somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সচিত্র বারবীকিউ ২০১২

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত বছরের শেষদিনের আয়োজন, আস্ত খাসী বারবীকিউ।
আমাদের কির্ডস গুলির জন্য ছিলো এই বিশেষ আয়োজন। এই আয়োজনে উপস্থিত হয়ে যে নির্মল আনন্দ ওরা পেয়েছে তা না দেখলে বলে বুঝানো যাবেনা। এখন কারো যদি মনে হয় ৩১শে ডিসেম্বরে এই আয়োজন করে আমি ধর্মবিরোধী কাজ করেছি তাহলে আমার কিচ্ছু করার নাই। ( ইদানীং ফোরামে ধর্ম নিয়ে খুব তর্ক বিতর্ক হচ্ছে তাই এই উক্তি।)

উপকরণ:
১। একটি মাঝারি সাইজের খাসী।
২। বারবীকিউ টুলস ।
৩। বারবীকিউ সস।
৪। টমেটো সস।
৫। গরম মসলা বাটা।
৬। আদা বাটা
৭। রসুন বাটা।
৮। কাঁচা মরিচ বাটা।
৯। লবণ।
১০। টক দই।
১১। ছুড়ি
১২। সয়াবিন তেল।
১৩। ঘি
১৪। ব্রাশ
১৫। শুকন কাঠ বা কয়লা।
১৬। গুনা / তার।
১৭। তাল পাখা।



প্রথমেই বলে নেই বারবিকিউ করাটা বেশ সময় সাপেক্ষ বেপার, প্রায় ১০-১২ ঘণ্টার আয়োজন। প্রস্তুতি নিতে হবে তারও আগে থেকে। তবে আমি অতি সাধারণ প্রক্রিয়াতে এই বারবিকিউ করি, খুবই সাধারণ, স্বাদের কোনো কমতি হবে না, তবে স্বাদ ধরে রাখতে হলে আপনাকে অবশ্যই সময় দিতে হবে।

প্রস্তুতির প্রথম পর্যায়ে লাগবে আপনার একটি আস্ত খাসী, মাঝারি সাইজের। লাগবে (বারবীকিউ টুলস) রডের একটা মজবুত সিক আর দুটি স্ট্যান্ড। আমরা আলসেমি করে স্ট্যান্ডটি তৈরি করিনি। শেষে জোড়া তালি দিয়ে চালাতে হয়েছে, আপনারা তা করবেন না।

২৯শে ডিসেম্বর আমাদের পরিচিত এক কসাইকে দিয়ে ৪ হাজার টাকায় একটা খাসী কিনিয়ে আনি। ৩১শে ডিসেম্বর দুপুর ১টার পরে খাসীটিকে কসাইকে দিয়ে কাটিয়ে চামড়া ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে বাসায় নিয়ে আসি। খাসী কখনো নিজে কাটতে যাবেন না, তাহলে সারা খাসীর গোস্তে পশমে ভরে যাবে।

এবার খাসীটি ভালো করে পরিষ্কার করে ধুয়ে পরিমাণ মত লবণ মাখিয়ে নিয়ে ছোট ছুরি দিয়ে খাসির সমস্ত শরীর কেঁচতে শুরু করেন। ভালো মত কেঁচা হয়ে গেলে টক দই মাখিয়ে দুই আড়াই ঘণ্টার জন্য একটা বড় বলে ঢেকে রেখে দিন।




দুই আড়াই ঘণ্টা পরে খাসীটিকে মসলা দিয়ে মাখিয়ে নিন। মসলা খুবই সাধারণ, গরম মসলা বাটা, সেই সাথে আদা আর রশুন বাটাও। এর সাথে আরো লাগবে পরিমাণে একটু বেশি কাঁচা মরিচ বাটা। সমস্ত বাটা মসলা একসাথে মাখিয়ে নিয়ে সেগুলি দিয়ে খাসীটাকে আচ্ছা মত মাখিয়ে নিন।



এবার সয়াবিন তেল হাতে নিয়ে খাসীটিকে আবারো মাখিয়ে নিতে হবে। এগুলি ঘরোয়া আইটেম, এই গুলির বাইরে আরো দুটি জিনিস আপনাকে দিতে হবে, একটি হচ্ছে বারবিকিউ সস, আরেকটি হচ্ছে টমেটো সস।






বারবিকিউ সস আর টমেটো সস এক সাথে নিয়ে আবার মাখিয়ে দিতে হবে। সব কিছু মাখানো পরে আবারো ঘণ্টা খানেকের জন্য ঢেকে রেখে দিতে হবে।




এবার কয়লা বা কাঠগুলিতে আগুন জ্বালিয়ে দিন জ্বলন্ত কয়লা হওয়ার জন্য। মনে রাখতে হবে বারবীকিউ কখনোই আগুনের উপরে করা যাবেনা, সব সময়ই করতে হবে জ্বলন্ত কয়লার উপরে। কয়লার জ্বলন্ত ভাব ধরে রাখার জন্য কিছুক্ষণ পরপর তাল পাতার পাখা দিয়ে বাতাস করতে হবে।






লোহার সিকটিকে ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে খাসিটির পিছন দিক দিয়ে ঢুকিয়ে সামনে গলার দিক দিয়ে বের করতে হবে।





এবার সামনের পা দুটি সামনের দিকে টেনে আর পিছনের পাদুটি পিছনের দিকে টেনে গুনা/তার দিয়ে টাইট করে পেঁচিয়ে বাঁধতে হবে। পাগুলি বাঁধা হয়ে গেলে গলা আর পিঠের দিকেও ভালো করে বেঁধে ফলতে হবে। এই বাঁধাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঠিকমত বাঁধতে না পারলে বারবীকিউ করার সময় খাসীটি ঠিকমত ঘোরানো যাবে না।





বাঁধা হয়ে গেলে এবার জ্বলন্ত কয়লার উপরে খাসীটিকে ঝুলিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পরপর খাসীটিকে ঘুরিয়ে দিতে হবে যাতে একপাশ বেশি তাপ পেয়ে পুরে না যায়।





৩০/৩৫ মিনিট পরে খাসীটিতে লালচে ভাব আসবে। তখন ব্রাশে ঘি নিয়ে কিছুক্ষণ পরপর খাসীটিতে মাখিয়ে দিতে হবে। এভাবে মিনিমাম আড়াই-তিন ঘণ্টা লাগবে প্রথম দফায় উপরের অংশ খাওয়ার যোগ্য হতে। ছুড়ি দিয়ে খোঁচা দিলেই বুঝা যাবে রান্না হয়েছে কিনা। হয়ে এলে একটি বড় ছুড়ি দিয়ে উপর দিক থেকে স্লাইস করে গোস্ত কেটে নিতে হবে।





প্রথম দফায় কাঁটা হয়ে গেলে যেখানে যেখানে গোস্ত কাটবেন সেই যায়গাগুলিতে আবার ব্রাশ দিয়ে ঘি মাখিয়ে দিবেন। এভাবে মোটামুটি ৪/৫ ঘণ্টা পর্যন্ত ধীরে ধীরে রসিয়ে রসিয়ে উপভোগ করুন নিজের তৈরি বারবীকিউ।





মনে রাখতে হবে কখনোই কয়লার উপর থেকে খাসীটিকে নামানো যাবে না। কয়লা কখনোই নিভে যেতে দেয়া যাবে না।



আরো কিছু ছবি দেখুন -


















































৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×