somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমি মরে গেছি !!!

২৩ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি মরে যাওয়ার অনেক পরে বুঝতে পারলাম যে আমি মরে গেছি।
আমার এটুকু মনে আছে, মরার আগে আমার মন মেজাজ অত্যন্ত খারাপ ছিল। যাই হোক, বর্তমানের কথা বলি- অন্ধকার একটা জায়গায় শুয়ে আছি, আশে পাশে কেউ নেই। জায়গাটা অন্ধকার হলেও সব কিছু পরিস্কার দেখতে পারছি। হঠাৎ দুইটা অদ্ভুত লোক আসলো আমার সামনে। কেন জানি লোক দুইটাকে দেখে মেজাজ গেলে আরও খারাপ হয়ে। (তখনও আমি বুঝতে পারি নি, যে আমি মরে গেছি) অদ্ভুত লোক দুইটা আমার কাছে এসে বলল- দুই-তিনটা প্রশ্ন করবো- তাড়াতাড়ি উত্তর দিবে। আমাদের সময় খুব কম। আরও অনেকের কাছে যেতে হবে। বেয়াদপ দুইটার চ্যাটাং চ্যাটাং কথা শুনে- আমার মেজাজ হয়ে গেল আরো খারাপ। রাগে শরীরিটা জ্বলছে।

আমি বললাম, আচ্ছা প্রশ্ন করেন কিন্তু তার আগে আপনাদের পরিচয়টা দেন। আমার কথা শুনেই লোক দুইজন অদ্ভুতভাবে আমার দিকে তাকালো। যেন আমি তাদের অপমান করেছি। দুইজনের মধ্যে যে লোকটা একটু বেশী লম্বা সে চিবিয়ে চিবিয়ে বললো, মশকরা করো? আমাদের চিনতে পারো নি! আমি বললাম- দেখেন আমার মেজাজ খুব বেশি বিক্ষিপ্ত, এখন আমি মসকরা করার মত অবস্থায় নাই। দুইজনের মধ্যে যে লোকটার দাঁত উঁচু সেই লোকটা বলল- তুই মরে গেছিস। এটা কবর আর আমরা আল্লাহর ফেরেশতা, আমার নাম মুনকার আর উনার নাম নকীর।

মুনকার আর নকীর সাহেবের কথা শুনে আমি নিশ্চিত হলাম যে আমি মরে গেছি। তারপর থেকেই এক ধরনের আনন্দ পেতে শুরু করলাম। মুনকার সাহেব আমাকে প্রশ্ন করলেন- বল, তোর রব কে? আমি মাথা চুলকে বললাম- ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই কথা বলতেই- তারা দুই জন এক আকাশ সমান অবাক হয়ে গেলেন! নকীর সাহেব চোখ মুখ খিঁচিয়ে আমার দিকে কিটমিটিয়ে বললেন- মুনকারের চেয়ে আমার রাগ অনেক বেশী- সুজাসুজি উত্তর দে। তারপর তরে মজা দেখাচ্ছি। ডোনাল্ড ট্রাম্প তোর গুহ্যদ্বার দিয়ে ঢুকাবো। বাইড়াইয়া তোর হাড্ডি ছুটায়ে ফেলব হারামজাদা। হঠাৎ আমার খুব রাগ লাগল । হাতের কাছে পেলাম একটা শক্র মোটা লাঠি- সেই লাঠি দিয়ে দুইটাকে খুব মারলাম। ইচ্ছে মতো মারলাম। তারপর মুনকার আর নকীর কোথায় যেনো পালিয়ে গেল।

হঠাৎ করে সবকিছু খুব বিষাদ লাগছে। আমি চিন্তা করতে লাগলাম আমার প্রিয় মানুষদের কথা। তারা কে কোথায় আছে? কেমন আছে? আমার সাথে একটা মেয়ের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল- সেই মেয়েটাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে। কথা ছিল সেই মেয়েটার বু্কে মাথা রেখে একদিন খুব কাঁদবো। সেই মেয়েটার প্রতি আমার কত ভালোবাসা ছিল- তা কোনোদিন মেয়েটাকে আর বলা হবে না। মেয়েটা আমাকে এক আকশ ভালোবাসা নিয়ে গান শোনাতো- "মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না...

আমার চিন্তায় ছেদ পড়ল। ওই দুইটা 'বদ' আবার আসছে। একটার হাতে বেন্ডেজ আর একটার কপালে বেন্ডেজ এবং ঠোঁট ফুলে আছে। মাইরটা ভালোই দিছি। আমি তাদের বললাম, আবার কেন? তারা বলল- আমাদের হাজার বছরের ইতিহাসে আপনার মত 'পিস' একটাও পাইনি। আপনি তো রীতি মত মৃত্যুর পরের জগতে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছেন। আমি বললম- পাকনামো বাদ দেন কাজের কথায় আসেন। তারা বলল- আপনাকে ছেড়ে দেওয়া হলো। এখন আপনি যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারবেন। আপনাকে কেউ বাঁধা দিবে না। নতুন আইন লেখা হবে তারপর আপনাকে ধরা হবে, বিচার হবে, শাস্তি হবে। ততদিন আপনি মুক্ত।

এই হচ্ছে আমার ভূত হওয়ার কাহিনী। কেউ আমাকে দেখে না কিন্তু আমি সবাইকে দেখি। খুব মেজাজ খারাপ হলে দুই একটাকে চড় থাপ্পড় দেই। চড় থাপ্পড় খেয়ে মাগো-বাবাগো বলে এমন দৌড় দেয়। খুব মজা লাগে।

জীবিত থাকা অবস্থায় যে রকম জেনেছিলাম, ভূত সমন্ধে- সব ভুল জেনেছিলাম। ভূত কারো রক্ত খায় না। আসলে ভূতের কোনো ক্ষুধাবোধ নেই। ভূতরা কারো ভালো বা মন্দ করতে পারে না। শুধু শুধু মানূষ পৃথিবীতে বাজে কথা বলে ভূতদের নিয়ে। এটা আমার মোটেও পছন্দ না। ভূত হয়ে এখন আমি খুব সুখে আছি। ইচ্ছা করলেই যেখানে খুশি যেতে পারি। ভিসা পাসপোর্ট লাগে না। অবশ্য আমি দূরে কোথাও যাই না। সারাক্ষণ প্রিয় মানুষদের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করি। কি যে আনন্দ পাই! এত আনন্দের কারনে মাঝে মাঝে চোখ ভিজে ওঠে। ভূতদের সবচেয়ে কষ্ট হলো তারা খুব একা। বাংলা সাহিত্যের অনেক লেখকরা বলেন- ভূতরা গাছে থাকে অথবা পুরোনো ভাঙ্গা বাড়িতে থাকে। হা হা হা...। লেখকগুলো কতো বোকা হয় আর নির্বোধ। ভূতরা দূর থেকেই সব স্পষ্ট দেখতে পায়। ক্রিকেট খেলা শুরু হওয়ার আগেই প্রতিটা ভূত জানে আজ কে জিতবে। যে কোনো মানুষের দিকে তাকালেই বলে দিতে পারে- তার মনের গোপন কথা গুলো কি কি!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:১৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×