somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ - বন্দর শাহী মসজিদ

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে গিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ সফরে। সদস্য আমরা এক পরিবারের চারজন। উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জের কিছু প্রাচীন ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা। সেই উদ্দেশ্যে আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। বাড্ডা থেকে আসমানী পরিবহনের বাসে ১ ঘণ্টায় চলে আসি মদনপুর চৌরাস্তায়। রাস্তা পার হয়ে সকালের নাস্তা করে নিয়ে একটা সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করি ৩০০ টাকায় গোটা আটেক স্থানে যাবো বলে।

প্রথম লক্ষ্য ছিল “বন্দর মসজিদ” (মিলের মসজিদ) বলে একটি পুরনো ৩ গম্বুজ মসজিদ দেখার। কিন্তু সেটি খুঁজে বের করতে না পেরে চলে যাই কাছাকাছি থাকা “১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরে”। মন্দিরটি দেখে আমরা চলে আসি নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জে অবস্থিত “T Hossain House” দেখতে। শত বছররে পুরনো কিন্তু এখনো ঝকঝকে চমৎকার বাড়িটি দেখে আমরা চলে আসি “কদম রসুল দরগা” দেখতে। দরগার সুউচ্চ তোঢ়ণ এবং আশপাশটা দেখে আমরা এগিয়ে চলি আমাদের পরবর্তী গন্তব্য প্রাচীন “বন্দর শাহী মসজিদ” দেখতে।





পূর্ব পাশ থেকে বন্দর শাহী মসজিদ

বন্দর শাহী মসজিদ
মসজিদটি সম্পর্কে “বাংলাপিডিয়া” বলছে –

"বন্দর শাহী মসজিদ নারায়ণগঞ্জ জেলার কদম রসুল থেকে প্রায় এক মাইল দক্ষিণ-পূর্বে বন্দর পৌর এলাকায় অবস্থিত। সুলতান জালালুদ্দীন ফতেহ শাহের পদস্থ শাহী কর্মকর্তা মালিক আল-মুয়াজ্জম বাবা সালেহ কর্তৃক ১৪৮২ খ্রিস্টাব্দে (৮৮৬ হিজরি) মসজিদটি নির্মিত হয়।

বর্গাকার এ মসজিদের পরিমাপ অভ্যন্তরভাগে ৬.২০ মিটার এবং বহির্ভাগে ৯.৭০ মিটার। চার কোণে রয়েছে অষ্টভুজাকৃতি মিনার এবং দেয়ালে প্রোথিত কালো পাথরের দুটি স্তম্ভের উপর স্থাপিত গোলার্ধ আকৃতির বৃহৎ গম্বুজ। এ স্তম্ভ দুটির ভিত বর্গাকার, শীর্ষভাগ কারুকার্যখচিত ও মধ্যভাগ অষ্টভুজাকৃতির। স্তম্ভের শীর্ষভাগে বসানো স্কুইঞ্চের উপর গম্বুজটি স্থাপিত। গম্বুজের গোড়ার দিকে চারপাশ ঘিরে রয়েছে পদ্মফুল ও কলসের নকশা-বেষ্টনী। শীর্ষভাগ মারলান শোভিত ড্রামের উপর গম্বুজটির স্থাপনা মুগল আমলে মসজিদটির সংস্কারের একটি অংশ বলে মনে হয়। মসজিদের পূর্বদিকের তিনটি প্রবেশপথের মধ্যবর্তীটি প্রশস্ততর এবং এটির উচ্চতা ২.২০ মিটার ও চওড়া ১.৩৭ মিটার। দক্ষিণ ও উত্তর দিকে অপর দুটি প্রবেশপথ ২ মিটার উঁচু ও ১ মিটার প্রশস্ত। পার্শ্বের প্রবেশপথগুলো সম্মুখের মধ্যবর্তী প্রবেশপথের সমান আকৃতির। মসজিদটিতে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার মিহরাব আছে। এদের মধ্যবর্তীটি সবচেয়ে বড়। উত্তর পাশের মিহরাব এখন আলমারি হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। মসজিদটি পুনর্নির্মিত হয়েছে এবং পূর্ব, দক্ষিণ ও উত্তর দিকে বারান্দা সংযোজন করে এর পরিধি বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটি এখন জামে মসজিদরূপে ব্যবহূত হচ্ছে।
[মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]"








বন্দর শাহী মসজিদের গম্বুজ



বন্দর শাহী মসজিদের গম্বুজের চূড়া



দক্ষিণ দিক থেকে বন্দর শাহী মসজিদ





দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বন্দর শাহী মসজিদ





দক্ষিণ-পূর্ব দিকে থেকে বন্দর শাহী মসজিদ



দক্ষিণ-পূর্ব দিকে থেকে বন্দর শাহী মসজিদ



পশ্চিমের একটি বারান্দা থেকে বন্দর শাহী মসজিদের গম্বুজ



বন্দর শাহী মসজিদের একটি মিনার









বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে প্রবেশে পথ



বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে প্রবেশে পথের উপরে শিলালিপী



বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে তিনটি মেহরাব



বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে কেন্দ্রীয় মেহরাব



বন্দর শাহী মসজিদের ভিতরে কেন্দ্রীয় মেহরাবের কারুকাজ



গুগল ম্যাপ

জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°36'45.9"N 90°31'00.7"E

পথের হদিস : ঢাকা থেকে বাসে মদনপুর, মদনপুর থেকে শেয়ার সিএনজি বা ইজি বাইকে নবীগঞ্জ। নবীগঞ্জ থেকে রিকসায় “বন্দর শাহী মসজিদ”।
তাছাড়া বাস বা ট্রেনে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে রিকসা নিয়ে চলে আসা যায় “বন্দর শাহী মসজিদ”।



বন্দর শাহী মসজিদ দেখে আমরা চলে যাই বন্দর সমর ক্ষেত্রের পাশে নির্মানাধীন একটি মাজার দেখতে। আগামী পর্বে তার কিছু ছবি থাকবে।

বি.দ্র. : আমি ওখানকার একজন খাদেমকে অনুরোধ করার সাথে সাথে তিনি তালা খুলে অব্যবহিত প্রাচীন মসজিদটির ভিতরে ঢুকে ছবি তুলতে দিয়েছেন। তবে লক্ষ করেছি পাশের এক চিলতে যায়গায় ছোট্ট বাগনটিতে নানা ধরনের ময়লা আর প্লাটিকের প্যাকেটের উচ্ছিষ্টে সায়লাব। আমরা যেন একটু সতর্ক থাকি, যাতে আমাদের চারপাশটা পরিষ্কার থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫১
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×