শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
গৌর গোপাল বিলেত থেকে
আনলো বিয়ে করে
সারা দিনমান প্লেনে ছিল
পৌঁছালো খুব ভোরে।
লম্বা, ফর্সা খুবই সুন্দর
পরীর মতন বধু
শুদ্ধ ভাষায় বাংলা বলে
যেন মুখে মধু।
বিদেশ থাকলেও বাপ দাদারা
এই দেশেরই লোক
হিন্দু ঘরে জন্ম নেয়ায়
নাই রে অভিযোগ।
গোপালের মা বউকে দেখে
বেজায় রকম খুশি
বধু বরণে পাড়ার লোককে
করছে তোষাতুষি।
খুশির চোটে করল ঘরে
পুজার আয়োজন
শ্বাশুড়ির সাথে নতুন বউটি
কাজে দিয়েছে মন।
চলছে পুজো ঠাকুর মশাই
ব্যস্ত মন্ত্র পাঠে
শ্বাশুড়ি হঠাৎ জল আনতে
গেলেন পুকুর ঘাটে।
যাওয়ার সময় বলল ডেকে,
আশির্বাদটা নিবে
পুজোর মাঝে ঠাকুর বললে
উলুর ধ্বনি দিবে।
একটু পরেই বলছে ঠাকুর,
"সময় নাই তো আর
উলুর ধ্বনি দাও গো মা"
বলতেছে বার বার।
উলুর ধ্বনি দিতে বলায়
বউটি গেল ঘরে
এদিক-ওদিক খাটের তলে
খুঁজেই শুধু মরে।
শ্বাশুড়ি এসে বউ পায় না
বউ যে খাটের তল
কি যেন সে খুঁজছে শুধু
দুই চোখেতে জল।
বলল ডেকে, পুজো ছেড়ে
করছো তুমি কি?
লগ্ন যে মা পার হয়ে যায়
দাও না উলুর ধ্বনি।
বধু তখন কাঁদতে কাঁদতে
বলল চক্ষু বুঁজে,
উলুর ধ্বনি কোথা রেখেছেন
পাচ্ছি নাতো খুঁজে?
কথা শুনে শ্বাশুড়ি যেন
আকাশ থেকে পড়ল
নিজেই তখন উ-লু-লু
উলুর ধ্বনি ধরল।
হিন্দু বাড়ির উলুর ধ্বনি
হারিয়ে যেন যাচ্ছে
বিলেত ফেরত বধুর কান্ডে
বুড়োরা লজ্জা পাচ্ছে।
ছবিঃ গোগুল
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:৪৭