লাইফ মানেই একটা চ্যালেঞ্জ।আর চ্যালেঞ্জ মানেই প্রতিযোগিতা।এই চ্যালেঞ্জে অনেক কিছু জানা থাকা লাগে।যারা জিতে,তারাই কেবল লাইফের আনন্দ উপভোগ করে।আর যারা পারে না,হাহ!!!!!তারাই বুঝে লাইফ কেমন প্যারা শুধু তারাই জানে.........
সো.....আজকে আমার লাইফের ফাইনাল মিশন।"সুইসাইড"।যদিও অনেক আগেই করতাম।বাট প্রাইমারি মিশনের পাশাপাশি কিছু সাইড মিশন থাকে।যা ক্লিয়ার না করলে মেইন মিশনের কোনো ভ্যালু থাকে না।
তাই বসে আছি।মিশন কম্পলিট করার আশায়।রেললাইনের উপর।কিন্তু সালার ট্রেনও আজকে ফাইজলামি করতাছে।অবশ্য টেনশন নাই।
মারাই যেহেতু যাইতাছি,একটা বিড়ি খাইয়া নেই।জিনিসটা যদিও খারাপ কিন্তু আমার খারাপ সময়ের সাথী।সিগারেট টা ধরাইয়া টান দিয়া যেই ধুয়া বের করতে যাবো,ঠিক তখন দুর থেকে এক মেয়ের অবয়ব দেখলাম।হ্যা.....অনেক পরিচিত লাগছে.....
আস্তে আস্তে মেয়েটা আমার পাশে এসে বসল।সেইম ভাব ভংগি।
-কি ব্যাপার.....!!!!!!খুব টেনশন ফ্রি ছিলে মনে হয়.....!!!?
-তুই এইখানে কেন......
-কোথায় থাকার কথা ছিল.....!!!!?
-তোর না আজকে বিয়ে......
-পালিয়ে আসছি......
-আজপ.....তোরে এত বুঝাইলাম.....তারপরো সেইম কাজটাই করলি.....!!!?
-আমার লাইফ....আমার ডিসিশন......হু দা হেল আর উ......?
আমি চুপ করে গেলাম।এখন বেশি কথা না বলাই ভাল।বাট ওরে তো এই জায়গায় রাখাও চলবে না......
-কি চাস তুই.....!!!
-তুমি জানো আমি কি চাই......
-থাপ্পর মারুম কানের নিচে......
-সব সময়ই তো মারলা.....(মাথা নিচু করে)
উফ!!!!!ওরে নিয়া কি যে করি...........
.
.
মেয়েটার নাম লামিয়া.....সেই স্কুল লাইফ থেকেই আমার পিছনে লাগছে।ছোটকাল থেকেই মেয়েটা যে এত কিউট বলার বাহিরে....আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে ঠিকি প্রেম করা শুরু করতো.....কিন্তু আমার কেন জানি এইসব ভাল লাগে না।টাইম নষ্ট মনে হয়।মনে হয়,যতক্ষন ওর সাথে কথা,ঘুরাফিরা বা অন্য যাই করব.....ততক্ষন যদি টাকা ইনকাম করি তাও মেবি ভাল হয়।কারন টাকাই কথা বলে......
যাই হোক,ইন্টার ১ম ইয়ারে উঠেই আমাকে প্রপোজ করে।হাহ!!!!!সেই দিনই ওরে কানের নিচে একটা মারি।কতক্ষন অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে ফোপাতে থাকে।তারপর থেকে আর পড়াতাম না।আমাদের বাসায় আগে প্রত্যেকদিন আসলেও তারপর আসাটা কমিয়ে দেয়।
আর আমি........ছোটকাল থেকেই একা একাই পথ চলা শুরু করছি।তাই বলে ভাবা উচিত নয় যে আমার কেউ নাই।I have everything/everybody.বাট তারা শুধু নাম মাত্রই।কোনো এক অজানা কারনে আমাকে কেউই পচ্ছন্দ করতো না।সবাই যে আদর টা পেত আমি সেটা পেতাম না।
তাই নিজেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম।একাই ঘুরতে বের হতাম।নিজের সাথে নিজেই ফ্রেনশিপ,কথা শেয়ার আরো অনেক কিছু।যখন বড় হলাম তখন থেকেই শুরু টাকা ইনকাম করার চ্যালেঞ্জ।
ইন্টারে উঠামাত্রই ফ্যামিলি থেকে তাগাদা আসে নিজের খরচ নিজেই চালানোর জন্য।পাশাপাশি ফ্যামিলিকেও সাহায্য করা।তখনি ভেতর থেকে এই ফ্যামিলির প্রত্যেকটা মানুষের প্রতি খুব ক্ষোভ জমা হতে থাকে।টাকাই কি সব!!!!!!!তাহলে টাকা ইনকাম করার চ্যালেঞ্জ নিব।
তবে একটা প্রশ্ন রয়ে যায়।শুধুমাত্র টাকার জন্যই কি সন্তান জন্ম দেয় পিতা মাতা?ভবিষ্যত জীবনের একাঊন্ট....?যা আজীবন ফ্রি সাভিস দিবে?বা....মা বাবা যা চান তাই একটা ছেলে বা মেয়েকে হতে হবে?তার মানসিক দিকটাও তো দেখতে হবে।
আমার মতে,এমন চিন্তা ভাবনা থাকলে সন্তান জন্ম না দেওয়াই ভালো।কারন যেসব সন্তানদের মনে একবার ক্ষোভ জমে যায়,তা আজীবনও যায় না।
তাই পড়ালেখার পাশাপাশি পাট টাইম জবও নেই।বাসাত একদমই ভাল লাগে না।তাই বেশিরভাগ সময় বাইরেই থাকতাম।
তবে একটা কথা ঠিক যে,খারাপের পরেই ভালো।তখনি হয়তো এই মেয়েটা আসল আমার জীবনে।লামিয়া......সেই লামিয়া....যাকে থাপ্পর মারার পরও আমার পিছ ছাড়েনি।
লামিয়াকে থাপ্পর মারার বেশ কয়েক মাস পরে একদিন দেখা হয়।আমি হয়তো ভাবসিলাম আমাকে দেখে না দেখার ভান করে চলে যাবে।কিন্তু কিসের কি.....
-নিল ভাইয়া.....?
-হা বল.....
-কেমন আছেন....
-ভালো....তুই......?
-হাহ!!!!!!আছি......আপনি কি রাগ করে আছেন আমার উপর.....?
-নাহ!!!!!!আমি কেন রাগ করবো.....!!!!?
-তাহলে যে আর দেখা করলেন না.....!!!!
-একটু বিজি ছিলাম আর কি.......
-আমার সাথে যাবেন.....!!!!?
-কই.....!!!!
-কফিশপে.....
-আরেকদিন....আমার একটু কাজ আছে
বলেই ওর উত্তরের অপেক্ষা না করেই চলে আসলাম।আমি আসলে চাইছিলাম আমার এই ইগনোর যেন ওর উপর প্রভাব ফেলে।যাতে করে অন্তত আমার পিছু ছাড়ে।কিন্তু কিসের কি!!!!!!!রাতেই ফোন....
-ভাইয়া....আপনি এমন করেন কেন আমার সাথে.....?
-আমি সবার সাথেই এমন করি....
-আপনার মদ্ধ্যে কোন রস কষ নাই জানেন সেটা....
-হুম....খুব ভাল করেই জানি.....
-তবে আমার কি মনে হয় জানেন....!?
-কি.?
-Every problem has a reason.....
-maybe....
-n every problem has also a solution.....
-তো.....?
-তো.....আপনার রিজন টা কি জানতে চাই.....
-অনেক বড় হয়ে গেছিস....বুঝছোস....
-হু.....বড় তো সবাই হয়... আমি হব না কেন.....!!!!
-ফোন রাখ....ঘুমে ধরছে......
-ভাইয়া.....আরেকটা কথা বলি......?
-বল.....
-(একটু থেমে) আমি কিন্তু আপনাকে অনেক ভালবাসি......
-ভালবাসা ধুইয়া পানি খাইছ..
-আমি অপেক্ষা করবো......
আবেগের বশে এখন অনেক কিছুই ভাল লাগবে।কিন্তু যখন অভাব টা বুঝবে বা লাইফের রিয়েলিটি টা বুঝবে....তখন আর এই ভালবাসা থাকবে না।তখন টাকার সাথে ভালবাসা করবে.....এটাই টাকার নেচার।
.
প্রায় ১ বছর পর.....
ইন্টার কম্পলিট করার পর আর পড়াশোনা ভাল লাগলো না।শিক্ষা ব্যবস্থা এতই খারাপ যে এখন আর কেউ ফেল করে না।সবার ফোকাস A+ এর দিকে।আর চাকরির বাজারের কথা নাই বা বলি।এত প্যারা আর সহ্য হল না।পড়ালেখা এখানেই সমাপ্তি।
নিলাম কম্পানির জব।উঠতে বসতে বসের ঝাড়ি।মাস শেষে কিছু টাকা ইনকাম হয় শত অপমানের পর।তবে এখন গা সয়ে গেছে।আগে প্রচন্ড খারাপ লাগলেও এখন আর কিছুই হয় না।
এভাবে আস্তে আস্তে কোম্পানির ভাল একটা পদে আসলাম।সবাইকে দেখিয়ে দিলাম যে,যাদের দ্বারা কোন আশা করা যায় না।তারাও কিছু করতে পারে।সো এখানেও আমার একটা মিশন কম্পলিট।
এখন আমার অবস্থা ভালোই।ওই যে বল্লাম টাকাই কথা বলে।এখন আমার সবাই আছে।বাট আমি মনে করি আমার কেউ নাই।তাই আমার আগের লাইফ স্টাইলে চলতে থাকি।
.
লামিয়ার সাথে তারপরো দেখা হত,কথা হত।এখন প্রায় প্রায় আমার সাথে ঘুরতেও আসে।আমাকে ভীষন রকম অনুরোধ করে,এটলিষ্ট আমার সংগ যেন ওকে দেই।তাতেই নাকি ও খুশি।
আমার সাথে বিভিন্ন জায়গায় যায়।কথা বলে,বিভিন্ন রকম মজার মজার অনুভুতি শেয়ার করে।আমি শুধু শুনেই যাই।কারন বলার মত কোন ভাল ইভেন্ট আমার সাথে ঘটেনি।যা আছে সব ব্যাড।তাই চাই না আমার এই খারাপ সময়ের ঘটনা শেয়ার করে আরেকজনের আনন্দময় সময়টাকে নষ্ট করতে.....
-ভাইয়া.....
-হু.....
-এখনো কি বলবেন না.....!!!!
-কি বলুম.....
-আপনার রিজন গুলো......!!?
-জেনে কি করবি.....?
-সমাধান করবো.....
-শোন.....এখন যদি তুই সমাধানও করিস তাতে কিছু হবে না।
-তাহলে আমাকে ভালবাসতে সমস্যা কোথায়....
ঠাশ....!!!!!
-আবার......!!!!!!(গালে হাত দিয়ে)
-বলছি না....এক কথা বার বার বলবি না.....
-ভালবাসি,ভালবাসি......অনেক ভালবাসি.....
-তুই বাসতে থাক.....আমি গেলাম।
এভাবেই কেটে যাচ্ছিল আমার জীবন।লাইফের অনেক মিশনই কম্পলিট করা হয়ে গেছে।সো ফাইনাল মিশনের আর বেশি দেরি নাই।তবে আগে এই সাইড মিশন টা শেষ করতে হবে।লামিয়ার বিয়েটা তারাতারি সম্পন্ন করতে হবে।
.
লামিয়ার বাবা হচ্ছে আমাদের অফিসের ম্যানাজারের বন্ধু।কয়েকবার অফিসেও এসেছিল।সেই হিসাবে তার সাথে আমার পরিচয় আছে.....আর বড় কথা লামিয়ার সাথে আমাকেও বেশ কয়েকবার দেখেছে।তাই ভাবলাম ওনারে দিয়েই আমার সাইড মিশন টা শুরু করি.....
-আসসালামু আলাইকুম আংকেল....
-আরে নিল.....আসো আসো......
-ভাল আছেন.....?
-এই তো.....তোমার কি অবস্থা বলো......
-ভাল আংকেল।একটু কথা বলতাম.....
-হ্যা বলো.....
-মানে......একটু পারসোনাল........
-(এবার সিরিয়াস ভাব ধরে) আমি জানি তুমি কি বলবে....
-আপনি জানেন.....!!!?
-তুমি আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাও......?
ওহ!!!!!!!বুঝলাম সে উল্টা বুঝছে.....
-না না....আংকেল.....সেটা না.....
-তবে....!!!!
-মানে হচ্ছে..... আপনি নিশ্চয়ই জানেন আপনার মেয়ে আমাকে পচ্ছন্দ করে।
-কেন তুমি পচ্ছন্দ কর না......?
-করি.....
-তাহলে.....!!!!!
-দেখেন....পচ্ছন্দ অপচ্ছন্দ কোনো বিষয় না।আরথিক অবস্থাটাই মেইন.....আর সেই লেভেলটায় আসতে আসতে অনেক দেরি।তাই আমি চাইতেছি,আপনি লামিয়ার বিয়েটা তারাতারি ঠিক করে ফেলেন......
-এতে তোমার লাভ....
-আমার লাভও নাই ক্ষতিও নাই......
-হুম.....তোমার বিষয়টা বুঝতে পারছি।কিন্তু লামিয়া কি রাজী হবে....!!!!!!
-অইটা আমি দেখবো.....
-আচ্ছা........
-আসি তাহলে.......
যাক.....এবার লামিয়াকে বুঝাতে পারলেই চলে..........
.
-নিল... ? কি ভাবতেছো কতক্ষন ধরে......
ওর কথায় বাস্তবে ফিরে আসলাম।মেয়েটা বিয়ে থেকে পলাইছে......আর কি করতে পারি আমি!!!!!!!
