somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ধাবমান কালো চোখে আলো নাচে- ১১ (ধারাবাহিক উপন্যাস)

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইউরোপে যখন ১৯১৪ সালে বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হয়, তার চব্বিশ বছর পর মোয়াজ্জেম হোসেনের জন্ম হয়। বাবা মা'র একমাত্র সন্তান সে। দাই জরিনা খাতুন বললেন একেবারে রাজপুত্র হয়েছে। মোয়াজ্জেম হোসেনের বাবা ছিলেন বিক্রমপুরের জমিদার। খুব নাম ডাক ছিল তার। নিজস্ব ঘোড়ার গাড়িতে চলাচল করতেন। ইংরেজরাও তাকে খুব সমীহ করতেন। অস্টিন নামের জাহাজে করে তিনি কলকাতা যেতেন বছরে চার বার। জমিদারের ছেলে বলে কখনও স্কুলে যেত না মোয়াজ্জেম। শিক্ষকরা তাকে বাসায় এসে লেখাপড়া করাতেন। এটাই তখনকার দিনের নিয়ম ছিল। চাষাভূষাদের ছেলেদের সাথে তো জমিদারের ছেলে লেখাপড়া করতে পারে না। খুব ভালো ঘোড়া চালাতেন মোয়াজ্জেম। পদ্মা নদীতে সাঁতার কাটতেন। দেখতে শুনতে এবং স্বভাব চরিত্রে খুব নাম ডাক ছিল। তার যখন সতের বছর বয়স তখন তার বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর মোয়াজ্জেম হোসেন একখানা ডায়েরী পান। তার বাবা নিয়মিত ডায়েরী লিখতেন। হাতের লেখা খুব সুন্দর। বসন্তের এক বিকেলে মোয়াজ্জেম বাবার লেখা ডায়েরী পড়তে শুরু করেন।
জানুয়ারীঃ
''যুদ্ধ ব্যাপারটাকেই আমি ঘৃণা করি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নব্বই লাখ যোদ্ধা মারা গেল, সাথে সাধারন মানূষ মরলো প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ আর আহত হলো কোটি মানুষের উপরে। যুদ্ধ চললো টানা চার বছর। তাতে কার কি লাভ হলো? অস্ট্রিয়ার যুবরাজ 'আর্কডিউক'কে হত্যা না করলে এই যুদ্ধ হতো না। মানুষ শুধু মানুষকে মারার জন্য যে পরিমান অর্থ এবং সময় ব্যায় করে এর পাঁচ ভাগও যদি শিক্ষা ও খাদ্যের জন্য ব্যায় করতো তাহলে পৃথিবীর চেহারাই পাল্টে যেতো।

ফেব্রুয়ারীঃ
কলকাতা যাচ্ছি জাহাজে করে। কেবিনে বসে এরিখ মারিয়া রেমার্ক এর 'অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন' বইটি মাত্র পড়া শেষ করলাম। লেখক এরিখ মারিয়া রেমার্ক প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। নিজের চোখে দেখা যুদ্ধের কথাই তিনি তার বইতে লিখেছেন। (বইয়ের শেষ পাতার প্রতিটি লাইন তার ডায়েরীতে লিখে রাখা)। ‘অসম্ভব শান্ত একটা দিন। ঝকঝকে নীল আকাশ, মাঝে মাঝে সাদার ছোপ। বাতাস বইছে মৃদুমৃদু। ঘাসের ডগার শিশির বিন্দু এখনো শুকোয়নি। লাল লাল ফুলগুলোর ওপর ছুটোছুটি করছে দুটো রঙিন প্রজাপতি। নির্মল বাতাস, বারুদের গন্ধ নেই, গোলার গর্জন নেই। চারদিকে এমন নিঃশব্দ যে একটা মাত্র লাইনে শেষ হয়েছে আর্মি রিপোর্ট : ‘পশ্চিম রণাঙ্গন সম্পূর্ণ শান্ত’। গাছটার নিচে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে পল, যেন ঘুমিয়ে আছে। ওকে যখন ওলটানো হলো, দেখা গেল মুখে তখন ও হাসি লেগে আছে এক টুকরো। যেন কোন কষ্ট'ই পায়নি ও। যেন জেনেই গিয়েছে, সব শেষ হতে চলেছে। প্রজাপতি দুটো উড়েই চলেছে ফুলে ফুলে।’
কী অসাধারণ আর আর কাব্যিক উপসংহার। সেটা শুধু রেমার্কের কাছ থেকেই পাওয়া সম্ভব।
বাবার কথা ভাবতে ভাবতে মোয়াজ্জেম ডায়েরী বন্ধ করে আকাশের দিকে তাকালেন।

