কোথা থেকে এলো এই পৃথিবী? কি করে হলো প্রাণের উৎপত্তি? সৌরজগৎ সৃষ্টির মোটামুটি ১০০ মিলিয়ন বছর পর একগুচ্ছ সংঘর্ষের ফল হলো পৃথিবী। পাঁচটি বড় বরফ যুগ দেখা যায় পৃথিবীর ইতিহাসে। আমরা যারা এ যুগে জন্মেছি তারা খুবই ভাগ্যবান। ভাগ্যবান নানা কারনে। তার মধ্যে একটা বড় কারণ হলো এই যে, মানুষ এত হাজার হাজার বছর ধরে সভ্য হয়ে উঠেছে, এত কথা জেনেছ, এত রকম কলকব্জা আবিষ্কার করেছে তার সব আজ আমাদের হাতের কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাদের পূর্ব পুরুষরাতো এত সব কিছুর কথা মোটেই জানতো না। তাদের জীবন ছিল আমাদের তুলনায় একেবারে সাদামাটা।
বিশ্বের ইতিহাস বলতে আসলে মানুষের ইতিহাস বোঝানো হয়। ইসলাম ধর্মে স্পষ্ট করে বর্ননা করা আছে কিভাবে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে এবং কিভাবে পৃথিবিতে এসে বসবাস করা শুরু করেছে। মানুষ আদিম কাল থেকে নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতো। আজ থেকে ৪০০০ মিলিয়ান বছর আগে পৃথিবীর জন্ম হয়।আর পৃথীবির দেহ গড়ে তুলতে সময় লাগে ২০০০ মিলিয়ান বছর। জন্মের বহু বছর পরে পৃথিবীতে বায়ুমন্ডল ও জলবায়ু সৃষ্টি হয়। সৃষ্টির পর থেকে পৃথিবীর জলবায়ু সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়েই চলেছে। কখোনো তীব্র শীত, কখনো তীব্র গরম, আবার কখনো দীর্ঘস্থায়ী তুষার যুগ; সাথে সাথে ভাঙ্গা – গড়ার পালা। প্রচুর পরিমানে অগ্নুৎপাত হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয় পর্বতমালা। প্রথম যেদিন আকাশ থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি ঝরে পড়লো সেদিন জন্ম হল সাগরের। সাগরে উদ্ভব হয় প্রাণের (সামুদ্রিক এককোষী অমেরুদন্ডী প্রাণী)। স্থলে কোনো প্রকার প্রাণী ছিল না; জলে জেলীমাছ, তারামাছ, স্পঞ্জ ও পোকা বাস করত। কালক্রমে সমুদ্রে মেরুদন্ডী প্রণীর (মাছের পূর্বপুরুষ) আবির্ভাব হয় এবং উদ্ভিদ – ভোজী অমেরুদন্ডী প্রাণী (মাইট, মাকড়সা, কেন্নো, কীটপতঙ্গ) সমুদ্র ত্যাগ করে স্থলে অভ্যস্ত হয়। স্থলভাগে জন্তু ও উদ্ভিদের সংখ্যা বাড়ে, সামুদ্রিক প্রাণীর আধিপত্য শেষ হয়। কীটপতঙ্গ সরীসৃপেরা উৎকর্ষতা লাভ করে। সরীসৃপদের মধ্যে থেকে উষ্ণ রক্ত বিশিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রাণী প্রথম আবির্ভূত হয়। স্তন্যপায়ী প্রাণীরা বনে বাস করত। কালক্রমে আদিম বানর ও গিবনদের আবির্ভাব হয়। এই বানরগুলির মধ্যে কিছু কিছু বড় বানরের লেজ ছিল না।
কীট পতঙ্গ প্রকৃতির এক বড় সম্পদ। মানুষের জীবন ও সভ্যতা কীট পতঙ্গের অবদানের উপর বেশ নির্ভরশীল। পৃথিবীর প্রায় চার ভাগের তিন ভাগ জুরেই পানি। পানিতেই জীবনের প্রথম আবির্ভাব ঘটে। সূর্য সৃষ্টির সময়েই পৃথিবীর সৃষ্টি বলে ধারনা করা হয়। আজ থেকে প্রায় পাচঁশত কোটি বছর আগে পৃথিবীর জন্ম। চাঁদের মতো একটি বায়ুমন্ডল পৃথিবীকে আবৃত্ত করে রেখেছে। বায়ু মন্ডলে আছে প্রধানত নাইট্রেজেন ও অক্সিজেন। এছাড়া সামান্য কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নিষ্ক্রিয় গ্যাস, জলীয় বাষ্প রয়েছে।
পৃথিবীর পরিবর্তন ঘটছে এবং ঘটবে। কোনো কোনো পরিবর্তন ধীরে ধীরে এসেছে, আবার কোনটি এসেছে অনেক দ্রুত। যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন এই পরিবর্তন চলতেই থাকবে। এ পৃথিবীতে আমরা যত মানুষ বসবাস করছি আমরা কেউই আমাদের নিজেদের স্রষ্টা নই। পৃথিবী, চন্দ্র, গ্রহ, উপগ্রহ এবং সূর্য সহ সমগ্র সৌরজগত, অন্যান্য তারকা, নক্ষত্রপুঞ্জ, রাশি চক্র এবং এই সমস্ত তারকারাজি মিলে যেসব কোটি কোটি গ্যালাক্সি (Galaxy) আছে, সেসব কিছু নিয়েই এই মহাবিশ্ব।
মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষকে যা কিছু নিয়ামত হিসাবে দান করেছেন ওগুলোর মধ্যে জ্ঞানই প্রধানতম। মানুষ বিশ্ব বিধানের অন্তগত এক মহা জীবনের অংশ, মনুষ্যত্ব ও ভালবাসার তাই কোনো ক্ষয় নেই, মনুষ্যধর্ম ঠিক মতো বিকশিত হলে ধূলিময় পৃথিবীতেই স্বর্গরাজ্য আনা সম্ভব। সময়ের কখন শুরু আর কখন শেষ তা নিয়ে মানুষ ভাবছে বহুকাল থেকে। মহা বিশ্বের যখন শুরু তখন থেকেই সময়ের শুরু। কোন ঘটনা কত আগে, আর কোন ঘটনা কত পরে ঘটেছে তা নির্ধারন করার জণ্য আমরা সময়ে মোটামোটি ভাগ কের নিই- যার নাম হচ্ছে বছর, মাস, দিন, ঘন্টা, মিনিট ইত্যাদি। খ্রিষ্টের জন্মগ্রহণের বছর থেকে এই অব্দের গণনা শুরু হয়েছে।
এই ধারাবাহিক গুলোতে সুপ্রচীন কাল থেকে বতর্মান সময় পযর্ন্ত পৃথিবীর মানুষের অভিজ্ঞতা ও অর্জন সমুহের অনুসন্ধান করা হয়েছে। যেমন- বিজ্ঞান, রাজনৈতিক, ভুগোল, ধর্ম, সাহিত্য, শিক্ষা, জন্ম-মৃত্যু, স্থাপত্য, দর্শন, লোকর্চ্চা ও লোক প্রতিষ্ঠান, সংস্কারম দেশীয় ও ঔপনিবেশক প্রশাসন, সমাজ, দেশ, অর্থনীতি, আবিষ্কার ও আবিষ্কারক, ইতিহাস ও প্রযুক্তি বিষয়ক নানা বিষয় অর্ন্তভূক্ত করা হবে। এসব কিছু নিয়ে অসংখ্যক তথ্য আর তত্ত্ব এখানে থাকবে।
আশা করি এই ধারাবাহিকটি আপনাদের কাজে লাগবে। অনেক আনন্দ পাবেন। আর আপনাদের ভালো লাগলে আমার কষ্ট সার্থক হবে।
(লেখায় কোনো ভুল থাকলে অপমান অপদস্ত না করে সুন্দর করে বুঝিয়ে দিন। ভুল সংশোধন করে দেন।)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:০৩