-তুমি আমাকে এত ভয় পাও কেন......
-কই ভয় পাই......!!!(কাপা কাপা গলায়)
-তাহলে এই যে আমার হাত ধরার পর কাপতেছো.....!!!!
-কই.....নাতো!.।আমি ঠিকই আছি.......
-নীল......?
-না মানে...!.একটু একটু.........
-কেন......!!?
-কালকে একটা ছেলেকে সাইজ করলা তো.......ওইটাই মনে পড়ে গেছে।
আমার কথায় মেয়েটা মুহুতেই হো হো করে হেসে ফেল্ল।আমি করুন মুখে তাকিয়ে থাকলাম
-ও আচ্ছা,এই তোমার ভয়ের কারন......আচ্ছা,ওর সাথে এমন করছি বলে কি তোমার সাথে করবো......!!!!!!আজপ।
-না.......তারপরো......
-আরে বাবা,তুমি তো আমার জান্টুস টা।তোমার সাথে এমন করতে পারি..(আদুরে গলায়)
আমি অবাক।এইমেয়ের যে কত ধরনের রং বদল করতে পারে.....
মেয়েটাকে একদিন রাস্তায় দেখেছিলাম।রাস্তায় বলতে বাসের জন্য ওয়েট করছিল।আর একটু পর পর মোবাইল চেক করছিল।মনে হয়েছিল কারো জন্য ওয়েট করছে।আমি আবার ভালো ছেলে,মেয়েদের দিকে তাকাই না।কিন্তু এই মেয়ের দিকে না তাকিয়েও পারলাম না।কিন্তু....!
এমন মায়াবী চেহারার মেয়ে যে এমন হতে পারে ভাবতেই পারিনি।কয়েকটা ছেলে মেয়েটার পাশে এসে দাড়ায় এবং টিজ করা শুরু করে।মেয়েটা কয়েকবার কড়া চোখে ছেলেগুলোর দিকে তাকায়।কিন্তু টিজ করতে থাকায় মেয়েটা তাদের দিকে যায়....
-সমস্যা কি.....!!!!?
-কোনো সমস্যা নাই..(ছেলেগুলো)
-তাহলে বাজে কথা কেন বলছেন.....
-ভাল লাগছে তা..........
ঠাশ...... !!!!!!!!
ও মাই গড......চরমভাবে ছেলের গালে এক চড়।ছেলে নিজেও ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না।
ঘটনা দেখে আমি নিজেরে বলতে থাকি,"মামা,১০০ হাত দুরে থাক"
সেদিনের পর ভেবেছিলাম মেয়ের সাথে হয়তো আর দেখা হবে না।কিন্তু ভাগ্যক্রমে আবার দেখা হয়ে গেল।আমাদের ভাসিটি ক্যাম্পাসেই এসেছিল।আমি তো আগে থেকেই চিনি।তাই আগেই পালিয়ে থাকতে চাইলাম।কিন্তু মেয়েটা আমাকেই ডাক দিল....আল্লাহ বাচাও
-এক্সকিউজ মি......
আহ!!!এমন মধুর কন্ঠের মেয়ে এইরকম কেন!!!!!ছেলেধোলাই করে
-জি বলেন...
-বায়োলজি ডিপারমেন্ট টা কোথায় বলতে পারেন....
-পিছনের ভবনের ৩২১ নং রুম।
-কাইন্ডলি আমাকে যদি একটু দেখিয়ে দিতেন
পড়লাম মুসিবতে।কেমন যে লাগে।
আমার সাথে সাথে হাটতেছে।কেমন মনমাতানো পারফিউমের সুগন্ধ আসছে।ইচ্ছা করতাছে..!.....থাক...নেগেটিভ নিয়েন না।
-মেনি মেনি থ্যাংক্স.....
-এনিটাইম।
-আপনার নামটা কি.....
-নীল.!
-আমি লামিয়া.....এই ভাসিটিতেই তো পড়েন.!.....?
-জি.....
-আমাকে এত সম্মান দিয়ে জি বলতে হবে না।আমি আপনার থেকে ছোট।আমাদের কলেজে একবার আসবেন।এই যে ঠিকানা....
THE MARTIAL AND ARTS SCHOOL.....লও ঠ্যালা,মাইয়া দেহি কুংফু মাস্টার।
কোতুহল সামলাতে না পেরে কয়দিন পরই গেলাম মেয়ের ঠিকানায়।আমার ধারনাই সত্যি
হু.....হা..!..হু..!....হা......
ট্রেনিং চলতেছে।লামিয়াকে দেখলাম ট্রেইন করাচ্ছে।আমি ভুল বশত ওদের লাইনে ঢুকে যাওয়ায় একটা ঘুষি এসে পড়লো আমার চেহারায়...!.আম্মু..... !!!!! আমি শেষ!!!!!!
-একি....আপনি এখানে.....
-হুম।আসতে আসতেই এই অবস্থা।
-আসুন......
ওর সাথে ভিতরে গেলাম।বরফ দিলাম।এখন একটু ভাল লাগতাছে।
-তা বলুন....কেমন আছেন....?
