সূরা রূমে আল্লাহপাক ঘোষনা দিয়ে তৎকালীন সুপার পাওয়ার পারস্যকে পরাজিত করেছিলেন দুর্বল রোমানদের দ্বারা। এগুলো দলিল সমৃদ্ধ ইতিহাস। মুসলমানদের দাবী বা প্রচারনা নয়। তারপরও মানুষের চোখ খুলে না- আফসোস।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
১.) আলিফ-লাম-মীম।
২.) রোমানরা নিকটবর্তী দেশে পরাজিত হয়েছে এবং নিজেদের এ পরাজয়ের পর কয়েক বছরের মধ্যে তারা বিজয় লাভ করবে।
৩.) ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব আগেও আল্লাহরই ছিল। পরেও তাঁরই থাকবে।
উপরের আয়াতগুলো সূরা রূম থেকে নেয়া।
এখানে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়ঃ “নিকটবর্তী দেশে রোমানরা পরাজিত হয়েছে কিন্তু এ পরাজয়ের পর কয়েক বছরের মধ্যেই আবার তারা বিজয়ী হবে।” এর মধ্যে একটির পরিবর্তে দুটি ভবিষদ্বাণী করা হয়েছে।
একটি হচ্ছে , রোমানরা জয়লাভ করবে
এবং
দ্বিতীয়টি হচ্ছে, মুসলমানরাও একই সময় বিজয় লাভ করবে।
আপাতদৃষ্টিতে এ দুটি ভবিষদ্বাণীর কোন একটিরও কয়েক বছরের মধ্যে সত্যে পরিণত হবার কোন দূরতম সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছিল না। একদিকে ছিল মুষ্টিমেয় কয়েকজন মুসলমান। তারা মক্কায় নির্যাতিত হয়ে চলছিল। এ ভবিষদ্বাণীর পরও আট বছর পর্যন্ত কোন দিক থেকে তাদের বিজয় লাভের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না।
অন্যদিকে রোমের পরাজয়ের বহর দিনের দিন বেড়েই চলছিল। ৬১৯ সাল পর্যন্ত সমগ্র মিশর পারস্য সাম্রাজ্যের অধীনে চলে এসেছিল। অগ্নি উপাসক সেনাদল ত্রিপোলির সন্নিকটে পৌঁছে তাদের পতাকা গেড়ে দিয়েছিল । এশিয়া মাইনরে ইরানী সেনাদল রোমানদের বিতাড়িত ও বিধ্বস্ত করতে করতে বসফোরাস প্রণালীতে পৌঁছে গিয়েছিল। ৬১৭ সালে তারা কনস্ট্যান্টিনোপলের সামনে খিলকদুন (chalcedon:বর্তমানে কাযীকোই) দখল করে নিয়েছিল। কায়সার খসরুর কাছে দূত পাঠিয়ে অত্যন্ত বিনয় ও দীনতা সহকারে আবেদন করলেন, আমি যে কোন মূল্যে সন্ধি করতে প্রস্তুত।কিন্তু তিনি জবাব দিলেনঃ “ এখন আমি কায়সারকে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপত্তা দেবো না যতক্ষণ না তিনি শৃঙ্খলিত অবস্থায় আমার সামনে হাজির হন এবং তাঁর শূলী বিদ্ধ ঈশ্বরকে ত্যাগ করে অগ্নি খোদার উপাসনা করেন।”
অবশেষে কায়সার এমনই পরাজিত মনোভাব সম্পন্ন হয়ে পড়লেন যে, তিনি কনস্ট্যান্টিনোপল ত্যাগ করে কার্থেজে (carthage:বর্তমান টিউনিস ) চলে যাবার পরিকল্পনা করলেন। মোটকথা ইংরেজ ঐতিহাসিক গীবনের বক্তব্য অনুযায়ী কুরআন মাজীদের এ ভবিষদ্বাণীর পরও সাত আট বছর পর্যন্ত এমন অবস্থা ছিল যার ফলে রোমানরা ইরানীদের ওপর বিজয় লাভ করবে এ ধরনের কোন কথা কোন ব্যক্তি কল্পনাও করতে পারতো না । বরং বিজয় তো দূরের কথা তখন সামনের দিকে এ সাম্রাজ্য আর টিকে থাকবে এ আশাও কারো ছিল না।
কুরআন মাজীদের এ আয়াত নাযিল হলে মক্কার কাফেররা এ নিয়ে খুবই ঠাণ্ডা বিদ্রুপ করতে থাকে। উবাই ইবনে খালফ হযরত আবু বকরের (রা) সাথে বাজী রাখে। সে বলে, যদি তিন বছরের মধ্যে রোমানরা জয়লাভ করে তাহলে আমি তোমাকে দশটা উট দেবো অন্যথায় তুমি আমাকে দশটা উট দেবে। নবী (সা) এর বাজীর কথা জানতে পেরে বলেন, কুরআনে বলা হয়েছে ‘ফী বিদ্বঈসিনিন’ আর আরবী ভাষায় ‘বিদঈ’ শব্দ বললে দশের কম বুঝায়। কাজেই দশ বছরের শর্ত রাখো এবং উটের সংখ্যা দশ থেকে বাড়িয়ে একশো করে দাও। তাই হযরত আবু বকর (রা) উবাইর সাথে আবার কথা বলেন এবং নতুনভাবে শর্ত লাগানো হয় যে, দশ বছরের মধ্যে উভয় পক্ষের যার কথা মিথ্যা প্রমাণিত হবে সে অন্যপক্ষকে একশোটি উট দেবে।
(উপরের অংশটুকু এখানে থেকে নেয়া)
তখন পারস্য এখনকার ইসরাইল আমেরিকা থেকে অপতিরোধ্য ছিল। সেটার ধ্বংশ আল্লাহ পাক করেছিলেন ঘোষনা দিয়েই।
কিভাবে ঘটেছিল সেই পরাজয়? পরের পোস্টে তা দেয়ার চেস্টা করব ইনশাআল্লাহ। তবে এটুকু এখন বলে রাখি , সেটা ঘটানোর জন্য আল্লাহ পাক কোন ফেরেস্তাও পাঠাননি কিংবা অলৌকিক ঘটনাও ঘটাননি। আমরা আমাদের আটপৌর জীবনের সচরাচর যেসব ঘটনা দেখি - তাই ঘটেছিল।
তবে ঘটনা যেভাবেই ঘটুক- অবিশ্বাসী রা তাদের পর্দা পড়া চোখে ত্রুটি দেখবেই-
যদি অতি স্বাভাবিকভাবে হয়- বলবে এতে আল্লাহ পাকের কি ভূমিকা পেলেন?
আর যদি অলৌকিক ভাবে হয়- বলবে মধ্যযুগে পড়ে আছেন
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