somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসূন আজাদের বাহানা, দূর্ভাগা রোকেয়া প্রাচী

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রসূন আজাদ, মিডিয়াতে এসেছেন মাত্র কয়েক বছর আগে। ২০১২ সালের লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার প্রথম রানার আপ হয়ে শোবিজে পা রাখেন। আকর্ষণীয় অভিব্যক্তি, প্রাণবন্ত ব্যবহার আর অভিনয়ে সহজাত দক্ষতা থাকায় শুরুতে তাকে ঘিরে তৈরি হয় ব্যাপক চাহিদা। একের পর এক নাটক আর বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান। পজেটিভ এই ব্যাপারটিই তার ক্যারিয়ারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‌অল্প সময়ে আলোচনায় উঠে আসায় প্রসূনের মধ্যে তৈরি হয়েছে ‘আমি কি হনু রে..’ মানসিকতা। সময় মতো শুটিংয়ে না আসা, শিডিউল ফাঁসানো, শুটিংয়ে বন্ধুদের নিয়ে আসা এবং বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মশগুল থাকা ইত্যাদি হয়ে ওঠে তার নিত্যদিনের ঘটনা। প্রসূনের বিরুদ্ধে নানা অজুহাতে নানা বাহানায় নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠে। ফলে যা হওয়ার তাই হয়। ধীরে ধীরে মিডিয়ায় কমতে থাকে তার চাহিদা, কমে যায় কাজ। একপর্যায়ে অবস্থা এমনই হলো যে প্রসূণ হয়ে পড়লেন পুরোপুরি বেকার।

চলতি বছর বাপ্পা মজুমদারের ‘জানালার গ্লাস’ গানের মডেল হওয়া ছাড়া কোথাও প্রসূনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। টিভি নাটক, মডেলিং. উপস্থাপনা কিংবা চলচ্চিত্রের কোনো কাজই তার হাতে আসেনি। সম্ভাবনার আলো হয়ে আসা প্রসূন আজাদকে এই বেকারত্ব থেকে মুক্তি দিতে এগিয়ে আসেন অভিনেত্রী-নির্মাতা রোকেয়া প্রাচী। ‘স্বপ্ন সত্যি হতে পারে’ টেলিফিল্মের প্রধান চরিত্রে প্রসূন আজাদকে কাজ করার সুযোগ দেন তিনি। সেটা যে কতো বড় ভুল ছিল, তা টের পান শুটিংয়ের দিন। হাতে কাজ না থাকলেও প্রসূনের পুরনো বাহানা রোকেয়া প্রাচীর বিড়ম্বনা ও আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়েছে।

শুটিং স্পট, ফরিদপুরের দৌলতদিয়ায়। আগের দেয়া শিডিউল অনুযায়ী খুব ভোরে ইউনিট নিয়ে রওনা হওয়ার কথা। সবাই এসে গেছেন, কেবল প্রধান চরিত্রের অভিনেত্রীর দেখা নেই। একাধিকবার ফোন দেয়া হয়। ফোনে বার বার একই কথা, ‘…এই তো কাছাকাছি এসে পড়েছি।…১০ মিনিট লাগবে।…পাঁচ মিনিট লাগবে।’ এভাবেই পার হলো এক ঘণ্টা। আর কতোক্ষণ এক প্রসূন আজাদের জন্য এতোগুলো মানুষ অপেক্ষায় থাকবেন! পরিচালক রোকেয়া প্রাচী কয়েকজন শিল্পীসহ নিজে স্পটে যাওয়ার একটি গাড়ি রেখে অন্যসব গাড়িকে শুটিং লোকেশনের উদ্দেশে পাঠিয়ে দিলেন।

প্রসূন আজাদ এলেন নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পরে। তার সঙ্গে একটি ছেলে। পরিচালক রোকেয়া প্রাচীকে প্রসূন বললেন, আমার সঙ্গে শুটিংয়ে এই ভাইটাও যাবে? গাড়ি আছে একটা, এতে ফাঁকা আছে কেবল একটা সিট প্রসূনের জন্য! পরিচালক পড়ে গেলেন ফাঁপড়ে। জানতে চাইলেন, ভাইকে সঙ্গে নেয়ার কথা আগে বলোনি কেন? তাকে সঙ্গে নেয়ারই বা কি দরকার! অমনি গোস্বা করে বসলেন প্রসূন। জানালেন, ভাইকে সঙ্গে না নিয়ে সে শুটিংয়ে যাবে না। তাছাড়া পরিচালকের কথাগুলো তার মোটেও ভালো লাগেনি। অসহ্য লাগছে, ক্যামেরার সামনে এ অবস্থায় ভালোভাবে অভিনয় করা তার পক্ষে সম্ভব না।

কাউকে তো আর জোর করে অভিনয় করানো সম্ভব নয়। তাই পরিচালককে শুটিং প্যাক-আপ করতে হলো।

এ প্রসঙ্গে ফেসবুক স্ট্যাটাসে রোকেয়া প্রাচী বলেছেন, ‍‍‘প্রসূন আজাদ তার অমুক এক ভাইকে ছাড়া শুটিংয়ে যাবে না… তার জন্য দুই ঘন্টা ওয়েট করে এই কথা শুনতে হলো। এই ভাই কে, কেন যাবে- জানতে চাইলে তার নাকি খুব ‘suffocated and pain’ লাগছে ?! ফলাফল শুটিং প্যাক-আপ। ফরিদপুরে তখন টেকনিক্যাল টিম পৌঁছে গেছে …আমরা ওয়েট করে প্যাক আপ হয়ে অসম্মানিত হয়ে বসে আছি। প্যাক-আপ হলে অনেকগুলো মানুষের রুটি রুজিতে আঘাত হয় …এটা প্রসূন আজাদ বুঝবে? আর এই নাটকের আমি দুর্ভাগা পরিচালক।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে একাধিকবার প্রসূন আজাদকে ফোন করা হলেও কল রিসিভ করেননি। তবে ঘটনাটি প্রসঙ্গে নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রসূন আজাদ লিখেছেন –

‘সন্ধ্যায় আম্মু ইলিশ মাছ রান্না করছিল। আমি কিচেনের ফ্লোরে বসে কফি খাচ্ছিলাম। আম্মু বলছিল, প্রসূন এত দূর যাবি, আমার মন চাচ্ছে না। আমি আম্মুকে বললাম সুন্দর ক্যারেক্টার, আর অনেক দিন পর, করি একটা নাটকে অভিনয়, কি আসে যায় – বলে আমি লাগেজ গুছাতে বসলাম। আবার জানলাম, এসিস্টেন্টের বাড়িতে ঝামেলা তাই সাথে যাবে না। আমারও ভালো লাগছিল না। একা একা শুটিংয়ে যাইনা যে তা না, তবে ব্রোথেলের মত জায়গায় এত কালারফুল ফ্রেম পাওয়া যাবে ভেবে প্রত্যয়কে বললাম। প্রত্যয় জানালো, ওর কাজ আছে। আমি একাই বের হলাম। মাঝ রাস্তায় প্রত্যয় ফোন করে জানালো সাথে যাবে। গেলাম ডিরেক্টরের বাড়ির সামনে। দৌলতদিয়া বেশ দূরে। ৮টায় পৌছালাম বলে ডিরেক্টর সালাম না নিয়েই এতগুলো কথা শুনিয়ে দিলো। আমার ধারনা ওনার পারিবারিক ঝামেলা চলছে। নইলে সুস্থ মাথায় একটা মানুষ এত বাজে আচরণ কেনো করবে! মগবাজার, মৌচাকে প্রচুর যানজট। এটা এই শহরে নতুন নয়। আমার জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি। ৭:৩০ থেকে ৮:০০ টা বেজে গেলো কেনো সেজন্য উনি এত রাগ করলেন! আমি অবাক। কোনোভাবেই উনি প্রত্যয়কে সহ্য করতে পারছিল না। আমি আমার এসিস্টেন্ট ছাড়া অথবা এই ছোট ভাই ছাড়া দৌলতদিয়ার মত জায়গায় যাওয়ার সাহস পাই নাই।
আমার বহু রাত গেছে চোখের পানি মুছে। আপনাদের আগেও অনেক বড় বড় স্টার আমাকে “নাই” করে দিতে চেয়েছিলেন। এই কথা আমি নতুন শুনি নাই। কিন্তু তারা কোথায়? প্রত্যয় ভাবছিল, আমি চড় থাপ্পর মেরে বসি কিনা। কিন্তু পুরোটা সময় হাসি মুখেই ওনার কথা শুনে যাচ্ছিলাম আর উত্তর দিচ্ছিলাম। কারণ আমি আমার ভাইকে ছাড়া শুটিংয়ে ওনার সাথে যেতে চাই নাই।
সুতরাং অসুস্থ ডিরেক্টর, আমার আব্বু আম্মু আপনার মত না, আপনি আমার মায়ের পরিচিত তাই সালাম দিয়ে কথা বলেই কথা শেষ করেছি। আমাকে “নাই” করবেন করেন। কিন্তু একটা প্রশ্ন… আপনি কি আমাকে দিয়ে অভিনয় করাতে চাচ্ছিলেন? নাকি অন্য কিছু? তাহলে ছোট ভাইকে দেখে এমন করলেন! এতগুলো মানুষের সামনে নেরি কুত্তা হয়ে গেলেন! ভাদ্র মাস নাকি? আপনি কে?’

লিংক: পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ/ purboposhcimbd.news
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:০৭
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×