আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সারা দেশের সচেতন নাগরিকরা চান উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখার জন্যই আবার আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় আসতে হবে। পৃথিবীর বহু দেশে শেখ হাসিনার জয়জয়কার ধ্বনি শোনা যায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। কৃষি, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন, সড়ক-সেতু, রেল, নৌ ও স্থানীয় যোগাযোগ অবকাঠামো, তথ্য প্রযুক্তি, সামাজিক নিরাপত্তা, ভূমিহীনে ভূমিদান, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়, বস্ত্র ও পাট, প্রতিরক্ষা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আরও আছে- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ, নারীর ক্ষমতায়ন। এত উন্নয়ন ৭৫' পর আর হয়নি। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না- আওয়ামী লীগের উদ্যোগেই মাতৃভাষা বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষার আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করে। শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই দেশ সর্বপ্রথম খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছে। মানবাধিকার নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে কার্যকর স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে রোল মডেল এখন বাংলাদেশ। দেশের সাধারন মানূষরা চায় উন্নয়ন- আওয়ামীলীগ তা করতে পেরেছে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। দেশজুড়ে উন্নয়নের জোয়ারের কারনে মানূষ নৌকার উপর বিশ্বাসী হয়ে গেছে। রাস্তার পাশের এক চায়ের দোকানে চা খাচ্ছি তখন দুইজন রিকশাওয়ালা আলাপ করছিল, তাদের মুখেই শুনলাম- 'কুমিল্লা ইপিজেড করার কারনে ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।' আমাদের উচিত চারদিকে এত উন্নয়ন হচ্ছে- তা সবাইকে জানিয়ে দেয়া। তাতে দেশের আশাহত ও দিশাহারা মানূষ গুলো ভরসা পাবে। ২০১৯ এর নির্বাচনে যোগ্য দলকে জয়ী করবে। বিদেশের মানুষ শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখে খুশি হয়ে প্রায় ২৫-৩০ টি একের পর এক পুরস্কার আর উপাধি দিয়েছেন। 'এজেন্ট অফ চেঞ্জ' পুরস্কারে ভূষিত করে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম। নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য ও সাহসী ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়, নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য "প্ল্যানেট ৫০-৫০" পুরস্কারে ভূষিত করেছে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন 'ইউএন ওম্যান', চ্যাম্পিয়নস অফ দ্যা আর্থ, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বিশ্বের দরবারে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপনের জন্য পেয়েছেন- সাউথ-সাউথ ভিশনারি পুরষ্কার, মাদার তেরেসা শান্তি পুরস্কার ইত্যাদি।
কর্মের খাতিরে আমি নিজে যখন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছি- জেলে, কৃষক, কামার, তাঁতি, শিক্ষক সবার মুখে শুনেছি শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা। রাজধানীতে নতুন নুতন ফ্লাইওভার তৈরি করা হচ্ছে। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে মেট্রোরেল প্রকল্প। সবচেয়ে বড় কথা, রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন তিনি 'মাদার অফ হিউম্যানিটি'। কাজেই আমি মনে করি, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে জয়ী করাটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। দেশ উন্নয়নের পথে ধাবিত হলেও কিন্তু ষড়যন্ত্রও আওয়ামীলীগের পিছু ছাড়েনি। তবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথবা কথাটা এভাবেও বলা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার বৈঠা শক্ত হাতে ধরেছেন বলেই- এ দেশের কোটি কোটি কৃষক, শ্রমিক, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও পেশাজীবী জনগণের শ্রম-ঘাম-মেধা আর মননে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন আর সাফল্যের কথা লিখতেও অনেক ভালো লাগে। বুক ভরে যায় এক আকাশ আনন্দে। গত কয়েক বছরে ২১ হাজার কিমি নতুন সড়ক ও ৫ হাজার মাঝারি ও ছোট সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। উন্নায়ন এর কথা বলেতে গেলে শেষ হবেনা।
একসময় প্রতি বছর শুনতাম- দেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কত বছর হয়ে গেল 'দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন' এই কথাটা শুনি না। মানব উন্নয়ন জরীপে বিশ্বের প্রথম পাঁচটি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ চলে এসেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচারের রায় কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছে প্রধানমন্ত্রী । বিডিআর ট্রাজিডির সাথে জড়িতদের বিচার শেষ হয়েছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের একের পর এক রায় ঘোষিত এবং কার্যকর হয়েছে। দেশের সবক’টি উপজেলাকে আনা হয়েছে ইন্টারনেটের আওতায়। ১৩ কোটি লোক মোবাইল ব্যবহার করছে! আমি রাজনীতি করি না। তবুও দেশের একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে বলতে চাই- “চলমান উন্নয়নের সাথে থাকুন” উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়তে দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র উপর আস্থা রাখুন। বাংলাদেশের ভাষা আন্দলন থেকে শুরু করে এদেশের মুক্তি সংগ্রামে যে দল অগ্রভাগে থেকে এদেশের মানুষের জন্য কাজ করেছে সেই দলের নাম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। বিনা দ্বিধায় বলা যায়- বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ আর শেখ হাসিনা মানে উন্নয়ন।
নি:সন্দেহে আমাদের দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হিসেবে যারা সরব, তারা আমাদের দেশের মানুষকে অত্যন্ত নির্বোধ মনে করেন। এই নির্বুদ্ধিতার উপর সওয়ার হয়ে তারা দেশে ক্ষমতায় আসীন হতে চান। আওয়ামীলীগকে আমি অনুরোধ করবো দলের মধ্যে যদি কোনো 'দুষ্টলোক' থাকে তাকে কান ধরে বের করে দিতে হবে। দেশের স্বার্থে দলের স্বার্থে দুষ্টলোক দলে রাখা যাবে না। নো নেভার। সেদিন টিভিতে টকশো'তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বললেন- আওয়ামিলীগ গত ৮ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে দেশে, তাদের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো হাজার বাধা বিপত্তির পরও তারা রাজাকারের বিচার করেছে। আওয়ামীলীগে'র এত এত উন্নয়নের দিক আছে যা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। গত ৭/৮ বছরের কাজ গুলো প্রতিটা জনগনের কাছে তুলে ধরতে হবে। বাঙ্গালী বেঈমান জাতি না। তাই তারা ২০১৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগকেই জয়ী করবে। দেশবাসী চায় দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। এর জন্য যত কঠিন ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হোক তাই নিতে হবে আওয়ামীলীগ সরকারকে। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি রাজনৈতিক দল। এর ঐতিহ্যের সাথে দেশবাসীর রক্তের অংশীদারিত্ব রয়েছে।
অতীতের কিছু কথা আপনাদের মনে করিয়ে দেই- আওয়ামিলীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, কিবরিয়কে হত্যা, আহসান উল্লাহ মাষ্টার হত্যা সহ অসংখ্য কেন্দ্রীয় নেতাকে হত্যা যা বাংলাদেশের মানুষ কখনো দেখেনি। আর রাজপথে পুলিশের লাঠিকাঘাতে রক্তাত্ত হয়েছেন আওয়ামিলীগের সব কেন্দ্রীয় নেতা, গন গ্রেফতার চালিয়েছিলো ভয়াবহ. শুধু আওয়ামিলীগের লংমার্চের আগে ২০০৬ সালে গ্রেফতার করা হয়েছিলো ৮০০০ নেতাকর্মী। বাংলা ভাইয়ের কথা ভুলে গেছেন? লেখালেখির জন্যে হুমায়ূন আজাদকে যে কোপানো হলো সেটা ও ভুলে গেলেন?
শেখ হাসিনার জন্যই আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত বাংলাদেশ। সহজ সরল সত্য কথা হলো- আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ আরো সমৃদ্ধশালী হবে। সব কিছু মিলিয়ে বলা যায় উন্নয়নের প্রশ্নে বাংলাদেশের আর পেছন ফেরার অবকাশ নেই। আমাদের মাহাথির মোহাম্মদ হলেন শেখ হাসিনা। মাহাথির সাহেবের মালোশিয়াকে গুছাতে সময় লেগেছিল ২২ বছর। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে উন্নীত করার যে রূপকল্প শেখ হাসিনার সরকার গ্রহণ করেছে তা বাস্তবায়ন অবশ্যই হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে উজ্জীবিত সকল নাগরিকের দায়িত্ব শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা। তবেই সফলতা অর্জনে এগিয়ে যাবে আমাদের এই প্রিয় বাংলাদেশ।
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি- একবার আমার প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ অসুস্থ হয়ে আমেরিকা গেলেন চিকিৎসার জন্য- প্রধানমন্ত্রী তাকে দেখতে গেলেন। আর একটা ঘটনা বলি- রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী বন্যা টিভিতে গান গাইছিলেন। সেদিন তার জন্মদিন ছিল- সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাকে লাইভ অনুষ্ঠানে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন। সুখে দুঃখে আমরা সব সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পাই। এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কি হতে পারে! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কুল জীবন থেকেই গল্প উপন্যাস পড়া শুরু করেন। এখনো প্রতিরাতে শেখ হাসিনা ঘুমাতে যান একটি বই সঙ্গে নিয়ে। পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েন। নতুন প্রকাশিত বইয়ের খোঁজ খবর রাখেন। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও এক টুকরো সময় বের করে ডুব দেন বইয়ের পাতায়। তার বেশ কিছু প্রিয় বইয়ের মধ্যে তিনটি বইয়ের নাম বলি- মহাশ্বতা দেবীর 'হাজার চুরাশির মা', সুনীলের ‘পূর্ব-পশ্চিম’, সৈয়দ মুজতবা আলীর 'চাচাকাহিনি'। তিনি নিজে বেশ কিছু বই লিখেছেন। তার লেখা ''শেখ মুজিব আমার পিতা' এবং 'ওরা টোকাই কেন' বই দু'টি আমার খুব প্রিয়। দলের নেতা কর্মীদের বই পড়ার অভ্যাস কমে যাচ্ছে। এই নিয়ে তিনি প্রায়ই দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। অসাধারণ একজন মানুষের খুবই সাদামাটা জীবন। এর মধ্যে একমাত্র বিলাসিতা বই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। প্রতিদিন ফযরের নামাজের পর কোরআন তেলোয়াত করেন। বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে নিজের হাতে রান্না করেন। এরকম সহজ সরল জীবন যাপন করা প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর আর কোথাও নেই। আল্লাহ তাকে সুস্থভাবে, সুন্দর ভাবে দীর্ঘদিন বাচিয়ে রাখুক এই দোয়া করি।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৪৮