আগামী ২০ জানুয়ারীতে আমেরিকার হোয়াইট হাউজে অভিষেক হতে যাচ্ছে আমেরিকার ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ১০ বিলিয়ন্ ডলারের মালিক এই ধনকুবের সকল জল্পনা কল্পনা বাতিল করে, নিজ ও অপর দলের প্রার্থীদের উড়িয়ে দিয়ে হোয়াইট হাউজে পা রাখবেন। এতে করে আন-ডকুমেন্টেড অভিবাসীদের পাশাপাশি ছাত্ররা- যারা কিছু প্রসিডিওর পার করে গ্রীণকার্ড এবং নাগরিকত্ত পাবার আশায় ছিলেন তারা ভয়ে রয়েছেন। জানিয়ে রাখছি, এখন প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৪৫০০+ ছাত্র আমেরিকায় পড়তে আসেন যাদের ৯৯% মাস্টার্স বা পিএইচডি লেভেলের। এরা সকলেই পড়া শেষ করে চাকুরীর মাধ্যমে্ H1B পাবার আশা করে।কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত নতুন নিয়মে জবের ক্ষেত্রে "আমেরিকান ফার্স্ট" এবং "H1B পাবার পূর্বশর্ত বাৎসরিক এক লক্ষ ডলারের চাকুরী" এই দুইটি আমেরিকান মাটিতে আমাদের চাকুরী পাওয়া ও সেটেল হবার দরজা বন্ধ করে দিবে। এমন পরিস্থিতিতে কোন ধরণের ছাত্ররা আমেরিকায় আসবেন সেটা সম্পর্কে আমার ব্যাক্তিগত কিছু মতামত আছে।
১। আমেরিকায় পড়তে আসার আগে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানিসহ অন্যান্য ইউরোপিয়ান কান্ট্রিগুলোতে (ইউকে বাদে) ট্রাই করুন।
২। আমেরিকায় পড়তে আসতে হলে শুধুমাত্র প্রত্যেক স্টেটের টপ ২ টি ইউনভার্সিটিতেই এডমিশন নিন। মিডিয়াম র্যাংক ও এড়িয়ে চলুন।
৩। আন্ডারগ্রেড বাংলাদেশের কোন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে করুন।ভালো জায়গা থেকে গ্রাড কমপ্লিট করলে আন্ডারগ্রাড নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে না।
৪। দেশে ফিরে শিক্ষকতা পেশায় জয়েনের ইচ্ছা থাকলে আপনি আমেরিকার যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করলেই যথেষ্ঠ হবে।
৫। আন্ডারগ্র্যাড পাশ করেই আমেরিকায় দৌড় দিবেন না। আন্ডারগ্রেড পাশের পরে নূন্যতম ৩/৪ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা মাস্টার্স বা পিএইচডি পাশের পড়ে চাকুরী পেতে সাহায্য করবে। আলতু ফালতু কোম্পানিতে চাকুরীর অভিজ্ঞতা থাকা আর না থাকা সমান হবে।
৬। মোটিভেশনাল স্পীচ কম কম দেখবেন। যারা হায়ার স্টাডি এবরোড গ্রুপে মোটিভেশনাল স্পীচ আপলোড করে এরা নিজেরাই লাইফ স্ট্রাগলে পরাজিত। নিজের জ্ঞান বুদ্ধি ব্যাবহার করে সব সিদ্ধান্ত নিবেন। আরেকজনের মোটিভেশনাল স্পীচ শুনেই চোখ বন্ধ করে লাফ দিবেন না।
৭। সবচেয়ে বড় কথা, যদি মনে করেন পাশ করার পর আপনি মাস্টার্স/পিএইচডি করার পর আপনার যোগ্যতা, রিসার্চে মুগ্ধ হয়ে কোম্পানি আপনাকে খুজে এক লক্ষ ডলারে চাকুরী দিবে তবেই আপনি নিশ্চিন্ত মনে আমেরিকায় আসতে পারেন। অন্যথায় অনেক কাঠ খড় পোড়াবার পরেও কাজ হবে কিনা তাতে সন্দেহ আছে। হয়ত যেই পরিশ্রম-সাধনা দিয়েও আপনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে, তার থেকে অনেক অনেক কম পরিশ্রম জার্মানির কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে দিলে পাশ করার পর বার্লিনের রাস্তায় Mercedes Benz হাকিয়ে ঘুরে বেরাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫৭