somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

যে ভাবে আমি আওয়ামীলীগ ক্যাডারদের হাতে মার খেলাম

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ঢাকাটাইমস থেকে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় যাই। শুক্রবার রাত দশটার দিকে আমরা রাতের খাবার খেতে কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়ায় হোটেলে যাই। হোটেল থেকে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী মসিউর রহমান খানের নেতাকর্মী পরিচয়ে সন্ত্রাসী ও ক্যাডাররা আমাদের উপর আক্রমণ করে।

আচমকা তারা আক্রমন করলো আমাদের উপর। আমাকে খুব মারল। লাঠি, বাঁশ আর গজারি দিয়ে। আমি কিছুতেই ভেবে পাচ্ছি না- আমার দোষটা কি? কি অপরাধ করলাম। এসেছিলাম অফিসের কাজে। কাশিয়ানীর পোনা গ্রামের সব লোক একসাথে হয়েছে। আমার সাথে থাকা রিপোর্টার'রা চিৎকার করে বলছে- ভাই আমরা সাংবাদিক। আমরা এইখানে কাজে আসছি। ক্ষিপ্ত মেজাজে আমাকে মারল।




পোনা গ্রামের লোকজন ঠিক করলো- আমাদের সকলকে মেরে ফেলবে। আর সবাইকে বলবে- ডাকাতি করতে আসছিল- হাতে-নাতে ধরা পড়েছে। জনতা ধরে মেরে ফেলেছে। ঠিক এই সময় ফায়েকুজ্জামান নামে একজন এসে আমাদের বলল- এরা ভূয়া সাংবাদিক। নির্বাচন কমিশন থেকে দেয়া আইডি এবং অফিসের আইডি কার্ডও ওদের দেখালাম। অশিক্ষিত বর্বর লোক গুলো আমাকে খুব মারল।

মটরসাইকেল থেকে টেনে হিচড়ে নামিয়ে কমপক্ষে পনের-বিশ জন আমাকে খুব মারে। এর মধ্যে একজন আমাকে বাঁশ দিয়ে মাথায় প্রচন্ড শক্তি দিয়ে আঘাত করে। আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যাই। তখন একজন দূর থেকে দৌড়ে দৌড়ে এসে আমার বুকে মুখে লাথথি দিচ্ছিল। যাই হোক, সেইখানেই মরে যাওয়ার কথা ছিল- কিন্তু আমি মরিনি। আমার সাথে থাকা সাংবাদিকরা বেশ মারের স্বীকার হয়।

আমাদের প্রধান রিপোর্টার হাবীবুল্লাল ফাহাদ (ভাই) দুইহাত উপরে তুলে আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। তিনি আর একটু দেরী করলে তারা আমাকে মেরেই ফেলত।

আমার জামা ছিড়ে গিয়েছিল। আমি খালি গায় দাঁড়িয়ে আছি। বমি পাচ্ছিল। মাথা ঘুরছিল। গলা শুকিয়ে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল এক গ্লাস পানি না পেলে আমি এখনই মরে যাবো। এত অসংখ্য মানুষ কার কাছে পানি চাইবো বুঝতে পারছিলাম না। আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একজন বৃদ্ধাকে বললাম, আমাকে এক গ্লাস পানি দেন। সেই বৃদ্ধা পানি না দিয়ে বরং চিৎকার করে বললেন, চুপ হারামাজাদা। পানি চাইবি না। তুই ডাকাত। পাশের এক লোকের দিকে তাকিয়ে বললেন- ওর পকেট চেক কর পিস্তল পাবি।

প্রায় আধা ঘন্টা পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্বার করে কাশিয়ানী থানায় নিয়ে যান। সেখানে পুলিশ আমাদের সব কথা শুনে লকারে আটকে রাখেন। কারণ আমরা থানায় পৌঁছানোর আগেই ক্ষমতাবান একজন থানার ওসিকে ফোন করে আমাদের না ছাড়তে বলে দেন। বিনা অপরাধে সারারাত হাজতে থাকলাম। আমার ক্ষত স্থান থেকে রক্ত পড়ছিল- আমাকে ফাস্ট এইডও দেয়া হয়নি। আমার ক্ষত স্থান থেকে তখনও রক্ত পড়ছিল।



হাজতের ছোট্র একটা ঘরে- আমরা বারোজন লোক। পাশেই খোলা বাথরুম। বিকট গন্ধ আসছিল। আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম। আমাদের ধম বন্ধ হয়ে আসছিল। থানার লোকদের কাছে পানি চেয়েও পাইনি। বরং ধমক দিয়েছে। কি প্রচন্ড গরম।

এদিকে আমাদের প্রিয় সম্পাদক তিন মাস আগে গাড়ি এক্সিডেন্ট করেন। তার পায়ে প্লাস্টার। তিনি সকালে আমাদের খবর পাওয়ার সাথে সাথে থানার ওসি আমাদের স্বসম্মানে ছেড়ে দেন। এবং ছেড়ে দেয়ার আগে চা নাস্তা খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যান।

পোনা গ্রামের মানুষ জন খুব হিংস্র ও নিষ্ঠুর। বিনা অপরাধে মার খেলাম। সারারাত ব্যাথায় ঘুমাতে পারছি না। ঢাকায় ফিরে এসে ডাক্তার দেখালাম। ওষুধ খাচ্ছি। আমার মা কাঁদছে।

http://www.dhakatimes24.com/2016/04/23/110349

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৭
৪৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×