somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজেই করুন ভারতের মেডিকেল ভিসা

০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রথমেই বলে রাখি, রাষ্ট্র হিসেবে ভারত আমার পছন্দের না হলেও ভারতীয়দের অনেক কিছুই অনুকরণীয়। আরো অনেক কিছুর মত প্রফেশনাল এটিকেট ও প্রফেশনাল অনেস্টির দিক দিয়ে ভারতীয়রা আমাদের চেয়ে যোজন যোজন দুরে এগিয়ে রয়েছে, বিশেষ করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে। অন্যদিকে আমাদের দেশের ডাক্তারদের রেপুটেশন এতটাই ভালো, এতটাই ভালো যে (!) দেশের মানুষ প্রয়োজনে জায়গা জমি বিক্রি করে হলেও চিকিৎসা নিতে ভারতে যায়। সে কলকাতা, চেন্নাই, ভেলোর, মুম্বাই বা দিল্লী হোক না কেন। আর, আমরা তো আমজনতা-গোবেচারা, এ দেশের সরকারি বেসরকারি হোমরা চোমরারাও দলে দলে দৌড়াচ্ছে ভারতে চিকিৎসা নিতে। কে জানে, হয়তো আমাদের মহামহিম ডাক্তারবৃন্দও যাচ্ছেন চেন্নাই বা দিল্লীর হাসপাতালগুলোয়।

আমাদের ডাক্তারদের কীর্তিকাহিনী আবার বেশি বলা যাবে না, বললে চাকরি থাকবে না :-P । তাই ডাক্তারদের কাহিনী না শুনিয়ে বরং কিভাবে ভারতে চিকিৎসা নিতে নিজে নিজেই ভিসার জন্য প্রক্রিয়া করে সহজেই ভিসা পাওয়া সম্ভব, সে বিষয়ে কিছু বলি।

আমরা বাঙালিরা যেহেতু নবাবের বংশধর, সব কাজে আমরা প্রথমেই দালাল খুঁজি! ভাই কিছু টাকা খরচ হলে হোক, তবু নিজে কিছুই করতে পারবো না!! অথচ আপনি যদি ভিসার জন্য আবেদনের সঠিক প্রক্রিয়াটা জানেন এবং যদি সত্যিকারার্থেই রোগী হন সেক্ষেত্রে শতভাগ সম্ভাবনা আছে যে আপনি মেডিকেল ভিসা পেয়ে যাবেন।

এ ক্ষেত্রে আমি কাজগুলোকে তিনটি পর্বে ভাগ করতে পারি: প্রথমত- দেশীয় ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশন ও কাগজপত্রের ডকুমেন্টেশন এবং ইন্ডিয়ান কোন হাসপাতালের পক্ষ থেকে ইনভাইটেশন লেটার, দ্বিতীয়ত- আবেদনপত্র পূরণ এবং তৃতীয়ত- আবেদনপত্র জমা দেওয়া।

এখন আসুন দেখি কিভাবে এগুলো করা যাবে। এখানে একটা বিষয় বলে রাখি, মেডিকেল ভিসার জন্য রোগীর সাথে সর্বোচ্চ তিনজন অ্যাটেন্ডেন্ট থাকা যায়। না থাকলেও হয়, তবে অ্যাটেন্ডেন্ট ছাড়া মেডিকেল ভিসার আবেদন গ্রহণ করতে চায় না। ঝামেলা করে।

দেশীয় ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশন ও কাগজপত্রের ডকুমেন্টেশন এবং ইন্ডিয়ান কোন হাসপাতালের পক্ষ থেকে ইনভাইটেশন লেটার
আবেদনপত্রের সাথে রোগির গত ছয় মাসের চিকিৎসাসংক্রান্ত কাগজপত্রের ফটোকপি (প্রেসক্রিপশন, টেস্ট ও তার রিপোর্ট) জমা দিতে হবে। তাই এই কাগজগুলো নতুন থেকে পুরোনো ক্রমানুসারে সুন্দর করে গুছিয়ে নিন। এবার ভারতের যে কোন ভালোমানের হাসপাতালের অ্যাড্রেসে রোগের বর্ণণা এবং রোগি ও অ্যাটেনডেন্ট এর পার্সপোর্টের ডিটেইল মেইল করে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের অ্যাপোয়েন্টমেন্ট চেয়ে মেইল করে দিন। (আমার পরিচিত একজন দালালের মাধ্যমে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে এই ইনভাইটেশন লেটার এনেছিল; অথচ এটা একটা মেইল করেই পাওয়া সম্ভব)। নিচে এখানে একটা স্যাম্পল দিয়ে দিলাম।



এই মেইলের সাথে অ্যাটাচমেন্ট হিসেবে আপনাকে রোগির স্থানীয় ডাক্তারের দেওয়া প্রেসক্রিপশন, টেস্ট এবং রোগি ও অ্যাটেনডেন্ট এর পাসপোর্টের ইনফরমেশন পেইজ দুটির স্ক্যান করা কপি সংযুক্ত করতে হবে। ও হ্যা, যে মেইলটা আপনি লিখবেন, ওইটাও এমএস ওয়ার্ডে লিখে অ্যাটাচমেন্ট হিসেবে দিয়ে দিবেন।

এবার মেইল দিয়ে তিন চারদিন অপেক্ষা করুন। ওদের ওখানে রবিবার ছুটির দিন, তাই মাঝখানে রবিবার বা অন্য কোন ছুটির দিন পড়লে সময় একটু বেশি লাগতে পারে। এরপরও যদি কোন উত্তর না পান, তাহলে আরো একবার একই বিষয়ে মেইল করুন। ইনভাইটেশন পেয়ে যাবেন আশা করি।

ইনভাইটেশন লেটার পাওয়ার পর আরো কিছু প্রয়োজনীয় কাজ সেরে রাখুন, যেমন চাকুরিজীবি হলে অফিশিয়াল নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট, ডলার এনডোর্সমেন্ট সার্টিফিকেট বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং ছবি প্রস্তুত করা।

যদি ডলার এনডোর্সমেন্ট সার্টিফিকেট হয়, তাহলে ব্যাংক থেকেই লাগবে, মানি এক্সচেঞ্জারের সার্টিফিকেট গৃহীত হবে না। সাধারণত পাসপোর্ট প্রতি ১৫০ ডলার এনডোর্স করাতে হয়, তবে মেডিকেল ভিসার জন্য এর চেয়ে বেশি হওয়াটাই ভালো। ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ক্ষেত্রেও একই অনুপাতে স্থিতি থাকা প্রয়োজন।

এক কপি ২ ইঞ্চি বাই দুই ইঞ্চি সাইজের ফটো আবেদনপত্রের সাথে যুক্ত করতে হয়। ছবি হতে হবে সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের এবং ফ্রন্ট ফেসিং। হিজাব করা মেয়েদের ক্ষেত্রেও কানসহ মুখ পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হতে হবে। ছবির ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক ছবি হওয়াটাই ভালো। আবেদনপত্র পূরণের ক্ষেত্রে একই ছবি দিতে হবে এবং তার মাপ হবে ৩৫০ পিক্সেল বাই ৩৫০ পিক্সেল এবং ১০০ কিলোবাইটের নিচে।

এখানে তিনটা নোটস রয়েছে-
এক: রোগীর সর্বশেষ প্রেসক্রিপশনের উপরে ডাক্তারের অ্যাডভাইস লেখা থাকতে হবে। মানে “অ্যাডভাইসড টু গো অ্যাব্রোড ফর বেটার ট্রিটমেন্ট” বা এই ধরণের বিষয়ে মেডিকেল ল্যাঙ্গুয়েজ যেটা হয়, সে রকম কিছু একটা। তো আমাদের ডাক্তার মহাশয়রা কোনদিনই এ রকম লিখে দেবেন না। জগতে তাদের চেয়ে ভালো ডাক্তার থাকতে পারে- এই অসম্ভব অনন্ত জলিলও সম্ভব করতে পারে না! তাই কিভাবে আপনি এটা ম্যানেজ করবেন, তা আপনার বিষয়, কিন্তু এটা থাকতেই হবে। আমার যতবার প্রয়োজন হয়েছে, আমি নিজেই লিখে নিয়েছি ওই ডাক্তারের হাতের লেখার মত করে।

দুই: রোগীর অ্যাটেনডেন্ট অবশ্যই নিকট আত্মীয় হতে হবে। যেমন স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন, মা-বাবা, ইত্যাদি। তারপরও কথা থেকে যায়, যেমন আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড/পাসপোর্টে বাবার নাম লেখা আছে মোঃ আসির উদ্দিন কিন্তু অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে আপনার ভাইয়ের ন্যাশনাল আইডি কার্ড/পাসপোর্টে বাবার নাম লেখা আছে শেখ আছিরুদ্দিন, সে ক্ষেত্রে ঝামেলা হবে। অথবা আপনার বাবা/মায়ের ন্যাশনাল আইডি কার্ড/পাসপোর্টে তাঁদের নাম যেভাবে আছে, আপনি অ্যাটেনডেন্ট হলে আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড/পাসপোর্টে মা/বাবার নাম ওভাবেই থাকতে হবে। মোটকথা, সম্পর্কের প্রমাণটা নিরেট হতে হবে।

তিন: ইনভাইটেশন চাওয়ার সময়ে ইন্ডিয়ায় যাওয়ার সম্ভাব্য তারিখ চৌদ্দ পনেরদিন পরে দিন। তাতে করে প্রথমবার কোন কারণে রিফিউজ হলেও দ্বিতীয়বার একই ইনভাইটেশন লেটার কাজে লাগাতে পারবেন। ভিসা পাওয়ার পর আপনাকে ওই তারিখেই যেতে হবে বা যে হাসপাতালের পক্ষ থেকে ইনভাইটেশন লেটার সাবমিট করবেন, সে হাসপাতালেই আপনাকে যেতে হবে, এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।

আবেদনপত্র পূরণ
এবার আপনি ইন্টারনেট সংযোগওয়ালা একটা কম্পিউটারের সামনে বসে যান।ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য আবেদনের সাইট এটা। ভিসা আবেদনপত্রটা একটু লম্বা প্লাস এই সাইটে প্রচুর ভিজিটরের কারণে আপনার ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথ যদি কম হয়, তাহলে ফর্ম পূরণে সমস্যা হতে পারে, সেদিকটা খেয়াল রাখবেন। সাইটে ঢোকার পর নিচের ধারাবাহিকতা অনুসরণ করতে হবে।









দেখা গেছে আবেদনপত্র ঠিকমত পূরন না হওয়ার কারণেই অধিকাংশ রিজেক্টেড হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিটা সিঙ্গেল ডিটেইল খুবই যত্নের সাথে সঠিক তথ্য দিয়ে পুরণ করতে হবে। মৌলিক যে তথ্যগুলো যেমন, নিজের নাম, পিতা-মাতা ও স্পাউসের নাম, পাসপোর্টের ডিটেইল সবকিছু একদম পাসপোর্ট ও ন্যাশনাল আইডি কার্ড অনুযায়ী হতে হবে।

রোগীর ভিসা টাইপ হবে মেডিকেল ভিসা এবং পারপাস হবে ট্রিটমেন্ট অব সেলফ আর অ্যাটেনডেন্ট এর ভিসা হবে মেডিকেল অ্যাটেনডেন্ট আর পারপারস হবে অ্যাকমপেইনিং পেশেন্ট।

পাসপোর্ট প্রদানকারী অথরিটি ডিআইপি ঢাকা এবং প্রদানের স্থান সবসময় ঢাকা হবে, সে আপনি পঞ্চগড় বা সাতক্ষিরা, যেখানে থেকেই গ্রহণ করেন না কেন।

বর্তমান ঠিকানার যায়গায় আপনার ইউটিলিটি বিলে যেভাবে আছে ওভাবেই দিতে হবে। ধরুন, আপনার বর্তমান ঠিকানা আপনি লিখলেন- বাসা নং ২৫ (২য় তলা), রোড নং- ২৩, ব্লক জি, দক্ষিণ বনশ্রী, ঢাকা। কিন্তু আপনার ইউটিলিটি বিলে (বিদ্যুৎ, টেলিফোন, গ্যাসবিল) লেখা রয়েছে- সখিনা ভিলা, ২৫ দক্ষিণ বনশ্রী, রোড নং- ২৩, ব্লক জি, খিলগাঁও, ঢাকা, তাহলে আপনাকেও এভাবেই লিখতে হবে।

ফ্যামিলি ডিটেইল অংশে একটা কলাম আছে ‘প্রিভিয়াস ন্যাশনালিটি’, এখানে বাংলাদেশ লিখতেই হবে।

পোর্ট অব অ্যারাইভাল: এ ক্ষেত্রে আপনি যেটাই পছন্দ করেন না কেন, বেনাপোল/হরিদাসপুর, দর্শনা/গেদে এবং এয়ারপোর্ট অতিরিক্ত হিসেবে পাবেন। নাম্বার অব এন্ট্রি মাল্টিপল চাইলেও দেয় সাধারণত ট্রিপল এন্ট্রি এবং পিরিয়ড অব ভিসা ১২ মাস চাইলেও সাধারণত ৬ মাসের বেশি দেয় না।

মেডিকেল ডিটেইল এর ক্ষেত্রে রেফারেন্স হিসেবে যে ডাক্তার এর অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নিয়েছেন, তাঁর নাম ও ডিটেইল দিতে হবে, ইনভাইটেশন লেটারেই সেগুলো পাবেন আর দেশের ডাক্তারের রেফারেন্স হিসেবে সর্বশেষ ডাক্তারের ডিটেইল দিয়ে দিবেন।

প্রফেশনাল/অকুপেশন ডিটেইলের ক্ষেত্রে পেশেন্ট বা অ্যাটেনডেন্ট যদি অচাকুরিজীবি হন, সেক্ষেত্রে অপরজনের জব ডিটেইল দিতে হবে।

ইন্ডিয়ান রেফারেন্সের যায়গায় আপনার অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নেওয়া ডাক্তারের ডিটেইল এবং দেশের রেফারেন্সের ক্ষেত্রে যে কাউকে দিতে পারেন, ডাক্তারকে দিতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। সবশেষে ‘প্লেস অব স্টে/হোটেল’ অপশনে বিনা দ্বিধায় ইনভাইটেশন আনা হাসপাতালের নম্বর দিয়ে দেবেন, যদি কোন হোটেল বা লজ ঠিক না করে থাকেন।

কোন এক যায়গায় একটা অপশন আসে- ভিজিটেড সার্ক কাউন্ট্রি একসেপ্ট ওন কাউন্ট্রি.. এখানে ভারত বাদে অন্য কোন দেশে গেলে সেটার উল্লেখ করতে হবে।

এরপর ফটো আপলোড করলে আবেদনপত্র পূরণ হয়ে গেল। এরপর আপনাকে একবার চেক করার জন্য প্রিভিউ দেখাবে। ওই সময় আপনি একটা প্রিন্ট নিয়ে চেক করতে পারেন। ভূলভাল থাকলে এডিট অপশনে গিয়ে ঠিক করে আসতে পারবেন। তারপর সব ঠিকঠাক থাকলে কনফার্ম করে সাবমিশন নিয়ে দেন। সাবমিশন দিলেই ওটা সাবমিট হয়ে গেল, একই সাথে আপনার কম্পিউটারে একটা পিডিএফ ফাইল সেইভ হয়ে যাবে, যেটা আপনাকে প্রিন্ট নিতে হবে।

একবার আপনি সাবমিশন দিয়ে ফেললে আর এডিট করা যাবে না। ভূল থাকলে আবার নতুন করে করতে হবে। তবে একটা সুবিধা হলো, একই কম্পিউটার থেকে পূরণ করতে গেলে পুরোনো তথ্য অটো আসে, নতুন করে লেখা লাগে না।

আবেদনপত্র জমা প্রদান
ঢাকার বাইরের সব সেন্টার এবং ঢাকায় যমুনা ফিউচার পার্কে নতুন হওয়া ভিসা সেন্টারে মেডিকেল ভিসার আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়। ভিসার আবেদনপত্র জমা দিতে এখন কোনো সিরিয়াল লাগে না। সাধারণ দিনে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়। জমা দেওয়ার আগে আপনাকে ২ ইঞ্চি বাই ২ ইঞ্চি সাইজের এক কপি ছবি (যে ছবিটা আপনি আবেদনপত্র পূরণের সময় আপলোড করেছিলেন, ওটা হওয়ায় শ্রেয়) নির্দিষ্ট স্থানে আঠা দিয়ে লাগিয়ে (স্ট্যাপল করা যাবে না) নিচে স্বাক্ষর করে রাখুন।

এরপর ইউক্যাশের মাধ্যমে আবেদনপত্র প্রতি ৮০০ (বাইরের ইউক্যাশ আউটলেটগুলো ৯০০ টাকা নেয়) টাকা প্রদান করতে হবে। আবেদনপত্রে থাকা বারকোড রিডিং মেশিন লাগে এই টাকা পাঠাতে, তাই সব ইউক্যাশ আউটলেট এটা করতে পারে না। আপনি আবেদনপত্র জমা দেয়ার দিন সকালে ভিসা সেন্টারে আসুন, এর আশেপাশেই এ ধরণের আউটলেট পেয়ে যাবেন। ওরা সার্ভিস চার্জ হিসেবে ৫০ টাকা করে বেশি নেবে। ইউক্যাশ করার সময়ে আবেদনপত্র এবং পাসপোর্ট দুটোই সঙ্গে রাখুন।

আবেদনপত্রের জমাদানের সময় যে সব কাগজপত্র লাগবে-
ছবিসহ পূরণকৃত আবেদনপত্র
জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি
ব্যাংক স্টেটমেন্ট অথবা ডলার এনডোর্সমেন্ট সার্টিফিকেট এর মূল কপি
চাকুরিজীবি হলে অফিসের পক্ষ থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট এর মূল কপি
অফিশিয়াল পরিচয়পত্রের ফটোকপি
পাসপোর্টের ইনফরমেশন পেইজ এবং সর্বশেষ ইন্ডিয়ান ভিসার পেইজের ফটোকপি
ইন্ডিয়ান ডাক্তারের ইনভাইটেশন লেটার। এটা আসবেই মেইলে, তাই অরিজিনাল বা ফটোকপির কিছু নেই, প্রিন্ট করে দিলেই হবে। কালার প্রিন্ট হলে ভালো
স্থানীয় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনগুলোর ফটোকপি, যার সর্বশেষটাতে আগে উল্লেখিত কথাটা লেখা থাকবে


এগুলো রোগির আবেদনপত্রের সাথে দিতে হবে। অ্যাটেনডেন্টের ক্ষেত্রেও এগুলোই লাগবে, শুধুমাত্র স্থানীয় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন লাগবে না, তার বদলে রোগির পার্সপোর্টের ইনফর্মেশন পেইজের ফটোকপি দিতে হবে। যে কোন অ্যাটেন্ডেন্ট রোগির বা রোগি নিজে অ্যাটেনডেন্ট এর আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন।

যে সব কাগজপত্রের ফটোকপি সংযুক্ত করবেন, সেগুলোর মূলকপিও সাথে রাখতে হবে। মেডিকেল ভিসার আবেদনপত্র জমা নেওয়ার আগে আবেদনপত্র এবং তাবৎ কাগজপত্র পরিক্ষা করা হয়। পরিক্ষা করে যদি সব ঠিক থাকে, তাহলে আপনার আবেদনপত্রের সাথে মুল কাগজপত্রও জমা নেওয়া হবে, না হলে ওখান থেকেই ফেরত। জমা নিলে সাধারণত রিফিউজড হয় না।

এবার সোজা গিয়ে জমা দিয়ে দিন। জমা হলে ডেলিভারি ডেট দেওয়া একটা টোকেন দেবে, ওইদিন নির্দিষ্ট সময়ে চলে আসলেই হবে। এর মধ্যে আপনার মোবাইলে এ সংক্রান্ত মেসেজ চলে আসবে।


কিছু টিপস
ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টার শুক্র, শনিবারসহ বাংলাদেশ ও ভারতীয় সরকারী ছুটির দিন বন্ধ থাকে
আবেদনপত্র একবার সাবমিট দেওয়ার পর ৫দিন পর্যন্ত ওই আবেদনপত্র জমা দেওয়া যায়। এরপর আবার নতুন করে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে
সংযুক্ত কাগজপত্র স্ট্যাপল করবেন না, হার্ড ক্লিপ বা জেমস ক্লিপ দিয়ে আটকে নিয়ে যাবেন
ভিসা ডেলিভারির দিন তাড়াহুড়া করে আগে ঢুকে বিশেষ কোন লাভ নেই, আস্তে ধীরে গেলেই হবে


এরপরও যে সব কিছু করতে হবে, সেটা আপনি নিজেই বঝতে পারবেন। এবার ভিসা পেলে সোজা চলে যান চিকিৎসা নিতে। আর আসার সময়ে আমার জন্য একটা গিফট নিয়া আইসেন :-B


(বিদ্রোহী ভৃগু ভাইয়ের সৌজন্যে জেনে নিন অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম)

অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের নিচের ‘ভিসা প্রসেসিং ফি পেমেন্ট’ বাটনে ক্লিক করুন। ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফি পেইজ ওপেন হবে। এতে চারটা অপশন রয়েছে- ১. অ্যাপ্লিকেশন ইনফো ২. পার্সোনাল ইনফো ৩. ওভারভিউ এবং ৪. পেমেন্ট। চারটা অপশনই পূরণ করতে হবে।
১. অ্যাপ্লিকেশন ইনফোতে হাইকমিশন ঢাকা, চিটাগাং, রাজশাহী যার যার এলাকা সিলেক্ট করবেন।
২. ‘এন্টার ইউর ওয়েব ফাইল নাম্বার’ এ আপনার প্রিন্ট করা আবেদনের ওয়েব ফাইল নম্বরটি লিখুন।
৩. ওয়েব ফাইল নম্বরটি আবার লিখুন।
৪. যে আই ভি এ সি সেন্টারে আবেদনপত্র জমা দিতে চান তার উল্লেখ করুন।

এরপর পরের রো-তে ভিসা টাইপ এবং আপনার পাসপোর্ট নম্বর লিখুন। ভিসা প্রসেসিং ফির পরিমাণ দেখাবে। তারপর সেইভ এন্ড নেক্সট করে পরের অপশনে চলে যান।

পার্সোনাল ইনফোতে আপনার পূর্ণ নাম ফোন নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য দিন। নেক্সট করুন। ওভার ভিউ পেইজে আপনার তথ্যগুলো সঠিক কিনা যাচাই করার জন্য সব কিছুই আবার দেখাবে। ভাল করে দেখুন। সঠিক হলে নেক্সট চাপুন।

পেমেন্টের অনেকগুলো অপশন হাতের বাম পাশের বক্সে দেখাবে। ভিসা, মাস্টার কার্ড, বিকাশ, শিউরক্যাশসহ অনেক অপশন থেকে আপনার পছন্দেরটি বেছে নিন। এরপর পেমেন্ট করুন। পেমেন্ট কমপ্লিট হলে আপনাকে মোবাইলে কনফার্ম মেসেজ ও মানি রিসিপ্ট কপি দেবে প্রিন্ট করে নেয়ার জন্য।

সার্ভারের ত্রুটিতে প্রথমবারে না এলে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই, চেক পেমেন্ট স্ট্যটাসে আবার আপনার তথ্যগুলো দিলেই মানি রিসিপ্ট এর প্রিন্ট ভার্সন পিডিএফ মুডে দেখাবে। সেখান থেকে প্রিন্ট করে নিন। প্রিন্ট কপি আবেদনের সাথে যুক্ত করে দিন।

আরো সংযোজন: আগস্ট ০৯, ২০১৮
ঢাকার বিভিন্ন স্থানে থাকা ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারগুলোকে বন্ধ করে দিয়ে এখন যমুনা ফিউচার পার্কে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সেন্টার চালু করা হয়েছে। এই সেন্টারটা বিশাল। অনেক গোছানো। ভেতরে মোট আটচল্লিশটা জমা নেওয়ার কাউন্টার আছে। যার মধ্যে দশটি কাউন্টার মেডিকেল ভিসা অ্যাপ্লিকেশন জমা নেওয়ার জন্য। এই সেন্টারটি খুবই গোছানো। দ্রুত সব কাজ হয়ে যায়।

যেহেতু বিশাল পরিসর, ভোরে গিয়ে লাইন দেওয়ার কোনো দরকার নেই। বরং সকালের ভীড় এড়াতে চাইলে এগারোটার দিকে ওখানে পৌঁছাতে পারলে একদম লাইন ছাড়াই ভেতরে ঢুকে যেতে পারবেন। এখানে লাগেজ রাখার কাউন্টার, ফটোকপির ব্যবস্থা, স্নাক্সবার এবং সুন্দর ওয়েটিং স্পেস রয়েছে।


কৃতজ্ঞতা: মোরশেদ আলম
ছবি: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১৮
২২টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×