১) গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশের সোনার ডিম পাড়া হাঁস, উন্নয়নের চাবিকাঠি - এসব কথা আশির দশক থেকেই শুনছি। বাংলাদেশের আয়ের একটা বড় অংশ এখান থেকে আসে বটে। কিন্তু বাংলাদেশের এই শিল্পের আসল ট্রাম্প কার্ড কি? এখানকার সস্তা শ্রম, যা এখন দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম খরচের।
কিন্তু সস্তা শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে ম্যাক্সিমাম মুনাফার হিসাব করতে গিয়ে বিজিএমইএ, এফবিসিসিআই এর স্যুটেড বুটেড ব্যবসায়ী নেতারা সম্ভবত তাদের জীবনকেও সস্তা বলে মনে করেন। অল্প খরচ করে ফায়ার এস্পেপ বসাতে তাদের অনাগ্রহই এর প্রমাণ।
যে ১১২টি প্রাণ ঝরে গেলো, এর জন্য ১১২টি হত্যার অভিযোগ দেখতে চাই এই গার্মেন্টসের খুনী মালিকটির বিরুদ্ধে। আর সামাজিকভাবে এই লোভী ব্যবসায়ীদের বর্জন করা হোক। যতোই এরা ডলার কামিয়ে আনুক না কেনো, সেই ডলার আসলে এরকম শয়ে শয়ে শ্রমিকের রক্তে ভেজা।
২) আশুলিয়ায় ১১২ জন, চট্টগ্রামে ২১ জন মারা গেলো, সব মিলিয়ে এক ধাক্কাতেই গাজা কিংবা হারিকেন স্যান্ডিতে নিহত লোক্জনের সংখ্যার সমান কিংবা বেশি। অথচ কয়েক হাজার মাইল দূরের ফিলিস্তিনের জন্য যাদের মন কেঁদে নদীর স্রোত বইয়ে দিয়েছিলো, তারা রহস্যজনকভাবে গায়েব।
বাঙালির এ এক অদ্ভুত স্বভাব ... বিদেশীদের জন্য মনে দরদের অভাব নাই, কিন্তু নিজের স্বজাতিকে সচেতনভাবেই অবহেলা করা হবে, গাজায় আরবে কে মরলো তা নিয়ে যে জোশ মনে ও ফেইসবুকে দেখাবে, নিজ দেশের গরীব ১১২ জন পোশাকশ্রমিকের মৃত্যুকে "ও আচ্ছা" বলে এড়িয়ে যাবে!!
এই রকমের স্বজাতিবিদ্বেষ দুনিয়ার আর কোথাও কি আছে?
৩) মুনাফার লোভে অন্ধ গার্মেন্টস মালিক আর চোট্টা কন্ট্রাকটরকে অভিযুক্ত না করে বাংলাদেশের দুই দল একে অপরকে অভিযুক্ত করে রাজনৈতিক ইস্যু বানাচ্ছে। এই ট্র্যাজেডিকেও এভাবে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সবার আগে এই দুই খুনির (গার্মেন্ট্সমালিক ও কন্ট্রাক্টর) বিচার চাই এরকম শতাধিক হত্যার জন্য।
(মূল লেখাটি এখানে )