-ভালই তো ছিলাম বাট পেরেশান হয়ে গেল এখন।
-ওটার জন্য সরি।চা খাবেন......?
-হু..!....খাওয়া যায়।
সেদিন তেমন আর কথা হলো না।মেয়েটা মনে হয় বেশি কথা পচ্ছন্দ করে না।আর তাছাড়া আমার কি!!!!!!!আমি কি প্রেম করুম নাকি এই মেয়ের সাথে!!!!!!!!ভুলেও না।
ভাসিটির এক ফ্রেন্ড আমার কাছে আসে।তারে ভাগাইয়া দিতে হবে।মানে সে মেয়ে নিয়ে পালিয়ে যাবে।মেয়ের বাসায় বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।আমি আবার এইসব ব্যাপারে খুবই অভিজ্ঞ।যাই হোক
-মামা,প্যারা থেকে বাচা......
-কত খাওয়াবি......?
-আরে মামা,বিয়েটা হইলে মিষ্টির দোকান তোর নামে লেখে দিব।এখন কিছু একটা কর
-মাইয়া রাজি তো..!....?পরে আবার প্যাদানি খাওয়াইস না......
-কি কস.......?তুই ফারিয়ারে চিনস না......?আমাদের ৫ বছরের রিলেশন.....আর...
-ওকে থাম.....সব ব্যবস্থা করতাছি।
সবাই রে হেল্প করি কিন্তু আমারে কে হেল্প করবো......আমারো অনেক ইচ্ছা ভাইগা বিয়ে করার।
যাই হোক......রাত ১০ টায় বাইকে করে আমি আর আমার ফ্রেন্ড ফারিয়াদের বাসার সামনে গেলাম।আগেই সব সেটিং ছিল তাই ও আগেই চলে এসেছে
-শোন,এখান থেকে সোজা বান্দরবন সোহানের কাছে চলে যাবি।ওইখানে কিছুদিন থেকে কক্সবাজার চলে যাবি হানিমুন করতে।হোটেল বুকিং দেওয়া আছে।ততদিনে আমি তোদের দুই বাসায় ম্যানেজ করি।
-মামা..!তোরে যে কেমনে......
-হইছে......লেকচার বাদ দে......খাওয়ানের কথা ভুলিস না।
ও একটু হাসল।তারপর চলে গেল।আমিও বাসায় এসে পড়লাম।
পরের দিন ক্যাম্পাসে ঘটলো আসল ঘটনা।আমি বন্ধুদের বলতাছি কিভাবে কি করলাম।হঠাৎ দেখলাম লামিয়া খুব রেগে আমার কাছে আসতেছে।এসেই আমার গালে ঠাশ করে এক চড়।ও বাবারে......মাইয়া কি খায়.!....এত শক্তি আসলো কেমনে......
-তোমার সাহস তো কম না,তুমি আমার কাজিন কে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করছো.....
-দেখেন.....ওরা একজন আরেকজন কে খুব ভালবাসে।একটা ভুলের জন্য ওদের এই সম্পক আমি নষ্ট করতে চাই নি
বলেই চলে আসলাম। কে জানে......থাকলে হয়তো কুংফু শুরু করে দিত।
মেয়েটার ওপর খুব রাগ হল।আসলেই সুন্দরি মেয়েগুলি যে নিজেরে কি ভাবে কে জানে।ওদের দুই পরিবার কেও ম্যানেজ করে ফেল্লাম।হাহ!!!!!!!!আমাকে ফোন দিয়ে সেই কি থ্যাংক্স!!!!!!!থাক,ওরা ভাল আছে,ভাল থাকুক এটাই চাই।
-নীল...!...?
ভাসিটি আসলাম অনেকদিন পর।ক্যাম্পাসের এক কোনায় বসে আছি।কই থেকে এই কুংফু মাস্টার আসলো.....
-হ্যা বলো....?
-কেমন আছো.....?
-ভাল......
-অনেক ভাল....!!!!
-হু..!......কেন....কি হইছে.....?
-সেদিনের ব্যবহারের জন্য সরি......
-না....ঠিকি আছে।কুংফু পারো,ছেলেধোলাই করতে পারো।সরি বলার দরকার কি......
লামিয়ার চেহারা মুহুতেই কাদো কাদো হয়ে গেল।খুব মায়াবী লাগছে মেয়েটাকে
-জানো...!সবাই কি কারনে যেন আমায় খারাপ ভাবে।আমি ভাবছিলাম এটলিস্ট তুমি আমাকে ভুল বুঝবা না......
-আমি ভুল বুঝি নাই।
-একটা কথা বলি.....?
-বল.!.....
-না....বলতে পারবো না।তোমাকেই বুঝে নিতে হবে।আমি গেলাম
মানে কি!!!!!!!ও কি আমাকে ভালবাসে!!!!!!!আমি কি প্রপোজ করুম।
(আর লেখতে মন চাইলো না।বাকিটা ইতিহাস)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৩৮