মন্ত্রী কইছিল এই রোজায় জিনিসপত্রের দাম বাড়বো না। কঠিন হুশিয়ারীও দিছে কিন্তু তার কথা এবং হুশিয়ারীতে কোনো কাজ হয় নাই। বাজারে গেছিলাম, কপাল ভালো যে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যাই নাই। প্রতিটা জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। অনেক বেশী করেই বাড়ছে। বাজার না করে এক ডজন ডিম নিয়ে বাসায় ফিরে আসছি। সরকার বাজার মনিটরিংও করতাছে, ফলাফল তো শূন্য। ভাবছিলাম রোজায় একটু ভালো মন্দ বাজার করবো কিন্তু পারলাম না। প্রতি বছর'ই মন্ত্রী একই কথা কয়, আমরা ছাগলের মতো বিশ্বাস করি। বাজারে গিয়া ধরা খাই। ছয় শ' গ্রাম দুইটা ইলিশের দাম চাইলো আঠারো শ' টাকা। গরুর মাংস এক কেজি কিনলে বাসায় এসে ফেলে দিতে হয় একপোয়া। প্রতিটা জিনিস কিনলে ঠকতে হয়। মাপেও কম দেয়। মন চায় সরকারকে বাপ মা তুলে গালাগালি করি।
প্রতিদিন সকালে বাসের জন্য লম্বা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেক অনুরোধ করি। ভাই অফিসে যাবো একটু চেপে দাড়ান। ভেতরে তো জায়গা আছে। তারা আমার কথা শুনেও না শোনার ভান করে। সব শুয়োরের বাচ্চারা গেটের সামনে জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ভেতরে চাপে না। বাসে উঠলেই মানুষ গুলো কেমন অমানুষের বাচ্চা হয়ে যায়। বাসের সামনে মেয়েদের ছিট থাকে, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে খুব মজা। বাস চললে মেয়েদের বুক কাপে উপর থেকে দাঁড়িয়ে দেখতে খুব মজা। শুয়োরের বাচ্চারা বুঝে না, তাদের গন্তব্যে যাওয়াটা যেমন জরুরী, আমারও গন্তব্যে যাওয়াটা জরুরী। ভেতরে জায়গা থাকা সত্বেও যারা বাসে উঠেই গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে এবং অন্যকে উঠার সুযোগ দেয় না, তারা অবশ্যই শুয়োয়ের বাচ্চা। অমানুষের বাচ্চা। আর এই শুয়োরের বাচ্চার সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। হয়তো এই শুয়োরের বাচ্চার বউ আছে, বাচ্চা আছে। সুন্দর একটা সংসার আছে। কিন্তু বাসে উঠলেই মন মানসিকতা একদম নিচে নেমে যায়। একদম শুয়োরের বাচ্চা হয়ে যায়।
আমি তো মনে করতাম ভদ্রলোকেরা হোন্ডা চালায়। এখন দেখি তারা বিরাট বদ। এমনিতে তারা খুব ভালো। তাদের বন্ধু বান্ধব আছে, আত্মীয় স্বজন আছে, ঘর সংসার আছে। কিন্তু তারা বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হলেই কেমন অমানুষ হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি মেজাজ খারাপ হয় বাইকওয়ালা অপ্রয়োজনেও প্রচুর হর্ন দেয়। বিকট হর্ন। আরে গাধা তুই বারে বারে বিকট হর্ন দিলেই কি রাস্তার জ্যাম কমে যাবে। বাইকওয়ালা গাধা গুলা খুব বেশি অস্থির। রাস্তায় বের হলেই তারা অমানুষের মতো আচরন করে। বিকট হর্ন দিতেই থাকে। দিতেই থাকে। ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে দেয়। রাস্তায় জ্যাম থাকলে চিপা গলিতে ঢুকে যায়। আরে বাবা চিপা গলি আস্তে আস্তে যা। কিন্তু না তারা বিকট হর্ন দিতে দিতে যায়। ফাক পেলেই ঢুকিয়ে দেয়। লেগে যায় গিট্রু। তারাই গিট্রু লাগিয়ে দেয়, আবার তারাই খুব চিৎকার চেচামেচি করে। তেজ দেখায়। ইদানিং মনে হয় মানুষের হাতে পয়সা বেশি হয়েছে। রাস্তায় বের হলেই হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ বাইক দেখা যায়। এদের যন্ত্রনায় চলাচল করা যায় না।
ফুটপাতে দোকান। আবার দোকানের জিনিসপত্র বের করে অর্ধেক ফুটপাত দখল করে রাখে। তাহলে মানুষ হাটবে কি করে? ফুটপাতের চায়ের দোকানে পাচ জন সাত জন ভদ্রলোক মিলে দাঁড়িয়ে চা খায়। তারা পুরো রাস্তা দখল করে নেয়। তাহলে পথচারী হাটবে কি করে? আরে ছাগলের দল নূন্যতম জ্ঞান বুদ্ধি কি তোদের নেই? চিপা গলি, এই গলির মধ্যে কমপক্ষে দশজন ভ্যান গাড়িতে নানান রকম সবজি আর ফলমুল নিয়ে বসে আছে। এদিকে আবার রাস্তা খোড়াখুড়ি চলছে। আশে পাশের নির্মাণাধীন বাড়ি ঘরের ইট বালু রোড রাখা। এই গলিতে আবার বাচ্চাদের স্কুল আছে সারাটা দিন চেচামেচি আর জ্যাম লেগেই থাকে। আর বৃষ্টির দিনে দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করে। এর মধ্যেই পুলিশ আসে গাড়িতে করে। গাড়ি থেকে একজন পুলিশ নেমে সবার কাছ থেকে এক শ' করে টাকা নিয়ে বীরের বেশে চলে যায়। এইভাবেই চলছে প্রতিটা দিন। কেউ কিচ্ছু বলে না। সাধারন মানুষের জীবন শেষ অথচ দেশ নাকি উন্নয়নের মহাসড়কে। ফাজলামোর একটা সীমা থাকা দরকার।
আসলে মানুষ আর মানুষ নাই। শুয়োরের বাচ্চা হয়ে গেছে সব। এখন আর কিছুতেই মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব বলা যাবে না। মানুষ নিচে নামতে নামতে অনেক নিচে নেমে গেছে। আরেক শ্রেনীর শুয়োরের বাচ্চা আছে তারা রাস্তায় মেয়ে দেখলেই এমন কুতসিত ভাবে তাকায় ইচ্ছা করে জুতা দিয়ে মারি। এই শুয়োরের বাচ্চা গুলো কি তাদের মা বোনদের দিকেও এইভাবে তাকায়? একটা মেয়ের সাথে তার স্বামী থাকুক, ভাই থাকুক, বাবা থাকুক, মা থাকুক যে'ই থাকুক শুয়োরের বাচ্চা গুলো কুৎসিতভাবে তাকাবেই। সেদিন আমি আর সুরভি যাচ্ছিলাম রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনে দিয়ে। এক শুয়োরের বাচ্চা পুলিশ কুৎসিতভাবে তাকিয়েই আছে। আমি বললাম, কি ভাই আমার বউয়ের চেহারা কি আপনার মা অথবা বোনের মতো তাই এভাবে তাকিয়ে আছে?
(বিঃ দ্রঃ আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত যে তাদের শুয়োর বলেছি। আমার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দেখে শুনে আর ঠিক থাকা সম্ভব না। যার উপরে পড়ে সেই'ই বুঝে।)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