গুগল (Google), একটি ওয়েব সাইটের নাম বলেই আমরা সবাই জানি! কিন্তু কোথায় থেকে এই নাম এসেছে, তা সবাই না জানলেও অনেকেই জানি! এই নামটি আসলে একটি ম্যাথামেটিকাল নাম্বার কে বোঝায়! ১৯২০ সালে একজন গণিতবীদ, এডওয়ার্ড কেসনার (Edward Kasner) এই নাম্বারটা যখন ঠিক আবিষ্কার নয়, কিছু চিন্তা করছিলেন, তখন তিনি তার ভাতিজা নয় বছর বয়সী মিল্টন সিরোটাকে (Milton Sirota) জিজ্ঞেস করেছিলেন এই নাম্বারের কি নাম দেয়া যায়, সেই বাচ্চা মিল্টন দুষ্টামির ছলেই বলেছিলো, গুগল (Googol)!
এবার আসুন নাম্বারটার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই! এটা সহজে বলতে গেলে, বলতে হয়, টেন টু দা পাওয়ার অপ হান্ড্রেড় (10100)! মানে, একের পর একশোটা শুন্য! এই নাম্বার যে কতো বড়ো, সেটা প্রথম দেখায় বোঝা যায় না! তাই আসুন একটু চিন্তা করে নেই কতো বড়ো নাম্বার এটা!
হিসেবটা এই রকম:
১০ টু দা পাওয়ার অপ ১ (101) =১ ০
১০ টু দা পাওয়ার অপ ২ (102)=১০০
১০ টু দা পাওয়ার অপ ৩ (103)=১০০০
………………………
গুগল (Googol) = 100000000000000000000000000000000000000000000000000000000000
00000000000000000000000000000000000000000!
সমুদ্র তীরে কখোনো গিয়েছেন? অথবা মরুভুমিতে? দেখেছেন সেখানে বালুয় ভরা! কখোনো গুনে শেষ করা যাবে সেখানে কতোটা বালু রয়েছে? একটা বালুর কণা কতো ছোট! এটম কিন্তু তার চেয়েও ছোট! খালি চোখে দেখাই যায় না! মাইক্রোস্কোপ লাগে দেখতে হলে! রাতের আকাশ দেখে কখোনো ভেবেছেন এই মহাকাশটা কতো বিশাল? কতো বিলিয়ন বিলিয়ন তারা রয়েছে ওই মহাকাশে!?
এবার ধরুন এই পুরো পৃথিবীকে শুধু বালু আর বালু হিসেবে ধরে নিন! মাটি, পাহাড়, গাছ, পালা, পশু, পাখি, মানুষ, ঘর, বাড়ি, নদী, সাগর, সব কিছু! তার সাথে ধরে নিন মহাকাশের সব গুলো তারা, গ্রহ, চাঁদ, উপগ্রহ, ধুলো, মানে সব কিছু যা দেখা যায় ও ছোয়া যায়, সব কিছুকেই বালুর কণাতে পরিবর্তন করুন! সব গুলো বালুর কণাকে এক সাথ করুন! এবার সেই বালুর কণা গুলোকে এটমে পরিবর্তন করুন (বালুর কণা খালি চোখে দেখা যায়, এটম কিন্তু খালি চোখে দেখাও যায় না!)! এবার বলুনতো কতোগুলো এটম হয়েছে?!
বলতে পারছেন না?! ম্যাথমেটিকালি সংখ্যাটা ধরা হয়েছে টেন টু দা পাওয়ার অপ সেভেন্টিএইট(1078)!! মানে ১ এর পর ৭৮টা শুন্য বসালে যেই নাম্বার হবে, ঠিক ততোটাই এটম পাবেন! আর সেখানে গুগল এর সংখ্যা হচ্ছে টেন টু দা পাওয়ার অপ হান্ড্রেড়! এটি মহাবিশ্বের সব গুলো এটমের সংখ্যার চেয়েও বড়ো! কল্পনা করা যায় ও না কতো বড়ো এই সংখ্যাটি!
এই সংখ্যাটি আসলে ধরা হয় যখন "ইনফিনিটি" টাইপের নাম্বারের প্রয়োজন হয়ে থাকে হাইয়ার ম্যাথ করতে গেলে, তখন!
এবার আসুন গুগল সংখ্যাটির চেয়ে বড়ো কিছু আছে কি না, সেটা জেনে নেই! আছে! নাম গুগলপ্লেক্স (1010100)! এই সংখ্যাটি হচ্ছে টেন টু দা পাওয়ার অপ গুগল! মানে টেন টু দা পাওয়ার অপ টেন টু দা পাওয়ার অপ হান্ড্রেড়! এটির মান আসলে কল্পনা ও করা যায় না! তবুও একটু ধারনা করা হয়েছে! আর সেটি হচ্ছে এতোখন যেই মহাবিশ্বের কথা বলেছি, সেই মহাবিশ্বের যতো তারা, গ্রহ, উপগ্রহ, ধুলো, বালি, রয়েছে, আর যতোটুকু খালি জায়গা (মহাশুন্য) রয়েছে, সব কিছুই ধরে নিন মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে দখল করার জন্য! উপরেও মাটি, নিচেও মাটি! পুরোটা জায়গাই মাটি দিয়ে ভরা! এবার আসুন সেই মাটির ভেতরে যে খালি চোখে দেখা যায়না তেমন এটম রয়েছে, সেই সব গুলো এটমকে গোনা শুরু করি! সংখ্যাটা ধারনা করা হয়ে থাকে টেন টু দা পাওয়ার অপ ওয়ান হান্ড্রেড় এন্ড টুয়ান্টি এইট (10128) ! গুগলপ্লেক্স (1010100) তার চেয়েও অনেক বিশাল বড়ো নাম্বার বলেই ধারনা করা হয়ে থাকে!
এই পৃথিবীর সব কিছুই ম্যাথমেটিক্স দিয়ে হিসেব করা যায়! শুধু মাত্র মানুষের আত্মা ছাড়া! আর তাই ম্যাথমেটিক্সই আসলে সৃষ্টিকর্তার ভাষা!
সুত্রঃ এপেলো রানা
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:১৪