সাপের খোলস আছে তেমনি দুষ্টলোকদের খোলস হলো ধর্ম। দুষ্টলোকরা ধর্মকে ব্যবহার করে সাধু সাঁজার জন্য। আমাদের সমাজে বেশির ভাগ লোক হলো দুষ্ট। এইসব দুষ্টলোক আবার বিরাট ধার্মিক। আমি বলতে চাই- কিছু ধার্মিক দুষ্টলোক এবং ভন্ড হয়। দয়া করে আবার আমাকে নাস্তিক ভেবে গালাগাল দিবেন না। আগে আমার কথা শূনুন, বুঝতে চেষ্টা করুন। এই সব তথাকথিত ধার্মিকের চেয়ে সরাসরি নাস্তিক অনেক ভালো। নামাজ পড়ছে- মিথ্যা বলছে। যখন ধরা খেয়ে যায় তখন বলে ভাই চাকরির কারনে মিথ্যা বলতে হয়। ঘুষ খাচ্ছে, শেষে নামাজ পড়তে যাচ্ছে। আমি নিজের চোখে দেখেছি- এক লোক মসজিদ থেকে নামাজ শেষ করে এক মেয়ের দিকে লোভী চোখে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা তার নাতীর সমান। একজন মানুষ নামাজ পড়লেই তাকে ভালো বলা যাবে না। এবং একজন মানুষ নামাজ না পড়লেই খারাপ হয়ে যায় না।
এক ছেলে গ্রাম থেকে শহরে এসেছে। শহরের কিছুই চিনে না। দেখুন সে কিভাবে ধর্মকে ব্যবহার করে- সেই ছেলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করলো মসজিদে গিয়ে। ভোরে মসজিদে ফযরের নামাজও পড়ছে। আল্লাহর দিদার পাওয়ার জন্য সে নামাজ পড়ছে না। মসজিদে যারা নামাজ পড়ে এদের বেশির ভাগই বুড়ো। বুড়োরা ছেলেকে দেখে অবাক। সব বুড়োরা তার উপর খুশি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ছেলেটি সবার সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে ফেলেছে। সব গুলো বুড়ো যখন জানলো- গ্রাম থেকে এসেছে, তখন তারা ছেলেটি টিউশনির ব্যবস্থা করে দিল এবং কিছুদিন পর একটা চাকরি। ছেলেটি এইভাবে ধর্মকে ব্যবহার করল। চাকরি হাসিল করার পর সে নামাজ ছেড়ে দিল। ছেলেটি নিজেই আমাকে এই ঘটনা বলেছে। পরে চাকরি জীবনে ছেলেটি চুরী করে অনেক টাকার মালিক হয়। উত্তরাতে জায়গা কিনে। কিছু দিনের মধ্যে তার পাঁচ তলা বাড়ির কাজ শুরু হবে।
আমি আগে একটা বাইং হাউজে চাকরি করতাম। সেখানে এক ভন্ড ছিল। অফিসে বসে কোরআন পড়তো। অফিসের সবাই তাকে খুব ভালোবাসতো, বলতো- ছেলেটি কত ভালো। নামাজ পড়তে পড়তে কপালে দাগ করে ফেলেছে। অফিসের বস আমাকে বলল, তোমার পাশের টেবিলের লোক নামাজ পড়ে, তার কাছ থেকে কিছু শিখো। লোকটি কোনো কাজই পারতো না। কাজ শেখার কোনো আগ্রহও ছিল না। কিন্তু চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলতো। ল্যাপটপ ছেড়ে সূরা'র বাংলা অনুবাদ শুনতো। (অফিসে কেউ না থাকলে ল্যাপটপে 'অন্য জিনিস' দেখেত)। এই লোকের ভন্ডামি ধরা পড়লো- ছয় মাস পর। আসলে সে যে কাজে জয়েন করেছে, সেই কাজের কিছুই জানে না। প্রতিদিন কাজের ব্যস্ততা দেখাতো আসলে কোনো কাজই করতো না। ফাঁকি বাজ। নামাজ পড়ে সবার চোখে ভালো সাঁজতে চেয়েছিল। এখানেও দেখা যায় দুষ্টলোকেরা ধর্ম ব্যবহার করে হাতিয়ার হিসেবে।
আমার এক পরিচিত নামাজ পড়তে পড়তে কপালে দাগ করে ফেলেছে। সময় মতো নামাজ পড়তে না পারলে- তার খুব অস্থির লাগে। সে নকল জিনিস বিক্রি করে। গ্রাম থেকে বোকা এবং দরিদ্র মানুষ গুলো তার দোকানে গেলে- সে ভালো মানূষের অভিনয় করে তাদের কাছে নকল সেলাই মেশিন বিক্রি করে। তিনি তার মাথায় টুপি দেখিয়ে বলেন, এই মাত্র নামাজ পড়ে আসলাম মিথ্যা বলব না- একদম আসল মেশিন। আসলে ১০০% নকল। এইভাবে সে অনেক টাকার মালিক হয়েছে। কত কষ্ট করে একজন গ্রামের মানুষ টাকা জমিয়ে একটা সেলাই মেশিন কিনে। এই মেশিন নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন। এক ধার্মিক তাকে ধোকা দিল।
এইবার দুষ্ট এক মহিলার কথা বলি। সে অফিসে নতুন এসেই খুব হইচৈ শুরু করে দিল। আমার নামাজের জায়গা লাগবেই। নামাজ ছাড়া আমি থাকতে পারব না। তাকে একটা নামাজের জন্য আলাদা রুম দেয়া হলো। সে রুমে দেয়ালে দুই তিনটা খুব সুন্দর পেন্টিং ছিল। আমি মাঝে মাঝে খুব মন দিয়ে দেয়ালের ছবি গুলো দেখতাম। সে পেন্টিং গুলো- সরিয়ে ফেলল। এই সব পেন্টিং থাকলে নামাজ হবে না। আমি একটা পেন্টিং এর কথা বলি- জোছনা রাতে এক মা এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে তার শিশুকে কোলে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। চারপাশে গাছপালা। এই ছবি থাকলে নামাজ হবে না কেন? যাই হোক, এই মহিলা অফিসের কামকাজ কিছুই পারে না। কাজ না পারাটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু কাজ শিখার আগ্রহ না থাকা অবশ্যই দোষের। এই মহিলা সব সময় হিজাব পড়ে থাকে। বেশ কয়েকবার তার হাতে তজবিও দেখেছি। একদিন এই মহিলাকে দেখি এক লোকের সাথে রেস্টুরেন্টে। খুবই উগ্র পোশাকে। আমি জানি তার স্বামী মধ্যপ্রাচ্যের কোনো এক দেশে থাকে। আর ঐ লোকের সাথে তার সম্পর্কটা সহজ সরল সম্পর্ক না। তাদের বসার ভঙ্গি দেখেই বুঝা যায়। কাজেই দেখা যায় সর্বক্ষেত্রেই ধার্মিকেরা মানূষকে ঠকাচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে হয়- পৃথিবীতে ধর্ম না থাকলেই বুঝি ভালো হতো। কিছু লোক ঠিকই বলে আসল ধর্ম হলো মানব ধর্ম।
পৃথিবীর সবচেয়ে আদিম নেশাগুলির আফিম অন্যতম। ধর্মকে আফিমের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। এই সব নির্বোধ ধার্মিকেরাই ধর্মকে টিকিয়ে রাখবে নিজেদের স্বার্থে। অনেকদিন আগে এক হুজুর আমাকে বলেছিল- 'ধর্ম হইল আফিম। আর এই ধর্মই দেশটারে খাইল'। এই সব তথাকথিত ধার্মিক গুলো কত যে হাস্যকর কাজ কারবার করে। প্রচন্ড হাসি পায় আমার। একজন সমাজ বিজ্ঞানী বলেছিলেন- প্রতিটা ধার্মিক মুসলিম একজন ভাঁড়। অনেক ধার্মিককে দেখা যায়- প্রস্রাব করার পর 'কুলুপ' করতে। ব্যপারটা যথেষ্ট হাস্যকর। তারা ১০/১৫ মিনিট ধরে হাতে টিসু নিয়ে নুনুতে ঘষাঘষি করতে থাকে। করতেই থাকে। হা হা হা---। নুনুতে হাত রেখেই হাঁটে, বসে উঠে, জোরে কাশে, পা ডানে বামে নেয়। মিস্টার বিনের মতো কাজ। ধার্মিকদের কাছ থেকে চমৎকার বিনোদন পাওয়া যায়। দল বেঁধে চিল্লা করে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মসজিদ মাদ্রাসা অসৎ লোকের টাকায় হয়েছে। অসংখ্য মসজিদ মাদ্রাসা অসৎ লোকের টাকায় পরিচালিত হচ্ছে।
ইউটেব এ এইসব ধার্মিকদের বেশ কিছু ফানি ভিডিও আছে। দেখলে হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খেতে হয়। ওয়াজ গুলো শুনতে পারেন। চরম বিনোদন। এই যে শীতকাল শুরু হলো- এখন দেখবেন- ওয়াজ কারে কয়? প্রতিটা গ্রামে গ্রামে ওয়াজ হবে সারারাত ধরে। এই ওয়াজ থেকে গ্রামের মানুষের কি কি উপকার হয় কেউ আমাকে বলবেন? ৫০ হাজার এক লাখ টাকা দিয়ে এইসব আলেমদের ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। খুব রসালো ও সুড়সুড়ি টাইপ তাদের ওয়াজ। বিশ্বাস না করলে ইউটেব এ একবার শুনে দেখুন। ধার্মিকদের জন্য ওয়াজ রসালো ও সুড়সুড়ি কিন্তু একজন আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক মুক্তমনাদের জন্য বিনোদন। আমাদের দেশটা পিছিয়ে আছে এই ধর্মের কারনে। আজকের দুবাই এত উন্নত কেন? কারন দুবাই বুঝেছে ধর্মকে আকড়ে ধরলে- উন্নতি সম্ভব নয়। কাজেই দুবাই ধর্মকে একপাশে সরিয়ে রেখে- উন্নতির দিকে যাচ্ছে। 'মোকছেদুল মোমিন' বইটা যারা পড়েননি তারা পরে নিবেন। তারপর নিজেরাই চিন্তাভাবনা করে দেখুন। আর একটা বই আছে- স্বামী স্ত্রীর মধুর মিলন নামে।
আরেকটা বিনোদন পাবেন- 'ওরশ' এ। সেদিন রাস্তায় এক পোষ্টারে দেখলাম- ৬৩ দিন ব্যাপি ওরশ। মানূষের কি খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই? ওরশ করে দেশ আর দেশের মানূষের কি উপকার হয়? কোনো উপকার হয় না শুধু অল্প কিছু লোকের পকেট ভারী হয়। 'ওয়াজ মাহফিল' এ দেশের কোনো কল্যান হয়? হয় না। যারা সারারাত জেগে এই সব ওয়াজ মাহফিল/ওরশ থাকে তারা অবশ্যই নির্বোধ ধার্মিক। সরকার এদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয় না কেন? সরকার ব্যবস্থা নেয় না কারন তাহলে তাদের ভোট কম পড়ে যাবে। মাজার গুলোও ভন্ডামির চরম আখড়া। ধান্দাবাজির করার জায়গা মাজার। চোখ কান খোলা রাখলেই এদের ভন্ডামি আপনি দেখতে পারবেন। লাল সালু উপন্যাসটি পড়েছেন সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ'র? সরকার ইচ্ছা করেই এদের ভন্ডামি করার সুযোগ করের দেয়। কারন সরকার ধর্মভীরু। আমি ক্ষমতায় থাকলে- সব মাজার ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতাম। ওরশ আর ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ ঘোষনা করতাম। কাজ করে খাও, ভন্ডামি বাদ দাও।
যারা নামাজ পড়ে তারা সবাই কি ভন্ড? না কখনও না। আমার মা নামাজ পড়েন, সুরভি নামাজ পড়ে। কোটি কোটি মানূষ নামাজ পড়েন। তারা ভন্ড নয়। তারা মনে প্রানে এক আল্লাহর প্রার্থনা করেন। মহান আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উদ্দ্যেশ্য নেই। তারা আল্লাহকে ডাকেন ধান্দাবাজির উদ্দ্যেশে না। আর একটা কথা খুব বলতে ইচ্ছা করছে। সরকার বলেছে ৫০০ টি মডেল মসজিদ করবে। (সৌদি আরব হয়তো টাকা দিয়েছে) সত্যি কথা বলতে আমাদের মসজিদ দরকার নেই। অনেক মসজিদ আছে। আযানের সময় একসাথে ৫/৬ টা মসজিদের আযান শুনতে পাওয়া যায়। কাজেই আমাদের দরকার লাইব্রেরী। প্রতিটা এলাকায় এলাকায় লাইব্রেরী হলে আমরা একটা শক্তিশালী জাতি হয়ে উঠতে পারব। নেশাখোর মানূষদের সংখ্যা কমবে।
বিঃ দ্রঃ হুমায়ূন আহমেদ এর 'চোর' নাটকটা অবশ্যই দেখবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৭