যজ্ঞনাথ সেই ছেলেবেলা থেকে দেবী ভক্ত, সকাল সন্ধে দেবী দর্শন আর পায়ে পেন্নাম ঠোকা চাইই চাই। এভাবেই চলছে বহুকাল। ঘর সংসার নেই, আছে দিনভর ভজন আর বুড়োদের সাথে আড্ডা মেরে বেড়ানো।
দেবী অবশেষে মুখ তুললেন এক ভোরে।
কাকডাকা ভোরে এসে সোজা নামলেন যজ্ঞনাথের গৃহে। যজ্ঞনাথ ঘুমুচ্ছিলো অঘোরে। ভোরেরদিকের ঘুমটা বেশ উপভোগ করে যজ্ঞনাথ।
দেবী এসে ডাকলেন, "ওহে বালক! জাগ্রত হও! দেখ আমি আসিয়াছি!"
যজ্ঞনাথ কাঁচা ঘুম ভেঙে উঠে এখটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েগিয়েছিলো। তার ওপর ঐ সম্মোধন - "বালক।"
নিজের আশে পাশে একবার ভালোকরে তাকিয়ে দেখে পাল্টা জানতে চাইলো, "কাকে বলছেন? আমাকে?"
দেবী তার ভক্তের এই মূর্খতায় একটু বিরক্তই হলেন, ভ্রু কুঁচকে বললেন, "আরে হ্যাঁ! এবারে ওঠো, পথ চলতে শুরু করো। দিকে দিকে ছড়াও আমার নাম-গান-মহিমা। তোমার তপস্যায় আমি মুগ্ধ হয়ে এসেছি। বলো কি বর চাও?"
বিরক্তিতে একটু অসহিষ্ণু ভাবেই বলে উঠলো যজ্ঞনাথ, "ক্ষ্যামা দাও মা, বয়েস হলো তিনকুড়ি দশ, এই বয়সে আর রাস্তায় ঘোরা সইবেনা আমার বুড়ো হাড়ে, তুমি বরং অন্য ভক্ত খুঁজে নাওগে যাও, সময়কালে আসোনি এখন এই বুড়ো ভক্তের হাড় ভাঙতে এয়েচো! তারচে'বরং ঘুমোতে দাও একটু, বর টর চাইনে!"
খানিক শাপান্ত করে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গে।
আয়েশ করে বাকি ঘুমটা সেরে যজ্ঞনাথ সকালে রোজকার মতই দেবী দর্শন সেরে পেন্নাম ঠুকে এলো।
আগে একটা আবেগ, আবেশ কাজ করলেও, এখন দেবী দর্শন আর পেন্নাম ঠোকাটা রোজকার একটা সাধারন রুটিনে দাঁড়িয়েছে আরকি...
ভোর রাতের দেবী দর্শন স্বপ্ন হিসাবেই ধরে নিয়েছে যজ্ঞনাথ বুড়ো।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪২