somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেগাসিরিয়াল: ঢাকা কলেজ এবং আমরা .........পর্ব৫

৩১ শে মার্চ, ২০১০ সকাল ১০:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্বগুলো:
পর্ব১: Click This Link
পর্ব২: Click This Link
পর্ব৩: Click This Link
পর্ব৪: Click This Link

প্রারম্ভিক কথা: রেগুলার লেখা হয়না, কিন্তু তাই বলে মেগাসিরিয়ালকে তো অন্য নাম দিতে পারিনা! ঢাকা কলেজে পড়ার সময়ের কিছু কথা নিয়ে শুরু করেছিলাম এই সিরিজ, আরেকবার দেখা যাক শেষ করতে পারি কিনা। ভাল লাগলে, সেটাই আমার প্রাপ্তি, কারণ কলেজে ঢুকার সময়ও কেউ টের পায়নি, বার হওয়ার সময়ও না। পড়ুন আর উপভোগ করুন দেশের একমাত্র বিজ্ঞাপনবিরতি বিহীন মেগাসিরিয়াল;)। শুরু হচ্ছে মেগাসিরিয়াল ঢাকা কলেজের ৫ম এপিসোড, ঢাকা কলেজ:৫; আরেকটু ছাত্ররাজনীতি!


আপনারা কেউ পড়েছেন জুলভার্নের From the Earth to the Moon (১৮৬৫)? ইম্পে বার্বিকেন চাঁদ লক্ষ্য করে একটা গোলা ছোড়েন বিশাল এক কামান থেকে, যার জন্য তিনি প্রায় ১ বছর প্রস্তুতি নেয়ার সময় পান, কারণ ১ বছর পর এক বিশেষসময় আসে যখন চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটতম দূরত্বে আসে। সেবার মিস করলে পরেরবার জন্য আবার অপেক্ষা করতে হয় ১৮ বছর।পুরান আমলের সায়েন্স ফিকশন, কিন্তু কি জন্য জানি নতুন গুলো থেকে ভাল লাগে।

জুল ভার্নের ঐ গল্পের মতই বাংলাদেশের প্রায় সব সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে (সম্মান পর্যায়ের) ৫/৬ বছর পর পর কোন বিশেষ ছাত্রসংগঠনের জন্য ঈদের মত আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। শুরু হয় আবার হল দখল, টেন্ডারবাজি, চাদাঁবাজির নেতৃতের পরিবর্তন। এই পর্যন্ত ২টা দেখেছি আমি, এর মাঝে একটা ছিল ঢাকা কলেজে!

সময়টা ২০০১ সালের আগস্ট/সেপ্টেম্বরের দিকে। দীর্ঘদিন না হওয়ার পর বোটানির ডেমো স্যার একগাদা প্র্যাকটিকাল ধরিয়ে ৪দিনের মধ্যে জমা দিতে বললেন।আমরা কয়েকজন মোটামুটি মরার টাইমও পাচ্ছিনা, এরকম অবস্হা। তখন তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসেছে মাত্র, কলেজে লীগের দূর্দান্ত প্রভাব, অন্য কোন ছাত্রসংগঠনের উপস্হিতিও নেই কলেজে। এমন অবস্হায় একদিন ক্ষমতার দখল নিতে কলেজে দীর্ঘদিন পর সদলবলে হাজির হল ছাত্রদলের সুযোগ্য নেতাকর্মীরা!

চোখের পলকে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে গেল। কেউ কিছু বোঝার আগেই ছাত্রদল ঝাপিয়ে পড়ল লীগের পাতি/মহা নেতাদের উপর। আমরা তিনজন তখন জুওলজি ডিপার্টমেন্টের এক ছোট রুমে বসে বোটানি প্র্যাকটিকালের ছবি আঁকছিলাম, অবস্হা সুবিধার না দেখে উঠে রুমের দরজা বন্ধ করে দিলাম। এতেই বেচে যাই সেদিন। দরজার ফাক দিয়ে নিজের চোখে দেখলাম লীগ না দল কে জানে, বড় বড় রামদা নিয়ে হেটে যাচ্ছিল কলেজের করিডর দিয়ে। ইটপাটকেল ছোড়ার শব্দ অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেয়েছি।

