somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

প্রমোদবালা

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পনের বিশ জন উঠতি বয়সের ছেলেরা মিলে ২/৩ জন মেয়ে ভাড়া করে ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে পিকনিক করতে বের হয়। কেউ কেউ বলে আনন্দভ্রমন। এ সমস্ত মেয়ে গুলোকে প্রমোদবালা যেতে পারে। আর নৌকা গুলোকে প্রমোদ তরী। মেয়ে গুলো জামা কাপড় খুলে নাচানাচি করে। এক কথায় কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি। একজন একজন করে প্রতিটা ছেলের সাথে জড়াজড়ি করে। বিকট শব্দে তখন হিন্দি গান বাজতে থাকে। এইসব প্রমোদবালারা যাত্রা পালায় অশ্লীল ভাবে নাচে। যদিও তারা নাম দেয় যাত্রা, আসলে কোনো যাত্রাপালা হয় না। হয় নগ্ন নাচ। মানুষ রাত জেগে টিকিট কেটে এই রকম নাচ উপভোগ করে।

পিকনিকের নামে নৌকায় নর্তকীদের অশ্লীল নৃত্য এখন এটা উৎসবের মতো করে পালন করা হচ্ছে। এই প্রমোদবালাদের সারাদিনের জন্য দুই হাজার টাকা দেয়া হয়। আর কেউ যদি শারীরিক সম্পর্ক করতে চায় তার জন্য আলাদা টাকা। প্রমোদবালাদের একটাই দাবী থাকে তাদের নাচ যেন ভিডিও না করা হয়। তারপরও তাদের নগ্ন করে ভিডিও করা হয়। নৌকা থাকে নদীর মাঝখানে- তখন কে কার কথা শুনে। তাছাড়া এতগুলো ছেলের সাথে দুই তিনজন মেয়ে পেরে ওঠে না। বেশির ভাগ সময়ই তাদের উপর অনেক শারীরিক অত্যাচার করা হয়। মেরে তাড়িয়ে দেয়া হয়। তারা তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিকটুকুও পায় না। দরিদ্র অসহায় মেয়েরাই এই লাইনে আসে। সমাজ তাদের চাকরি দিতে পারে। বেঁচে থাকার জন্য তারা এই পেশায় আসতে বাধ্য হয়। যদিও দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে।

নৌকা গুলো খুব সুন্দর করে সাজানো হয়। প্রতিটি নৌকা সামিয়ানা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। নৌকায় মাইক কিংবা সাউন্ড বক্স লাগানো হয়। দিনভর এ সকল নৌকায় উঠতি বয়সী যুবক কিংবা মাঝ বয়সী নারীদের নিয়ে বেহায়াপনা করে থাকে। জুয়াড়ির দল অবাধে জুয়া খেলে। বিশেষ করে নদী পারের ছেলেরা এই ভ্রমনও সবচেয়ে বেশি এগিয়ে। আমি নিজের চোখে তূরাগ নদী, বালু নদীসহ নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, ফরিদপুর ইত্যাদি জায়গায় এই নৌকা ভ্রমন দেখেছি। এখন এই নৌকায় পিকনিক সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে আরও থাকে ইয়াবা, ফেন্সিডিল, বিয়ার, গাঁজা সহ নানা রকম মাদক। পুলিশ মাঝে মাঝে এদের খুব আগ্রহ নিয়ে ধরে, টাকার বিনিময়ে পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

আরেক দল আছে বর্ষা মৌসুমে নৌ বনভোজনের নামে স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছেলেরা মনোরঞ্জনের জন্য যাত্রার নর্তকী ও নিষিদ্ধ পল্লীর মেয়েদের দিন চুক্তিতে ভাড়া করে। কিছু দুষ্টলোক নাটোর, কুষ্ঠিয়া, টাঙ্গাইল থেকে অর্ধ শতাধিক যাত্রার নর্তকীসহ নিষিদ্ধ পল্লীর মেয়েদের এনে অসামাজিক কাজে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভাড়া দিচ্ছে। যারা এই কুকর্মের পেছনে আছে- তারা বুক ফুলিয়েই বলে- প্রশাসন ম্যানেজ করেই এই কাজ পরিচালনা করি। প্রতিদিনই চাটমোহরের ছাইকোলা, মির্জাপুর, বওসা, নুরনগর ঘাট, ভাঙ্গুড়ার অষ্টমনিষা, রুপসী ঘাট, মেন্দা, ভাঙ্গুড়া এবং ফরিদপুরের বিভিন্ন ঘাট হতে পিকনিক অথবা বিনোদন ভ্রমণের নামে নৌকা ভাড়া করা হয়। এই সব প্রমোদবালাদের জন্য আমার খুব মায়া হয়। কিন্তু আমার কিছুই করার ক্ষমতা নেই। আহ কি কষ্টের জীবন তাদের!

যাদের একটু বেশি টাকা আছে তারা ছোট ছোট লঞ্চ গুলো ভাড়া নিয়ে চলে যায় মধ্য নদীতে। এসব লঞ্চে বেশ কিছু কেবিন আছে। প্রতিটা কেবিনে একটা করে মেয়ে আছে। একজন একজন করে ছেলে কেবিনে ঢুকে। এই সমস্ত মেয়ে গুলোর জন্য আমার খুব মায়া হয়। কিন্তু আমি তাদের জন্য কিছুই করতে পারি না। মেয়ে গুলোও নিজের দেহ বিক্রী করেও পর্যাপ্ত টাকা পায় না। আর যারা এই পিকনিকের আয়োজন করে তারা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এই উঠতি বয়সের ছেলে গুলো মানসিক ভাবে যৌন বিকৃতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। নদী পাড়ের গ্রাম গুলোতে ভয়াবহ সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনে ২৯৪ এর খ ধারায় ও উপধারা ক'তে এইসব অশ্লীলতায় কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। মহামারি আকারে এই প্রমোদ ভ্রমন ছড়িয়ে পড়ার আগেই সরকারের ব্যবস্থা করা উচিত।

(এইসব নোংরা নাচ আর গানের কিছু ভিডিও ইউটেব এ আছে। নাচ গুলো এতটাই নোংরা যে আমি সামুতে লিংক দিলাম না।)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৩
২০টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×