আঠারো বছর বয়সে বালাসুর গ্রামের খায়রুনকে বিয়ে করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। খায়রুনের বাবাও ছিলেন জমিদার। বিয়ের সময় খায়রুনের বয়স ছিল তের বছর। তার মতো সুন্দরী অত্র অঞ্চলে আর নেই। কোলকাতার এক জমিদার তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। তের বছর থেকেই খায়রুন প্রতি বছর একটি করে সন্তান জন্ম দিতে লাগলেন। মোয়াজ্জেম আর খারুনের মোট সন্তানের সংখ্যা তের। বর্তমানে দশ জন বেঁচে আছেন। পাঁচটি মেয়ে, পাঁচটি ছেলে। বাকি তিন জন কলেরা রোগে মারা যায়। টানা তের বছর গর্ভধারন করে খায়রুনের শরীর ভেঙ্গে গেছে। খায়রুন এত গুলো ছেলে মেয়ে নিয়ে মাথা নষ্ট হবার যোগাড়। দাসদাসী থাকলেও খায়রুন নিজের হাতে বাচ্চাদের খাওয়ান, গোসল করান, কোলে নিয়ে ঘুম পাড়ান। বাচ্চাদের দাসীদের হাতে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারেন না। এদিকে মোয়াজ্জেম পড়ে থাকেন কোলকাতা। কোলকাতায় বিশাল এক দোতলা বাড়ি আছে তাদের। নিউজ প্রিন্ট কাগজের ব্যবসা শুরু করেছেন মোয়াজ্জেম। ব্যবসার বুদ্ধি মোয়াজ্জেমের একেবারেই নেই। বরং ধারধেনা আরও বেড়ে গেল। তার শরীরের জমিদারের রক্ত বলেই ফুটানি একটুও কমলো না। লোক পাঠিয়ে কোলকাতা থেকে জর্দা আনান, কাপড় আয়রন করিয়ে আনান। তার বিলাসিতা এত পরিমানে ছিল যে গ্রামের লোকজন তাকে নওসা মিয়া বলে ডাকতেন। বাসায় নাপিত এসে ছেলে মেয়েদের চুল কেটে দিতে যেত, বিনিময়ে আনাজপাতি দিয়ে দেয়া হতো। বাচ্চাদের চুল কাটানোটা দেখার মতো একটা দৃশ ছিল। দশ জন লাইন ধরে এক কাতারে বসতো। নাপিত একজন একজন করে চুল কেটে যেত। আর দূরে আরাম কেদারায় বসে মোয়াজ্জেম সাহেব ডিরেকশন দিয়ে যেতেন। জেলেদের জালে বড় মাছ ধরা পড়লেই মোয়াজ্জেম সাহেব অনেক দাম দিয়ে কিনে নিতেন।

এদিকে মোয়াজ্জেম জমিদারির আয় উন্নতি কিছুই বাড়াতে পারলেন না। বরং জমির পর জমি বিক্রি করতে লাগলেন। বাঈজী নাচাতেন। জমিদাররা কুঠিতে বাঈজী নাচাবেন এটা স্বাভাবিক। মোয়াজ্জেম দুই হাতে টাকা উড়াতেন। কথিত আছে মোয়াজ্জেম বিয়ের পর প্রজাদের উপর অত্যাচার জুলুম শুরু করেন। নিরীহ প্রজারা কিছুতেই প্রতিরোধ করতে পারল না, শুধু অভিশাপ দিয়ে গেল। এই অভিশাপে পয়ত্রিশ বছর বয়সে মোয়াজ্জেন হঠাৎ করে অন্ধ হয়ে যান। কোলকাতা গিয়ে ডক্তার দেখালেন কিন্তু কাজ হলো না। তিনি সারা জীবনের জন্য অন্ধ হয়ে গেলেন। মোয়াজ্জেম অন্ধ হয়ে যাওয়াতে তার ছেলেদের জন্য ভালো হলো। তারা লেখা পড়া বন্ধ করে দিল। শুধু বড় ছেলে মেহের আলী লেখা পড়া চালিয়ে যেতে লাগলেন।