সেদিনও দুপুরে পড়া ছিল এলিফ্যান্ট রোডে। তিনটার দিকে যখন ঐ রুম থেকে বের হই, কলেজ স্তব্দ, কোথাও কাউকে চোখে পড়লনা। পরে ইমাম স্যারের বাসায় পড়তে গিয়ে শুনলাম, ঐ টাইমে পুলিশ এসে ঢাকা কলেজ/নিউমার্কেট ঐ এলাকায় সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই নাকি ধরে লরিতে তুলে থানায় নিয়ে গেছে (প্রায় কয়েকশজনকে নাকি)! ডেমো স্যারকে একগাদা প্র্যাকটিকাল দেয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ! কয়টা গেন্জির দোকানে চাঁদাবাজি নেতৃত্ব পাওয়ার জন্য কি প্রানান্ত চেষ্টা দুই ছাত্রসংগঠনের;)




লেখার সময় কম আজ, আমার কেমিস্ট্রি ল্যাবের সবচেয়ে বড় শয়তানির কথাটা বলেই শেষ করছি আজ;)। কেমিস্ট্রি ল্যাবে খুব মজার একটা এক্সপেরিমেন্ট ছিল সোডিয়ামের সাথে পানির রিএকশন, পানির স্পর্শ পেলেই স্পার্ক করে উঠত অত্যন্ত সক্রিয় ধাতু সোডিয়াম, আগুনই ধরে যেত, সেজন্যই একে সম্ভবত কেরোসিনের নিচে ডুবিয়ে রাখা হত। ডেমো স্যাররা সোডিয়াম রাখতেন ল্যাবের ভেতরে এক আলমারিতে। আমার এক ক্লাশমেট একদিন সেই আলমারি থেকে বেশ বড়সড় একটুকরা সোডিয়াম চুরি করে নিয়ে আসে, কাগজের টুকরায় পেঁচিয়ে বাইরে আনে। এতবড় টুকরা পুকুরে ফেলে মজা কমাতে চাচ্ছিলাম না। তো করলাম কি, নতুন বোটানি বিল্ডিংএর পাশের ড্রেনে ফেলব ঠিক করলাম।

ড্রেনে পানি নামে যেটা ছিল সেটার ঘনত্ব বুড়িগংগার পানির চেয়েও ঘন, সোডিয়াম ফেললে, যাই হোক পানির সাথে টাচ পাবেনা। তো আধালিটার খাবার পানি ঢাললাম ড্রেনে। তারপর আমার ঐ ক্লাশমেট সোডিয়ামের টুকরাটা ঐ পানিতে ফেলে দিল দৌড়, সাথে আমিও। দূর থেকে দেখলাম বেশ শব্দ হতে হতে বেশ ধোয়াও বের হচ্ছে, একপর্যায়ে ককটেলের মত সাউন্ড করে বেশ বড় একটা আগুন জ্বলে ফাটল টুকরাটা! দূর থেকে দেখলাম, পুলিশের লরিতে একজনের হাত থেকে চায়ের কাঁপ পড়ে গেছে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে!

নাহ শয়তানিটা বেশিই হয়ে গিয়েছিল!;)



বি.দ্র: আমার খুব প্রিয় জায়গা ছিল কলেজের পুকুরপাড়টা, একটা ছবি দিলাম, কালকে তোলা (খুব একটা ভাল ছবি তুলতে পারিনা, সেজন্য আমি সরি:()। কারেন্টের অবস্হা শোচনীয়, আবার কবে লিখতে পারব কে জানে? ছাত্রদলের কীর্তি তেমন একটা দেখে যেতে পারিনি কলেজে, কারো জানা থাকলে শেয়ার করুন। আপনাদের কথাও শেয়ার করুন আমার সাথে। ধন্যবাদ সবাইকে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১২ সকাল ৭:৫১
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×