-চল.....
-কই.. ?
-বিয়ে করবো.....
-না.....
-সমস্যা নাই.....বিয়ের পর টাকাপয়সা যা লাগবে আমিই দিব.....
-একাউন্ট খুলছোস কয়টা.....!!!!!!?
-ছি:........তুমি ভাল হবা না বুঝছো.....তোমাকে আমারই ভালো করতে হবে.......আর শোন.....আমাকে তুমি করে বলবা......
-মানে কি এইসবের......!!!!!!!!তুই জানস না তোরে আমার পচ্ছন্দ না.......
-জানি.....আর এটাও জানি তোমার ফাইনাল মিশন.....
-মানে.....!!!(একটু থতমত খেয়ে)
-এতটা চাপা স্বভাবের মানুষ আমি আগে দেখেনি.........তোমার ডায়রিটা আমার কাছে.......!!!!!!
-মানে কি!!!!!!আমার ডায়রি তোর কাছে কেন......ওই...তোর বাপ মায় কিছুই শেখায় নাই.....!!!!!অন্যের জিনিস না বলে নেছ... !!!!!
-অন্য মানুষ কেন হবে!!!!!!!!(জড়িয়ে ধরে) তুমি তো আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ........
আমি কিছু বলতে যেয়েও পারলাম না।এখানেই পুরুষ জাতি নিরব.......
আমার ডায়রি যদি সত্যিই ওর কাছে থাকে তাহলে আমার আজকের মিশন সম্পকে অবগত।এই জন্যই বিয়ে থেকে পলাইছে।
.
.
সেদিন লামিয়ার বাবার সাথে কথা বলার পর লামিয়ার সাথে দেখা করি
-লামিয়া......
-বলেন......
-উম.....তুই তো আমাকে ভালবাসোস!!!!!!!না....?
-হু.....বাসিতো......
-কিন্তু আমি কেন বাসিনা জানতে মনে চায়.....?
-হুম.....
-কারন........তোকে আমার পচ্ছন্দ না.......!!!!!!
কথাটা বলে আমি নিজেই অবাক।আমার দ্বারা এত সুন্দরভাবে মিথ্যা বের হয়!!!!!!!দারুন অভিনেতা আমি......
আর ওদিকে লামিয়ার চোখ ছলছল।যেকোন সময় বরফ গলে পানি বের হবে......
-আমাকে তোমার পচ্ছন্দ না......!!!!!কেন!!!!!!আমি কি দেখতে খারাপ.....!!!!!
-সেটা না।মানুষের......আছে না ডিফারেন্ট পিপল......!!!!!!!!!!
-ও.......আচ্ছা......আসি.......
-শোন......
আবার ধীর পায়ে আসে.....
-বাবার পচ্ছন্দ অনুযায়ী ছেলেকে বিয়ে করিস......পাগলামো করিস না
শুধু মাথা নেড়ে চলে গেল।বুঝতে পারলাম কিছু একটা অনুভুতি হচ্ছে.....তবে এইসব ফিলিংসে তাকিয়ে সময় নষ্ট করার মানে হয় না।এখন জাস্ট ফাইনাল মিশন.........
.
.
-নিল......?
-হ্যা.......
-ওইযে......
হাত নেড়ে আমাকে দেখাচ্ছে অপর পাশে।ট্রেন আসছে......
-তোমার মিশন কম্পলিট হবে এখনই......
-তুই যা তো.....
-সেকি!!!!!!!আমারো তো সেইম মিশন......
-লামিয়া.....পাগলামি করিস না......সর.....
-কোন দরকার নাই....
অবশেষে উপায় না পেয়ে ওরে জোর করে সরালাম।ট্রেন টা চলে গেল.....আমি অসহায় চোখে ট্রেনের দিকে তাকিয়ে রইলাম......
-এত বিতৃষ্ণা কেন লাইফের প্রতি.......!!!!!!
-জানোস যেহেতু.....আবার প্রশ্ন করস কেন......
-আরেকবার বেচে থাকার অনুভুতি টা জাগাও.......
-কার জন্য!!!!!!!
-মনে কর.....আমার জন্য.....!!!!?
-আমি মনে করতে পারি না......
-হাহা!!!!!!আমার জন্য.....
-পারবা তো অনুভুতি টা জাগাতে.....!!!!!?
-তুমি সুযোগ দিলে.......
-দিলাম.....
-তাহলে বল......
-ভালবাসি...............
এভাবেই ফাইনাল মিশনটা আনকম্পলিট রয়ে গেল..।।।।।।।
(আবোল তাবোল লেখা।গলের প্লট বুঝতে না পারলে কেউ দায়ী নয়)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫৯