somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

৪৭ বছর পর কেন বাংলাদেশ এখনও দরিদ্র?

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



'হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহান'‌। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুন ইসলাম ভুল কথা বলেছেন। দারিদ্র কাউকে মহান বানাতে পারে না। দারিদ্র বানায় চোর, ছিনতাইকারী, ডাকাত। কবি জীবনানন্দ দাশ যতদিন বেঁচে ছিলেন, অর্থকষ্ট ছিল তার নিত্যসঙ্গী। জমিদারের ছেলে হওয়া সর্তেও রবীন্দ্রনাথকে অনেকবার অর্থ কষ্টে পড়তে হয়েছে। একসময় অর্থ কষ্টে পড়লে মানুষ কবি সাহিত্যিক হতো। আর এখন মানুষ অর্থ কষ্টে পড়লে, নিজের লজ্জা শরম বিসর্জন দিতে হয়। মেয়েরা টাকার অভাবে অন্যের সামনে নিজের জামা খুলে। আর ছেলেরা দ্বারে দ্বারে পরিচিত অপরিচিত সবার কাছে হাত পাতে। কারো কাছে হাত পাতা যে কি কষ্টের, কি লজ্জার- যে কোনোদিন কারো কাছে হাত পাতেনি সে বুঝবে না। শখ করে কেউ তো আর পকেটমারে না, চুরী করে না, ডাকাতি করে না, দালালি করে না। বেঁচে থাকার জন্য মানুষ সীমাহীন কষ্ট করে যাচ্ছে। এই রাষ্ট্র চাকরি দিতে পারে না, তাই সে অন্যপথ বেছে নেয়।

দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে কিন্তু আমাদের দেশে এখনও প্রায় চার কোটি মানূষ ভয়াবহ গরীব। তারা তিনবেলা ঠিকভাবে খেতে পায় না। তাদের কাজ নেই। শিক্ষা নেই, বাসস্থান নেই, চিকিৎসা নেই। আমি জানি, আমাদের দেশটা খুব ছোট্র। মানুষ বেশি। ১৯৭১ সালে নয় মাসব্যাপী যুদ্ধে বাংলাদেশের মোট সম্পদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রতি বছর যে পরিমান টাকা দুর্নীতি হয়, তা যদি কোনোভাবে ঠেকানো যায় তাহলে দেশে দরিদ্র লোকের সংখ্যা কমে যাবে। একসময় যার চালচুলা ছিল না, আজ সে কোটি কোটি টাকার মালিক। পেরাডো গাড়িতে চলাচল করে। অন্তত সাত টা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হয়েছে। দুদক তাদের কাজ সঠিকভাবে করছে না। বা অন্যভাবে বলা যায় দুদক তাদের কাজ সঠিকভাবে করতে পারছে না। যারা ভুল পথে কয়েক শ' হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে, সরকার তাদের কাছ থেকে টাকা গুলো কেন নিয়ে নিচ্ছে না?

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও বাংলাদেশ আজও কেন গরীব দেশ? আজও কেন মানুষ রাস্তায় ঘুমায়? না খেয়ে থাকে, চিকিৎসা পায় না, ছোট অনাথ বাচ্চারা ব্রীজের উপর কুকুরের পাশে ঘুমায়। প্রতিটা রাস্তার ফুটপাতে ভিক্ষুক। আজও কেন বাংলাদেশের বড় একটি অংশ প্রতি বছর বন্যার বিপদে আছে। সহজ সরল সত্য কথা হলো- কেউই দরিদ্রদের অসহায় অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করছে না। যতই দেশে শপিং মল হোক, রাস্তা হোক, ব্রীজ হোক। দরিদ্র মানুষ কিন্তু দিনদিন বেড়েই চলেছে। দশ বছর আগেও দৌড়ে দৌড়ে বাসে উঠতে হতো, আজও তাই। দশ বছর আগেও ধর্ষণ হতো, আজও হয়। আগে মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যেত, আজও যায়। আগেও মানূষ বেকার ছিল, আজও বেকার। তাহলে কিভাবে আমাদের দেশ উন্নয়নশীল দেশ হলো? অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠির দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ। স্বাধীনতার এত বছর পরেও কেন আমাদের দেশ অন্যান্য দেশের মতো দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করতে পারছে না? কিন্তু সরকার বদলের সাথে সাথে কিছু লোক কিভাবে কয়েক শ' কোটি টাকার মালিক হয়?

আমার বন্ধু শাহেদ প্রায়ই বলে, ''আমাদের প্রত্যেকেই হাতেই একটা করে মোবাইল আছে। অথচ দশ বছর আগেও কেউ এমনটা ভাবতে পেরেছিল? নিশ্চয় না,
কিন্তু ঠিকই সম্ভব হয়েছে। কারন দেশ আগাচ্ছে। পাঁচ বছর পর সবার কাছে একটা করে ল্যাপটপ থাকবে। আর দশ বা পনের বছর পর সবার কাছে একটা করে গাড়ি থাকবে। দেশটা থেমে নাই... উন্নতি হচ্ছে, হয়তো ধীর গতিতে... কিন্তু উন্নতি হয়েই যাচ্ছে। পৃথিবীর শক্তিধর দেশ বলে বহুল পরিচিত আমেরিকাতেও মানুষ ফুটপাতে থাকে। তাদের কোন কাজ নেই। তারা হোমলেস বলে পরিচিত।''
তবে আমার কেন মনে হয়, এই দেশে জন্ম নেওয়াটা আমার ঠিক হয়নি। কেন আমার উন্নত দেশে চলে যেতে ইচ্ছা করে? চারিদিকে এত এত বেকার দেখে, এত এত দরিদ্র মানুষ দেখি- তখন নিজেকে খুব অসুখী মনে হয়। সরকার কি বুঝে না, বেকারত্বকে জিইয়ে রেখে উন্নয়ন কখনও ত্বরান্বিত করা যায় না। দেশের ৯৯ ভাগ সম্পদের মালিকানা চলে গেছে এক ভাগ মানুষের কাছে। সেই এক ভাগ মানুষই এখন দেশটা চালাচ্ছে।

আমার ভাবতে ভালো লাগে, আমারদের দেশে কোনো গরীব লোক নেই। কেউ না খেয়ে থাকে না, কেউ চিকিৎসার অভাবে মারা যায় না, চোর নেই, ছিনতাইকারী নেই, দুর্নীতিবাজ নেই। আমাদের দেশের পরিশ্রমী লোকেরা মধ্যপ্রাচ্য গিয়ে কালমা খাটে না। দেশে কোনো বেকার নেই। ছাত্রলীগ নেই। সরকারি হাসপাতালে দালাল নেই, ফুটপাত দিয়ে কেউ বাইক চালায় না। দেশের মন্ত্রীরা চিকিৎসার জন্য বিদেশ যায় না। নদী ভাঙ্গে না। দেশে কেউ ইয়াবা খায় না, সবাই নিয়ম মেনে চলে- কোনো একসিডেন্ট হয় না। দেশের সব আমলারা সৎ হয়ে গেছে। সব দুষ্ট লোক গুলো ভালো হয়ে গেছে। দেশে কোনো জঙ্গী নেই, রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। দেশে কোনো গুম, খুন আর ধর্ষণ নাই।
আমি আমার দেশকে খুব ভালোবাসি। আমি জানি একদিন দেশ আমার মনের মতো হবে। আমি অপেক্ষা করি। অপেক্ষা করতে আমার ভালোই লাগে।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১৯
১৪টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×