somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জ্যাম মুক্ত নগরীর জন্য পরিবেশবান্ধব সাইক্লিং সাথে সাথে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা (কালেক্টেড কপি-পেষ্ট পোষ্ট)

১২ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই বলে রাখি, এই পোষ্ট আসলে বেশ কয়েকজন ব্লগারের পোষ্ট থেকে একটু একটু করে নেওয়া, কিছু ডাটা নেওয়া ওয়েব থেকে, কিছু নিজের কথা।

পরিবেশবান্ধব সাইক্লিং হতে পারে ঢাকাবাসীদের জ্যাম থেকে মুক্তির একটা চমৎকার উপায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাইক্লিংকে উৎসাহিত করা হয়। যে হারে সড়কের উপরে যানহবাহনের চাপ বাড়ছে সেমাত্রায় সড়ক সম্প্রসারণ সম্ভব নয়। এমন অসুবিধার মুখোমুখি হয়ে ইউরোপ, সাউথ-ইস্ট এশিয়া, চায়নাতে ট্যুরিস্টসহ অফিসমূখী মানুষের জন্য সাইক্লিংকে বেছে নেয়ার জন্য সরকারী ও বেসরকারী প্রচারণাও বেশ সরগরম। এতে কেবল সড়কের উপরে যানবাহনের চাপ হ্রাস পাচ্ছে না, সেই সাথে পরিবেশ দুষণ কমছে, সাইকেলআরোহীর ফিজিক্যাল এক্সারসাইজও হয়ে যাচ্ছে।

উন্নত বিশ্বও যখন অব্যহতগতিতে বেড়ে যাওয়া যানবাহন ও সড়কের ইক্যুয়েশন মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন ঢাকার কথা তো বলাই বাহূল্য। বিগত এক দশকে যে হারে যানবাহন বেড়েছে সে তুলনায় সড়ক সম্প্রসারণ আশ্চর্যজনকভাবে অপ্রতুল। ঢাকার প্রধান কমার্শিয়াল এলাকাগুলোর মধ্যে দূরত্ব অনুল্লেখ্য হলেও জ্যামের কারণে ২০ মিনিটের মতিঝিল থেকে ধানমন্ডীর দূরত্ব পিক আওয়ারে দুই ঘন্টার পথ হয়ে যায়। বনানী, গুলশান থেকে মতিঝিল পাড়ী দিতে অন্য একটা শহরে যাত্রার মত প্রস্তুতি নিতে হয়। অথচ জ্যাম না থাকলে ২০/৩০ মিনিটের পথ।

বিশ্বের মেগাসিটিগুলোতে সাইক্লিং এর হার কেমন তার কোন তথ্য আছে কিনা জানি না, তবে ঢাকা যে সে লিস্টে একদম শেষের দিকে থাকবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। একটু খেয়াল করলে দেখবেন ঢাকাতে সাইকেল যাত্রী মাত্র হাতে গোনা। গতকাল আমি সারাদিন ঢাকার রাস্তায় মাত্র ৭ জন সাইকেল আরোহীর দেখা পেয়েছি। অথচ হাজার হাজার মানুষ ফার্মগেট থেকে শাহবাগ যাচ্ছে বাসে চড়ে, ৩০ মিনিট অপচয় করে। মহাখালী থেকে গুলশান যাচ্ছে তদ্রুপ সময় ব্যয় করে। একটা সময় ছাত্ররা সাইক্লিং করতো, আশংকাজনকভাবে এখন সেটাও কমে গেছে পারিবারিকভাবে নিরুৎসাহিত করার জন্য।

অচিরেই সরকারী ও বেসরকারী এমন কিছু উদ্যোগ নেয়া উচিত সাইক্লিং উৎসাহিত করার জন্য। প্রয়োজনে এজন্য রাস্তা সংস্কার করে সাইকেলের জন্য আলাদা লেন করা যেতে পারে। পরিবেশ বান্ধব সাইকেল আমাদের ফিরিয়ে দিতে পারে একটা জ্যামমুক্ত নগরী।

কৃতজ্ঞতা : ব্লগার কৌশিক

সাইকেল অর্থাৎ বাইসাইকেল চালানো হাঁটা এবং সাঁতার কাটার মত একটি উৎকৃষ্ট ব্যায়াম। নিয়মিত সাইকেল চালানো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে রক্তের কলেস্টেরলের মাত্রা কমে। রক্তচাপও কমে। সপ্তাহে ৩৫ কিলোমিটারের মত পথ সাইকেল চালালে করোনারি হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে যায় ৫০ শতাংশেরও বেশি।

নিয়মিত সাইকেল চালানো শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক। সাইকেল চালালে শরীরের জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। ঘন্টায় মোটামুটি ২০ কিমি. গতিতে সাইকেল চালালে প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৫০০ থেকে ৫৫০ ক্যালরি শক্তি খরচ হয়। নিয়মিত সাইকেল চালালে মোটা লোকদের স্বাভাবিক ওজন ফিরে পাবার সম্ভাবনা ৮৫ শতাংশ।

২০০৮ সালে প্রিভেন্টিভ মেডিসিন নামক এক জার্ণালে অস্ট্রেলিয়ার লোকদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণার ফল এরূপই। দেখা গেছে, যারা তাদের কর্মক্ষেত্রে সাইকেল চালিয়ে যান তাদের মোটা হয়ে যাবার সম্ভাবনা মাত্র ৪০ শতাংশ। পক্ষান্তরে যারা তাদের কর্মস্থলে গাড়িতে চড়ে যান তাদের মোটা হয়ে যাবার সম্ভাবনা অনেক বেশি, প্রায় ৬১ শতাংশ। নিয়মিত সাইকেল চালালে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনাও কমে। রক্তচাপ, কলেষ্টেরল এবং শরীরের ওজন কমালে কিংবা শরীরের ওজন সঠিক রাখলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা কমে। নিয়মিত সাইকেল চালালে পাওয়া যাবে এসব উপকার। মুক্ত বাতাসে সাইকেল চালনায় শ্বাস প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়। ফলে ফুসফুসে বাড়তি অক্সিজেন সরবরাহ হয়। এতে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। শ্বাসনালীর অসুখ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

নিয়মিত সাইকেল চালানো পেশী গঠনে সহায়ক, বিশেষ করে নিম্নাংগের উরু, কাফ ও পিঠের পেশি। এতে উরু, কাফ ও নিতম্ব হয় সুগঠিত। নিয়মিত সাইকেল চালালে আর্থাইটিস হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।

কৃতজ্ঞতা এবং পুরো রিপোর্ট : ওয়েব : স্বাস্থ্য বাংলা

এছাড়া, গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ তারিখ দেশে সাইকেল চলাচল উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে শনিবার রাজধানীতে একটি সাইকেল র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব সাইক্লিং দিবস উপলক্ষে নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের আয়োজনে।

র‌্যালীর উদ্বোধন উপলক্ষে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে সাইকেল চলাচল উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ৬ দফা সুপারিশও তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে আছে- শহরের সর্বত্র সাইকেল চলাচলে রুট ও সাইকেল স্ট্যান্ড নির্মাণ, সাইকেলের ওপর আরোপিত কর হ্রাস, অফিসে চলাচলে সাইকেল ব্যবহারকে উৎসাহিত করা, সাইকেলের ফ্রি সার্ভিস চালু করা ইত্যাদি।

আয়োজকরা জানান, সাইকেল পরিবেশ বান্ধব দুষনমুক্ত বাহন। প্রতিদিন আধা ঘন্টা সাইক্লিং করলে রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস প্রভৃতি রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।

সৌজন্যে : বিডিনিউজ ২৪

এছাড়া আমাদের একজন ব্লগার, সাইকেল চালিয়ে ভ্রমন করে ফেলেছেন দেশের ৬৪টি জেলাই! এখানে পাবেন ওনাকে।

এবারে দেখুন, কিছু কিছু দেশে কিভাবে সাইক্লিং উৎসাহিত করা হচ্ছে, সাইকেল চালিয়ে আসো, বাসে তোমার সাথে সাথে বাই-সাইকেল নেবারও ব্যাবস্থা থাকছে, লম্বা পথ বাসে রাইড করে আবার সাইক্লিং :)





এবারে দেখুন, এটা ঢাকা শহরের একটা এলাকার ছবি, বাম পাশের নির্দিষ্ট করে দেওয়া লেনটা (ডানেও আছে) মূলত রিকশা লেন, সিএনজিও চলে, তবে রাস্তার মূল অংশ থেকে এটা বরাবরই নিরাপদ আর ফাঁকা থাকে। এভাবে যদি সম্ভব সব রাস্তায় আলাদা সাইকেল লেন করে দেওয়া যায়, তবে কেমন হয়?






(পায়ের একটা সমস্যার কারনে এখন গাড়ী ব্যাবহার করি এবং মুটিয়ে যাচ্ছি, তবে আমি ব্লগার মনসুর ভাই এর সহায়তায় পুরোনো ঢাকা থেকে একটা সাইকেল কিনেছিলাম একবছর আগে এবং এই পথ দিয়েই অফিস-বাসা যাতায়াত করতাম।)


বনানীর মোড় ক্রস করছেন একজন সাইকেল নিয়ে




এই লেখাটির উৎসাহ পেয়েছি বারিধারা-বসুন্ধরা এলাকার কিছু ফরেনারকে দেখে, কয়েকজন আছেন (নারী-পুরুষ উভয়ই) যাদের সবসময়ই সাইক্লিং করে বাসা-অফিস করতে দেখি।

মূল : আমার সাইট
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৬
২৭টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×