বর্তমান বাসায় থাকব না এ কথা মালিককে জানানো হয়েছে প্রায় দুুই মাস আগে। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল ছিল না শুধু আলো যার কারণে বাসা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিলাম। সে অনুযায়ী বাসা খোঁজা আরম্ভ করলাম। এরি মধ্যে বেশ কয়েকটা বাসা দেখেও ফেললাম। কিন্তু কেন জানি মিল পাচ্ছিলাম না। কোথাও আলো-বাতাস আছে তো পানির সমস্য, আবার কোথাও পানি আছে তো গ্যাসের সমস্যা, কোথাও গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু ভাড়ায় মিলছে না এরকম হাজারটা না হলেও বহুত সমস্যার মধ্যেও আত্নবিশ্বাস ছিল মনের মতন অন্তত একটা বাসা পেয়ে যাব । তা না হলেও একটা সমস্যা নিয়ে যে বাসায় আছি সেরকম একটা একটা সমস্যা ওয়ালা বাসা তো পেয়েই যাব।
দুই মাস শেষ হওয়ার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি এরকম ক্রান্তিকালে এসে বাধলো বিপত্তি। মানুষ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে অনেকে জামাকাপড় কিনেও ফেলেছে এরকম একটা মুহুর্তে হলো গুলশান হামলা। জাতিকে অবাক লাগিয়ে দিয়ে খবর বেরোলো তারা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত যুবক। ঘটনার এখানেই সমাপ্ত হয় নাই। ঈদের দিন মাঠে নামাজ শেষ করে একটিু টিভি চালু করলাম ওমা একি দেখছি! ঈদের সবচেয়ে বড় জামায়াত যেখানে হয় সেখানে সন্ত্রাসী হামলা। চমকে উঠলাম। আতংকিতও হলাম। ঈদশেষে যে আরও বড় আশ্চর্যের বিষয় অপেক্ষা করছে এটা তখন ভাবতেই পারলাম না।
প্রিয়জনকে পাশে পেয়েও অনেকটা আতংকে ঈদের ছুটিগুলো কাটিয়ে ঢাকায় ফেরা। আবারও বাসার টেনশন আক্রমন করে বসল। বেরোলাম বাসা খোঁজার জন্য। ঠিক করলাম এত অল্প সময়ে বাসা পাওয়া কঠিন তাই আগে যে বাসাটাদেখে এসেছিলাম সেখানেই যাব। যথারিতি গেলামও সেখানে। সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের ঘটনাটা ঘটলো সেখানেই। এ পর্যাযে একটা গল্পের কথা মনে পড়ে গেল- গল্পটা এক হরিণ আর এক বাঘের। হরিণ একদিন নদীতে পানি পান করতে গেল। হঠাত বাঘও সেখানে পানি পান করতে এল। তো বাঘ ভাবছে কিভাবে হরিণটাকে শিকার করা যায়। এমতাবস্থায় বাঘ বলে বসল এই তুই আমার পানি ঘোলা করছিস কেন? হরিণ বললো বাঘ মামা আমি তোমার পানি কিভাবে ঘোলা করব যেখানে তুমি উচু এলাকায় আর আমি নিচু এলাকায়। বাঘ তখন বলল তুই পানি ঘোলা না করলেও তোর বাপ ঘোলা করেছিল এই বলে সে হরিণের উপর ঝাপিয়ে পড়লো। ঠিক এরকমই অবস্থা হল আমাদের। ঈদের আগে যে বাসা আমাদেরকে দেওয়ার জন্য বলেছিল সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে তারা বললো তোমাদের কে বাসা দেওয়া যাবে না। কারণ তোমরা জঙ্গী। আমরা অবাক হয়ে বললাম আমরা তো জঙ্গী নই। মালিক বললো তোমরা না হলেও তোমাদের মতো অনেকে জঙ্গী তাই তোমাদেরকে বাসা দেওয়া যাবে না। আমরা হরিণ আর বাঘের গল্পটা নিয়ে ভাবছিলাম।
সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে পিতা মাতার জন্য বেচেলর সন্তান জন্ম দেওয়াটাই পাপ। তারা কেন ফেমেলি সন্তান জন্ম দিতে পারে না? এমনিতেই ঢাকায় বেচেলরদের প্রাণ যায় আর আসে তার উপর এরকম উদ্ভট ঝামেলা আসলে বেচেলর রা তো গলায় দড়ি দেওয়ার ও দড়ি পাবে না।
ছোট বেলায় শুনেছিলাম পাপীকে নয় পাপকে ঘৃণা করি। আর এখন দেখছি পাপকে নয় বরং পাপ যারা করবে তাদের লাশ গ্রহণ না করি এবং তাদেরকে উসিলা করে সমগ্র প্রজাতি কে ঘৃণা করি।
জয় বেচেলর জয় ফেমেলি!!!!!!!!!!!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৬