তার পাঁচ মেয়ে খুব সুন্দরী বলে ঢাকার নামকরা সব ব্যবসায়ীদের সাথে বিয়ে হয়ে গেল। আর মোয়াজ্জেম হোসেনের অন্ধত্বের সুযোগ নিয়ে তার পাঁচ ছেলে- টাকার দরকার হলেই জমি বিক্রি করা শুরু করল। এমনকি মোয়াজ্জেম হোসেনের এক ছেলে যার নাম সোনা মিয়া সে বন্ধুদের সাথে ছাগল চুরী করতে গিয়ে ধরা পড়লো। তারপর থেকে সোনামিয়া পলাতক। এই খবর নওসা মিয়া অর্থ্যাত মোয়াজ্জেম হোসেনের কানে গেল। তিনি ঘোষনা করলেন- যে সোনা মিয়াকে ধরে আনবে তাকে তিন শতাংশ জমি দেয়া হবে। এবং সোনা মিয়াকে তিনি নিজের হাতে খুন করবেন। সোনা মিয়া নিখোঁজ হয়ে গেল। তার খোজ আর কখনও পাওয়া যায়নি। কেউ কেউ বলেন- সোনা মিয়া কোলকাতা চলে গেছে। আবার কেউ বলেন জাহাজের খালাসির কাজ নিয়েছে।
সোনা মিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত পরে বলা হবে। শুধু এতটুকু বলে রাখি- সোনা মিয়া খালাসির কাজ নিয়ে আমেরিকা চলে যায়। সেখানে অলকা নামে একটি মেয়ের সাথে তার দেখা হয়। অলকার বাবার নাম শশীভূষন।

অন্ধ হওয়ার পর মোয়াজ্জেম হোসেন আর ঘরের বাইরে যান না। সারাদিন শুয়ে বসে থাকেন। কানের কাছে থাকে দুই ব্যাটারির একটা রেডিও। তার চাকর নিখিল বসে থাকে পায়ের কাছে। নওসা মিয়ার সব ছেলে মেয়েই বাবাকে খুব ভয় পায়। যেমন ভয় পায়, তেমন সম্মানও করে। মানুষটা অন্ধ হয়ে যাবার পর- অনেকেই তার কাছে আর আসেন না। কিন্তু খায়রুন যেন আরও বেশি ভালবাসতে শুরু করলেন মোয়াজ্জেম হোসেনকে। মানূষটা খায়রুন এর হাতের রান্না ছাড়া অন্য কারো হাতের রান্না খেতে পারেন না। দিনের বেশির ভাগ সময়ই খারুনের কাটে রান্না ঘরে। জমিদারি নেই কিন্তু জমিদারি স্বভাবটা রয়ে গেছে- নওসা মিয়া সাত রকম তরকারি ছাড়া ভাত খেতে বসেন না। নওসা মিয়ার খাওয়াটা দেখার মতোন একটা ব্যাপার। বিশাল এক পিতলের থালার মধ্যে তিন চামচ ভাত নেন আর পিতলের থালার চারপাশে ছোট ছোট সাত পিতলের বাটিতে থাকে তরকারি। নওসা মিয়া চোখে না দেখলে কি হবে- গুনতে তো পারেন। যদি কখন সাত বাটি তরকারি থেকে এক বাটি তরকারি কম হয়- খুব রেগে যান, রেগে গিয়ে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙতে শুরু করেন। এদিকে সংসারের অবস্থা তেমন ভালো না। জমির পরিমান কমে গেছে। বর্গা দিয়ে খুব অল্পই টাকা আয় হয়।

খায়রুন আর মোয়াজ্জেম হোসেনের বড় সন্তান মেহের হোসেন সংসারের হাল ধরে। বিএ পাশ করে মেহের হোসেন ব্যবসায় নামে। সে দুই তলা একটা লঞ্চ কিনে। লঞ্চের নাম মালঞ্চ। মালঞ্চ সদরঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে সারা পদ্মানদী ঘুরে বেড়ায়। মেহের আলী মাসে দুইবার গ্রামে গিয়ে মায়ের হাতে সংসার খরচের টাকা দিয়ে আসে। লঞ্চের কেবিনে থাকতে মেহের আলীর ভালো লাগে না তাই সে শহরে এক রুম ভাড়া নিয়েছে। যখন সে ঢাকার গিলগা এলাকায় সরলা বিবি' আর ওমর আলীর ঘর ভাড়া নিতে যায়- সহজ-সরল, ব্যাক্তিত্ববান আর রুপবান মেহের হোসেনকে দেখেই তারা মুগ্ধ হয়ে যান।

মুক্তিযুদ্ধের কয়েক বছর পরে ওমর আলী আর সরলা বিবির একমাত্র মেয়ে পুষ্পের সাথেই মেহের হোসেনের বিয়ে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×