somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝটিকা সফরে নারায়ণগঞ্জ - সোনাকান্দা দূর্গ

১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে গিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ সফরে। সদস্য আমরা এক পরিবারের চারজন। উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জের কিছু প্রাচীন ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা। সেই উদ্দেশ্যে আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে যাই বাড়ি থেকে। বাড্ডা থেকে আসমানই পরিবহনের বাসে ১ ঘণ্টায় চলে আসি মদনপুর চৌরাস্তায়। রাস্তা পার হয়ে সকালের নাস্তা করে নিয়ে একটা সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করি ৩০০ টাকায় গোটা আটেক স্থানে যাবো বলে।


প্রথম লক্ষ্য ছিল “বন্দর মসজিদ” (মিলের মসজিদ) বলে একটি পুরনো ৩ গম্বুজ মসজিদ দেখার। কিন্তু সেটি খুঁজে বের করতে না পেরে চলে যাই কাছাকাছি থাকা “১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দিরে”। মন্দিরটি দেখে আমরা চলে আসি নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জে অবস্থিত “T Hossain House” দেখতে। শত বছররে পুরনো কিন্তু এখনো ঝকঝকে চমৎকার বাড়িটি দেখে আমরা চলে আসি “কদম রসুল দরগা” তে। দরগার সুউচ্চ তোরণ এবং আশপাশটা দেখে আমরা চলে যাই “বন্দর শাহী মসজিদ” দেখতে। প্রাচীন এক গম্বুজ মসজিদ দেখা আমরা যাই “নির্মাণাধীন মাজার” দেখতে। নির্মাণাধীন মাজার” দেখে চলে “সিরাজ শাহির আস্তানা” তে। “সিরাজ শাহির আস্তানা” দেখা শেষে আমাদের এবারের গন্তব্য “সোনাকান্দা দূর্গ”




“সোনাকান্দা দূর্গ” মোঘল আমলে তৈরি করা একটি জলদূর্গ। তৎকালীন সমৃদ্ধ শহর ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকাকে নদী পথে মগ ও পর্তুগিজদের আক্রমণ প্রতিহত করতে ও জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে রক্ষ্যা করার জন্য ১৬৫০ সালের দিকে তৎকালীন বাংলার সুবাদার মীর জুমলা এ সোনাকান্দা দূর্গ নির্মাণ করেন। ঐ একই সময়ের কাছাকাছি সময়ে এমন তিনটি জলদূর্গ নির্মাণ করা হয়। যার দুটি হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ে। একটি শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পাড়ে “হাজীগঞ্জ দূর্গ” । অন্যটি শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে এই “সোনাকান্দা দূর্গ” । তৃতীয়টি মুন্সিগঞ্জের “ইদ্রাকপুর দূর্গ”








চতুর্ভুজাকৃতির সোনাকান্দা দূর্গটি চারপাশে মজবুত উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। দূর্গের ভিতরে নিরাপদে থেকে দেয়ালের মধ্য দিয়ে গোলা নিক্ষেপের জন্য বহুসংখ্যক প্রশস্ত-অপ্রশস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র আছে। সেগুলি দিয়ে বন্দুক এবং হালকা কামান ব্যবহার কর যেতো। দূর্গের চার কোনায় অষ্টভুজা-কৃতির চারটি বুরুজ রয়েছে।

















দূর্গের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হচ্ছে এর পশ্চিম অংশে উঁচু বিশাল গোলাকার কামান প্ল্যাটফর্ম। অনেকগুলি বড়বড় সিঁড়ি টপকে উঠতে হয় প্ল্যাটফর্মে। দূর্গের পশ্চিম দিক দিয়েই বয়ে যেতো শীতলক্ষ্যা নদী। তাই এই পশ্চিমমুখী কামান প্ল্যাটফর্মের উঁচু মঞ্চে শক্তিশালী কামান স্থাপন করা ছিল নদীপথে আগত জলদস্যুদের ঠেকাতে।



































দূর্গের উত্তর পাশের প্রাচীরে উত্তরমুখী একটি মজবুত প্রবেশ তোরণ রয়েছে। এটিই দূর্গের একমাত্র প্রবেশ তোরণ। প্রবেশদ্বারটি একটি আয়তাকার তোরণ কাঠামোর মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে।















এই দুর্গ নির্মাণের তারিখ সম্বলিত কোন শিলালিপি পাওয়া যায় নি তবে ঐতিহাসিকদের মতে এটি ১৬৬০ থেকে ১৬৬৩ খৃষ্টাব্দের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল।

















জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°36'25.0"N 90°30'43.5"E



পথের হদিস : ঢাকা থেকে বাসে মদনপুর, মদনপুর থেকে শেয়ার সিএনজি বা ইজি বাইকে নবীগঞ্জ হয়ে সোনাকান্দা দূর্গ।

তাছাড়া বাস বা ট্রেনে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে রিকসা নিয়ে চলে আসা যায় সোনাকান্দা দূর্গ।




বি.দ্র. : বেড়াতে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলি। চিপস, চকলেট, বিস্কিটের খালি প্যাকেট রাস্তায় ছুড়ে ফেলা থেকে বিরত থাকি।
তথ্য সূত্র : উইকি
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:৫৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×