছেলেটি পছন্দ করেনি। আস্তে আস্তে উঠে যাচ্ছে। বিড়বিড় করে বলছে,

"ওর নাম মায়াবতী, ছেলেটি এসে দিয়েছিলো নাম। আজো আমি মেয়েটিকে খুঁজি। জলের অপার সিঁড়ি বেয়ে। কোথায় যে চলে গেছে মেয়ে।"

আশ্চর্য এই ছেলেটির চলে যাওয়ার পথে চেয়ে আছি। আর ভাবছি ঈশ্বর থেকে পাওয়া বইটির কথা। পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন বই। জীবন দিয়ে পড়তে হয় বইটি। হয়ত জীবন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু বইটি পড়া শেষ হবে না। ছেলেটি হয়ত বইটি পড়তে গেছে। আর আমি, বই পড়বো দূরে থাক ছেলেটির বই পড়া দেখেই আমার অলসতা ধরে গেছে। তবে অধীর আগ্রহে বসে আছি ছেলেটি হয়ত কোন একদিন মায়াবতীকে সুরে সুরে বলবে, দুঃখ তোমার কেড়ে নিতে চায় যত...
এমন একটা নাছোড়বান্দা ছেলে...
সুখের দিনে নাই বা পেলে পাশে
খবর দিও হঠাৎ কান্না পেলে..


মোবারক হোসাইন
সিনেমা ক্যাম্প, মেরসিন, তুরস্ক।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৭:৪৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×