somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইয়াবা নেশায় ডিজে পার্টি

১২ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গুলশানের এক পার্টি থেকে গত মাসে ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক সেবনরত অবস্থায় ৫০ জন তরুণ-তরুণীকে গ্রেফতার করে মাদক অধিদপ্তর ও র‌্যাব সদস্যরা। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের বহু তরুণ-তরুণী ইদানীং ইয়াবার নেশায় মত্ত। প্রতিদিনই রাজধানীর কোথাও না কোথাও ইয়াবার চালান আটক করছে প্রশাসন। তবু এর বিস্তার কমছে না। ইয়াবার নীল দংশনে রাজধানীর তরুণ-তরুণীরা আজ বিপর্যস্ত। বড়লোকের শখের নেশা ইয়াবা এখন সস্তা যৌন উত্তেজক মাদকে পরিণত হয়েছে।



রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ১৫টি সিন্ডিকেট বিভিন্ন ধরনের মাদক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ইয়াবা আমদানি ও বিক্রি করছে। এদের সাথে ছোট ছোট ৪শ’ বিক্রেতা রাজধানী ঢাকায় চুটিয়ে ব্যবসা করছে। ইয়াবা আমদানি ও বিক্রির সাথে রোহিঙ্গারাও জড়িত। আমদানিকারকরা বিভিন্ন পেশাজীবী ও সংস্থার লেবেল আঁটা গাড়িতে করে বিভিন্ন পয়েন্টে ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে। ধরা পড়লে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে পুনরায় এ ব্যবসায় লিপ্ত হচ্ছে।




এ ব্যবসা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও লাভজনক হওয়ায় সিন্ডিকেট এ ব্যবসাকেই ধরে রেখেছে। রাজধানীর অভিজাত হোটেল এবং ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী ও উত্তরায় গড়ে উঠেছে নাইট ক্লাব বা ডিজে পার্টি। এসব বার ও ডিজে পার্টিতে ইয়াবা বিক্রি হয় দেদারছে। উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা এই ইয়াবা সেবন করে। ইয়াবার একমাত্র আমাদানিকারক ছিল জনৈক জুয়েল। অন্যতম ডিলার কক্সবাজার-টেকনাফের ফোরকান।



উত্তরার নুরুল, সাঈদ, পুরান ঢাকায় পরাগ। ৯০ দশকে বাংলাদেশে ইয়াবা প্রথম আসে। তখন ধণাঢ্য কিছু মানুষের শখের নেশা ছিল ইয়াবা। তখন কিছু ল্যাগেজ পার্টি শখের এই নেশা বাংলাদেশে আনত। দামও ছিল চড়া। প্রতি পিস ৫০০ টাকা। ১৯৯৭ সালে বিমানবালা ও বিতর্কিত এক এমপি ইয়াবা আমদানি করে। ২০০০ সালে জুয়েল নামে এক ব্যক্তি ইয়াবাসহ বিমানবন্দরে ধরা পড়ে। এরপর থেকে তার নাম হয় ইয়াবা জুয়েল।



ইয়াবা আমদানিকারক জুয়েল কয়েক দফা গ্রেফতার ও জামিনে মুক্তি পেয়েছে। ২০০৭-০৮ সালের দিকে বাংলাদেশে ইয়াবার ব্যাপক প্রচালন শুরু হয়। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ইয়াবা সেবন করে বিকৃত যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে ক্যামেরায় চিত্র ধারণ ও ওয়েব সাইটে প্রচার করে। তখন এসবের বিরুদ্ধে র‌্যাব পুলিশের ব্যাপক অভিযান শুরু হয়। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর খুনি শাহরিয়ার রশিদের মেয়ে শেহনাজ ও তার তিন বয়ফ্রেন্ডকে ইয়াবাসহ আটক করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।



এ ধরনের অপরাধীরা আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে পুনরায় অপকর্মে লিপ্ত হয়। এভাবে এই ভয়ঙ্কর নেশা ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ইয়াবা এখন দেশের তরুণ-তরুণীর জন্য ভয়াল থাবা হিসেবে বিস্তার করছে। মরণ এ নেশার ছোবলে দংশিত হচ্ছে দেশের লাখ লাখ মানুষ। দেশে বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত। এর মধ্যে ২০ লাখই ইয়াবা আসক্ত। ‘মাদককে না বলুন’ সেগানকে পাশ কাটিয়ে আমদানিকারকরা মাদক আমাদানি ও বিক্রি অব্যাহত রেখেছে।



র‌্যাব-পুলিশের হাতে রাজধানীতে প্রতিদিন অনন্ত ৫০ জন সেবনকারী ও বিক্রেতা ধরা পড়ছে। বর্তমানে ইয়াবার ব্যাপক প্রচারণা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনির উদ্দিন আহমেদ ভয়ঙ্কর এ নেশার কুফল বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ইয়াবা সেবনে কিডনি ও ফুসফুসের ক্ষতি হয়। রক্তচাপ বেড়ে স্ট্রোক হতে পারে।



ইয়াবা অন্যান্য মাদকের মতো হ্যালুসিনেশন বা বিভ্রম সৃষ্টি করে। সেবনকারীরা প্যারানুইয়া বা ভ্রমগ্রস্ত হয়ে ইউফোরিয়া বা আনন্দদায়ক অনুভুতিতে ডুবে যায়। কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে পরবর্তীতে চরম উত্তেজনা, দেহের অপবৃদ্ধি, খিটমিটে মেজাজ, অনিন্দ্রা, হাত, পা কাঁপা ও চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা হয়ে থাকে।
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×