somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ভয়

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এ মাসের আজ ৬ তারিখ কিন্তু ব্লগ লিখেছি মাত্র একটা। প্রতিদিন কমপক্ষে একটা কিছু না লিখতে পারলে আমার ভালো লাগে না। অবশ্য বেশ কিছু লেখা মাথায় জমে আছে, সময় সুযোগের অভাবে লেখা হচ্ছে না। তাই গতকাল রাতে একটা লেখা শুরু করলাম। আজ কিছু লিখবই-

মৃত্যুর জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে আর ভালো লাগে না। মরতে যখন হবেই তখন সেই ভয়ংকর ব্যাপারটা ঘটে গেলেই ভালো হয়। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি। সকল সমস্যার সমাধান! .......... এই পর্যন্ত লিখে, লেখা আর আগায় না। কিন্তু কি লিখব সব ভেবে রেখেছিলাম। যাই হোক, নতুন করে নর নারীর সম্পর্ক নিয়ে কিছু লিখতে চেষ্টা করলাম।-
হিউম্যান রিলেশনটা অনেক বদলে গেছে। সারাদিন মানুষ এত কথা বলে তবু একজন আরেকজনের সাথে কমিউনিকেট করতে পারছে না।
চারপাশে একটা শূন্যতা তৈরি হচ্ছে- ঘরে-বাইরে, বন্ধুর সাথে বন্ধুর, স্বামীর সাথে স্ত্রীর, ছেলের সাথে বাপের, ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের, এমনকি প্রেমিকার সাথে প্রেমিক। .... এই বিষয়টা নিয়েও লিখতে পারলাম না।

নতুন করে আবার শুরু করলাম- শান্ত নিস্তব্ধ শীতের রাত। কী এক নিঃসঙ্গতায় মৌন বিশ্বচরাচর। সমস্ত শহর কে একটা পাগলা গারদ বলে মনে হয়। সমাজের কিছু মানুষ যেন এক একটি জীবন্ত আবর্জনার স্তুপ। ভালোবাসাহীন, মায়াহীন, ভাষাহীন এই শহরে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। এই শহরের মানুষ গুলো দিনদিন পাথর হয়ে যাচ্ছে। বিকৃত সচ্ছলতার আলোয় ঝিলমিল করে শহরের প্রতিটি দালান। চিরকাল কি এই শহর টা এমনই থাকবে? ... এই লেখাটাও আর এগোলো না। এখন নিজের উপর নিজেরই খুব রাগ লাগছে। ল্যাপটপ বন্ধ করে বিছানায় গেলাম। হাতে নিলাম একটি বই 'তাজউদ্দিন আহমদ নেতা ও পিতা' বইটি। কয়েক পাতা পড়তেই চোখে নামলো রাজ্যের ঘুম। মুহূর্তের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম।

ঘুমের মধ্যে ভয়ানক স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙল। আমি থর-থর করে কাঁপছি। প্রচন্ড ভয় লাগছে। সীমাহীন ভয়। যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। এত ভয় আগে কখনও পাইনি। মনে হচ্ছে আমার আশে পাশে পরিচিত-অপরিচিত সব মৃত মানুষেরা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তারা আমাকে ভয়ঙ্কর কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলতে চায়। আমি সুরভিকে ডাকলাম, উঠো উঠো আমার খুব ভয় করছে! আমাকে জড়িয়ে ধরো। সুরভি এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। তবুও আমার ভয় কমছে না। শরীর কাঁপছে।

একটু পর আমার ভয়ের মাত্রা আরো বেড়ে গেল। কারন সুরভি তো বাসায় নেই। আজ দুই দিন ধরে সে তার বাবার বাড়ি। তাহলে কে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে? আমি চোখ মেলে তাকাতে সাহস পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে আজই বুঝি আমি মারা যাবো। ভয় কাটানোর জন্য অনেক রকম চেষ্টা করলাম। একটা বইয়ের শেষ কয়েকটা লাইন মনে করার চেষ্টা করলাম- ''"তবু যদি কখনও ---- এমন হতভাগ্য, অসংযমী পাপিষ্ঠের সহিত পরিচয় ঘটে, তাহার জন্য একটু প্রার্থনা করিও। আর যাহাই হোক, যেন তাহার মত এমন করিয়া কাহারও মৃত্যু না ঘটে। মরণে ক্ষতি নাই, কিন্তু সে সময়ে যেন একটি স্নেহকরস্পর্শ তাহার ললাটে পৌছে- যেন একটিও করুণার্দ্র স্নেহময় মুখ দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারও একফোঁটা চোখের জল দেখিয়া সে মরিতে পারে।'' না ভয় কমছে না। বরং চক্রবৃদ্ধি হাড়ে ভয় বেড়েই চলেছে।

শেষ-মেষ কোনো কিছুতেই ভয় কমলো না। তারপর কি হলো কিছুই মনে নেই। হয় আমি ঘুমিয়ে পড়লাম অথবা অজ্ঞান হয়ে গেলাম। ঘুম ভাঙল মোবাইল এর শব্দে- তখন সকাল সাত টা। সুরভি ফোন দিয়েছে। তাড়াতাড়ি উঠো। অফিসে যাবে না? আমি আজ বিকেলে আসবো। তোমার জন্য রাতের খাবার নিয়ে আসবো। ইত্যাদি ইত্যাদি ...

এখন আমার কাছে গতরাতের ভয়ের ব্যাপারটা হাস্যকর লাগছে। এত ভয় পাওয়ার কারন কি? আমি কোনো কুসংস্কার বিশ্বাস করি না। আমার আছে 'লজিক'। আমি একজন আধুনিক মানূষ।

(ছবিটা প্রায় এক যুগ আগের। যখন ক্যামেরা নিয়ে সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতাম।)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:২১
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×